মালয়েশিয়ায় নতুন সময় এল। মাহাথির মোহাম্মদ ইতিহাস গড়লেন। মূল কথা হল সরকারের প্রতি জনগণ খ্যাপা ছিল। দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত নাজিব রাজাকসহ তার নেতাকর্মীরা। এজন্য জনগণ সুযোগ পেয়ে প্রতিশোধ নিল। তবে মাহাথির বিজয়ী যেমন প্রশংসা কুড়াচ্ছেন, তেমনি হারলে ব্যাপক সমালোচনা স্বীকার হতেন নি:সন্দেহে।
মাহাথিরের ফিরে আসার মধ্যে চমক আছে। পাকাতান হারাপান বা এলায়্যান্স অব হোপ ব্যাপক জনপ্রিয় মালয়েশিয়ায়। এর প্রধান আনোয়ার ইব্রাহিম। দুই ক্ষমতাসীনদের রোষানলের শিকার হয়ে কারাগারে। খোদ মাহাথিরই তাকে প্রথমবারের মতো কারাগারে ঢোকান। রাজনৈতিক মামলা দিয়ে তাকে প্রতিহিংসাবশত কারাগারে পাঠানো হয়। এখন মাহাথির তার ভুল বুঝতে পারছেন। তিনি নাজিব রাজাককে উত্তরসূরি মনোনীত করেও ভুল করেছিলেন তা বলেছেন। এও বলেছেন, আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে তিনি যে আচরণ করেছেন তাও ভুল ছিল। এরজন্য তিনি অনুতপ্তও।
একজন আনোয়ার ইব্রাহিম। দেশের যুবকদের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয়তা তার। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে তিনি প্রবাদপ্রতীম জনপ্রিয়। তাকে মাহাথির যখন জেলে পুরলেন তখন পুরো দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু আনোয়ার ইব্রাহিমের নির্দেশে সব শিক্ষার্থী রাজপথ থেকে ফিরে গিয়েছিল। পরে তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছিলেন ২০১৩ সালে। ২০১৫ সালে জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তাকে আবারো মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে জেলে পাঠাল নাজিব সরকার। তবু তিনি দমেন নি। কারণ তিনি আল্লাহভিরু ঈমানদার।
আনোয়ার ইব্রাহিমকে মাহাথিরও রাজনৈতিকভাবে জেলে পুরেছিলেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এজন্যই এখন মাহাথির অনুশোচনা করেছেন। কারণ তিনি জানেন আনোয়ার কত বড় যোগ্য নেতা।
আনোয়ার ইব্রাহিমের ব্যাপারে বলা হয়, তিনি যেমন প্রধানমন্ত্রীত্বের যোগ্যতা রাখেন তেমনি অক্সফোর্ডের টিচার হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। একারণেই মূলত তিনি মাথাথিরের উত্তরসূরী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন একসময়। কিন্তু দলীয় সংকীর্ণতার ছোবল তাকে তা হতে দিল না। আর এর পেছনে ছিলেন সেই মাহাথির। এখন মাহাথিরের উপলব্ধি হয়েছে, আনোয়ারের প্রতি তিনি অবিচার করেছিলেন। সেই পাপ মোচনের কারণেই মূলত ফের নির্বাচনে আসা। মালয়েশিয়ার আপামর জনতা আনোয়ার ইব্রাহিমকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখার অপেক্ষোয় রয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৫