যারা আগে পড়েনি তাদের জন্য একলাইন। সুভিউ মানে হল “সুমনের বুক(বই) রিভিউ”
আজ অন্যদের রিভিউ নিয়ে সুভিউ করা হবে। আমরা অনেকদিন থেকেই বিভিন্ন পত্র পত্রিকার সাহিত্য পাতায়,ম্যাগাজিনে ও ব্লগে বিভিন্ন লেখকের বইয়ের রিভিউ পড়ে আসছি। এ রিভিউ গুলো সেইরকম একটা জিনিস হয়। যারা পড়েছেন তারা জানেন।
সেদিক থেকে আমার সুভিউ তো বুক রিভিউর মধ্যেই পড়ে না। তো সাহিত্য পাতা ও ম্যাগাজিনে যারা বুক রিভিউ লেখেন তাদের কেউ কেউ এত অসাধারণ করে লেখে যে, যে বইয়ের রিভিউ করা হয়েছে সেটা তখনই কিনে পড়ে ফেলতে ইচ্ছে করে।
ঐ রকম কয়েকটা রিভিউ পড়ে আমিও বোধহয় দু একটা বই কিনেছিলাম। বইগুলো পড়ে আমি ঐসব রিভিউ লেখকদের নাম দিয়েছি “ঘুষখোর রিভিউ লেখক”। কারণ ঘুষই যদি না খাবে তবে এত বাজে উপন্যাস আর গল্পের বই সম্পর্কে এত প্রশংসাপূর্ণ রিভিউ কীভাবে লেখা সম্ভব?
আগের একটা সুভিউতে তাই লিখেছিলাম বুক রিভিউ লিখতে আলাদা প্রতিভা লাগে! এটা সবার থাকে না। যেমন আমার নেই। আমি যেসব বই পড়ে প্রতিভা ও সৃষ্টিশীলতার পরিচয় পেয়েছি তা আমি অন্যদের জানানোর চেষ্টা করেছি এবং করব। এটার নামই হবে সুভিউ। কোন ঘুষ খাওয়া রিভিউ না।
যারা কয়েকটা সুভিউ পড়েছেন তারা জানেন সুভিউ আকারে ছোট। তাই সুভিউকে আপনারা Kiss view বলতে পারেন।
Kiss এর অর্থ প্রায় সবাই জানে। প্রায় সবাই যেটা জানে এখানে Kiss মানে সেটা না। এখানে Kiss মানে হল Keep It Simple and Small।
যে বিষয়টা নিয়ে লিখছিলাম তা নিয়ে আরেকটু লেখার ইচ্ছা ছিল কিন্তু Kiss এর শেষ s বাধ্য করল লেখাটা এখানে শেষ করতে। সবার জন্য শুভকামনা এবং অভিনন্দন।
-------------------------------------
ফেসবুকে যে সুভিউগুলো লিখেছিলাম সেগুলো সব একসাথে দিলাম।
১)আমি বই লিখতে পারি কিন্তু বই এর রিভিউ লিখতে পারি না! ওটার জন্য বোধহয় আলাদা প্রতিভা দরকার! তবে আমি আমার পড়া বইগুলোর নাম শেয়ার করতে পারি। এটা করতে বিশেষ কোন প্রতিভার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না!! যেমন যারা থ্রিলার বই পড়তে পছন্দ করেন তারা পড়তে পারেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ থ্রিলার বই (আমার মতে) ড্যান ব্রাউন এর দ্যা ডা ভিঞ্চি কোড বইটি। শেষ না করে উঠতে পারবেন না... যাকে বলা হয় "আনপুটডাউনেবেল বুক"। (আশ্চর্য এত বড় রিভিউ লিখে ফেললাম!)
২) আজকে যে বইয়ের লাইকিক (লাইক পাবে যে রিভিউ) রিভিউ লিখব তা হল সাইকিক থ্রিলার "সাইলেন্স অফ দ্যা ল্যাম্বস" লেখক থমাস হ্যারিস। আমি পড়েছি সে খুব ভাল লেখে। কাহিনী ভাল। তবে এই ব্যতিক্রম বুক রিভিউতে আমি বইটি পড়ার আগে এই বই নিয়ে যে চলচ্চিত্র তৈরী হয়েছে তা দেখতে বলব। কিন্তু....
কিন্তু... সেই ছবিটা দেখার আগে দেখতে হবে রেড ড্রাগন ছবিটি। তারপর সাইলেন্স অফ দ্যা ল্যাম্বস। তারপর হ্যানিবাল ছবিটি। তবে এই সব কিছু করার আগে হ্যানিবাল রাইজিং ছবিটা দেখলেও দেখতে পারেন। না দেখলেও কোন সমস্যা নাই। আমিও দেখিনি!! তাই বলে এটা বুঝতে কোন অসুবিধা হয়নি সাইলেন্স অফ দ্যা ল্যাম্বস সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ থ্রিলার মুভি (অনেকের মতে)।
আপনি প্রশ্ন করতে পারেন তবে ড্যান ব্রাউন এর দ্যা ডা ভিঞ্চি কোড যদি সর্বশ্রষ্ঠ থ্রিলার বই হয় তবে সেটি নিয়ে যে চলচ্চিত্র হল তা সর্বশ্রেষ্ঠ হল না কেন? খুব সহজ উত্তর। পরিচালক ছিল পচা। আমি এতক্ষণ যা লিখলাম তা যদি ঠিকঠাক বুঝতে পারেন তবে তিনটি ছবি দেখা শেষ করে যদি আংরেজী ভাষা হবার কারণে ছবি থেকে কাহিনীর কিছু কিছু জিনিস বুঝতে ব্যর্থ হন তবে সাইলেন্স অফ দ্যা ল্যম্বস বইটির বাংলা অনুবাদ কিনে পড়ে নেবেন। আশা করি এই কালজয়ী রিভিউর ভ্যালুয়েশান হবে!!
৩)
যারা ছ্যাঁক খেয়েছেন বিয়ের আগে বা পরে তাদের জন্য আমি একটি বইয়ের সুভিউ (সুমনের রিভিউ!) দিচ্ছি। বইটির নাম "বিত্তবাসনা"।ওপার বাংলার লেখক "শংকর" রচিত। আমি পড়েছি। সে খুব ভাল লেখে। এটাও ভাল লিখেছে। রিভিউতে কাহিনী সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়। সুভিউতে সময়ের অভাবে তা করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। আর আমি যদি বড় করে লিখিও আপনার পড়ার এত সময় কই? আপনি বইটি পড়ার সময় করতে পারবেন কী না তারই কোন ঠিক নাই আর আপনি আসছেন আমার ছোট সুভিউর সমালোচনা করতে! ফুটেন তো! ও হ্যাঁ পারলে বইটা পড়ে নিয়েন। Love হবে! আজ এখানেই ইতি। সুভিউর সঙ্গেই থাকুন!
৪)আবারও সুভিউ(সুমনের বুক রিভিউ) হাজির। আজ যে বইটির সুভিউ করব তা হল সমরেশ মজুমদারের "আট কুঠুরি নয় দরজা"। সুভিউর শুরু থেকে যারা সঙ্গে ছিলেন তারা বুঝতে পারছেন থ্রিলার বই এর প্রতি আমার খুব দুর্বলতা আছে। আর আমি যেসব বইয়ের নাম শেয়ার করছি সবই জনপ্রিয় বই।
এখন আমার পছন্দের বইগুলো জনপ্রিয় হয়েছে এটা তো আমার দোষ নয়! দোষ লেখকের এবং আপনাদের! যারা বইটি জনপ্রিয় করেছেন! বিদগ্ধ অনেকেই এগুলো বহু আগে পড়ে ফানা ফানাকরে ফেলেছে।
তারপরও যদি কোন বই পডুয়া গাধা এ বই না পড়ে থাকে তার জন্য এ সুভিউ। আজকের সুভিউ একটু বড় হচ্ছে কারণ বইয়ের নামটা আপনাকে খেয়াল করতে হবে। আট কুঠুরি নয় দরজা। কিন্তু আগেই বলেছি সময়ের অভাব। সব কুঠুরি আর সব দরজা নিয়ে আলোচনা সম্ভব নয়! কয়েকটা লাইনে শেষ করে দেব। বহু আগে পড়া বই যা লিখছি তা ঠিকঠাক হবে কী না তা নিয়ে শংকিত আছি।
মূলকথায় আসি। বিপ্লব সাধারণত যাকে ঘিরে আবর্তিত হয় অর্থাত বিপ্লবের আইকন, তার মৃত্যুর খবর যদি ছড়িয়ে পড়ে এবং মানুষের কাছে বিশ্বাস করার মত যথেষ্ট প্রমাণাদি থাকে তবে আইকন বিপ্লবী যদি আবার ফিরেও আসে তবু সে আগের সেই মোমেনটাম কখনোই তৈরী করতে পারেনা। আমি নিজেও এটা বিশ্বাস করি যে আইকন বিপ্লবীর মৃত্যু বিপ্লবকে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ পঙ্গু করে দেয় যদি না সেই আইকন বিপ্লবী তার যোগ্য উত্তরাধিকারী গড়ে না দিয়ে যেতে পারে। এ পর্যন্ত পড়ে আপনার মনে হতে পারে এতে থ্রিলার এর কী আছে? মজাটা সেখানেই।
এটা একটা আপাদমস্তক থ্রিলার বই। সমরেশ মজুমদারের মাস্টারপিসগুলোর একটা। আচ্ছা আমি সমরেশের সব বই পড়িনি। অল্প কয়টা পড়েছি। তাতে আমার মনে হয়েছে সমরেশ মজুমদারের মত নারী চরিত্র এত ভালভাবে আর কেউ ফুটিয়ে তুলতে পারে না।
এ গল্পে অসাধারণ এক নারী চরিত্র আছে। পড়লেই বুঝবেন সে কে। কী সেই আট কুঠুরি নয় দরজার চিরন্তন রহস্য। বইটা পড়ে বাইরে গিয়ে একটু আকাশের দিকে তাকাবেন। দেখবেন আকাশটা এখন আর লাল নয়। আকাশটা নীল কিংবা ধূসর। আকাশলাল পারেনি আকাশটাকে রঙিন করে রাখতে। তবে সমরেশ পেরেছেন তার লেখনী রঙিন রাখতে।
(সুভিউর খুব একটা সুসময় যাচ্ছে না। কারণ এত মানুষ পড়েও লাইক পাই দু একটা। পরবর্তী সুভিউ লেখার আগে এটা নিয়ে ভাবতে হবে।)
সুভিউর সঙ্গেই থাকুন। (খুব তাড়াহুড়া করে পোস্ট সাজাইছি। খাপছাড়া লাগতেই পারে! )
---------------------------------