আমাদের কোম্পানিটা যাই করে ….করে একেবারে একচেটিয়া । নৈতিকতা এইখানে একটাই “মন-পছন্দ” না হলে কিনবার ঝামেলায় যাবেন না এবং কিন্তুটা এখানেই। কিন্তু পছন্দ না হওয়ার কোনো কারণ নেই জানবেন । যে কোনো প্রোডাক্ট আর এ নিয়ে যারা ভাবছেন গবেষণা করছেন, এধরনের বিজ্ঞানকর্মী- এমনকি যে সব শিল্প-প্রতিষ্ঠান সমজাতীয় দ্রব্য উৎপাদন করছেন তাদেরকেও আমরা কায়দা করে ফেলি। এই যেমন বাজার থেকে ওদের সমস্ত প্রোডাক্ট কিনে মওজুদ করে ফেলি। মওজুদ করে আমাদের প্রোডাক্টেরও চালান বন্ধ করে একটি চালান সঙ্কট সৃষ্টি করি, যোগান চাহিদার নট্-খট্ বাঁধিয়ে উপযোগ দরের একটা খেল শুরু হয়... এরপর... আমাদের প্রোডাক্ট সীমিত মাত্রায় চঁড়া দামে এবং পরে বাজার সয়লাব হয়ে পড়ে । হতেপারে একচেটিয়া কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিপক্ষের প্রতিষ্ঠান-কর্মী সহ কিনে ফেলে দিলাম... এমনকি “জীবন প্রেমিকের এই জীবন যুদ্ধে” সকল নৈতিকতা একটি যথার্থ বিন্দুতে এসে মিশে আছে সমস্তটায়। আমার মিট দা প্রেস, গণসংযোগ, পাবলিক এওয়েআরনেস্ প্রোগ্রাম কিংবা নগর বা সামাজিক বনায়ন, উপবৃত্তি-চ্যারিটি আর শিল্পী-লেখাপড়া জানা সে বিষয়ের উপর স্পেশালাইজড লোকজন দিয়ে আগে-ভাগেই প্রোডাক্টটা গিলিয়ে ফেলি।
বাজার তৈরি করি কনসিউমার -রা মার-মার, খা-খা করে ওঠেন। ওঠেন নড়েচড়ে প্রোডক্টটার জন্য পকেট ফাঁকা করতে। নট-নটী-নর্তকী, গায়ে পড়ে নেচে-কুঁদে ওঠেন। তাদের কনসুমারদের স্বপ্নের জগতের স্বপ্নের মানুষ যেখানে সকল কল্পনার সফল সমাপ্তি ঘটে আর বাস্তবের আঁতুড়ঘরে সূচনা হয় সেটিকে টেনে-হিঁচড়ে আনবার আয়োজন। জোর জবরদোস্তির গুরু পাক বেশি হলে? যে কোনো কারনে কেইস্টা যে কোনো ক্রিটিক্যাল দিকে টার্ন করলে বাক্-চতুর-কপটবুদ্ধিবৃত্তিক লুম্পেন লেলিয়ে দেই। বলেন যথাবিহিত সম্মান রেখেই বলছি... ওরা বলেন “এ কেবল সৃষ্টির প্রসব বেদনা মাত্র” কেবল তাই না... বলেন... “নীরবে সহ”...
“ঝিনুক নীরবে সয়ে যায়, গোপনে মুক্ত ফলায়” সেটিও প্রতারণা-প্রলোভন না হলে সোজা অঙুলে ঘি তোলার প্রয়োগ বিধি ও কৌশল সব কিছু ছকা। শুধু ‘রাইট’ বলে বাটনটা ক্লিক করা এবং লাইক ওয়াইজ “হেয়ার উই আর” বলে উঠে দাঁড়ান -এটাই ধর্ম এটা জাস্ট থট্ “কিং ইজ অল্ওয়েজ রাইট”। “হিয়ার উই গো এ্যাগেইন”দাড়িয়ে বললেন বস্। এ যুগের প্রচুর সংখ্যক প্রজা সাধারণ, শ্রমজীবী নিরন্নরা- আমাদের জন্য নীরবে মুক্ত ফলায় এবং রাজাকে উৎখাতও করা হয়েছে এদেরই ভাঁও করে। তাই আমরা বলি পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরস্থিতিতে “বস্ ইজ অলওয়েজ রাইট”আর কিং জিনিসটা সেকেলে। দেবতারা স্বর্গোদ্যানে নদনতত্ত্ব-কান্তিবিদ্যা-শ্রান্তি বিনোদনে সদা-সব্যস্ত থেকে এই নোংরা জঞ্জালতার হাড়-হ্যাংলা, নোংরা-নাঙা মানবিকতার পুঁতিগন্ধময় পৃথিবীর “আদার সাইড অব দ্য স্টোরি” দেখে-শুনে মেজাজ বিগড়ে গেছে বলে যে গুজব রটেছিল, সত্যিটা সেটা আরও ভয়ঙ্কর। নন্দকাননের অপ্সরার গালে চড় বসিয়ে দিয়েছেন বলে ভিডিও ফুটেজ গোপনে স্বর্গ থেকে মর্তে চলে এসে মিডিয়ার কব ওয়েব তোলপাড়। এখন তাই মানবৈতিহাসে চলছে কে কাকে চড় মারতে পারেন । কত রকম এবং কীভাবে। কেবল “কেনটাকে” ছকে আনতে হবে এই যাহ...।
দেবলোকের অজানিত ঘটনার দু-একটা রেশ ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীর মোহ-মলিনতা। এগুলো নিয়ে ভাবলে সাধারণ্যের চলে না। আর দেবতারা সব সময়ের ফ্যাশন আইকন-আইডল। তবুও কথাটা রটে গেল, চটে গিয়ে, পার্কের নিস্তরঙ্গ নোংরা জলে তাদের প্রতিবিম্ব দেখে প্রেমিকা নার্গিসকে যুবকটি চড় মেরে বসলেন। ভিকটিমকে সমাজ কর্মী-আইন বিশেষজ্ঞ, বড় দুলাভাই কানপড়া দিলেন, বললেন ফুসলানো কথা । কনভিক্টেড্ জিজ্ঞাসিত হলে অভিজ্ঞ আইন কুশলী বললেন তিনি কোনো মোটিফ ছাড়াই ‘মাল্টিপারপাস লোটে অর্গানিক ফিউশন’ ড্রিংক করা অবস্থায় বিবেচনার জ্ঞান রহিত হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন এবং ডাক্তার কবিরাজ-বৈদ্য-হেকিমের দস্তখত করা এক কাগজে এ বিষয়ে রিপোর্ট, বিজ্ঞ আদালতের পেশকারকে দিতেই লাল ফিতেয় পেঁচিয়ে ফাইলে বন্দী করে গুপ্ত স্থানে রেখে গলাকাটা দর হাঁকালেন। ছিঃ ছিঃ উৎকোচের জন্য হবে কেন? এমনি একটি তোফা উপঢৌকন-গিফট্ এবং রিটার্ন গিফট্। এটাই সংস্কৃতি, একটি সাংস্কৃতিক অভিযোজন এটাই কালচারাল প্রেক্টিসেস্, সোশ্যাল ভিশন এবং নর্মস... ইত্যাদির পর ফ্যাশন । এবং ভিকটিমের বড় দুলাভাই ঢেকুর তুলছেন এবং আপোসের কথা বলছেন যুবক তখনও মদমত্ত-স্বরভঙ্গ ইত্যাদি ভাব-অনুভাব আর বিভাবে গড়া-গড়ি খাচ্ছেন। সব পত্রিকা, দৈনিক- সাপ্তাহিক খবরটা কাভার করে, ধারাবাহিক অনুসন্ধানী রিপোর্ট ছেপে ছেড়েছে । আদালত প্রাঙ্গণ থেকে দুজনা বেরিয়ে আসবার আগে রং-বেরং এর কাপড় জামা পরে অনেকের সাথে নাচন-কুর্দন করলেন এবং একপর্যায়ে মেয়েটির দুলাভাই পারিবারিক বৈরী সম্পর্কের জের ধরে লোক-লস্করসহ ফিল্মী কায়দায় ঝাঁপিয়ে পড়লেন চড় মারবেন বলে। নাচলেন এরপর যুবা পুরুষটির স্বাভাবিকভাবেই কুঁদে উঠবার পালা। মেয়েটি টেনে টেনে মিহি চিক্কুর পাড়লেন “বা-চ্চা-ও, বা-চ্চা-ও ,ডাকুনে মুঝে ছিনলিয়া”...
যুবকটির নৃত্যসহচর সহচরীরা অনিত্য আশুলয়শীল দুনিয়ায় পরস্পরকে অন্য আর একটা নাটকে একস্ট্রা হিসেবে কাজের অজুহাত দেখিয়ে কেটে পড়লেন এবং যুবা-পুরুষটি “কুত্তে-কামিনে, মে তেরে খুন পিউঙ্গা” বলে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বেন কী পড়বেন না ভাবছেন- ঠিক তখনই বেরসিক কমার্শিয়াল ব্রেক। মেয়েটি তখন “ ছোড়দো-মুঝে ছোড়দো ডাকু, গুন্ডে- তুই আমার দেহ পাবি...” ইত্যাদি বলছেন আর হাত ছাড়াবার মিথ্যে কসরত করে চলেছেন। পীড়নের এই দৃশ্য মেগা সিরিয়ালে হলে এই সিকোয়েন্সের ঠেলাতেই সুপারহিট, বাম্পার ফলন, পাঙ্গাস রেপিড গ্রোয়ার, সহজ কিস্তিতে ঢাকার প্রাণকেন্দ্র থেকে মিনিট দশেক দূরে (তবে ব্যোমা যানে) রেডি ফ্ল্যাট বিক্রি ও বরাদ্দ চলছে নির্মাণকাজ ঝঞ্ঝার গতিতে এগিয়ে চলেছে... এসব দিয়ে এ্যাডভার্ট করা যেত। যাক ব্রেক কি বাদ হওয়ার পর দেখা গেল নায়কটি ছয় কী সাতজন লোককে ধরাশায়ী করে ফেলেছেন। ফেললেন-মারলেন, হাত মুচড়ে দিলেন, মেয়েটি ছাড়িয়ে নেবার চেষ্টা-অপচেষ্টায় রূপান্তরিত হলো। একদল বব্ড হেয়ার ইংরেজি মিশিয়ে ‘বাত বলা’ মহিলা জড়ো হলেন এবং যুবকটির মতিভ্রম, রিপু তাড়নায় কোনো কারণ ছাড়াই নারী উন্নয়ন নেত্রীর বক্তৃতা দেখতে লাগলেন এবং বাংলা ভাষাটি ইংরেজি থেকেও দূর্বোধ্য ঠেকলো তার কাছে। তবুও তার মনে হলো যৌনসঙ্গী হিসেবে ইন্টেলেকচুয়াল মেয়েরাও কম কর্মোদ্দীপক নয়। মেয়েরা বুদ্ধিতে খাটো তাদের মগজের খর্বাকৃতির কারণে, এসব লিঙ্গবাদী রাজনীতির শোষণ-পীড়নের কৌশল, নারী মেহনতী খেটে খাওয়া আর সকল নকল মানুষের মাঝে অধিকতর নিবর্তনের শিকার। কিছু লোকজনও জুড়ে গেল। বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে দিবসটি পালিত হলো- সেমিনার, সিম্পোজিয়াম দেশীয় জি.ও/এনজিওÑ মানবাধিকার সংগঠন ও কর্মী, এক্সপার্টিস এবং দাতাগোষ্ঠী ও দেশের ত্রাতারা নিজ-নিজ নারায়ণকে স্মরণ করলেন। আঞ্চলিক প্রমিত-চলতি ও আলালী রীতির বাঙলা ভাষার সাথে সাথে ডোনার এজেন্সী ও কান্ট্রির ভাবউদ্রেককারী কার্যকরী শব্দগুলো জুড়ে-জুড়ে যা দাঁড়াল তার থেকে ‘সত্য’ তাৎপর্যপূর্ণরূপে গায়েব হয়ে গেল আর কি । ভাসা-ভাসা ভাবে যা বোধগম্য হলো তা শুনে এক কথায় এক ব্যবসায়ী বললেন দুহাত তুলে তর্জনী উঁচিয়ে ‘তার পক্ষ-এবং ব্যবসায়ী সমাজের পক্ষ থেকে বিপ্লবী অভিনন্দন’ এবং আর্টিস্ট ধরণের ফেঁচকা ছোড়াটি বললেন, ‘এক কথায় ব্রিলিয়ান্ট’ তার কোমর পেঁচিয়ে থাকাটি বললেন ‘সুপারব্’---। মেহনতী-নিপীড়িত নিরন্ন, ভূখা-নাঙা মানুষদের কথা বলছেন শহরের সেইসব কল্পনার দেবলোকের ছায়ায় পালিত গল্পে শোনা মনুষেরা! যাদেরকে মনে হতো ওদের জান্যই যেন এ আমাদের পৃথিবীর জীবনটার আজ এমন করুণ পরিণতি। ছিল জমিদারের শিক্ষিত ছেলে, মাষ্টার, ডাক্তার পড়ুয়া ,পুরোহিতের তনয়, শিল্পী-সাহিত্যিকের তনয়া ...হতে চাওয়া মানুষদের কে নেই বলুন সেখানে?
শুধু কেন্দ্রীয় চরিত্রের যুবা মহিলাটি। তিনি করেছেন সম্ভ্রমহানির মামলা ও তার যে ইজ্জত চলে গেছে তার ক্ষতিপূরণ করতে পারে এমন একটি টাকার অঙ্ক দাবি করেছেন। পরিবর্তিত পরিস্থিততে মামলায় জিতে নায়কের হাত ধরলেন আর গান ধরলেন ‘হাম ঔর তুম চালি যাউ দূরে...’।
কিন্তু চাচা বিপ্লব কতদুর? এ প্রশ্নে গাজিপুর, নওাবপুর- নাকি জয়দেবপুর এ নিয়ে দর কষাকষি চললও বেশ।
পারিশ্রমিক-আপোস রফা নাকি দণ্ড বোঝা গেল না। কে বলেন? কে! কে বলেন যে... বুদ্ধিজীবী মার্কা মারা মেয়েরা যৌন- উদ্দীপক নন? যৌন-আবেদন ছড়াতে পারেন না? এসব লোকের এধরনের সাজায় কাজ হবে না। দণ্ডটি স্ফীত অবস্থায় গূহ্যদ্বার ফাটানো দৃষ্টান্তমূলক ‘ইয়ে’ দিতে হবে। নারীর আসল/আঁচল/নাকি অ্যাসোল চরিত্র-চেহারাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতেই হবে । বসাতে হবে মর্যাদার আসনে, চাই যথার্থ মূল্যায়ন ও মর্যাদার পুনরুদ্ধার... (আঞ্চলিক, আলালী রীতি, চলতি, প্রমিত, গ্লোবাল-গেঁয়ো উচ্চারণে এগুলো না বুঝলেও সমঝদারের লাহান মাথা নাড়তেই হলো, নোট, জটস্ রাখতেই হলো) একজন কলিগ কেরুর মিসকল্ গার্লফ্রেন্ডটাকে দিতেই তা পেয়ে দ্রুত রিপ্লায় নিষ্পত্তি করলেন ‘মিসিং ইউ’আর তাই দক্ষিণের খোলা জানালা দিয়ে আকাশ দেখছি। দেখছি মুক্ত আকাশে মুক্ত বিহঙ্গের খেলা। তিনিও খেলছিলেন-খেলাচ্ছিলেন। নিম্নাংশের বস্ত্রাদি বলতে টপসের প্রান্তিক অংশটিই সম্বল- বলতে পারেন একমাত্র পোদাবরণ। তিনি কী উপভোগ করছিলেন জানি না। পার্টটাইম লাভার বয় তার নিতম্বের দুপাশের মাংসল-স্ফীত অংশ আর এর মাঝের চেড়া খাঁজ মতো জায়গায় তার হাতটি বোলাচ্ছিলেন । উপভোগ করছেন পাঠক? বক্তা বলছেন, ‘নারীকে যথার্থ সম্মান দেতে অইবে, তাহাকে যোইগ্য আসনে বসাতে হবে...’। (চকলেট বয় হ্যাজ বিকাম হার) লাভার বয় মেয়েটির নগ্ন পোঁদে যে চুমুটি খাচ্ছিলেন সেটি শব্দমানতা নিয়ে প্রকাশিত কিংবা মুক্তির মূর্ততা নিয়ে মেয়েটির মুখ গহ্বর থেকে চুমুর শব্দে যুগ্ম পদে বেরিয়ে এলো। সেল ফোনে ছেলেটি শুনে বলছেন, ‘মিস ইউ টু’ –থ্রি-ফোর,ফাইভ এ জাতীয় ইত্যাদি এবং অবশ্যই ‘ছিঃ ইউ ’ এ জাতীয় ইত্যাদি...।
থাক সেসব । মানুষের বহু দিনের লালিত স্বপ্নগুলো, হারাতে বসা স্বপ্নগুলো -আজানিত স্বপ্নগুলোর দরজায় দিড়িম দিড়িম করে দুঘা বসিয়ে দিলেন তথাগতরা। কোত্থেকে আগত? মানে সভায় অভ্যাগতরা। বড় বড় আশার কথা শোনালেন বললেন- চিরায়ত উম্মীলনের কথা, মুক্তি-সামাজিক সাম্যাবস্থা, খাওয়া-থাকা, পাবার-দেবার, পরার-পড়ানোর কথা, শান্তি-নিরাপত্তা-স্বস্তির, স্বকীয়তা ও তার উন্মেষের কথা, ব্যক্তির কথা, যুথবদ্ধ মানবিক উন্মেষের কথা। কথাগুলো শাশ্বত-চিরকালীন-সর্বময়তা নিয়ে ব্যক্তিকে ভাসিয়ে নিয়ে চলে গেল। আর ‘বস্, আমার বস্’ ফিউডাল সমাজের প্রতি যুগপদ বিদ্বেষমোহতায় কিং কথাটাকে ছেঁটে দিয়ে আমাদের বলতে শেখালেন ‘বস্ ইজ আল্ ওয়েজ রাইট’। বস্ উঠে দাঁড়াতে-দাঁড়াতে বললেন― ‘বাইডা ওয়ে ব্যওসার কোনো সুসমাচার? ইয়াং স্টারস্ হিয়ার উই গো এগেইন...।’
আমি বললাম জায়গা হিসেবে নির্জন বিশুষ্ক বিজন এবং জনবিরল বন-প্রান্তরের আর অবহেলিত একদল আদিবাসী আধ বুনো মানুষের বাস যেখানে তেমনি এক জনপদের কথা। সেখানে একটি নির্দিষ্ট ফুলের গাছ তার রেণু, মধু, পত্র-পল্লব থেকে একধরনের ট্র্যাডিশানলি ওয়েল নারিসড্ জৈবিক রস তৈরি হয় এবং তা গেজানোর মাধ্যমে নব্য আধুনিক উত্তর সময়ের সোমরস বলে কনসিউমারের হাতে ধরিয়ে মার্কেটাইজ করা যাবে। তবে মার-মার ধরণের কাস্তমাইজ করে উঠাতে আর পকেট ফাঁকা করায়- সব্যস্ত করতে ক্রেতা সাধারণকে ‘ও হুজুর ’ বলে একবার ধরিয়ে দিলে এবং সেটা দিতে হবে ব্রান্ড এ্যাম্বাসেডারকে দিয়ে এরপর তার দফা-রফা।
‘টেরে বিন কেইসে জিয়া- বস্ সুর করেই বার কয়েক গানটার আংশিক...ও মুঝকো পানাহ্ পর ‘ছুবহানাল্লাহ-ছুবহানাল্লাহ’ বলে আমাকে যথাবিহিত সম্মানপূর্বক গালি খিস্তি/খেউর, মূখ করলেন। বললেন ‘ব্লাডি সিভিলিয়ান,-ডু ইউ নৌও এ ওয়েল রিনাউনড মেথ- মেটিসিয়ান ফর্মালি নেমড্ এজ ইয়াদোভা।’ আমি নিজের জিভের পানশে স্বাদটা মূখের ভেতর লালাসহ আমতা-আমতা করে গ্রহণ করতে চাইলাম, এর ভেতর চাইলাম ভাবতে এবং মনে মনে ভাববার সময়। ‘আজ্ঞে-জ্বি হ্যাঁ, যাদবের পাটিগণিত করতে গিয়ে আমি কেন আমার বাবা-দাদারাও বহুভাবে ওর চৌদ্দগুষ্টি বহুবার উদ্ধার করেছেন বহু আগে থেকে, কিন্তু কেন ব্যাবু? ‘ওয়েল...’ বলে তিনি দম লন্। নিয়ে বললেন ‘একটি তৈলাক্ত বাঁশ একটি ব্যাবুনের পশ্চাৎদেশ দিয়ে ৬ নটিকাল মাইল পার সেকেন্ডয়ে ভরে দিলে তার অভিকর্ষজ বল-ভর এবং ভাবাবেগের ক্ষতিপূরণ কত? নট্-টু-বি মেনশনড্ এ্যমাউন্ট-টা বাংলা টাকায় বলিও।’ সাহেব-সুবা আদমিলোগ তাদের মেজাজের উর্ধ্বপতন-ভালোবাসার যৌনাভূমিক প্রবণতা, তার চাহিদা/যোগানের গতানুগতিক সমানুপাতিক ডিস্ট্রিবিউশন-এ আমার হরিপদ কেরানির বুঝে ‘কাম নাই’। আমি বুঝি কর্মেই মুক্তি―মুক্তিই মোক্ষ। জেলখানার ‘মাছি দফার’ কামপাস জোগাড় করছি চেষ্টা আর তদবির কসরতের তূফান ছুটিয়ে। বড়বাবু, মিঞা সাহেবকে নগদ দিয়ে-থুয়ে। ডোভ সাবান, বেনসান, বিড়ি-চুরুট দুজনারই খুব মান-পসন্দ্। আমার বস্ নারায়ন বললেন ‘ঘুঘু দেখবে, মাছ খাবে লাঠি ভাঙবে ওদের কিন্তু, কিন্তু... হেল লটস অব্ কিন্তুস্ উইল বি রিমেইন্। রথ দেখানোর মুলো ঝোলাও, পিঠের ভাঙা কুলোটাও খুলে মানবিকতার ছাইপাস ঝেঁড়ে ফেলতে দিয়ে দাও, কানের তুলো খুলে ফেলে ব্যন্ড বাজাও- সাম্বা ,বেলি ড্যান্স-বলিউড হিপ সেকিং। এক্সপার্টিস্- প্রফেইশনালসের স্তূপ বানিয়ে ফেল্। যারা আর্টের নামে নগ্নতা-অশ্লীলতা বোঝাবেন, নারী-পুরুষ সমতার নামে পরস্পরকে বিপ্রতীপ অবস্থানে দাঁড় করিয়ে একে অপরের প্রতি বিদ্বেষ ছড়াবেন, নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অন্যের অধিকার হরণের কথা স্বাধিকারের নামে , যা ইচ্ছে হয় তাই করবার স্বেচ্ছাচারকে স্বাধীনাতা, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যতা-স্বকীয়তা বলে প্রবৃত্তিকে উসকে দিয়ে রিপুর দাসে পরিণত হবার ব্যক্তি ও সামষ্টিক তাড়নাকে আত্মনিয়ন্ত্রিত ব্যক্তিদের স্বতস্ফূর্ত স্বকীয় বিকাশ, লজ্জাহীনতাকে ফ্রিডম্ অব্ এক্সপ্রেশান বলে চালিয়ে দেবার কথা বলবেন। মাইক্রো লেভেল থেকে রিসার্চ এবং উপর থেকে বিজ্ঞ-গণ্য, মান্যবরেরা জল ঢালবেন আর ফিল্ড ওয়ার্কার্স দেখবেন কোথাকার জল কোথায় গড়ায়...তার পুলিতিকল সার্কাস।’ মোটা ভাত, মোটা কাপড়- গরিবি হটাবার কথায় মানুষ তাড়িত বোধ করতে শুরু করলেন। অনেকে চিন্তার দারিদ্র্যতাকে দুষলেন, ‘চিন্তা-চিত্তকে’ প্রসারতার কথা বললেন... কিন্তু বললেন না স্পষ্ট করে ‘তা কী করে সম্ভব...’ মানুষ তার ভাবনার জগৎ, চিন্তা নামক মানবিক প্রক্রিয়ার দারস্থ হলে অবশ্য প্রশ্ন-কিন্তুর দ্বিধাদ্বান্দ্বিকতার বাস্তব বস্তুতাকে নিয়ে গিভ আপ্ মানসিকতায় হাল ছেড়ে দেবার আগে যখন বলতে চায় ‘গিভ্ মি এ ব্রেক...’ ঠিক তখন বিজ্ঞাপিত করতে সেখানে ক্ষণিক বিরতির ছাইছলনায় দাঁড়িয়ে গেলেন ব্যান্ড এম্বাসেডার- ‘সকল অসম্ভবকে সম্ভব করতে আসিতেছে মাল্টি পারপাস লোটো অর্গানিক, লেকে-পিকে ভাসিয়ে দিন। আম আদমী কো লিয়ে সারে জাহা মহিলারা টয়লেট... ভাবসাব নিয়ে, তারও থেকে ভঙ্গি বেশি করে দাঁড়িয়ে-বসে, দৌড়ে, শুয়ে পোজ দেন আইডলরা...
ঐ পোঁদে চুমু খাওয়া আকাশ দেখা হাই-ফাইভ মার্কা মানে অভিজাত অর্থে পশ্চিমা ধাঁচের মেয়েটি যথাযথ ‘বিপ্রতীপ রতি’র বাৎসায়নের কোকশাস্ত্র নির্দেশিত আসনে বসে ওর সিক্রেট লাভারকে দিয়ে জায়গাটা মারাচ্ছেন। আর অজানিত আতঙ্ক, লোক-লজ্জা, সম্মানহানি, সর্বনাশ, সর্বনাশের নেশা নিয়ে ভয় আর কামজ তীব্রতা মিলিমিশে রতিসঙ্গীর নির্মম ছেদনে মেয়েটির কাতর রতি আক্রান্ত মত্তচিৎকার আর আর্তস্বরে মেয়েটি নিজেই চমকে উঠেন।ভয়-কামজ তাড়নার তীব্রতা নিয়ে অজানিত আশঙ্কায় বুকটা গুড়গুড় করে উঠে... বাজে চিন্তা, মিথ্যা ভয়, কুঞ্চিত কপালে একাধিক চিন্তার বলিরেখা রেখে যায়। পেছনে ঘাড়-কাঁধে একটা ঘামবিন্দু থেকে গড়িয়ে সাবলিলভাবে নিম্নভূমে চলে যায় মেয়েটির মেরুদণ্ড বরাবর। তারপর পশ্চাৎদেশের দ্বিখণ্ডিত উত্তল অংশে গড়িয়ে চাপ খেয়ে শায়িত প্রেমিকের অবাঞ্চিত রোমরাজির ভেতর হারিয়ে যায় তদসংলগ্ন এলাকায়। এলাকায় চলছে নীরব চাঁদাবাজি, নিয়োগ বাণিজ্য, নিয়ম-আইনের অপপ্রয়োগ, আন আফিলিয়াল ট্রিপ-ইনফর্মাল রেকামেন্ডেশানস্,ফর্মাল এডুকেশান। আর উঠান বৈঠকে নারী/পুরুষ দেখছেন কী করে বীর্য নির্বীয করণে রাবারের ব্যবহার... জড়তা কাটিয়ে পরস্পর সকলে একত্রে দেখছেন গোপনাঙ্গাদির সচিত্র বিবরণ। নারী তার নিজ পুরুষ থেকেও ভেরী ইনফ্লুয়েন্সিলের সাথে ওঠা বাসা করছেন, বলছেন জোর আওয়াজ ‘বিপ্লব দীর্ঘজীবি হউক’... এমনি বলে নেতা লোকটি ক্ষমা ভিক্ষা দিলেন। আমরা তিনটা বাংলা-ইংরেজি দৈনিকে ক্লাসিফায়েড্ বিজ্ঞাপন ছাপতে দিলাম পর পর কটা দিন। প্রথমে বৃহস্পতি বার, শুক্রবার/শনিবার ছাড়া বাকি চারদিন ।তারবাদে প্রথমোক্ত দিনগুলোতে। এতেই চিত্র পাল্টে গেল। রেসপন্স এবং রেসপনসেস্। দু-ছেলে একটা মেয়ে লোকালিটির ভেতর থেকে আমাদের সাথে প্রথমে জুড়ে গেলেন। ওদের ট্রেইনি হিসেবে সাইজ, দে মিন ভাও করতে, ভরকে দিতে প্রলুব্ধ করে, লোভ-তাড়িত করতে নত হতে ফাটিয়ে দিলাম’(... আমি আবার আঞ্চলিক বাঙ্গালা শব্দ অভ্যাসভুল বশত বলে ফেলি যা ক্ষমার্হ।) সেই...
এক্সপার্টদের কাছে। এরপর এই তিনজন ওর নিজের এলাকা তার মানুষ ও ভাষা/সংস্কৃতি, সমস্তটা মানে মানুষ তার অতীত পারম্পর্য-ঐতিহ্য-ঐতিহাসিকতাকে ছোটলোকের নিম্নবর্গীয় ব্রাত্যজনের হিসেবে গ্রহণ করবেন (অথবা এবং তা বর্জনে সদা সচেষ্ট থাকবেন) এবং তাদের ডেভলপমেন্ট বা উন্নয়নে আমাদিগের ডায়াগনোসিস্ অনুযায়ী সব্বাইকে রোগী সাব্যস্ত করে, প্রেসক্রিপসান মোতাবেক বড়ি গেলাবেন...।
‘বটিকা- হ্যাঁ উন্নয়ন বটিকা’ এবং গিলতে অসুবিধা হচ্ছে? হলে বিজ্ঞাপন বিরতি এবং মালটি পারপাস লোটো আর্গনিক ফিউশন ড্রিংক , please enjoy লিখা থাকবে don’t forget to pay the price.চেইঞ্জটা নিতে নিতে ক্রেতা বলে বসবে, ‘সো কাইন্ড অব ইউ please keep the change|Õ সত্যি হাই প্রাইস আর এর বিনিময়ে প্রাপ্তিটা আরও টাইম,এফোর্ট-ইজ্জাত,জান-মাল সব বিনিয়োগ এর পর...।
অনুন্নত ও পশ্চাদপদ, অচলতার ধুমকর্দমাক্ত- ক্লেদক্লেশে উন্নয়ন সূচকের কাঁটা ব্যর্থতার ঘরে গাঁট হয়ে বসে আছে...। য়ে নিজেকেই ব্যক্তিব্যর্থতার দায় নিতেই হয়... এবং এর থেকে বেরিয়ে আসবার অদম্য ইচ্ছায় তিনটা রিক্রুট তিন ছেমড়া-ছেমড়ি ট্রেইনড্ আপ হচ্ছেন । এ মুহূর্তে ওনলি ইউরস ইউর হাম্বল সার্ভেন্ট...বেগ টু স্টেট দ্যাট- নতুন নিয়মে, কেতা-কায়দা রপ্ত করছে নিষ্ঠার সাথেই মাই প্লেজার বলবার ভঙ্গি । ভাব নিচ্ছেন, যে প্রসঙ্গ বিষয়ে তার কোনো ধারণাই নেই। সে-ই রম- সেইসব কথা আমার বস্ও আমাকে বলেছিলেন। এখন শেষ মুহূর্তে বললাম ‘মাই প্লেজার ’আমার বস্ কে ওল্ডমঙ্ক-এর একটা নতুন বোতলে মদ দিতেই... বললেন থ্যাঙ্ক ইউ... হারামখোর টোস্ট করলেন। ভাব থেকেও ভঙ্গি বেশি রকমের করে দাঁড়ালেন এবং ক্যামেরার সামনে, ফ্ল্যাসের আলোর ঝলকে-ঝলকানিতে মেয়েদের ঝকমকে দাঁতগুলো ঝিকিমিকি করে উঠলো, কারুর মনের খুশিতে মরেও যেতে ইচ্ছে হলো। জীবনে এর থেকে বেশি কিছু চাওয়া যায় না,হওয়াও যায় না তাদের মনে হলও। রিচ্ এন্ড ফেমাস, আইডল নীতি-নির্ধারক ক্ষমতাধর-প্রভাব বিস্তারী ইমফ্লুয়েন্সিয়ানাদের সাথে উঠাবসা এমনকি ব্যক্তিহৄদের কল্যাণকামী হিসেবে তার ওয়াইফের ‘আধ-কপালে’ ব্যামোর জন্য বনার্জি-আয়ুর্বেদিক ঔষধ কেনা কেবল যথার্থই নয় একমাত্র দাওয়াই হবে না তা নিয়ে আন্তরিক... (অন্তত অবস্থা দৃষ্টে তাদের তর্কালোচনার ভঙ্গি দেখে তাই ধারণা হবে আমার মতো নিরীহ গোবেচারাদের।) পরামর্শ আর যাবতীয় সব করে কাছের মানুষ বনে গেলেন অনেকে। এসব থেকে জীবনের কাছে মানুষ আর নিজের কী পরিণতি আশা করেন...? নতুন পুরোনো সব আশা বুকে নিয়ে বুক বেঁধে ভাব-ভঙ্গি নিয়ে দাঁড়াল ইয়ে টাল-মাতাল, লক্কড়-ঝক্কড় মার্কা মুড়ির টিন মার্কা বাসটা। নির্জন-আদিবাসী জন অধ্যুষিত, জনবিরল-বনপ্রান্তরে তখন ছায়াগুলো অনেক লম্বা দেখাচ্ছে সব কিছুর। সূর্য ঢলে পড়েছে আর ধুলো, শুষ্কতা নিয়ে সবকিছু লালচে। আমার সাথে নতুন রিক্রুট একজন বললেন ‘চলুন স্যার, পৌঁছে গেছি’ লোকটি আবার যান্ত্রিক বাহনটির ভেতরটা একবার চেখে নিল আই মিন চোখ দিয়ে দেখে নিল।‘মহিলাদের বসতে দিন- ৫ জন’, ‘ভরদতা বজায় রাখুন’, ‘ব্যবহারে বংশ পরিচয়’, ১০০ ও ৫০ টাকার ভাংতি নাই, পকেট সাবধান, অচেনা লোকের দেওয়া খাদ্য গ্রহণের বারণ করার উপদেশ এবং চলন্তাবস্থায় চালকের সাথে কথা না বলবার নির্দেশ আর সহযাত্রীরা নির্বাক সামাধিতে সমাহিত মানুষ, যারা সম্মোহিতের মতো লক্কড়-ঝক্কড়ের সাথে ঝাঁকি খেতে খেতে এক রকম এক লক্কড়-ঝক্কড়ই বনে গেছেন। মাঝে যদি বা কথা এরা বলেছেন তো শুনতে লাগছিল ঝগড়া। ঝগড়া-ঝামেলার মতো। অথবা দীর্ঘ নীরবতা নির্জীব, আবেগ ভাবলেশহীন ক্লান্ত স্বরগুলো বাসের হেলপার-টেলপারদের বাসটার ঝিম মারা গতিটাকে বাস্তবের সাথে বেঁধে রেখেছিল। মাঝে-মাঝে বিপরীত দিক থেকে আসা ব্যক্তিগত যানবাহনগুলোর খুব কাছে এসে পেছনে ফুস করে হারিয়ে যাবার মুহূর্তে বাতাসের সংঘর্ষের আওয়াজ পাওয়া গেল...
সারাদিন উত্তপ্ত ধুলো পোড়ানো দুপুরটা কাঁধে-মাথায় করে ধুঁকে-ধুঁকে একসময় বাসটি সেই জায়গায় এসে থামলো, ঠিক যেইখানটায় এসে থামবার কথা ছিল। চকিতে ওর মনে হলো সব পূর্ব নির্ধারিত। বাস দরজা দিয়ে নির্গমনের পর রাস্তায় পড়বার আগে-দেখলো দরজার মাথার উপরে লেখা ‘জনাব! কিছু ফেলে গেলেন কি?’ পেছনটা মুহূর্ত থেকেও কম সময়ে মাথার চিন্তাটায় খেলে গেল। মাথাটা একবার ঘুরিয়ে চোখটা দেখে নিল। পাশে বসা, আপাত নিরীহ চেহারার চোয়াল ভাঙা-ঝুলে যাওয়া, বারবার যিনি ঘুমতন্দ্রায় তার কাঁধে ঢুলে পড়ছিলেন, লালা শ্লেষ্মা মাখিয়েও দিচ্ছিলেন সেই তিনিই ফেলে রেখে আসা দৈনিক পত্রিকাটিকে নির্দ্বিধায় নিঃসঙ্কোচে নিজের করে নিয়েছেন আর সেটির উপর দখলকর্তৃত্ব জাহির করতে ভাব- ভঙ্গির মিলিত উচ্চারণে ‘সদর দফতরে কামান দাগছেন’ একটু পরেই তিনি (হয়তো) রাজনীতির সম্পর্কে শেষ এবং চূড়ান্ত ফয়সালা করে, মন্তব্য জুড়বেন...। এবং পুলিতিক্যাল ফরক্যাস্ট বা জাতীয় স্কুল অব একনমিক্সের চিন্তার কথাটা ঠোঁটে একটা চিকন হাসির প্রসারতা নিয়ে এই স্বল্প সময়ে রয়ে গেল। চলে গেল লক্কড়-ঝক্কড়টি অনেক আর অ-নে-ক কালো ধূয়া পেছন দিয়ে ছাড়তে ও ছড়াতে-ছড়াতে। লোকটি ওর নাম ‘সামির’ বলে জানায় সবাইকে। আমরাও এই গল্পে তাকে তাই ডাকবো-বলবো কেমন।
নেমে সামির শার্ট-কলার, চুল ঠিক করেন... এবার প্যান্টটা ঝেড়ে সামনে তাকালো ভালো করে। দেখলো মাটির কাঁচা ঘর রাস্তাটির দিকে পিঠ দিয়ে দাঁড়ানো এবং ওতে হস্তাক্ষরে গোটা-গোটা করে সুন্দর লেখা ‘এখন যারা ভালোবাসে তারা কেবল লিবার আসে,’ ।
আমাদের কোম্পানিটা যাই করে ….করে একেবারে একচেটিয়া । নৈতিকতা এইখানে একটাই “মন-পছন্দ” না হলে কিনবার ঝামেলায় যাবেন না এবং কিন্তুটা এখানেই। কিন্তু পছন্দ না হওয়ার কোনো কারণ নেই জানবেন । যে কোনো প্রোডাক্ট আর এ নিয়ে যারা ভাবছেন গবেষণা করছেন, এধরনের বিজ্ঞানকর্মী- এমনকি যে সব শিল্প-প্রতিষ্ঠান সমজাতীয় দ্রব্য উৎপাদন করছেন তাদেরকেও আমরা কায়দা করে ফেলি। এই যেমন বাজার থেকে ওদের সমস্ত প্রোডাক্ট কিনে মওজুদ করে ফেলি। মওজুদ করে আমাদের প্রোডাক্টেরও চালান বন্ধ করে একটি চালান সঙ্কট সৃষ্টি করি, যোগান চাহিদার নট্-খট্ বাঁধিয়ে উপযোগ দরের একটা খেল শুরু হয়... এরপর... আমাদের প্রোডাক্ট সীমিত মাত্রায় চঁড়া দামে এবং পরে বাজার সয়লাব হয়ে পড়ে । হতেপারে একচেটিয়া কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিপক্ষের প্রতিষ্ঠান-কর্মী সহ কিনে ফেলে দিলাম... এমনকি “জীবন প্রেমিকের এই জীবন যুদ্ধে” সকল নৈতিকতা একটি যথার্থ বিন্দুতে এসে মিশে আছে সমস্তটায়। আমার মিট দা প্রেস, গণসংযোগ, পাবলিক এওয়েআরনেস্ প্রোগ্রাম কিংবা নগর বা সামাজিক বনায়ন, উপবৃত্তি-চ্যারিটি আর শিল্পী-লেখাপড়া জানা সে বিষয়ের উপর স্পেশালাইজড লোকজন দিয়ে আগে-ভাগেই প্রোডাক্টটা গিলিয়ে ফেলি।
বাজার তৈরি করি কনসিউমার -রা মার-মার, খা-খা করে ওঠেন। ওঠেন নড়েচড়ে প্রোডক্টটার জন্য পকেট ফাঁকা করতে। নট-নটী-নর্তকী, গায়ে পড়ে নেচে-কুঁদে ওঠেন। তাদের কনসুমারদের স্বপ্নের জগতের স্বপ্নের মানুষ যেখানে সকল কল্পনার সফল সমাপ্তি ঘটে আর বাস্তবের আঁতুড়ঘরে সূচনা হয় সেটিকে টেনে-হিঁচড়ে আনবার আয়োজন। জোর জবরদোস্তির গুরু পাক বেশি হলে? যে কোনো কারনে কেইস্টা যে কোনো ক্রিটিক্যাল দিকে টার্ন করলে বাক্-চতুর-কপটবুদ্ধিবৃত্তিক লুম্পেন লেলিয়ে দেই। বলেন যথাবিহিত সম্মান রেখেই বলছি... ওরা বলেন “এ কেবল সৃষ্টির প্রসব বেদনা মাত্র” কেবল তাই না... বলেন... “নীরবে সহ”...
“ঝিনুক নীরবে সয়ে যায়, গোপনে মুক্ত ফলায়” সেটিও প্রতারণা-প্রলোভন না হলে সোজা অঙুলে ঘি তোলার প্রয়োগ বিধি ও কৌশল সব কিছু ছকা। শুধু ‘রাইট’ বলে বাটনটা ক্লিক করা এবং লাইক ওয়াইজ “হেয়ার উই আর” বলে উঠে দাঁড়ান -এটাই ধর্ম এটা জাস্ট থট্ “কিং ইজ অল্ওয়েজ রাইট”। “হিয়ার উই গো এ্যাগেইন”দাড়িয়ে বললেন বস্। এ যুগের প্রচুর সংখ্যক প্রজা সাধারণ, শ্রমজীবী নিরন্নরা- আমাদের জন্য নীরবে মুক্ত ফলায় এবং রাজাকে উৎখাতও করা হয়েছে এদেরই ভাঁও করে। তাই আমরা বলি পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরস্থিতিতে “বস্ ইজ অলওয়েজ রাইট”আর কিং জিনিসটা সেকেলে। দেবতারা স্বর্গোদ্যানে নদনতত্ত্ব-কান্তিবিদ্যা-শ্রান্তি বিনোদনে সদা-সব্যস্ত থেকে এই নোংরা জঞ্জালতার হাড়-হ্যাংলা, নোংরা-নাঙা মানবিকতার পুঁতিগন্ধময় পৃথিবীর “আদার সাইড অব দ্য স্টোরি” দেখে-শুনে মেজাজ বিগড়ে গেছে বলে যে গুজব রটেছিল, সত্যিটা সেটা আরও ভয়ঙ্কর। নন্দকাননের অপ্সরার গালে চড় বসিয়ে দিয়েছেন বলে ভিডিও ফুটেজ গোপনে স্বর্গ থেকে মর্তে চলে এসে মিডিয়ার কব ওয়েব তোলপাড়। এখন তাই মানবৈতিহাসে চলছে কে কাকে চড় মারতে পারেন । কত রকম এবং কীভাবে। কেবল “কেনটাকে” ছকে আনতে হবে এই যাহ...।
দেবলোকের অজানিত ঘটনার দু-একটা রেশ ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীর মোহ-মলিনতা। এগুলো নিয়ে ভাবলে সাধারণ্যের চলে না। আর দেবতারা সব সময়ের ফ্যাশন আইকন-আইডল। তবুও কথাটা রটে গেল, চটে গিয়ে, পার্কের নিস্তরঙ্গ নোংরা জলে তাদের প্রতিবিম্ব দেখে প্রেমিকা নার্গিসকে যুবকটি চড় মেরে বসলেন। ভিকটিমকে সমাজ কর্মী-আইন বিশেষজ্ঞ, বড় দুলাভাই কানপড়া দিলেন, বললেন ফুসলানো কথা । কনভিক্টেড্ জিজ্ঞাসিত হলে অভিজ্ঞ আইন কুশলী বললেন তিনি কোনো মোটিফ ছাড়াই ‘মাল্টিপারপাস লোটে অর্গানিক ফিউশন’ ড্রিংক করা অবস্থায় বিবেচনার জ্ঞান রহিত হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন এবং ডাক্তার কবিরাজ-বৈদ্য-হেকিমের দস্তখত করা এক কাগজে এ বিষয়ে রিপোর্ট, বিজ্ঞ আদালতের পেশকারকে দিতেই লাল ফিতেয় পেঁচিয়ে ফাইলে বন্দী করে গুপ্ত স্থানে রেখে গলাকাটা দর হাঁকালেন। ছিঃ ছিঃ উৎকোচের জন্য হবে কেন? এমনি একটি তোফা উপঢৌকন-গিফট্ এবং রিটার্ন গিফট্। এটাই সংস্কৃতি, একটি সাংস্কৃতিক অভিযোজন এটাই কালচারাল প্রেক্টিসেস্, সোশ্যাল ভিশন এবং নর্মস... ইত্যাদির পর ফ্যাশন । এবং ভিকটিমের বড় দুলাভাই ঢেকুর তুলছেন এবং আপোসের কথা বলছেন যুবক তখনও মদমত্ত-স্বরভঙ্গ ইত্যাদি ভাব-অনুভাব আর বিভাবে গড়া-গড়ি খাচ্ছেন। সব পত্রিকা, দৈনিক- সাপ্তাহিক খবরটা কাভার করে, ধারাবাহিক অনুসন্ধানী রিপোর্ট ছেপে ছেড়েছে । আদালত প্রাঙ্গণ থেকে দুজনা বেরিয়ে আসবার আগে রং-বেরং এর কাপড় জামা পরে অনেকের সাথে নাচন-কুর্দন করলেন এবং একপর্যায়ে মেয়েটির দুলাভাই পারিবারিক বৈরী সম্পর্কের জের ধরে লোক-লস্করসহ ফিল্মী কায়দায় ঝাঁপিয়ে পড়লেন চড় মারবেন বলে। নাচলেন এরপর যুবা পুরুষটির স্বাভাবিকভাবেই কুঁদে উঠবার পালা। মেয়েটি টেনে টেনে মিহি চিক্কুর পাড়লেন “বা-চ্চা-ও, বা-চ্চা-ও ,ডাকুনে মুঝে ছিনলিয়া”...
যুবকটির নৃত্যসহচর সহচরীরা অনিত্য আশুলয়শীল দুনিয়ায় পরস্পরকে অন্য আর একটা নাটকে একস্ট্রা হিসেবে কাজের অজুহাত দেখিয়ে কেটে পড়লেন এবং যুবা-পুরুষটি “কুত্তে-কামিনে, মে তেরে খুন পিউঙ্গা” বলে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বেন কী পড়বেন না ভাবছেন- ঠিক তখনই বেরসিক কমার্শিয়াল ব্রেক। মেয়েটি তখন “ ছোড়দো-মুঝে ছোড়দো ডাকু, গুন্ডে- তুই আমার দেহ পাবি...” ইত্যাদি বলছেন আর হাত ছাড়াবার মিথ্যে কসরত করে চলেছেন। পীড়নের এই দৃশ্য মেগা সিরিয়ালে হলে এই সিকোয়েন্সের ঠেলাতেই সুপারহিট, বাম্পার ফলন, পাঙ্গাস রেপিড গ্রোয়ার, সহজ কিস্তিতে ঢাকার প্রাণকেন্দ্র থেকে মিনিট দশেক দূরে (তবে ব্যোমা যানে) রেডি ফ্ল্যাট বিক্রি ও বরাদ্দ চলছে নির্মাণকাজ ঝঞ্ঝার গতিতে এগিয়ে চলেছে... এসব দিয়ে এ্যাডভার্ট করা যেত। যাক ব্রেক কি বাদ হওয়ার পর দেখা গেল নায়কটি ছয় কী সাতজন লোককে ধরাশায়ী করে ফেলেছেন। ফেললেন-মারলেন, হাত মুচড়ে দিলেন, মেয়েটি ছাড়িয়ে নেবার চেষ্টা-অপচেষ্টায় রূপান্তরিত হলো। একদল বব্ড হেয়ার ইংরেজি মিশিয়ে ‘বাত বলা’ মহিলা জড়ো হলেন এবং যুবকটির মতিভ্রম, রিপু তাড়নায় কোনো কারণ ছাড়াই নারী উন্নয়ন নেত্রীর বক্তৃতা দেখতে লাগলেন এবং বাংলা ভাষাটি ইংরেজি থেকেও দূর্বোধ্য ঠেকলো তার কাছে। তবুও তার মনে হলো যৌনসঙ্গী হিসেবে ইন্টেলেকচুয়াল মেয়েরাও কম কর্মোদ্দীপক নয়। মেয়েরা বুদ্ধিতে খাটো তাদের মগজের খর্বাকৃতির কারণে, এসব লিঙ্গবাদী রাজনীতির শোষণ-পীড়নের কৌশল, নারী মেহনতী খেটে খাওয়া আর সকল নকল মানুষের মাঝে অধিকতর নিবর্তনের শিকার। কিছু লোকজনও জুড়ে গেল। বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে দিবসটি পালিত হলো- সেমিনার, সিম্পোজিয়াম দেশীয় জি.ও/এনজিওÑ মানবাধিকার সংগঠন ও কর্মী, এক্সপার্টিস এবং দাতাগোষ্ঠী ও দেশের ত্রাতারা নিজ-নিজ নারায়ণকে স্মরণ করলেন। আঞ্চলিক প্রমিত-চলতি ও আলালী রীতির বাঙলা ভাষার সাথে সাথে ডোনার এজেন্সী ও কান্ট্রির ভাবউদ্রেককারী কার্যকরী শব্দগুলো জুড়ে-জুড়ে যা দাঁড়াল তার থেকে ‘সত্য’ তাৎপর্যপূর্ণরূপে গায়েব হয়ে গেল আর কি । ভাসা-ভাসা ভাবে যা বোধগম্য হলো তা শুনে এক কথায় এক ব্যবসায়ী বললেন দুহাত তুলে তর্জনী উঁচিয়ে ‘তার পক্ষ-এবং ব্যবসায়ী সমাজের পক্ষ থেকে বিপ্লবী অভিনন্দন’ এবং আর্টিস্ট ধরণের ফেঁচকা ছোড়াটি বললেন, ‘এক কথায় ব্রিলিয়ান্ট’ তার কোমর পেঁচিয়ে থাকাটি বললেন ‘সুপারব্’---। মেহনতী-নিপীড়িত নিরন্ন, ভূখা-নাঙা মানুষদের কথা বলছেন শহরের সেইসব কল্পনার দেবলোকের ছায়ায় পালিত গল্পে শোনা মনুষেরা! যাদেরকে মনে হতো ওদের জান্যই যেন এ আমাদের পৃথিবীর জীবনটার আজ এমন করুণ পরিণতি। ছিল জমিদারের শিক্ষিত ছেলে, মাষ্টার, ডাক্তার পড়ুয়া ,পুরোহিতের তনয়, শিল্পী-সাহিত্যিকের তনয়া ...হতে চাওয়া মানুষদের কে নেই বলুন সেখানে?
শুধু কেন্দ্রীয় চরিত্রের যুবা মহিলাটি। তিনি করেছেন সম্ভ্রমহানির মামলা ও তার যে ইজ্জত চলে গেছে তার ক্ষতিপূরণ করতে পারে এমন একটি টাকার অঙ্ক দাবি করেছেন। পরিবর্তিত পরিস্থিততে মামলায় জিতে নায়কের হাত ধরলেন আর গান ধরলেন ‘হাম ঔর তুম চালি যাউ দূরে...’।
কিন্তু চাচা বিপ্লব কতদুর? এ প্রশ্নে গাজিপুর, নওাবপুর- নাকি জয়দেবপুর এ নিয়ে দর কষাকষি চললও বেশ।
পারিশ্রমিক-আপোস রফা নাকি দণ্ড বোঝা গেল না। কে বলেন? কে! কে বলেন যে... বুদ্ধিজীবী মার্কা মারা মেয়েরা যৌন- উদ্দীপক নন? যৌন-আবেদন ছড়াতে পারেন না? এসব লোকের এধরনের সাজায় কাজ হবে না। দণ্ডটি স্ফীত অবস্থায় গূহ্যদ্বার ফাটানো দৃষ্টান্তমূলক ‘ইয়ে’ দিতে হবে। নারীর আসল/আঁচল/নাকি অ্যাসোল চরিত্র-চেহারাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতেই হবে । বসাতে হবে মর্যাদার আসনে, চাই যথার্থ মূল্যায়ন ও মর্যাদার পুনরুদ্ধার... (আঞ্চলিক, আলালী রীতি, চলতি, প্রমিত, গ্লোবাল-গেঁয়ো উচ্চারণে এগুলো না বুঝলেও সমঝদারের লাহান মাথা নাড়তেই হলো, নোট, জটস্ রাখতেই হলো) একজন কলিগ কেরুর মিসকল্ গার্লফ্রেন্ডটাকে দিতেই তা পেয়ে দ্রুত রিপ্লায় নিষ্পত্তি করলেন ‘মিসিং ইউ’আর তাই দক্ষিণের খোলা জানালা দিয়ে আকাশ দেখছি। দেখছি মুক্ত আকাশে মুক্ত বিহঙ্গের খেলা। তিনিও খেলছিলেন-খেলাচ্ছিলেন। নিম্নাংশের বস্ত্রাদি বলতে টপসের প্রান্তিক অংশটিই সম্বল- বলতে পারেন একমাত্র পোদাবরণ। তিনি কী উপভোগ করছিলেন জানি না। পার্টটাইম লাভার বয় তার নিতম্বের দুপাশের মাংসল-স্ফীত অংশ আর এর মাঝের চেড়া খাঁজ মতো জায়গায় তার হাতটি বোলাচ্ছিলেন । উপভোগ করছেন পাঠক? বক্তা বলছেন, ‘নারীকে যথার্থ সম্মান দেতে অইবে, তাহাকে যোইগ্য আসনে বসাতে হবে...’। (চকলেট বয় হ্যাজ বিকাম হার) লাভার বয় মেয়েটির নগ্ন পোঁদে যে চুমুটি খাচ্ছিলেন সেটি শব্দমানতা নিয়ে প্রকাশিত কিংবা মুক্তির মূর্ততা নিয়ে মেয়েটির মুখ গহ্বর থেকে চুমুর শব্দে যুগ্ম পদে বেরিয়ে এলো। সেল ফোনে ছেলেটি শুনে বলছেন, ‘মিস ইউ টু’ –থ্রি-ফোর,ফাইভ এ জাতীয় ইত্যাদি এবং অবশ্যই ‘ছিঃ ইউ ’ এ জাতীয় ইত্যাদি...।
থাক সেসব । মানুষের বহু দিনের লালিত স্বপ্নগুলো, হারাতে বসা স্বপ্নগুলো -আজানিত স্বপ্নগুলোর দরজায় দিড়িম দিড়িম করে দুঘা বসিয়ে দিলেন তথাগতরা। কোত্থেকে আগত? মানে সভায় অভ্যাগতরা। বড় বড় আশার কথা শোনালেন বললেন- চিরায়ত উম্মীলনের কথা, মুক্তি-সামাজিক সাম্যাবস্থা, খাওয়া-থাকা, পাবার-দেবার, পরার-পড়ানোর কথা, শান্তি-নিরাপত্তা-স্বস্তির, স্বকীয়তা ও তার উন্মেষের কথা, ব্যক্তির কথা, যুথবদ্ধ মানবিক উন্মেষের কথা। কথাগুলো শাশ্বত-চিরকালীন-সর্বময়তা নিয়ে ব্যক্তিকে ভাসিয়ে নিয়ে চলে গেল। আর ‘বস্, আমার বস্’ ফিউডাল সমাজের প্রতি যুগপদ বিদ্বেষমোহতায় কিং কথাটাকে ছেঁটে দিয়ে আমাদের বলতে শেখালেন ‘বস্ ইজ আল্ ওয়েজ রাইট’। বস্ উঠে দাঁড়াতে-দাঁড়াতে বললেন― ‘বাইডা ওয়ে ব্যওসার কোনো সুসমাচার? ইয়াং স্টারস্ হিয়ার উই গো এগেইন...।’
আমি বললাম জায়গা হিসেবে নির্জন বিশুষ্ক বিজন এবং জনবিরল বন-প্রান্তরের আর অবহেলিত একদল আদিবাসী আধ বুনো মানুষের বাস যেখানে তেমনি এক জনপদের কথা। সেখানে একটি নির্দিষ্ট ফুলের গাছ তার রেণু, মধু, পত্র-পল্লব থেকে একধরনের ট্র্যাডিশানলি ওয়েল নারিসড্ জৈবিক রস তৈরি হয় এবং তা গেজানোর মাধ্যমে নব্য আধুনিক উত্তর সময়ের সোমরস বলে কনসিউমারের হাতে ধরিয়ে মার্কেটাইজ করা যাবে। তবে মার-মার ধরণের কাস্তমাইজ করে উঠাতে আর পকেট ফাঁকা করায়- সব্যস্ত করতে ক্রেতা সাধারণকে ‘ও হুজুর ’ বলে একবার ধরিয়ে দিলে এবং সেটা দিতে হবে ব্রান্ড এ্যাম্বাসেডারকে দিয়ে এরপর তার দফা-রফা।
‘টেরে বিন কেইসে জিয়া- বস্ সুর করেই বার কয়েক গানটার আংশিক...ও মুঝকো পানাহ্ পর ‘ছুবহানাল্লাহ-ছুবহানাল্লাহ’ বলে আমাকে যথাবিহিত সম্মানপূর্বক গালি খিস্তি/খেউর, মূখ করলেন। বললেন ‘ব্লাডি সিভিলিয়ান,-ডু ইউ নৌও এ ওয়েল রিনাউনড মেথ- মেটিসিয়ান ফর্মালি নেমড্ এজ ইয়াদোভা।’ আমি নিজের জিভের পানশে স্বাদটা মূখের ভেতর লালাসহ আমতা-আমতা করে গ্রহণ করতে চাইলাম, এর ভেতর চাইলাম ভাবতে এবং মনে মনে ভাববার সময়। ‘আজ্ঞে-জ্বি হ্যাঁ, যাদবের পাটিগণিত করতে গিয়ে আমি কেন আমার বাবা-দাদারাও বহুভাবে ওর চৌদ্দগুষ্টি বহুবার উদ্ধার করেছেন বহু আগে থেকে, কিন্তু কেন ব্যাবু? ‘ওয়েল...’ বলে তিনি দম লন্। নিয়ে বললেন ‘একটি তৈলাক্ত বাঁশ একটি ব্যাবুনের পশ্চাৎদেশ দিয়ে ৬ নটিকাল মাইল পার সেকেন্ডয়ে ভরে দিলে তার অভিকর্ষজ বল-ভর এবং ভাবাবেগের ক্ষতিপূরণ কত? নট্-টু-বি মেনশনড্ এ্যমাউন্ট-টা বাংলা টাকায় বলিও।’ সাহেব-সুবা আদমিলোগ তাদের মেজাজের উর্ধ্বপতন-ভালোবাসার যৌনাভূমিক প্রবণতা, তার চাহিদা/যোগানের গতানুগতিক সমানুপাতিক ডিস্ট্রিবিউশন-এ আমার হরিপদ কেরানির বুঝে ‘কাম নাই’। আমি বুঝি কর্মেই মুক্তি―মুক্তিই মোক্ষ। জেলখানার ‘মাছি দফার’ কামপাস জোগাড় করছি চেষ্টা আর তদবির কসরতের তূফান ছুটিয়ে। বড়বাবু, মিঞা সাহেবকে নগদ দিয়ে-থুয়ে। ডোভ সাবান, বেনসান, বিড়ি-চুরুট দুজনারই খুব মান-পসন্দ্। আমার বস্ নারায়ন বললেন ‘ঘুঘু দেখবে, মাছ খাবে লাঠি ভাঙবে ওদের কিন্তু, কিন্তু... হেল লটস অব্ কিন্তুস্ উইল বি রিমেইন্। রথ দেখানোর মুলো ঝোলাও, পিঠের ভাঙা কুলোটাও খুলে মানবিকতার ছাইপাস ঝেঁড়ে ফেলতে দিয়ে দাও, কানের তুলো খুলে ফেলে ব্যন্ড বাজাও- সাম্বা ,বেলি ড্যান্স-বলিউড হিপ সেকিং। এক্সপার্টিস্- প্রফেইশনালসের স্তূপ বানিয়ে ফেল্। যারা আর্টের নামে নগ্নতা-অশ্লীলতা বোঝাবেন, নারী-পুরুষ সমতার নামে পরস্পরকে বিপ্রতীপ অবস্থানে দাঁড় করিয়ে একে অপরের প্রতি বিদ্বেষ ছড়াবেন, নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অন্যের অধিকার হরণের কথা স্বাধিকারের নামে , যা ইচ্ছে হয় তাই করবার স্বেচ্ছাচারকে স্বাধীনাতা, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যতা-স্বকীয়তা বলে প্রবৃত্তিকে উসকে দিয়ে রিপুর দাসে পরিণত হবার ব্যক্তি ও সামষ্টিক তাড়নাকে আত্মনিয়ন্ত্রিত ব্যক্তিদের স্বতস্ফূর্ত স্বকীয় বিকাশ, লজ্জাহীনতাকে ফ্রিডম্ অব্ এক্সপ্রেশান বলে চালিয়ে দেবার কথা বলবেন। মাইক্রো লেভেল থেকে রিসার্চ এবং উপর থেকে বিজ্ঞ-গণ্য, মান্যবরেরা জল ঢালবেন আর ফিল্ড ওয়ার্কার্স দেখবেন কোথাকার জল কোথায় গড়ায়...তার পুলিতিকল সার্কাস।’ মোটা ভাত, মোটা কাপড়- গরিবি হটাবার কথায় মানুষ তাড়িত বোধ করতে শুরু করলেন। অনেকে চিন্তার দারিদ্র্যতাকে দুষলেন, ‘চিন্তা-চিত্তকে’ প্রসারতার কথা বললেন... কিন্তু বললেন না স্পষ্ট করে ‘তা কী করে সম্ভব...’ মানুষ তার ভাবনার জগৎ, চিন্তা নামক মানবিক প্রক্রিয়ার দারস্থ হলে অবশ্য প্রশ্ন-কিন্তুর দ্বিধাদ্বান্দ্বিকতার বাস্তব বস্তুতাকে নিয়ে গিভ আপ্ মানসিকতায় হাল ছেড়ে দেবার আগে যখন বলতে চায় ‘গিভ্ মি এ ব্রেক...’ ঠিক তখন বিজ্ঞাপিত করতে সেখানে ক্ষণিক বিরতির ছাইছলনায় দাঁড়িয়ে গেলেন ব্যান্ড এম্বাসেডার- ‘সকল অসম্ভবকে সম্ভব করতে আসিতেছে মাল্টি পারপাস লোটো অর্গানিক, লেকে-পিকে ভাসিয়ে দিন। আম আদমী কো লিয়ে সারে জাহা মহিলারা টয়লেট... ভাবসাব নিয়ে, তারও থেকে ভঙ্গি বেশি করে দাঁড়িয়ে-বসে, দৌড়ে, শুয়ে পোজ দেন আইডলরা...
ঐ পোঁদে চুমু খাওয়া আকাশ দেখা হাই-ফাইভ মার্কা মানে অভিজাত অর্থে পশ্চিমা ধাঁচের মেয়েটি যথাযথ ‘বিপ্রতীপ রতি’র বাৎসায়নের কোকশাস্ত্র নির্দেশিত আসনে বসে ওর সিক্রেট লাভারকে দিয়ে জায়গাটা মারাচ্ছেন। আর অজানিত আতঙ্ক, লোক-লজ্জা, সম্মানহানি, সর্বনাশ, সর্বনাশের নেশা নিয়ে ভয় আর কামজ তীব্রতা মিলিমিশে রতিসঙ্গীর নির্মম ছেদনে মেয়েটির কাতর রতি আক্রান্ত মত্তচিৎকার আর আর্তস্বরে মেয়েটি নিজেই চমকে উঠেন।ভয়-কামজ তাড়নার তীব্রতা নিয়ে অজানিত আশঙ্কায় বুকটা গুড়গুড় করে উঠে... বাজে চিন্তা, মিথ্যা ভয়, কুঞ্চিত কপালে একাধিক চিন্তার বলিরেখা রেখে যায়। পেছনে ঘাড়-কাঁধে একটা ঘামবিন্দু থেকে গড়িয়ে সাবলিলভাবে নিম্নভূমে চলে যায় মেয়েটির মেরুদণ্ড বরাবর। তারপর পশ্চাৎদেশের দ্বিখণ্ডিত উত্তল অংশে গড়িয়ে চাপ খেয়ে শায়িত প্রেমিকের অবাঞ্চিত রোমরাজির ভেতর হারিয়ে যায় তদসংলগ্ন এলাকায়। এলাকায় চলছে নীরব চাঁদাবাজি, নিয়োগ বাণিজ্য, নিয়ম-আইনের অপপ্রয়োগ, আন আফিলিয়াল ট্রিপ-ইনফর্মাল রেকামেন্ডেশানস্,ফর্মাল এডুকেশান। আর উঠান বৈঠকে নারী/পুরুষ দেখছেন কী করে বীর্য নির্বীয করণে রাবারের ব্যবহার... জড়তা কাটিয়ে পরস্পর সকলে একত্রে দেখছেন গোপনাঙ্গাদির সচিত্র বিবরণ। নারী তার নিজ পুরুষ থেকেও ভেরী ইনফ্লুয়েন্সিলের সাথে ওঠা বাসা করছেন, বলছেন জোর আওয়াজ ‘বিপ্লব দীর্ঘজীবি হউক’... এমনি বলে নেতা লোকটি ক্ষমা ভিক্ষা দিলেন। আমরা তিনটা বাংলা-ইংরেজি দৈনিকে ক্লাসিফায়েড্ বিজ্ঞাপন ছাপতে দিলাম পর পর কটা দিন। প্রথমে বৃহস্পতি বার, শুক্রবার/শনিবার ছাড়া বাকি চারদিন ।তারবাদে প্রথমোক্ত দিনগুলোতে। এতেই চিত্র পাল্টে গেল। রেসপন্স এবং রেসপনসেস্। দু-ছেলে একটা মেয়ে লোকালিটির ভেতর থেকে আমাদের সাথে প্রথমে জুড়ে গেলেন। ওদের ট্রেইনি হিসেবে সাইজ, দে মিন ভাও করতে, ভরকে দিতে প্রলুব্ধ করে, লোভ-তাড়িত করতে নত হতে ফাটিয়ে দিলাম’(... আমি আবার আঞ্চলিক বাঙ্গালা শব্দ অভ্যাসভুল বশত বলে ফেলি যা ক্ষমার্হ।) সেই...
এক্সপার্টদের কাছে। এরপর এই তিনজন ওর নিজের এলাকা তার মানুষ ও ভাষা/সংস্কৃতি, সমস্তটা মানে মানুষ তার অতীত পারম্পর্য-ঐতিহ্য-ঐতিহাসিকতাকে ছোটলোকের নিম্নবর্গীয় ব্রাত্যজনের হিসেবে গ্রহণ করবেন (অথবা এবং তা বর্জনে সদা সচেষ্ট থাকবেন) এবং তাদের ডেভলপমেন্ট বা উন্নয়নে আমাদিগের ডায়াগনোসিস্ অনুযায়ী সব্বাইকে রোগী সাব্যস্ত করে, প্রেসক্রিপসান মোতাবেক বড়ি গেলাবেন...।
‘বটিকা- হ্যাঁ উন্নয়ন বটিকা’ এবং গিলতে অসুবিধা হচ্ছে? হলে বিজ্ঞাপন বিরতি এবং মালটি পারপাস লোটো আর্গনিক ফিউশন ড্রিংক , please enjoy লিখা থাকবে don’t forget to pay the price.চেইঞ্জটা নিতে নিতে ক্রেতা বলে বসবে, ‘সো কাইন্ড অব ইউ please keep the change|Õ সত্যি হাই প্রাইস আর এর বিনিময়ে প্রাপ্তিটা আরও টাইম,এফোর্ট-ইজ্জাত,জান-মাল সব বিনিয়োগ এর পর...।
অনুন্নত ও পশ্চাদপদ, অচলতার ধুমকর্দমাক্ত- ক্লেদক্লেশে উন্নয়ন সূচকের কাঁটা ব্যর্থতার ঘরে গাঁট হয়ে বসে আছে...। য়ে নিজেকেই ব্যক্তিব্যর্থতার দায় নিতেই হয়... এবং এর থেকে বেরিয়ে আসবার অদম্য ইচ্ছায় তিনটা রিক্রুট তিন ছেমড়া-ছেমড়ি ট্রেইনড্ আপ হচ্ছেন । এ মুহূর্তে ওনলি ইউরস ইউর হাম্বল সার্ভেন্ট...বেগ টু স্টেট দ্যাট- নতুন নিয়মে, কেতা-কায়দা রপ্ত করছে নিষ্ঠার সাথেই মাই প্লেজার বলবার ভঙ্গি । ভাব নিচ্ছেন, যে প্রসঙ্গ বিষয়ে তার কোনো ধারণাই নেই। সে-ই রম- সেইসব কথা আমার বস্ও আমাকে বলেছিলেন। এখন শেষ মুহূর্তে বললাম ‘মাই প্লেজার ’আমার বস্ কে ওল্ডমঙ্ক-এর একটা নতুন বোতলে মদ দিতেই... বললেন থ্যাঙ্ক ইউ... হারামখোর টোস্ট করলেন। ভাব থেকেও ভঙ্গি বেশি রকমের করে দাঁড়ালেন এবং ক্যামেরার সামনে, ফ্ল্যাসের আলোর ঝলকে-ঝলকানিতে মেয়েদের ঝকমকে দাঁতগুলো ঝিকিমিকি করে উঠলো, কারুর মনের খুশিতে মরেও যেতে ইচ্ছে হলো। জীবনে এর থেকে বেশি কিছু চাওয়া যায় না,হওয়াও যায় না তাদের মনে হলও। রিচ্ এন্ড ফেমাস, আইডল নীতি-নির্ধারক ক্ষমতাধর-প্রভাব বিস্তারী ইমফ্লুয়েন্সিয়ানাদের সাথে উঠাবসা এমনকি ব্যক্তিহৄদের কল্যাণকামী হিসেবে তার ওয়াইফের ‘আধ-কপালে’ ব্যামোর জন্য বনার্জি-আয়ুর্বেদিক ঔষধ কেনা কেবল যথার্থই নয় একমাত্র দাওয়াই হবে না তা নিয়ে আন্তরিক... (অন্তত অবস্থা দৃষ্টে তাদের তর্কালোচনার ভঙ্গি দেখে তাই ধারণা হবে আমার মতো নিরীহ গোবেচারাদের।) পরামর্শ আর যাবতীয় সব করে কাছের মানুষ বনে গেলেন অনেকে। এসব থেকে জীবনের কাছে মানুষ আর নিজের কী পরিণতি আশা করেন...? নতুন পুরোনো সব আশা বুকে নিয়ে বুক বেঁধে ভাব-ভঙ্গি নিয়ে দাঁড়াল ইয়ে টাল-মাতাল, লক্কড়-ঝক্কড় মার্কা মুড়ির টিন মার্কা বাসটা। নির্জন-আদিবাসী জন অধ্যুষিত, জনবিরল-বনপ্রান্তরে তখন ছায়াগুলো অনেক লম্বা দেখাচ্ছে সব কিছুর। সূর্য ঢলে পড়েছে আর ধুলো, শুষ্কতা নিয়ে সবকিছু লালচে। আমার সাথে নতুন রিক্রুট একজন বললেন ‘চলুন স্যার, পৌঁছে গেছি’ লোকটি আবার যান্ত্রিক বাহনটির ভেতরটা একবার চেখে নিল আই মিন চোখ দিয়ে দেখে নিল।‘মহিলাদের বসতে দিন- ৫ জন’, ‘ভরদতা বজায় রাখুন’, ‘ব্যবহারে বংশ পরিচয়’, ১০০ ও ৫০ টাকার ভাংতি নাই, পকেট সাবধান, অচেনা লোকের দেওয়া খাদ্য গ্রহণের বারণ করার উপদেশ এবং চলন্তাবস্থায় চালকের সাথে কথা না বলবার নির্দেশ আর সহযাত্রীরা নির্বাক সামাধিতে সমাহিত মানুষ, যারা সম্মোহিতের মতো লক্কড়-ঝক্কড়ের সাথে ঝাঁকি খেতে খেতে এক রকম এক লক্কড়-ঝক্কড়ই বনে গেছেন। মাঝে যদি বা কথা এরা বলেছেন তো শুনতে লাগছিল ঝগড়া। ঝগড়া-ঝামেলার মতো। অথবা দীর্ঘ নীরবতা নির্জীব, আবেগ ভাবলেশহীন ক্লান্ত স্বরগুলো বাসের হেলপার-টেলপারদের বাসটার ঝিম মারা গতিটাকে বাস্তবের সাথে বেঁধে রেখেছিল। মাঝে-মাঝে বিপরীত দিক থেকে আসা ব্যক্তিগত যানবাহনগুলোর খুব কাছে এসে পেছনে ফুস করে হারিয়ে যাবার মুহূর্তে বাতাসের সংঘর্ষের আওয়াজ পাওয়া গেল...
সারাদিন উত্তপ্ত ধুলো পোড়ানো দুপুরটা কাঁধে-মাথায় করে ধুঁকে-ধুঁকে একসময় বাসটি সেই জায়গায় এসে থামলো, ঠিক যেইখানটায় এসে থামবার কথা ছিল। চকিতে ওর মনে হলো সব পূর্ব নির্ধারিত। বাস দরজা দিয়ে নির্গমনের পর রাস্তায় পড়বার আগে-দেখলো দরজার মাথার উপরে লেখা ‘জনাব! কিছু ফেলে গেলেন কি?’ পেছনটা মুহূর্ত থেকেও কম সময়ে মাথার চিন্তাটায় খেলে গেল। মাথাটা একবার ঘুরিয়ে চোখটা দেখে নিল। পাশে বসা, আপাত নিরীহ চেহারার চোয়াল ভাঙা-ঝুলে যাওয়া, বারবার যিনি ঘুমতন্দ্রায় তার কাঁধে ঢুলে পড়ছিলেন, লালা শ্লেষ্মা মাখিয়েও দিচ্ছিলেন সেই তিনিই ফেলে রেখে আসা দৈনিক পত্রিকাটিকে নির্দ্বিধায় নিঃসঙ্কোচে নিজের করে নিয়েছেন আর সেটির উপর দখলকর্তৃত্ব জাহির করতে ভাব- ভঙ্গির মিলিত উচ্চারণে ‘সদর দফতরে কামান দাগছেন’ একটু পরেই তিনি (হয়তো) রাজনীতির সম্পর্কে শেষ এবং চূড়ান্ত ফয়সালা করে, মন্তব্য জুড়বেন...। এবং পুলিতিক্যাল ফরক্যাস্ট বা জাতীয় স্কুল অব একনমিক্সের চিন্তার কথাটা ঠোঁটে একটা চিকন হাসির প্রসারতা নিয়ে এই স্বল্প সময়ে রয়ে গেল। চলে গেল লক্কড়-ঝক্কড়টি অনেক আর অ-নে-ক কালো ধূয়া পেছন দিয়ে ছাড়তে ও ছড়াতে-ছড়াতে। লোকটি ওর নাম ‘সামির’ বলে জানায় সবাইকে। আমরাও এই গল্পে তাকে তাই ডাকবো-বলবো কেমন।
নেমে সামির শার্ট-কলার, চুল ঠিক করেন... এবার প্যান্টটা ঝেড়ে সামনে তাকালো ভালো করে। দেখলো মাটির কাঁচা ঘর রাস্তাটির দিকে পিঠ দিয়ে দাঁড়ানো এবং ওতে হস্তাক্ষরে গোটা-গোটা করে সুন্দর লেখা ‘এখন যারা ভালোবাসে তারা কেবল লিবার আসে,’ ।
চিকন সেই হাসিটা স্মিত হলো । ‘স্যার ! ওদের তো আমাদের রিসিভ করতে আসবার কথা, কোন মিস্ হ্যাপ...?’ বলতে-বলতে শোনা গেল রিকশার একটা টুং-টাং ঘণ্টার আওয়াজ... তাকালে পর দেখলো দুটো ভেড়া একজোড়ায় বাঁধা রাস্তাটি পার হচ্ছেন আর তারপর রিকশারোহী দুজনাকে। রিকশা থামবার আগেই সেখান থেকে ছেলেটি অথবা যুবা-পুরুষটি লাফ দিয়ে নেমে দৌড়ে এসে ব্যাগটা ছিনিয়ে নিতে চাইলেন ও মেয়েটি বুকের কাপড়-টাপড় ঠিক করতে করতে এসে বললেন পথে কোনো অসুবিধা হয়েছে কিনা এবং আর একটি খালি রিকশাও ওরা সাথে এনেছেন ইন কেইস অব্ ইমারজেন্সী এর কথা স্মরণ রেখে/ভেবে রেখে অথবা যুগপদ দুটোই।
ফিরোজ নামের নতুন ছেলেটি একটা ছবি তুললেন সেল ফোন-এর ক্যামেরা দিয়ে, মুহূর্তটিকে ধরে রাখতে এবং চা-দোকান দেখিয়ে বললেন কোনো রিফ্রিসমেন্ট প্রসঙ্গে। গাছপাকা স্থানীয় ছোট-ছোট কলা, এক ধরনের তিনকোণা নোনা বিস্কুট, কূপের পানি, মহিষের দুধে-গুড় মিশ্রিত চা-সরবত ঘন, তারপর চিনাবাদাম সব একই দোকনের সামগ্রী। সেবা ও তিজারত ওয়ালে সব কিছুই নিম্নসাধারণ, নিস্তরঙ্গ জীবনের মতো ঢিমে ঢিলে তালে ছন্দবন্দ... আবেগমণ্ডিত জীবনের কানায়-কানায় ধীর লয়ের শোকসঙ্গীতগুলোর মতো গেঁথে ছিল- দলন, নিগ্রহ, নিপীড়নের ইতিবৃত্তি । এদের জীবনে যাপনে আর জীবন মন্থনে আনুপূর্বিক এর ছাপ দৃঢ়ভাবে গেঁথেছিল... যা বহিরাগতের চোখ এড়াবার নয়,তবুও... । সামের-এর সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস কম, তাও ফুরিয়ে এসেছে। ছেলেদের সিগারেট অফার করতেই না ধন্যবাদ বলে অনুরোধটা ফিরিয়ে দিলেন...।
রিকশাটা চলছে মন্থরগতিতে, মসৃণ সড়কের উপর দিয়ে একটা যান্ত্রিক শব্দ পেডেল ও চেইন থেকে আসছে। নির্দিষ্ট ছন্দে-লয়ে রিকশাটা চলছে সুনির্দিষ্ট গন্তব্যে- ওর জন্যে ভাড়া করা একটা আস্তানার দিকে। বাড়ি কাম দপ্তর, রিক্রুটদের থাকবার জায়গা, সামনে উঠান, এবং ব্যাকইয়ড গার্ডেন। অফিস হলেও এটিই ঘাঁটি আপাতত। পরে নাম দেয়া হয়েছিল সেলটার...।
দপ্তরের নাম দেওয়া নিয়ে কো-অর্ডিনেটার মিস্টার সামির সবাইকে একটা নাম প্রস্তাব করতে বললেন আর অন্য দিকে মেয়েছেলেটিকে অন্ অফিসিয়ালি আগে-ভাগে এ প্রসঙ্গে বলে রেখেছেন নামটা ‘সেল্টার’ দিলে কেমন হয়? মেয়েটি একজনের পরে দাঁড়িয়েই স্বভাবগত বৈশিষ্টানুযায়ী পোঁদের জায়গার কাপড়টা ঠিক করে-পাট নিয়ে প্রস্তাব রাখলেন নামটি “সেল্টার” হলে কেমন দাঁড়ায়? তৃতীয় ছেলেটি নতুন কোনো নামের দিকে গেলেন না। সেটিই সেটেলড্ হলো আর সবাই কনগ্রেচুলেইট করলেন...। সে মনোযোগ দিয়ে ওড়না ঠিক করতে-করতে বললো এবং খুব কেজুয়েলি এটা নাকি কোনো ব্যাপার না তার জন্যে... সামির যখন ওকে ধন্যবাদ ধরনের কাজটা করতে গেলেন, সে এস্ত-ব্যস্ত দ্রুত সমস্ত ভাবে একরকম ছুটে তার কাছে চলে এলো/এসে পুনরায় অমনোযোগী স্বভাবজাত অভ্যস্ত ভঙ্গিতে ওর ওড়নাটা ঠিক করতে-করতে এগিয়ে এসে আত্মসমর্পণের মনো ভঙ্গিতে বলশালীর নিরাপত্তা বলয়ে আশ্রয় নিলেন। কর্তৃত্বশালী সে ক্ষমতাধর (চর্চা ও তার প্রভাব-প্রতাপ, প্রতিপত্তির মানবিক সমীকরণে..) কিংবা ধর্নাঢ্য ব্যক্তির সামনে নারী-ব্যক্তিত্ব হিসেবে নিজেকে বিলিয়ে দেন। ব্যক্তিগত ও ভবিষ্যৎ প্রাণ-প্রজন্মের নিরাপদ-নিরুপদ্রব নিরাপত্তার কথা ভেবে এ সমাজ সভ্যতার অভিভাবকরা তাঁকে সামর্থ্যানুযায়ী তৈরিই করেছেন বেচারা স্বামী দেবতাটির চরণবেদীতে উৎসর্গকৃত প্রাণটি বিলিয়ে দিতে। তাঁকে তৈরি করেছেন ধনাঢ্য (ভাতার) ব্যক্তির উপযুক্তা পাত্রী হিসেবেই কেবল আত্মদানের নিমিত্তে। ইংরেজিতে কবিতা লেখেন, পোলিস ভাষায় কুরভা গাল দেন , কবিতা বলেন উর্দু, ধর্ম করেন আরবীয়, শিষ্টাচার-ম্যানারিজেম এর ভাষা ফরাসি, কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন জাপানি শব্দ ব্যবহার করে আর পালা-পার্বনে, উৎসবে-রাজদ্বারে, বিবাহে-শত্রু নিগ্রহে, এদের পোষাকাচরণ ছকা-ওয়েল ট্রেইনড্। নাচের আসরে সস্তা গানগুলোর তালযন্ত্রগুলোতে নির্মমভাবে আঘাতের শব্দের সাথে নির্দয়ভাবে দয়াহীন তালঠুকে-ঠুকে সৃষ্ট ছন্দে ঘাম ঝরান, নয়তো চেম্বার মিউজিক অথবা ভারতীয় মার্গীয় সঙ্গীত, সিনেমা দেখেন তো আর্ট-নেরেটিভ ধরনের আর ফ্যাশন করেন তো করেন চলতি বাজাইরা গায়িকা নায়িকার মতোই। নারী ব্যক্তিটিকে স্ত্রীরত্ন হিসেবে উপয্ক্তুা হবার সাথে সাথে তার রূপবতী-গুণবতী, লীলা-কলা, আভিজাত্য ও ধন সম্পদাদি তার জন্য ‘আপনা মাংসে হরিণা বৈরী... যা পাহারা-নিরাপদ, নিরুপদ্রব নিরাপত্তা সেই বলশালী পুং ব্যক্তিত্বকেই করতে হয়, ধনবল-লোকবল-জ্ঞানবল, ব্যাট-বল, মানে খেল-তামাসা আয়েশ বিনোদন, মৌজ- ফুর্তি, এন্টারটেইনড্ করবার চাহিদা, উপযোগ যোগান, বাজার দর দিয়ে... এই আরাধ্যের সামনে এসে জ্ঞাতে- অজ্ঞাতে, সমপ্রজ্ঞাতে লীন হয়ে যান- সমাধিস্থ হন। এক্ষেত্রে শ্যাম রাখি না প্রসাদ রাখির কোনো বিপ্রতীপতা নেই, নেই দ্বন্দ্ব সংকুলতা, প্রাথমিক দর উঠাতে ব্যক্তিত্ববান প্রমাণে যতটুকু মুড-ফ্লর্ট দেখাতে হয়, সেটাও পম্প এন্ড শো-এরই অংশীভূত। নেই কুলহারা হবার অথবা হয়ে দলিত সমাজভুক্ত ব্যক্তিতে রূপান্তরিত হবার কথা। সে ভয় থাকলেও, সে সম্ভাবনাকে-সম্ভাবনাও নাকোচ করে দেন বলশালী, ক্ষমতাধর পুং ব্যক্তিত্ব। এটা তার পৌরুষের রুটিন ওয়ার্ক, পাওয়ার প্রাকটিস, কমন এক্সাসাইজেস। বস্-কে সেলটারের টার্গেট গ্রুপ, রিসার্চ-ফিল্ড ওয়ার্ক ডেটাস পাঠিয়ে দিতেই সরাসরি ফৌনে জানালেন “রাইট ইউ আর মাই গোল্ডেন বয়, তলোয়ার খাপে পুরে রেখে দিতে নেই বেশি দিন, জং মরিচা ধরে যায়, এটি নিয়মিত এক্সারসাইজ করার বিষয়, চালানোটাও প্রেকটিসে রাখতে হয় ।"
প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয়, সম্ভাব্যতা যাচাই, মার্কেটিং রিসার্চ, উৎপাদন গবেষণা ও কারখানা স্থাপন বাজারজাত করণে সমস্যা নিয়ে ব্যাপক কিছুর ব্যাবাক হলো। নতুন রিক্রুটও হলো।পূর্বেনিয়োগপ্রাপ্তির কারণে তিন রিক্রুটের প্রমশান হলো। প্রথমদিকে লগে কোনো ছেলে থাকলেও পরে একাই অফিসে থেকেছে মেয়েটি -ছন্দবদ্ধ পোঁদটা একান্তে দেখিয়েছেন। মেয়েটি প্রফেশনাল এফেয়ারে জড়িয়ে পড়লেন এক সময়ে। মেয়েদের মধ্যে তিনি সবচেয়ে দীর্ঘ একং ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক সূত্রতার দাবিদার, তাই একটা বসবস ভাব- লাটের বাট দারোগার মাঝি সে। সামির একটা ডর্মেটরি-র ব্যবস্থা করলেন, মেয়েদের গ্রুপ এ্যানিমেটার হিসেবে ওর যথাযথ ভূমিকার প্রশংসা করলো। সামির প্রথমদিকে অফিস আওয়ারের পরে অন্যসময় ওটাকে কোলে বসিয়ে হাতালো। কর্মপরিধি বাড়াতে আরো কর্মী আমলা-কামলা নিয়োগ ঘর-অফিস-রেস্ট হাউজ ফ্যাক্টরি ব্যস্ততা সব বাড়লো। প্র্যকটিসে রাখতে হয়...”। বাড়লো না মেয়েটির সাথে সম্পর্কের উৎকর্ষতা। তবে আর কিছুতে না হোক মেয়েটির যৌনতার বিষয়ে রেসপন্স ও তাড়না বহুগুণ বেড়ে গেল। সমগ্র এলাকাতেই এমনটি কম-বেশি হয়েছিল তাহলে মাঝের ঘটনাটা বলি। আগে থাকতেই প্রচ্ছন্ন দুটো গ্রুপ ছিল এলাকাতে এখন রাজানুকূল্য পেতে দু-দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু করে দিলো ও বিরোধ লাগলো বা লাগানো হলো। এ্যানথ্রপলজিস্ট-সমাজ গবেষক এসে এদের এবং ওদের সাংস্কৃতিক আপ-ব্রিংগিং, ওরিয়েন্টেশানটার মূল প্রকৃতি-স্বরূপ বিশ্লেষণ করলেন ও দফায়-দফায় গোপন বৈঠক করলেন এবং ঐ স্থানীয় ছোট কলা-মোষের দুধ খাওয়া চা দোকানে হাতা-হাতি পাদাপাদি আইমিন গালাগালি রাগারাগি সবই হলো।
ঐ যে মামলায় জিতে নায়কের হাত ধরলেন-গান ধরলেন মেয়েটি, ঐ যে সেই “হাম আওর তুম চালি যাউ দুর” ওদের দেখা মিললো ঐখানে- এখানেও ওরা জুটে গেল। সিনেমার শেষ দৃশ্যের পর সবার বুক থেকে যে দীর্ঘশ্বাসটি বেরিয়ে এসেছিল, হারিয়ে গিয়েছিল সিনেমা হলের অন্ধকার শব্দময়তার স্বপ্নজগতে, যেখানে শেষ তক্ কোনো ডিসাপয়েন্টমেন্টস নেই, চাওয়া-পাওয়া মিটিয়ে দেয়ার “ব্ল্যাংক চেইক” ধরিয়ে দেয়ার স্বপ্ন- কল্পনার জগতে এসব দরিদ্র মানুষের “না হতে পারার” হতাশ্বাগুলোর প্রতি লোকজন পিস্টঅফ্। সব কিছুর এত সহজ সমাধান কেবল দরকার একজন ফিল্মমেকার। সেখানে এগুলোর দুঃখতা, অপ্রাপ্তি- ময় দানবের মতো সব গ্রাস করে ফেলে অজ্ঞ নির্বোধ ধ্বংসন্মুখ তাড়িত মানুষগুলোকে।এদের দীর্ঘশ্বাস এমনকি আবেগ- অনুভূতি সিনেমার প্লট ছাড়া আর কিছু না। এটা কেউ প্রকাশ করেন না, করেন হাস্যোজ্জ্বল-ফ্লাসলাইটের ঝলকানির চেহারাটা, ঠিক সেলিব্রিটিদের মতোই- লোকে মনে করেন সত্যি কতই-না সুখী এরা / (ওরা) ।ওদের মতো হলেই সুখ-স্বস্তিটা কব্জা করা যাবে। সঙ্গিনী সঙ্গীকে তাড়িত উৎসাহে প্রণোদিত-প্রলুব্ধ করেন। প্ররোচিত করেন- ক্ষমতাবান, ধনাঢ্য ও সুখী হতে- যার জন্যে শুধু প্রয়োজন একজন স্ক্রিনপ্লে রাইটার, ডিরেক্টার এবং নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। অজানিত রেডিও স্টেশান থেকে আর.জে সেই উন্নয়ন বটিকার বিজ্ঞাপিত রূপ তারস্বরে বয়ান দেন। বাঘা বাঘা কোম্পানি এ্যাডভার্ট করলেন-উঠে পড়ে লাগলেন ওমনাটা হবার মহাপরিকল্পনায় সেই “চালি যাউ দূ-রের” দু-জনা সেখানে জড়ো হলেন, চ্যারিটি মানবিক হেল্প দা ভিস্ট্রেসট্ড প্রোগ্রামে সামিল হলেন, নিজের প্লাস্টিক ইমেজে মানবিকতার প্রলেপ দিতে। বললেন তিনি ব্যবহারে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছেন যা উন্নত দেশ থেকে সরাসরি কিনে-কিনে আনা-সেই... কোনটা বলুন তো? উন্নয়ন বটিকা বস্ বললেন ‘হয়ে গেছে’। আমরা ভাবলাম সর্বনাশা হয়ে গেছে... আমার মুরগীর কোলজেটা ছ্যাঁত করে উঠলে বস্ বললেন ভালো ১টা স্ক্রিপ্ট হয়ে যাওয়া মানে একটা ফিল্মের আদ্ধেক অইয়ে গিয়েদ্দে বাদ্দা now think `bout da post production : think... big impulses.. তৈরি করতে বললেন ।বলা হল “আসিতেছে মহা সমারোহে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সহ সারা বাংলাদেশে ২য় বার সে-ই সমগ্র বিশ্বে ১ম বারের মতো পর্দা ওঠানো, বুক নাচানো-পোঁদ কাঁপানো হার্ট থ্রবরা নেচে, থ্রিল নায়করা কুঁদে-কুঁদে আসিতেছে...” কেন? কেন? এই পাণ্ডববর্জিত বলে কথিত- রটে যাওয়া অজ্ পাড়ের অঞ্চলে উন্নয়নের ‘ইয়ে’ করতে- মারতে, মারাতে। কী-কী-মারাতে? এত পণ্ডিতি মারাবেন না, এত মারবেনও না। ছেলেগুলো এ অবাঙমানস শ্রুত কথায় টাইয়ের নট্ ঠিক করছেন আর মেয়েরা পোঁদের কাপড়। প্রত্যেকে স্ব-স্ব স্থান থেকে স্যার-স্যার করছেন- কেউ যেন ক্রাউডের ভিতর থেকে আওয়াজ দিলেন ‘সাধু-সাধু’। বস্ কথাটা খেলেন বলে মনে হল- ইমপাল্স তৈরি, তাড়িত করা, উত্তেজিত করা ও প্রশমন, দলাদলি জিইয়ে রাখতে কর্ম, চিন্তা ও কথাতে তা বাড়াতে দুটো আলাদা খাবার দোকান কানু আদর্শ হিন্দু হোটেল আর এর বিপরীতে চারু হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট ১০০% হালাল যেখানে মহিলাদের আলাদা কেবিনের ব্যবস্থার কথা আর মানুষদের ভদ্রতা বজায় রাখতে বলা হলো, বলা হলো আন্তরিক মনোরম ঘরোয়া পরিবেশে খাবার এরেঞ্জের সাথে টেইক এওয়ে-র কথাও। বলা হলো না অলিখিতভাবে জোন ওয়ান আর টু গড়ে উঠলো, কেউ পিপলস্ থিয়েটরের কথা বলে দলে ভিড়াতে চাইলে অন্যদল স্ট্রিট থিয়েটার নাম দিয়ে কোমরে গামছা বাঁধলেন; after effect -এর ব্যবসা আরো ব্যাপক। আপনি ভাবছেন...? কিসের আবার মাল্টি পারপাস্ অর্গানিক লোটে ফিউশান এনার্জি ড্রিংস ঐ যে আম আদমি কো নিয়ে সারে উর্দিস্তান, আওরাতকে লিয়ে টয়লেট... ভাসান, জোয়ারের ঠেলার চোটে মেয়েরা ছোঁড়ারা আসেন জমায়েত হন জোন ১, ২-এর ক্রমে ক্রমে ডিস্কোস, সিনেমাহল, ইনডিপেনডেন্ট থিয়েটার ও পারফর্মিং কলা কেন্দ্র, কাঁচা পাকা মোটা কিংবা মেদহীন, ডিসেন্ট্ গিটার, কুল একটা ট্যাটু সব নিয়ে`another female fronted band on air ’ বলে তার স্বরে চেঁচালো ‘সবই তার ইচ্ছা' বলে আর সকলে মাল্টি পারপাস্ ড্রিংক করলেন,করলেন টোস্ট। এসব কেতা শেখাতে’ উপনিবেশিকতাবাদের সরাসরি অনুকরণে স্বাদেশিকতা বাঁধ সাধতে পারে তাই লোকাল এজেন্টরা বসকে জানাতে বস্ ~`Ôh let me think first’ বললেন― মিটিং করে সেটিং করলেন নট-নটী-নায়ক, গায়ক, কবি-তস্কর, লোকলস্কর কায়দা করে বসালেন! বলবেন সেখানে কে নেই? সাংস্কৃতিক বিপ্লব বললেন একদল তো অন্যদল আখ্যায়িত করলেন সাংস্কৃতির বৈপ্লবিক রূপান্তর।
যেখানে সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদ গোষ্ঠীতন্ত্র, আমলা পার্টি বুর্জোয়া, বুরক্রেট - এদের দৌরাত্ম্য, সুবিধাবাদী শ্রেণী এরা উচ্চশিক্ষিত তবে দুর্জন প্রকৃতির আর কামলা মানে আম জনতা? লুম্পেন প্রলেতারিয়েট বলতে যেমনটা বোঝায় তার থেকে একটু বেশি। তবে দু-দলের সবাই এনার্জি ড্রিংকের ক্রীড়ানণক। লোকাল টেকনলজি-লৌকিক শিল্প ও কারুকলার একটা ওয়েল নারিসড্ মাস্টার স্টোক দিয়ে আন্দোলনকে বেগবান করলেন উত্তর আধুনিক নব্যবাদীরা তবে উন্নয়ন সত্যিকার নাব্যতা হারালো। ঘর, গেরস্থের মেয়েরা মা-কন্যা-বোন, স্ত্রী শ্রদ্ধার আসন থেকে নেমে এসে বসলেন রিসিপসনিস্ট, হোটেল-রেঁস্তরায় ,টিকেট কাউন্টারে সেলস্ গার্লের আসনে। হয়ে গেলেন কারখানার শ্রমিক কিংবা (খুব) ব্যক্তিগত সহকারী। আর তিন রিক্রুটকে প্রমোশান দিয়ে দেয়া হয়েছে। সামিরের কোলে বসে শটহ্যান্ড ডিকটেশান নেন আর পর্ণমুভি দেখেন নতুন আর এক ব্যক্তিগত সহকারী ছেমরি।
ঐ “Hare we go again” বস্ বললেন। এনার্জি ড্রিংকস্টা ভালো চলছে, এতে mood altering substances মেশানো হইছে এবং লোকজন ডিপেনডেন্ট হয়ে পড়েছে এক প্রকার এই আর কি! আয় যতটুকু বাড়রো বলে আশা করছিলো লোকে তার সাথে জিনিস ক্রয়ের হিড়িকও বাড়লো। বাড়লো ক্রয়কৃত দুর্ভোগের সাথে ‘বগফ্’ মিললো অতৃপ্ত রিপু তাড়না। স্টক ক্লিয়ারিং সেলে বেপরোয়া পথ ভ্রান্তি , সামারে ডিসকাউন্ট এলো। মিলল মিলানকলি এবং ইনফিনিট সেডনেস্। গিফ্ট ভাউচারে রোগ এবং লাকি ড্র-লটারীতে মিললে শোক। এনার্জি তাড়িতাবস্থার লোকে কামাসক্তিতে ঘাম ঝরাতে যা যা করা যায় তাই করলেন।
ছটকো-ছাটকা বাদ-প্রতিবাদ, কর্তৃপক্ষ, কর্তা-গণ্য-মান্যবর প্রশাসন মূলত প্রতারণা-প্রলোভন-ভয়ভীতি/দলন দিয়ে দমন করলেন। বস্ করলেন কী- here we are e‡j উঠে দাঁড়ালেন । দাঁড়িয়ে উঠে বললেন Ôsome body stop meÕ - এবং কালচারাল ফেস্ট বলে এক ধামাকা চালু করে দিলেন। রুটি রুজির সংগ্রাম, মোটা কাপড়-মোটা ভাত ,পড়া-লেখার সাথে নারীকে খাটো করা ও অবমাননা-অবমাননাকর পরিস্থিতি আর এর উৎপীড়ন থেকে মুক্তি এবং... মানবিক উন্মেষের এক টোপ গেলানো হলো। বলা হলো...বলা হলো ভবিষ্যত উত্তর প্রজন্মের স্বর্ণালি আগামীর কথা।আসলে ওটা ছিল নারী –পুরুষ কমরেডশিপে পেছন থেকে ছুরিকাঘাত করার মতন ব্যাপার । “যাক দেরি যা হবার সব কেনোর উত্তর ভেরিতেস জানেন” বলেন সামিরের নতুন মেয়ে-ছেলেটা কাকে যেন উদ্দেশ্য করে।
চাণক্য পণ্ডিতের নির্দেশে বন্ধুদের কালচারাল ফেস্ট ও সিনেমা ফেস্টিভেলের মতো উৎসবে, রাজদ্বারে-বিবাহে পাওয়া গেলেও শ্মশান কিবা শত্রুনিগ্রহে পাওয়া গেল না। কেবল ‘নাচনেওয়ালী ও ঢোলের বাড়ি পড়লে’ একে অপরে জড়ো হন ‘মানবিক সংগ্রামের কোনো পর্যায়েই কোথাও কোনো বন্ধুকেই পাওয়া যায় না । সবকিছুর মতো সিনেমার নায়ক-নায়িকার সিনামার মতন ঐ আদর্শের অনুগামী হন আমজনতা সাধারণ দর্শক। তাদের মন-মগজে এই সমাজতত্ত্বে অনুগামীরা মানুষের জোট ও যুথবদ্ধতা ,সংগ্রাম আর প্রতিরোধ, মানবিক ঐতিহ্য-মূল্যবোধে কুঠারাঘাত করেন ...প্রচেষ্টিত হন। এগুলো আজ আর অপচেষ্টা বলে উড়িয়ে দেয়া যায় না... এক কথায়।(অপ-)উন্নয়নের জোয়ারে ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধিকে অন্যতম উন্নতির সূচক ধরে নারীকে প্রলুব্ধকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুরুষ মানুষ যেমন নানান মহিলার সংসর্গে এলো, নারীও পেল বহুপুরুষের সাহচর্যের স্বাদ। তুলনা-প্রতিতুলনা, মূল্যায়ন- ইত্যাদি গেল বেড়ে। এরা চুজি হয়ে উঠলেন অনেক অপ্সন্সের ভেতরে থেকে। নাকসিঁটকানো,ছিদ্রানেষী,খুঁতকাতুরে-অনুনাসিক-ক্ষুদ্রাশয় ও ছিদ্রান্বেষী এরা স্নেয়ার এবং কনফিউশানস্ মার্কা সন্দেহ ও খটকা এবং শরীর বৃত্তীয় রোগশোকের সঙ্গে নানারকম বাতিকগ্রস্ততার রোগ-বালাইয়ের শিকারে পরিনত হলেন । আদিবাসীরা নট-নটী, নায়কদের বললেন অপদেবতা। কলাগাছ ভাসিয়ে দিলেন- করলেন রাতে মশাল মিছিল ও দিনে হাতির।
ক্রয়ক্ষমতার সাথে ক্রয়ের পরিমাণ ও খরচও বাড়লো ।ক্রয়কৃত ভোগের সঙ্গে আনা দুর্ভোগ, কোনো কোনো কোম্পানি প্রডাক্ট বাড়ি বয়ে দিয়ে যান ‘হোম সার্ভিস’ ওয়ালেরা ।ছেলে বা মেয়েটি ডেলিভারি দিয়ে বক্সিস গুনতে-গুনতে ফিরে যান। দ্রব্য মূল্য ব্রিদ্ধির লাগামহিনতা সুদ আর মুফত খোর- মধ্য সত্ত্ব ভোগী , দালাল ধরনের পরজীবী জীবন কে দুর্বিষহ করে তুললো । মিথ্যাচার ও পরচর্চা-পরনিন্দা ক্ষুদ্র মানসিকতার নিদারুণ দুরাশয় আর ভ্রষ্ট প্রকৃতির এদের অন্যতম টাইম পাস। অন্যের দোষের কথা মুহূর্তে রটে যায় লোকসমাজে আর ভ্রান্ত বুদ্ধির ওরা বিশ্বাস করে তা আবার অন্যকে বয়ান দেন । স্থূল রুচির এ সমাজে রুক্ষতা আর ঔদ্ধ্যতাকে বীর্য্যবাণ পুরুষের ভূষণ বলা হলো আর অহংকারীর কটুক্তি, অপবাদ-প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ, কৃতজ্ঞহীনতা, দায়বদ্ধহীন- বিবেক বিসর্জন দেয়াটা সমাজে ক্ষমতাধর ধন্যাঢ্য হবার প্রাথমিক ক্রাইটিরিয়া। নম্র, বিনয়াবনত হওয়াটা কেবল কর্তৃত্বধারীর সামনে আর কৃতঘনতা বাড়তি যোগ্যতা বলে বিবেচিত হয় সকল কর্মক্ষেত্রে। পরধন-দুষ্কৃতির মাধ্যমে আয়ত্ত করা, সুনাম খর্ব-অপযশ লেপন এমনকি প্রাণ হরণ নৈমিত্তিকতার মধ্যে পড়ে গেল। ধনলোভ ও অন্যটি অশিষ্টাচার দুরাচারী সমাজের চালিকাশক্তি ও মূলপ্রণোদনা হয়ে উঠলো। কুকর্ম করে বেড়ানো ,কাম-লালসার বশবর্তী হয়ে প্রবিত্তির অনুগমন, অবৈধ ও অপকর্মে নিদারুণ কৌতূহলী- উৎসাহীরা কোমরে গামছা বাঁধবে আর অপর কেউ বাঁধ সাধলে গলায় গামছা বেঁধে মিথ্যা মকদ্দমায় জড়িয়ে সত্যমিথ্যা মিলিয়ে উল্টাপাল্টা সাক্ষী দিয়ে নাকাল করেন। টাকা দিলে কিনা বাঘের চোখ মেলে আর অন্ধের যষ্ঠি ঐ মাল্টিপারপাস অর্গানিক এনার্জি ড্রিংকস্। কৃপণতা ও অমিত ব্যয় পাল্লাদিয়ে চললো ...চললো অপচয় আর অকৃতজ্ঞতা। পীড়ন-কে,কাকে /কতভাবে, করতে পারেন তা সত্য বিমুখ ঐ সম্প্রদায় পাল্লা দিয়েই করলেন এক প্রকার । যারা মিথ্যে বলতে পারে না তা যে কোনো কারণেই হোক তিনি সমাজ-সংসার ,স্ত্রী/কন্যা, কলিগের সামনে বোকা হিসেবে তাচ্ছিল্য আর অখ্যাতি কুড়ান। সত্যিই সংস্কার সংস্থান হয়তো বলা যায় ওগুলোকেই ।
আত্মসংযমহীন, পরধন লোভী, প্রবৃত্তি/রিপুর খেয়ালে চলা ছেলে-যুবা-পুরুষের মেয়ে জোটাতেও সময় বেগ পেতে হলো না। চারু হোটেল, কানুর দোকান সংলগ্ন ক্লাব থিয়েটার সিনেমা ,হ্যাং আউট, টাইম পাসের জায়গায় ছেঁড়া-ছেঁড়ি জমা হতো সে তো বলেছিই। ব্যক্তিগত রেষারেষি মেয়েছেলে কেন্দ্রিক প্রদর্শনপ্রিয়তা,পম্প এন্ড শো-এর এক পর্যায়ে সিনেমার নায়কের মারামারিটাই কেবল বাকি ছিল । তাই বলে একেবারে বন্ধ ছিল সব সময় তা না তবে এতে ঘি ঢালবার সময়-সুযোগ, লোকে খুঁজছিল। বস্ বললেন ‘বিষষ’। কেন? ড্রিংকস্টা প্রাথমিক পর্যায়ে প্রচুর খাওয়া যায়, টানা কাজ করা যয়া, রতিকর্মে ও সংঘর্ষে এর জোড়া মেলে না... কেবল তাড়না ,পুন: পুন: এষণা- প্রেষণা না ,বিপুল কর্মশক্তি তৈরি হয় এবং মানুষ বারংবার কর্মে রত হন এবং কর্মাসক্তি তৈরি হয়। ঘুম অনির্ধারিত ও অনিয়মিত হওয়া ঘুমের ডিসরডরি, খিটখিটে মেজাজ, ক্রুদ্ধউন্মত্ততা, অবজ্ঞা-অহমিকা, ওভার ডুয়িং, মতান্ধতা, ক্রোধান্ধতা-শত্রুতা, বিদ্বেষ পূর্ণ মনোভাব, অন্যেরে দুর্দশায় ফেলে সুযোগ নেয়া , ক্রুরতা অথবা মজা দেখা আর হ্যাঁ অন্যের বিপদে মজা পাওয়া এদের আনন্দের বিশেষ নিষ্ঠুর উপাচার। ঈর্ষাতাড়িত মানুষেরা ছিদ্রান্বেষনে গূহ্যদ্বার এও তাদের ঘ্রাণইন্দ্রীয় স্থাপন করতেও দ্বিধা করবেন না... যদি কোনো খুঁত বের করে রটিয়ে দেয়া যায় ওই আশায়।
তাড়াহুড়ো-অস্থিরতা, হুট করে অবিমৃশ্যকারিতায় তো বেশ... চিন্তন নামক মানবিক বৃত্তিটি ধ্বসে যাওয়ায় এবং সবকিছুর পেছনে স্থুল লাভ-অলাভ, অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত মানুষেরা এমন কি তাদের প্রতিবেশী, বন্ধু-স্ত্রী প্রত্যেকের কাছে পরস্পর আতংকে থাকতেন কিকড আউট হয়ে পরিত্যক্ত-অনাকাঙ্ক্ষিত হবার দুর্দৈব ঘটিত কর্ম দোষে। সর্বদা অনারশঠ অনেকের স্ত্রী জাতির প্রতি দুর্ব্যবহার, উৎপীড়ন মেয়েগুলোকে একধরনের বেআদব ও বেপরোয়া, পুরুষবিদ্বেষী করে তুলল। এরা অনেকেই স্বামীর অবাধ্য, ডেম্ড্ কেয়ার মনোভাবের কারণে স্বামীর অনুগামী হলেন না এবং বুঝলেন যৌনতাকে টিট্ ফর ট্যাট করতে পারা যায়। এরা একদিকে বিলাসী ও অলস হলেন, নিজেদের দোষ আড়াল করতে স্বামীর প্রতি মারমুখো হলেন- সকলের সাথে মেলামেশা করতে না দিলেন ‘ব্যাস’- মিন মাইন্ডেড ছোটলোক যার নোংরা মানসিকতার সেকেলে লোকের মতো যা প্রগতি ও উন্নয়ন ঠেকাতে এ বিদেশীয় এজেন্টদের নীলনকশা ইত্যাদি, ইত্যাদি। বাস্তব কর্মক্ষেত্র,ঘরে-বাইরে ‘কে হায় সাইধা গুয়ে পাড়া দিতে যায়’। মন্দ কাজে কোনো দ্বিধা সংকোচ ছাড়া সমর্থন -বিবেক, আবেগ পরিণাম পরিণতি ভাবনা ছাড়াই মনের খায়েশ মেটাতে এমনি বহুকাজ করেন যার ফিরিস্তি এই স্বল্প পরিসরে দেয়া সম্ভব না। আন্দাজে মনগড়া কথা বলে কিংবা মিথ্যা বাহবা কুড়াতে কিংবা যাদু-মন্ত্রে বিশ্বাস, পূর্বলক্ষণ দ্বারা প্রভাবিত এসব মানুষের সমাজে বিদ্বান ব্যক্তি নিকৃষ্ট প্রকৃতির... প্রার্থনাস্থলগুলো জ্ঞান ও ভক্তিশূন্য এবং অর্থবান ব্যক্তিরা একাধারে ফুর্তিবাজ কৃপণ অথচ বেহিসেবী এবং অপচয়কারী। সবকিছুর নেপথ্যচারী পর্দার অন্তরালের মানুষদের ভেতর এরাই এবং অবশ্যই এক বা একাধিক মহিলাকে কল-কাঠি নাড়িয়েদের সাথে দেখা যাবে। কম বয়সী মেয়েগুলো বিপুল উৎসাহে এদের নির্দেশিত পথে, বিনাদ্বিধায় সামান্য আশু ও নগদ প্রাপ্তির আশায় কারুর পায়ে পড়েন, কাউকে মাথায় উঠান আর কাউকে ছুঁড়ে ফেলে দেন তার ব্যবহৃত কন্ডমটির মতো। নারী সম্পর্কে মানুষের পূর্বধারণা, অবলা-নারী, দলিত অসহায়-নিষ্পেষিতা তার নিন্দিত নরকের আমন্ত্রণ জানান ছন্দিত ভঙ্গিতে ঊরু-পাছা, গ্রীবা-পোঁদ, পোঁদের খাঁজে সেঁধিয়ে যাওয়া কাপড় ঠিক করতে করতে প্রতিটি কথা তার দুদুবার করে তিনি বলেন- জানান মানবিক আবেদন তার দাতা, ত্রাতা – ভাই, বেরাদার–সিন্ডিকেটে র কাছে আব্দারি ঢং “দাদা....”. আরুজ গুজার তিনি বাঁচতে চান, নাচতে চান আর নাচাতেও চান। এগুল দোষের কিছু না ...তারা ঢাকা মেঘের রাত্তিরে ও যেন সুবর্ণ সুযোগ। এ গুলো নিয়ে যুক্তি, তক্ক ও ধান্দা ফিকিরের ছেদ দরকার । বলবেন আবার কি বদ মতলব ভাজছেন “বাওয়া?” ।
তাই As the king so are the subjects,....,-এর মতোই নারীবাদ-নারীর উৎকর্ষতা সাধনের বিদেশী মতাদর্শও তাই নারীর ‘সেটা মারার’ let start it another way নামক আন্তঃনদী মহাপরিকল্পনার আর এক কাহীনিরই অংশ। এতে ছেদ টানতে পারেন কেউ? নির্ভরশীলতা ক্রমশ বাড়ছে, বাড়ছে গ্রহণের মাত্রা, কাম-তাড়না ও আসক্তি-অশ্লীলতা, ব্যভিচার-নিষিদ্ধ যৌনাচার ,ব্যভিচারে অভ্যস্ত হয়ে ওঠায় বিভিন্ন ধরনের পারভারসান স্বাভাবিক জীবন চর্চা ও চর্যার অংশীভূত হয়ে গেছে ইতোমধ্যে । এছাড়া এরা বাঁচবে না বাঁচতেও চায় না। এগুলো নিয়ে ঘরে-বাইরে ঘাঁটাঘাঁটি করেন না স্বামী, স্ত্রী এক কথায় নারী-পুরুষ কেউই। থলে থেকে well trained বেড়ালটা বেরিয়ে মাছ খেয়ে আবার দেখুন ভাবলেশহীন ভঙ্গিতে ঝিমুচ্ছে ,রোদ সিয়েস্তা পোহাচ্ছে। এরা নিজেরা সর্বাংশে নিপীড়িত থেকেও নিপীড়িতের পক্ষাবলম্বন তো দূরস্থিত অত্যাচারির পক্ষ নেন । কেবল নেন না সময়ের শিক্ষাটা। শিক্ষিত-সুজন ও সজ্জন ব্যক্তিরা এদের সমাজে অপাংতেয় উপেক্ষিত। ভালো মানুষ এখানে একটা অপবাদ, সংগ্রাম-প্রতিবাদ-প্রতিরোধ এখানে কুলক্ষণ। কপটচারীর এসব চক্রান্ত-নোংরামি বেরিয়ে পড়লো । লোকজন উত্তেজিত হলো, পথভ্রষ্ট নৃ-পতি দুঘা বসালেন ঘাড়ে-গদ্দানে বিবাদ সংগ্রাম সূচিত হলো এবং তা তাদের উপরেই পতিত হলোই । এরা একাকী খায় ভৃত্য দাস-অধীনস্থদের প্রহার করেন, গরম ছেঁকা দেয় এবং কাউকে কিছু দেয় না। জন্তু-জানোয়ারের উপরও নিপীড়ন করেন। শিশুদের প্রতি মমতা, প্রবীণেরে সম্মান এদের সমাজে অতীতের গল্প। বিপথগামী হতে এরা শিক্ষা দেয়, অন্যায় কাজে নিজ-নিজ লোককে আহ্বান করে ও অন্যকে প্ররোচিত করেন। এদের ধনাঢ্য ক্ষমতাধর শ্রেণী এক রকম নারী নেতৃত্বেরই অনুগমী যারা ব্যক্তি ও সামষ্টিকভাবে নারী সম্পর্কে খুব নিচু ধারণা পোষণ করেন। একে অপরকে কুপিত বিদ্বেষে জিঘাংসা ও চাপা ক্ষোভ লালন করেন- করেন একে অপরকে কুকর্মে সহযোগিতা । তবে স্বার্থের সংঘাত লাগলে আবার স্বমূর্তিতে কুত্তা-কামড়া-কামড়ি শুরু করে দেন।
ধর্মাপাসনালয় গুলো ভক্তিহীন জ্ঞানহীন এবং অর্থবান ব্যক্তিদের ঘিরে থাকা মানুষদের অন্যতম হলেন ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিতরা। অন্যান্যদের মতো এই ধর্মজীবীরাও ধনাঢ্য ও ক্ষমতা চর্চাকারীদের সাহচর্যে আর সকলের মতো কৃতার্থ ও নিজেকে সফল মনে করেন। দুঃস্থ মানুষ অত্যাচারিত নিপীড়িতজন দরিদ্র মানুষেরে এরা সন্তর্পণে সচেতনভাবে এড়িয়ে চলেন বা উপেক্ষা করেন। রাজরোষে পড়ার ভয়ে বা রাজানুকূল্য থেকে বঞ্চিত হবার ভয়ে এরা নির্যাতিত মজলুমকে অপয়া অমঙ্গলজনক উটকো ঝামেলা মনে করেন কি? দুনিয়া প্রীতি এবং একারণে পারস্পরিক বিদ্বেষে এরা কারুর থেকে কম যান না। গরিব দুঃখী-সুবিধা বঞ্চিত দলিত সমাজ ও মানুষের মাঝে এদের হামদর্দী হিসেবেটা সত্যি পাওয়া দুষ্কর তবে অন্য কোণো বদ মতলব থাকলে সেটা আলাদা কথা। আত্মতুষ্টি ও আত্মপ্রবঞ্চনা চাইতেও ধর্মীয় বাতাবরণে এরা অধর্ম চালিয়ে যাওয়ার মতো ধৃষ্ট প্রদর্শন করে ধর্মকে হেয় করেন। মানুষ এদের কাছে গেলে এমন সব উপদেশ নির্দেশ দেন যেগুলো এরা নিজেরাও আর সব অনুশাসনের মতো পালন করেন না। মানুষের ধর্মবিশ্বাসবোধে আঘাত লাগে ও এতে বিশ্বাসগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় থেকে এরা নিরাপদ বোধ করেন। নিরাপত্তা খোঁজেন নির্ভর করে সৃষ্টিকর্তা ভিন্ন অন্য শক্তিতে। মানুষ আস্থা হারায় এদের উপর সাথে সাথে ধর্ম, ঐশ্বরিকতায়, ধর্মীয় অনুশাসনের উপর মানুষের শাশ্বত-চিরকালীন মূল্যবোধ, ভালো-মন্দ করণীয়, আচরণ ও কর্মের মানদণ্ড ধর্ম-ধার্মিকতা ও গুরুত্বসহকারে ভক্তিভরে এর চর্চা উপর থেকে মানুষ হারিয়ে যায়। এরা ধর্মের নামে অধর্মকে প্রতিষ্ঠা করতেই যেন অধিক সচেষ্ট। ও পরজীবী এরা যারা ক্ষমতাবান ধনাঢ্য ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের তৈরি কায়দা-কানুনের সামনে নত হোন লোক-লষ্কর তলব করে ধর্মকে জলাঞ্জলি দিয়েই স্তব-স্ততি শুরু করেন এদের এবং এদের-ও নিজেদের দুষ্কৃতিকে আড়াল করতে ধর্মের নামে বানোয়াট ব্যাখ্যা দাঁড় করান এবং প্রতিবাদ প্রতিরোধ স্বভাবজাত সংগ্রামকে কুলক্ষণ, সংগ্রামীকে অপরাধী, অলক্ষুণে মনে করেন এবং ধর্মের পুরো theoryএবংpractice -এ প্রকৃত ধার্মিককে কাবাব মে হাড্ডি প্রমাণে সচেষ্ট হন... মানুষের অসুবিধা হলে সরাসরি, বিদেশী বৈজ্ঞানিক ও উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি মাল্টিপারপাস অর্গানিক-পান করেন। স্বাদেশীকতা-স্বজাত্যবোধ ব্যক্তি চেতনায় বাধ সাধলে একজন দেশী লোককে জাতীয় স্যুট-টাই পড়িয়ে নট নটী , নর্তকীকে গামছা বেঁধে দাঁড় করিয়ে দেশাত্ববোধক একটা গান, কোরিওগ্রাফী স্ক্রিনে অন্ এয়ার করে দিলেন আমলা-কামলা প্রফেসনালসরা তো কার কি বলবার আছে । আমরা বলি ‘এক্সপার্টিসরাড়া...তবে মজার কথা ধর্মচ্যুতদের দেশপ্রেম, ভিন্নধর্মাবলম্বীদের থেকে-ও কম এ এমনকি একেবারে নেই বললেই চলে তা সে ধর্মকে যে পর্যায় থেকেই অস্বীকার করুক না কেন। ধর্মের জোব্বা আলখাল্লা-পাগড়ি দিয়ে কেন মানুষকে ঠগানো, ধোঁকা দেওয়া যায়... কেন বোকা বানানো সহজ? ঠিক যেমনটা হয়তো দেশপ্রেম-দেশমাতৃকা-পিতৃভূমি-মায়ের ভাষা মানুষের সাম্য-মুক্তি-স্বাধীনতার আওয়াজ দিয়ে, নারীর সম্মান, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শান্তির পৃথিবী ইত্যাদি আওয়াজ দিয়েও মানুষেরে বোকা বানিয়ে ফায়দা লোটা যায়, ক্ষমতাবান ক্ষমতাশীল হওয়া যায় নিজের ট্যাক ভরা যায়। আসলেই মানুষের শাশ্বত-চিরকালীন চাওয়া-পাওয়া, মানব সভ্যতার অবিচ্ছেদ্য পারম্পার্য এগুলো সত্য এবং চাওয়াগুলো নির্ভেজাল ও আন্তরিক। তাই ‘উস্তাদ বাজিয়েরা হারমোনিয়ামে ব্লো দিলেই মানুষ জোড়ায় জোড়ায় উঠে দাঁড়ায়’ এই সব স্বপ্রমানীত ধ্বনিতে। যে যার জায়গা থেকে হাঁক ছাড়েন ‘সাধু-সাধু’। ব্লু কলার, হোয়াইট কালারের কর্মজীবিরা টাই এর নট ঠিক করেন মেয়েরা বুকের আঁচল আর ওর পোঁদের কাপড়। কেবল হাঁক ছাড়েন না ‘হুঁশিয়ার-সাধু গণসাবধান’। ইয়াতিম-অসহায়ের পাশে এদের পাবেন না তা না... সিলিব্রিটি ইমেজের উপর জনদরদি সমাজ হিতৈষীর মানবিক ইমেজের প্রলেপ দিতে প্রয়োজন হলে পাবেন। মানুষের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে ফায়দা লোটা ধান্দাবাজী করা মৌলাভী সাহেবের ধর্মনামক চরম মানবিকতা ইমেজ তো গড্ গিফটেড। তৈরি করা লেবাসটা শুধু চাপালেই রেডি-সেট-গো। আসলেই মানুষ-গণমানুষজন ক্ষমতাসীনদের অনুকরণ-অনুসরণ করেন... এটা মানবিক ও ঁতার স্বভাবজাত। তাই ঐ এলাকার মানুষ তাদের ক্ষমতাধর শ্রেণী-গোষ্ঠীর ক্ষমতার অপব্যবহার তাদের ইল্লিসিট মানি, মিসডিস্, মজায় ভরপুর জীবন বোধ-কর্ম ও কৌশল... এক কথায় ইভিল ডুয়ার্সদের রং ডুয়িং-এর রাস্তা অনুসরণ করে সব মানুষ সফল হতে চান। নিজেদের সার্থক মনে করতে চান মানব জীবনে সফলের অনুকরণের মাধ্যমে। এটিই ধর্ম, এটি এরা সবাই ধারন করেন আর স্বপ্ন দেখেন, উন্নত মানবিক সমাজে উত্তরণের। কেউ কেউ এর ভেতর শখে কমিউন করে থাকেন পাঠচক্র করেন, করেন পত্রিকা বের আর কি করে ঝিমিয়ে পড়লে ? একটি নতুন বোতলে মাল্টি পারপাস লোটো অর্গানিক আত্মতৃপ্তির এক ঢেকুর তুলে লেকে-পিকে ভাসিয়ে দেন- আম আদমীলোগ সারে উর্দিস্থান যেখানে আওরাতো কো লিয়ে ওয়াশরুম ... আউর বাচ্চালৌগ? “ যাও তালিয়া বাজাও” ... দুনিয়া সমগ্রে পরিবর্তন বা বিপ্লব চিন্তা এক প্রকারে নির্বাসন দণ্ডে দণ্ডিত মানুষও ব্যাপক ক্লান্ত ও ব্যাপারে অনেকে এক প্রকার আঁতকে ওঠেন । ফ্রিকোয়েন্টলি বা কনসি-কোয়েন্টলি অথবা সাবলিকোয়েটলি অপরাধপ্রবণতা আর অপরাধপ্রবণ মানুষ ...এক কথায় অপরাধ গেল বেড়ে। এরা দুরাচারী এক সম্প্রদায়ে পরিণত হলো... আনন্দে ভরপুর নরকের রাস্তাটাকে তাদের মনে হলো ধারণাতীতভাবে উন্নয়নের রাজসড়ক ও নিজেদের সে জনপদবাসী। ভোগবৃত্তি-রিপুর তাড়নায় ব্যয়িত শ্রমে আয় ও আয়ের উৎস ভালো আর মন্দে মিলেমিশে মাখামাখি হয়ে গেল- গেল এক হয়ে। মানুষের যুথবদ্ধ কৌম মানসিকতায় হীনস্বার্থকেন্দ্রিক সম্পর্কের হালুয়া-রুটির দোস্তিতে রুটি ফুরিয়ে গেলেই সম্পর্কে ছেদ কিংবা বিপদ ঘনায়মান হলে কেটে পড়েন অথবা পড়ার অযুহাত খোঁজেন। খোঁজেন কে, কীভাবে নিরাপদ নয়, এমনকি অন্যের শান্তিতে ন্যুনতম স্বস্তি বোধ করেন না, করেন একে অপরকে অবিশ্বাস। এর ভেতর দিয়েই সম্পর্কগুলো বিস্তার লাভ করে ও এক সময় চিরাচরিত পরিণতিও লাভ করে পরিস্থিতি । নারীরা এই নোংরামো ভরা সম্পর্কের ভেতর ‘ঘিতাগ্নি’ ... ঠিক আর কি সবাইকে কড়াই থেকে উনুনে ফেলে দিলো একটি ঘটনা । যার সূচনা হয়েছিল বহু আগে থেকেই। আগেই প্রচ্ছন্ন দুটি গ্রুপ ছিল যারা রাজানূকূল্য এবং এলাকায় প্রভাব প্রতাপ বিস্তার নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতো ।ঐ যে যা পরে রেষারেষি দলাদলি, বিদ্বেষ পোষণ আক্রমণ, প্রতি আক্রমণে রূপপরিগ্রহ করেছিল... এ পর্যায়ে চারুর ১০০% হালাল হোটেলে কানুর-কাস্টমার তার দোস্তবন্ধুদের সাথে গিয়ে ছোটখাটো বচসা বাদানুবাদের সম্মুখীন হলো। এবং হোটেল কর্মচারীর দুর্ব্যবহার করে সম্ভবত দু-চার ঘাও বসিয়ে দিয়েছিলেন। ডিস্কো-ক্লাব-নাচের দোকান বা পানাহারের জায়গা বা আর্ট, সাহিত্য ও শিক্ষাবিদদের আসরে নারী-পুরুষ দু-দলে মিলেমিশে একত্রেই কুকর্মে প্রবৃত্ত হতেন। নব-প্রজন্ম বিগড়ে গেল। নিজের গোত্রে গাট্টা খেলে অন্যগোত্রে আশ্রয় পান...পান সাদর প্রশ্রয়, আবার নিজ গোত্রে ফিরে গেলে প্রতিপক্ষের নীরব প্রশ্রয়, যাক সেসব। এমনি এক যুবা পুরুষ এক অভিজাত কূলশীলা ধনাঢ্য রূপসীকে প্রণায়বিদ্ধ করলেন। মেয়েটির গুণপনা জগৎজোড়া খ্যাতি অর্জন করেছিল, যেটা বিরোধিরাও অস্বীকার করবেন না। পথভ্রান্ত নতুন প্রজন্ম ছুটকো ছাটকা দাঙ্গা-হাঙ্গামা-ভায়লেন্সে জড়িয়ে পড়েছিলেন ঠিকই- কিন্তু সিনেমায়..... ঐ সিনেমার সফল মানুষের পদাঙ্ক অনুসরণে তারা সব করেছিলেন এবং কেবল আইডলদের মারামারি খুনোখুনি ছাড়া। সবকিছু পুরো দুস্তর হিরো জেয়সা...ঐহ্। এক্ষেত্রেও তারা কোনো কার্পণ্য করতে দ্বিধা করবেন না ‘নায়কোচিত’ বলে কথিত সামাজিক স্বীকৃতির মেডেলটা ভাও করতে ।এমনতর দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন নেতৃবৃন্দ। চাউর হয়ে গেল। গেল শুরু হয়ে গোপন প্রস্তুতি, শলা পরামর্শ, গূজূড় গূজূড় ,ফূশূড় ফূশূড় আর নেত্রীবৃন্দের গোপন বৈঠক। বস্ বললেন সবাইকে ‘আম ছালার ব্যবসা মোটামোটি করা হয়েছে, যা দিয়ে এনার্জি ড্রিংক মার্কা সামাজিক অর্থনীতিক প্রবৃদ্ধির রথের চাকাটি ঘুরছে। সেই রথ দেখার উৎসবে আমন্ত্রণ সকলের- আবাল বৃদ্ধ-বনিতা যুবা অচ্ছুত কুলহারা কূলশীলা অভিজাত এবং হীন-দুর্বল মানে সকল মাত্রার সুবিধা বঞ্চিতের বা সকল মাত্রার সুবিধাভোগী সকলেই । যেই মেয়েটি সবসময় সব কথা দু-দু বার করে বলেন আর কেবল উড়নাই পাট করেন... তিনি স্বভাবজাত বৈশিষ্টানুযায়ী বললেন ‘স্যার-স্যার একঢিলে-একঢিলে...’ স্যার বললেন ‘তাহলে তো দুটো ঢিল হয়ে গেল হে, সব কিছু খুলে বলো’... যেন সেই ঢিলটি মৌচাকে গিয়ে পড়লো। মেয়েটি অভ্যস্ত চটপটে ত্রস্ত ভঙ্গিতে খুলতে শুরু করলেন কাপড়-জামা। স্যার হা হা করে উঠলেন। ‘আরে কাপড় না বিষয়টা খুলে ব লো’ । “নারী বুদ্ধি ভয়ংকরী”-প্রবীণের একথাটা বসের মনে ছিল ছিল না ।মনে ছিল ছিল না এ বিষয়ে আরও একটি আপ্তবাক্য... যাক সেসব। বসের তারস্বরে চিৎকার-এর অপর ঢিলটি ভীমরুলের চাকে লেগেছিল কিনা সেটা উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটির রিপোর্টে থাকলে জানা যাবে। তবে আপাত অফিস-কর্মচারী বীরত্ব-সহানুভূতি যার যা মানবিক-আচরণ থাকতে পারে তাই লিয়ে উর্ধ্বতনকে সন্তুষ্ট করতে... কৃপাদৃষ্টিতে পড়তে হুড়মুড় করে বসের রুমে অনুমতির তোয়াক্কা না করেই ঢুকে পড়লেন এবং দৃষ্টি বিস্ফোরিত হলো অর্ধনগ্নীকাকে দেখে। যিনি কেবল নির্দ্বিধায় দুদু-পাছা দেখিয়ে বলেছেন মৌনতায় ঘ্রাণেই অর্ধ ভোজন আর ওতেই সন্তুষ্ট থাকুন; ওটা বড়দের জন্য নির্ধারিত... তোমাদের জন্য সেরিল্যাক। আর ছন্দিত-নন্দিত পোঁদ নেড়ে চলে গেছেন বসের কামরায়। সেই অফিস কর্মীদের কতশত হারিয়ে ফেলা দীর্ঘশ্বাসগুলো বুকে ফিরে এলো। বুকটা ফুলে উঠলো এবং বললো― ‘সবুরে কেষ্ট মেলে’ আর তুমি তো একঢিলে দুপাঙ্খির গল্প বলা মেয়ে। বস্কে মেরে- নারী নির্যাতনের ক্যাইসে ফাঁসিয়ে দেয়ার চিন্তা কেউ করছেন এরই মাঝে । ‘ম্যাডাম আপনি আসুন আমার সাথে...’ আপনারা না থাকলে আজকে যে কী হতো ইত্যাদি ভাবনা হাতাচ্ছিলেন কেউ । কিন্তু বস্ বললেন হঠাৎ করে কোত্থেকে একটা তেলাপোকা- আরশোলা উড়ে এসে... ঢুকে গছে...। মেয়েটি আমতা আমতা অবস্থা তারপর সত্যিই তেলাপোকা ভয়ঙ্করতম জীবদের মধ্যে তার কাছে একটি আর সে কারণে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে অবিবেচনা প্রসূত কাজ ঘটিয়ে ফেলে সবাইকে অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলায় ফেলে দেয়ায়... । তবে সকলেই কিন্তু বলতে চাইলো ‘যারপর নাস্তি তারা খুশি এবং তিনি সেলিব্রিটি হিসেবে ফ্যান ভক্তদের সাথে মিলিত হতে চান কিনা আন্তরিক মনোরম ও ঘরোয়া পরিবেশে... যেখানে ভদ্রতা বজায় রাখতে ও শিষ্টাচারের কথা বলা হয়, বলা হয় মহিলাদের আলাদা কেবিনের ব্যবস্থার কথা... স্রেফ হাম- আউর তুম-চালি যাউ দূরে’ সেখানে একাই দু-দশ জনকে ধরাশায়ী করে ফেলেন নায়ক আর বিপদ কেটে গেলে রুটির দোস্ত-রা নাচনেওয়ালীদের সাথে ঢোলে বাড়ি দিতে দিতে ছুটে আসেন ‘মি-জে-সিন’ বা ফ্রেমে/মঞ্চে দৃষ্টিগ্রাহ্য আকর্ষণীয় স্থানে নিজের অবস্থান যোগান দিতে। ঠিক ফ্ল্যাসের চমকানো আলোয় ক্যামেরার সাটার-এর ডিজিটাল আমলের যান্ত্রিক আওয়াজের সামনে সমাধিস্থ হন-লীন হয়ে যান। নবযুগের ব্রহ্মায় লীন হয়ে যান সকলেই। সবাই ধুম দিচ্ছেন ওতে দুদ্দাড় বসিয়ে দিচ্ছেন চাঁটি মেরে খাচ্ছেন। মেয়েরা মূলত ‘ফিতে খুলেই খান, লোকসমাজে বলেন গার্মেন্টস্ করি। তাই আসিতেছে কাপড় উঠানো-পর্দাহটানো, বুক কাঁপানো, গাঁড় ফাটানো-ভবিতব্য। পালিয়ে চালি যাবেন কাহা? দূরে ? ফিগার সচেতন-কন্ট্রোলড্ ডায়েট-যোগ, এ্যারোবিকস্ ,সোনা-টার্কিশ বাথ করা শুকনো হালকা কণ্ঠার হাড় কিঞ্চিত বের করা মেয়েগুলোর মতো নতুন পিএটাকে কোলের উপর বসিয়ে দাবা খেলছিল সামির ও শুরু করেছে এবার লুই লুপেজ ডিফেন্স দিয়ে খেলী। ভাবছিল কিঞ্চিত কণ্ঠার হাড় বের করা চিকন-সরু ক্ষীণকটির মেয়েগুলোর স্তনজোড়া (বেখাপ্পা রকমের) এতটা স্ফীতাকার কেমন করে হয়? এ বিষয়ের উপর অনধিকার চর্চা বা হস্তক্ষেপ মেয়েরা কীভাবে নেন। সামিরের হাত দুটো নিশপিশ করছে এ মুহূর্তে নাইট ই৬ একটা চাল দিয়ে গজটার ঘাড় ভেঙে দিতে আর ভাবছে বিশপ লেফ্রয় স্ট্রিটের এজেন্ট ছোঁকড়া লোকটি মিসিং সিন্স দ্যা ডে এ বিফর ইয়েসটারডে। মেয়েটি কোলের উপর তার প্রতি অমনোযোগী হলেই ঠেকানো পাছাটা ডলতে থাকেন, ধ্যান ফিরে আসে- নব্য উত্তর আধুনিক সময়ের ঋষিদের। সে ধ্যানমার্গে তরঙ্গ ভঙ্গও হয় না তৃষ্ণা নাম্মি এই তন্বীর নিতম্ব মর্দনেও। এখানে নৈতিকতা খুব নীচ মাত্রার। এমন অসততা অসৎ ব্যক্তিকে তার কুকর্মের কারণে পার্থিব ও বস্তুগত সফলতা প্রদানের মাধ্যমে সমাজ নেতৃত্বের আসনে বসিয়ে ক্ষমতাবান ধনাঢ্য,সফল ও ইনফ্লয়েন্সিয়াল গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে চিহ্ণিত করে। সমাজ মানসে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। মানুষ এরপরও সততার সাথে হানাহানি লোকঠকানো দুষ্কৃতির মাধ্যমে অর্থ সম্পদাদি অর্জন থেকে বিরত থাকেন। ঐশ্বরিকতা ও পরলোকে শাস্তি না হোক শান্তির আশায় সান্ত্বনা পায় অথবা শান্তি না হোক, শাস্তির ভয়ে... স্বস্তি খোঁজেন। সমাধানের আশায় ঈশ্বরের নাম নেন। শান্তির আশায় ভগমানের নামে উৎসর্গ করেন... মৌলভী মাওলানারে দান উপঢৌকন পাঠান। এতে কাজ না হলে মানুষ তার মানবিকতার উৎসমূলে একটা ঘা খায়। মানুষ ঈশ্বরে আস্থা-ধর্মবোধ-সৎকর্মে বিশ্বাস থেকে প্রথমেই সরে আসেন তা না তবে অমনোযোগী হন। তৃষ্ণা আবার নিতম্বটা নাড়াচাড়া করে যুত করে বসেন। সামের ভাবেন ক্রমে নৈতিকতা থেকে সরে আসার পরে বৈরী স্রোতে হাল বেয়ে যুত পান না... পায় অবজ্ঞা, অনুকম্পা-তাচ্ছিল্য মেলানো আহা: উহু:। লোকটি নিজের যোগ্যতা নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবেন... জীবনের পরকালীন চিন্তা ব্যতিরেকেই কর্মকাণ্ড শুরু করে দেন। নৈতিকতা-ঐশ্বরিকতা,আধ্যাত্মিকতাহীন মৌলিক মানবিক এ মূল্যবোধশূন্য জীবন-যাপন পদ্ধতি ও ব্যবস্থায় চালিত হতে থাকে। দুষ্টের দমনের পরিবর্তে শিষ্টের দমন ও খ্রিস্টের সৎকর্মপরায়ন হস্তদ্বয় ছেদন প্রক্রিয়ায় পড়ে মানুষ সৎকর্মে উৎসাহ হারায়... উৎসাহ হারায় এদের পাশের কোমর পেঁচিয়ে কণ্ঠলগ্না সঙ্গিনীদেরকে দেখেও। এটি তাকে অনৈতিক মৌলিক অর্থে মানবতাবিরোধী-নির্বোধের, বুদ্ধিশ্রীহীন অমানবিক কর্মে প্রবৃত্ত করে। জীবনের অব্জেকটিভের ফাঁকা জায়গাটা পূরণ করে মানি এন্ড দা ফ্লেসেস্। ইউলিসিসের not to yeald-to seek to strive to find- মোণে রেখে কিন্তু কী বিছরান্- কী খোঁজেন। স্বার্থপর মানুষ নিজের স্বার্থটাও খুব ভালো বোঝেন না এমন ধরনের ধর্মহীন-ধর্মাদর্শহীন মানুষ কর্মেরও উৎসাহ হারান। তবে তার তৃষ্ণা নখে রঙ মাখা শেষ হলে সে মিশেল ফুঁকছেন। শুকোবার পর এ মুহূর্তে দেখছেন কেমন হয়েছে... তবে কর্মে অভ্যস্ততা ও কর্মে আসক্তি জন্মে যায় । জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য হারিয়ে মানুষ কিসের পিছনে কী জন্যে যে ছুটে চলে সে নিজেও পরিষ্কার সে সম্পর্কে জানে না। বাথরুমের দেয়ালে টয়লেটে গিয়ে অনেকক্ষণ ধরে ঠোঁটে কড়া রং মেখে আসে। এসে বলে ওয়াস রুমে লেখা-“সুখ নাইরে পাগল “। আর বলেন “সুখ কি ওখানে”। সামির ওর দিকে তাকায় এবং দ্রুত একটা গভীর শ্বাস ছেড়ে বলেন ‘হবে হয়তো’! দাবার নতুন খেলায় সিসিলিয়ান ডিফেন্স দিয়ে শুরু করেছেন। ভাবলেন ও বললেন মার্জিত ভাষায় অনেকটা এমন যে যা বর্জনীয়-বর্জ্য ত্যাগের আবিশ্যিকতা রয়েছে এবং এতে আছে যারপরনাই অপার ও কাম্য শান্তি... সুখ-কাঙ্ক্ষিত কে বৈধ উপায়ে নির্দিষ্ট পন্থায় গ্রহণে ... এই যেমন প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত অবস্থায় সেদ্ধকরা ডাল বা ধ্যানস্থ হলে যখন দুনিয়াবী চিন্তা অবৈধ ও তা বর্জন তখন এবং ধ্যানভঙ্গ হলে যখন পার্থিব চিন্তাকর্ম বৈধ তখন সুখ আছে এবং শান্তি পাওয়া যায় বলে সামিরের মনে হলো এবং দাবার ছক উল্টে দিয়ে নতুন করে চাল দিলো নিমজো ইন্ডিয়ান... ভাবলো মুভিং মেডিটেশানের জমায়েতে যাবার কথা। তৃষ্ণাকে বললো তাইচে সেন্টারে ফৌন লাগাও। মেয়েটি হবে হয়তো বলে একটা দম ছাড়লেন এবং সত্যিই পাঠক বিশ্বাস করবেন না সত্যি-সত্যি পোঁদের কাপড়টা এবার আর ঠিক করলেন না মেয়েটি। এসব ভাবছিল সামির... ক্ষীণকায় মেয়েগুলোর স্তনযুগল বেখাপ্পা রকমের স্ফীতাকার ডাসা ডাসা কেন? যিনি সুন্দরী নন তিনি ঘসে-মেজে সুশ্রী হয়ে ওঠেন। উঠতেই হয় না হলেও চলে... কিন্তু সব্বাইকে নিদেন পক্ষে ‘ইয়ে’ উঠতে হয়। মানে সেক্স এ্যাপিলিং, যৌন আবেদনময়ী অন্তত পক্ষে টার্গেট পিপুলের বা প্রুপের নির্দিষ্ট পারসোনালিটির কাছে। সেক্সির কথায়, আউটফিটে, সামনে-পেছনে, মানসিক প্রদর্শন ভঙ্গিমায় ছেলেরা যুবা-পুরুষ, মধ্যবয়স্ক এমনকি বৃদ্ধরাও তাড়িত বোধ করেন, যৌন-উদ্দিপনা ছড়িয়ে পড়বে-সঞ্চালিত হবে। এটি নারীর মৌলিক এবং কোনো ক্ষেত্রে একমাত্র যোগ্যতা এবং দেখা যাবে একই সব এই কারণে সে বিদেশী তিনটা ভাষা রপ্ত করেছেন Expensive-Exclusive-Exceptionally-পলিসড্ একধরনের এলিটিজমকে রপ্ত-ধারণায়ত্ব করেছেন নিছক হীনতা কিংবা এটা জাত্যাভিমান থেকে নয় এটা মানুষের সততা নৈতিকতা সত্যপ্রবণ মানবিকতার দিকে পরাজয়ের কটাক্ষ ও অপযশ লেপনের হীন কৌশল এবং মজার বিষয় তাকেও টার্গেটেড এর সামনে সেক্সি সাজতে হবে ।
“সৎ মানুষ হয়ে কী পেলেন আর?” আরে ঐ হালায় কী জীগায় দেখেন এতক্ষণে ! কিছু পাওয়ার জন্য কী মানুষ সততা-সত্যনিষ্ঠা সত্যাগ্রহী সত্যানুরাগী হয় নাকি? সকল পরিস্থিতিতে, সময়ে আর অবস্থানে সৎনিষ্ঠ এবং এর প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে এটাই সততা। এটাই মানবিকতা। কিছু প্রাপ্তির জন্য করতে হলে তো অসৎ, দুর্জন প্রকৃতির লোকের দুষ্কর্ম করা দরকার। যেমনটা সামির-দের বস্- বা তার মতো অনেকেই যে যার অবস্থান থেকে করেছেন। করছেন ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে, নিচে ফেলে উপরে বসিয়ে মানে (বিপ্রতীপ রতির) ঐ আসনটাতে। পাঠকের মনে আছে ? হাল গল্পের শুরুতে নারীরা যর্থাথ মর্যাদাপূর্ণ যোগ্য আসনটির কথা অথবা ঐ পোঁদে চুমু খাওয়া আকাশ দেখা হাই-ফাইভ মার্কা মানে অভিজাত মানে পশ্চিমী ধাঁচের মেয়েটিকে যিনি বিপ্রতীপ রতি-র আসনে বসে চকোলেটবয় বা দি লাভার বয় মার্কা সিক্রেট লাভারকে দিয়ে যুগপদ্ নিজেকে মারাচ্ছিল ... আই মিন নিচ্ছিল স্ফীত দণ্ডটি ও নিজেই আবার দিচ্ছিলেন মূল চাপ ও ঠাপটি। পাঠক ভালো লাগছে? ভাবুক মন কী বলছে? “লাইরা দে” ।
তৃষ্ণা মেয়েটি এবার কেন যেন ক্ষেপে গেলেন এবং... একটি মেয়েকে একদল যুবক জোরপূর্বক বলাৎকার করলেন। কাউকে মারলেন-ধরলেন, জোরজবরদস্তি ভাগিয়ে নিলেন―উঠিয়ে নিলেন প্রতিশোধ। ক্রমে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছে... ভেসে আসা ভেগে যাওয়া মেয়ে-ছেলেরা একটা পোঁদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দেখা দিলো। ব্যবসা-বণিজ্য, ক্ষুদ্রজীবীরা বড় রুহি-পাঙ্গাস-রা সামান্য কারণে ভেদবুদ্ধিকে প্রশ্রয় দিলেন না, আর্থিক/সামাজিক প্রতিপত্তির কথা ভেবে। মাল্টিপারপাস সেবন, সেবী, সেবনের মাত্রা, সাইড ইফেক্টস্, বিকল্প এবং আরো নতুন-উন্নত ধরনের উত্তেজক দরকার হয়ে পড়লো এ সময় একঘেয়ে জীবনে নতুন তাড়না সৃষ্টিতে। নতুন-নতুন উন্নয়ন-উন্নত দেশীর স্ট্যান্ডার্ড অর্জন করতে, সহজে নতুন নিয়মে-উন্নয়ন বটিকায় লগইন আর তার এক্সিলারেশান ও প্রমিস্ড ল্যান্ডের পরিকল্পনায়... , বস্ নাম দিলেন ‘Ôthink bigÕ’ গুঞ্জন শুরু ক রিয়ে দিলেন ‘আসিতেছে আবার। কিন্তু কী?’ নিয়ন সাইন, বিলবোর্ড পত্রিকায় ‘কিন্তু কী?’ এটাই বিজ্ঞাপন। মেয়েটিও পোঁদটা নগ্ন রেখে দিয়েই ভগ্ন হৃদয়ে গালে হাত দিয়ে ভাবতে বসে গেলেন, দেখলেন স্যারদের ঢিলে টাই-এর নট্, মহিলদের খাঁজে ঢোকা পোঁদের কাপড় । সবাই দায়সারা ভাবেই ওই জায়গাগুলো দেখলো। সবই অভ্যাসবশত আর কি । কিন্তু সত্যিকার আবেগ আগ্রহটা হারিয়ে গেছিল পূর্বেই ।এবার যাচ্ছিল স্বাভাবিক যৌনপ্রেম হটিয়ে বিকারগ্রস্ত যৌনাঙ্গদি লেহন, নিতম্ব চুম্বন বক্ষমর্দন... ওই সব
সামির দেখলো সামাজিক অস্থিরতা-উত্তেজনা মনমগজ থেকে ঘর-দোর পেরিয়ে সমাজ সংস্থানের বহিরাঙ্গনে বড় পরীধিতে বিস্তৃত হলো। এনার্জী ড্রিঙকস্- কেন্দ্রিক জীবনযাপন, লায়েফ স্টাইল ভিন্ন মূর্তিদান করলো দ্রুত।তবে এর নেতিবাচকতা ব্যাপক যা সূদুর বিস্তারী ও অভিসন্ধিমূলক বস্ বললেন ট্যটু এঁকেছ- এখন হুজুগ তোল এ-যুগ ট্যটু রিমুভিং-এর। আমরা ভাবছি সেটা কী? ওদিকে রেষারেষি পোন্দাপোন্দীর এক পর্যায়ে দুম করে চারু খুন হলেন। অনেকটা দিনে দুপুরে, একদম সত্যি একদম সিনেমার জগৎ থেকেও সিনেমাটিকভাবে ও ভঙ্গিতে। যাদের হিরো হতে সামান্য বাকি ছিল। তারা দম্ ছাড়লেন আশায় বুক বাঁধলেন। নাহ : আমরাও পারি। যারা ক্ষমতাসীন হলে নিজেকে বাঘ ভাবতে ভালোবাসেন আর স্থানচ্যূতি ঘটলে বেড়ালে ফ্যাচ শুনলে বউয়ের আঁচলের তলায় সেঁধিয়ে যান...তারাও ও আশায় বুক বাধলেন।
যাক সেকথা বক্ষমর্দন ওষ্ঠের মিলন বা কামড়া-কামড়ি আঁচড়, সচরাচর পুংদণ্ড দ্বারা ছেদনের চিরকালীন কর্ম-রতি-ক্রিয়া এমন একটা পর্যায়ে নারী-পুরুষ উভয়কে দাঁড় করালো যেটাকে বলা যায় এমন করে গাঁড় মেরে বসিয়ে দিলে মুখ ফুটে বলাও যাচ্ছে না যে মেরে দিয়েচে। অজ্ঞাত পরিচয় পয়মুখ দুষ্কৃতিকারীরা। তবুও পোঁদের দুঃখ মনে রেখে, মাল্টিপারপাস অর্গানিক ডেপ্রেশান কাটাতে কাজে দেয়... একজন উন্মাদগ্রস্ত টিভি পর্দায় তাই বললেন ‘আই ওয়াজ লিভিং ইন পেরানয়া, নাও আই অ্যাম এইবেল টু ওয়ার্ক’ ম্যানিক ডিপ্রেসিভ্ স্কিজোফ্রেনিয়া ও বাই-পোলার আচরণ ও এর বিভিন্ন উপসর্গ একদম ছেড়ে গেছে তাকে। চারু মিঞাও এদের ছেড়ে গেলেন, লোকক্ষয় হলো, ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ, সড়ক অবরোধ, অপহরণ-মুক্তিপন আদায় আর মহিলাদের এরা এ সময় যা যা করে থাকে ঐ যে ঐসব ঐ সুযোগে... কুঁদে-কুঁদে আসা এ ছেলেরা রাজনৈতিক বলা ঠিক হবে না, এখানে আদর্শটা নিছক ধর্মবর্জিত বস্তুগত-বৈষয়িক অর্জন, যার জন্যে বিপুল জনগোষ্ঠীর আন্তরিক অংশগ্রহণ খুব জরুরি ছিল। কেননা উপনিবেশগুলো থেকে টাকাকড়ি লুট হয়ে গেছে অথবা যে দেশগুলো উপনিবেশ বাগাতে পারেনি কিন্তু তাদেরও পারতেই হবে সত্যি কিন্তু ... কিন্তু কীভাবে? তারা সাম্য-বৈষম্যহীন-মানবিক, নারী, পুরুষ আসমতা, সব কিছু দূর ছাই করণ করে ফেললো ইত্যাদি ইত্যাকারে... আওয়াজ তুলে। বহু শ্রম, সময়, জান-মাল, বড়-বড়, লম্বা-লম্বা কথা বক্তৃতামালা, মিছিল, তার থেকেও বড়-বড় স্বপ্ন-স্বপ্নের আশা, স্বপ্নের তাড়না স্বপ্নের ঘেরাটোপ সে তাড়নায় চেনামানুষ অচেনা হয়ে গেলেন, বন্ধু অপরিচিত হয়ে গেলেন, গেলেন অদ্ভুত ভিন্ন মানুষ হয়ে...
চারু খুন হলেন, লাশ গুম্ করতে চাইলে, কর্তৃপক্ষ কোত্ওয়াল পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি, লাঠিচার্জ, জল কামানে রঙ মেশানো গরম পানি ছিটানোও হোল আর কাঁদুনে গ্যাস্ । জনতা মারমুখো আকার নিল।…নিল প্রতিরোধের-প্রতিশোধের শপথ। কাম-আসক্তি, টাইমপাস, ফ্যাশন-আওট ফিট লাইফ স্টাইল সবকিছুতে দাবানলের মতো ছড়িয়ে গেল দাঙ্গা ও হাঙ্গামা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে স্কুল-কলেজ, ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি ও শিল্প উৎপাদন থমকে দাড়ালো, মানুষের ভাববার সময় নেই কেবল ফুঁসছেন... এক পর্যায়ে লাশের বিকৃতি ঘটনা হলোও তা আত্মীয়-পরিজনদের কাছে পাঠানো হলে ফুঁসে উঠলেন লোকজন, পত্রিকায়, রেডিও-টিভি, বিজ্ঞজনরা বিষয়টা ফেনিয়ে তুললেন... তুললেন লোকজনাকে ক্ষেপিয়ে... এনার্জি ড্রিংকস্? ওহ: বলাই হয়নি বস্ একটা জরুরী মিটিং ডাকলেন কেবল ডাকলেন না লোকাল রিক্রুটদের কে। কেনো, কেনো? আরে এতো কেনো কেনো করছেন কোনো? উন্নয়নের ইয়ে মারতে... মানে ইয়ে করতে । বলল “ (দহড়ঃ ঃড় নব সরং-ঃধশবহ’) আমরা এখানে ব্যবসা করতে এসেছি তার মানে এই নয় যে, অমানবিক কাজ করতে হবে। আমাদের এম্পলয়ইদের জান-মাল,সামান-বস্তুগত সম্পদের ক্ষতি সাধনের অর্থ কেবল একদিকে দায়িত্বহীনতার পরিচয়ইনা, যা অপরদিকে অব্যবসায়ী সূলভ আচরণ যেটি আন্তর্জাতিক ও জাতীয় ক্ষেত্রে কোম্পানীর সুনামকে ক্ষুন্ন করতে পারে।“ যাক ওদিকে মৃত্যু নৈমিত্তিকতায় পরিণত হলো... কাজ-টাকা খাওয়া নাই। আছে-আছে পেট-আর চ্যাট-টা। সময় মতো জানান দিতে আছে ‘ধান্দা-ফিকির করো’। হায়: হায়: নিয়তির ডেসটিনি। কোম্পানী এক সময় লে-অফ্ করে নিরাপত্তার অজুহাতে ফুটে গেল নগদ কাঁচা টাকা হাতিয়ে । চারুর লোকজন মারমুখো হয়ে উঠলেন। চূড়ান্ত পরিস্থিতিতে কানু একপর্যায়ে ,...হ্যা একপর্যায়ে হি হেড্-টু কমিট সুইসায়েড। ওর লোকেরা বললেন স্বাস্থ্যাবনতির এক পর্যায়ে মানসিক যন্ত্রনাকাতর বিধূরতায় নিজের রিভলবার দিয়ে পয়েন্ট ব্ল্যঙ্করেইঞ্জ থেকে গুলিটা বেরিয়েছে । ময়নাতদন্ত করে পুলিশ- এর বক্তব্যকে তোতা পাখির শেখানো বুলি হিসেবে প্রত্যাখ্যান করে ক্ষুব্ধ জনতা ফুঁসছে। জনরোষ ঠেকাতে রিজার্ভ ফোর্স, প্যারা মিলিটারি হিমসিম। সবটাই ঘটেছে কর্তৃপক্ষের যোগ সাজসে... সবার নাকের সবার ।
আর মহিলারা রাত বাড়লে-দাঁড়ায় রাস্তায় গিয়ে অপেক্ষমান হন। ন-মানে হ্যাঁ খদ্দেরের জন্য দল বেধে। পুরুষগুলো খুব সামলায ঘরগুলো, অনেকে নাকি খদ্দের ঘরে ধরে নিয়ে আন্তরিক মনোরম ঘরোয়া পরিবেশে... আর পায়ুকাম অথবা...লেসবিয়ানিসেম? ও নিয়ে আপনারাই ভাবুন...
যাক সে সব...। সামির সব চুকিয়ে একটা লক্কর ঝক্করে উঠলেন, দেখলেন নাহ ১০০ ও ৫০০ ছাড়াও খুচরো টাকা আছে, মহিলাদের সিটে লোকগুলো গার্ট হয়ে বসেই আছেন, লেখা আছে ভদ্রতা বজায় রাখবা, চালকের সাথে কথা না বলবার নির্দেশ আর দরজার মাথায় ‘জনাব কিছু ফেলে গেলেন কি?’
বলা হয় কেন এমনটা হলো ভদ্রবাড়ির মেয়েরা অনেক অন্তহীন উদ্দীপনা স্বপ্নে উদ্বেল-উৎসাহ নিয়ে নারীর মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানের মৃদু গুঞ্জনটাকে জোড় আওয়াজ বানিয়ে ছেড়ে দিয়ে ছিলেন কিন্তু সেই স্বপ্নভঙ্গ ওকে আরো নিচু অবস্থানে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে পাঠক । আপনি একটি বার ভাবতে চেষ্টা করুন। নারী সম্মানজনক মর্যাদার আসনটি পূণরুদ্ধার... ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শান্তিময়- নিরাপদ স্বকীয় বিকাশ, সকল/সমস্ত রকমে দাসত্ব থেকে মুক্তি ,মুক্তির শাশ্বত-চিরকালীন মানবিক অভিযাত্রার কথা। আমরা এর থেকে কতদূরে গোটা মানবগোষ্ঠী ছিটকে পড়েছি...না?। নারী তার আসন থেকে টাইপিষ্ট, রিসিপশনিষ্ট, টিকেট বিক্রেতা, বিমানবালা, নটী-নর্তকী... ইত্যাদি। যেমন, অক্সফোর্ড সার্কাসের কাছেই চলুন না (পূর্ব ইউরোপের নারী অধিকার সমতা ইত্যাদির পর আজকের বাস্তবতা লণ্ডন শহরে) সোহোস্ট্রীটের কাছাকছি রূপশ্রী-সুন্দরী মেয়ে, তবে ১৬ বছরের নিচে হলে অবশ্য রেইট-টা একটু বেশী কিংবা আপনাদের ঘরের পাশে পাতায়া-য় পূর্বতন রাশান ব্লকের মেয়েরাই সব থেকে... হল গিয়ে ইয়ে।কাজে-কাজেই সত্যিই আমাদের মাথা ঘুরে গেছে পূর্ব ইউরোপের সেক্স ওয়ার্কারদের দেখেই। পশ্চিম ইউরোপীয়, এশিয়ান-আরব, অনারব সকলের...। গোপন জগৎ মাফিয়া, কত নীতি বিগর্হিত অবৈধতা, পশ্চিম ইউরোপ–এ পূর্ব ইউরোপিয়ান ছ্যাঁচড়া , ফিচেল এদের ফিচকেমি কেউ এরা গুনতির মধ্যেই ধরেন না আর মানবিক বিকাশ।শুধু লেখাগুলো দেয়ালে চিকা মারা নাই ‘ভদ্রতার কথা’। বলবেন বেশ্যা মাগীর লগে আবার কিয়ের ভদ্রতা !বলুন? এখন এখানকার ‘ভালোবাসা’ ম্লান মুখে চলে গেছে দাবিয়ে-বসিয়ে দিয়ে, অর্থ আত্মসাৎ করে ।তবু জনাব, ফেলে গেছেন কোন তাৎপর্য?
আর আপনারা ভাবুন-ভাবতে চেষ্টা করুন । অন্তত... সেটিও না হলে ভঙ্গি করুন ভাব লিয়ে... লিবার আশো-দিবার আশায়...ফ্লাস লাইট এর আলোর ঝল্কানি জগত সেলফীর ভিতরে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মে, ২০১৬ সকাল ১০:০১