এইতো আজ এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হলো।বেশ ভালো ,পাসের হার ৮৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। সারা দেশে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ৭৬১ জন (সূত্রঃপ্রথম আলো)।কিন্তু বাকি ছাত্ররা,যারা জিপিএ-৫ পায়নি অথবা পাশ করেনি?
তাদের অনেকের বাড়িতে হয়তো শন্তির ছায়াটুকুও নেই।সব থেকে বেশি কথা শুনতে হবে তাদের যারা অল্পের জন্য আশানুরূপ ফলাফল করতে পারে নি এবং যারা ফেল করেছে। রেজাল্ট খরাপ হলে ছাত্র সহ তার বাবা মার মন খারাপ হবে এটাই স্বাভাবিক। বাবা মা এতো কষ্ট করে সন্তানকে লেখাপড়া করিয়েছে কিন্তু রেজাল্ট ভালো হয় নি এতে তারা বকা ঝকা করতেই পারে, চড় থাপ্পড়ও দিতে পারে কিন্তু সেটা যে দীর্ঘস্থায়ী করা উচিত নয় সেটি বুঝতেই চায় না তারা। রেজাল্ট খরাপ হলে এমনিতেই ছাত্ররা ভেঙে পরে। তারপর আবার যখন ফোনের উপর ফোন আসে, "তোমার রেজাল্ট কি? ইস একটুর জন্য পাইলা না, আরেকটু ভালো করে পড়া উচিত ছিল। "এই কথা গুলো তখন ছাত্রের জন্য খুব হাস্যকর হয়ে দাড়ায় এবং মনটা আরো খারাপ করে দেয়। বাসার ভেতর বাবা মা কথা শুনাইতে থাকে, বাইরে আবার প্রতিবেশির আজাইরা উপদেশ, তারপর আবার বন্ধুবান্ধবদের চাপ। সব মিলিয়ে তারা মারাত্মক হীনমন্যতায় ভোগতে থাকে, আর এই অবস্হা চলতে থাকলে অপমান সহ্য করতে না পেরে বাড়ি থেকে পালানো,আত্মহত্যা এই সব সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। সন্তানের সবথেকে কাছের বন্ধু হলো বাবা মা। সন্তানের এই দঃসময়ে খরাপ আচরন না করে অনুপ্রেরণা, উৎসাহ দিলে সন্তানরা খুব সহজেই এই অবস্হা থেকে বেড়িয়ে আসতে পারে এবং নতুন উদ্দামে জিবনযুদ্ধে নামতে পারে, কিন্তু বাবা মা কতৃক সাধারণত এই ধরনের মনোভাব দেখা যায় না।
আমার নিজের একটা ঘটনা বলি,আমার জেএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট বের হওয়ার প্রায় পনেরদিন আগে হাত ভেঙে যায় এবং রেজাল্টের আগের রাত থেকে হঠাৎ করে ডায়রিয়া সাথে বমি হতে থাকে। পরদিন রেজাল্ট বের হলো, আমি জিপিএ-৪.৮৬ পেলাম, ৫ পেলাম না, এই তো শুরু হয়ে গেলো।সবথেকে খারাপ লাগছে যে বিষয়টা সেটা হচ্ছে, আমার কেউ অতি আপনজন বলে, "ও জানতো ওর রেজাল্ট খারাপ হবে তাই ইচ্ছে করে হাত ভেঙেছে যাতে কেউ কিছু না বলে, সাথে আরো বলে ওর ডায়রিয়া আর বমি দুটিই ডং,ও মুখে আঙ্গুল ডুকিয়ে বমি করছে। "।এই কথা গুলো আমার মনোবল একেবারে ভেঙে দিয়েছিল। যদিও আমি পরে বলেছিলাম, ভালো করে পড়াশুনা করবো।
তাই অভিভাবকদের বলছি সন্তান আশানুরূপ ফলাফল না করতে পারলে তাকে উৎসাহ দিন, অনুপ্রেরণা জোগান, এতে সন্তানের মনোবল ভাঙ্গার বদলে নতুন করে চলার সাহস পাবে।
জানিনা সমাজ এই সকল ছাত্রদের কতকাল পরে সহজে গ্রহন করবে?