somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-২

০২ রা মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


৩০শে ডিসেম্বর। সেদিন চললাম বারউডে মেট্রো আর ট্রেইনে চেপে। সেখানে পৌছে লাল নীল হলুদ সবুজ ঝলমলে চায়না টাউনেই এসে পড়লাম যেন। চারিদকে আলো ঝলোমলো। গান বাঁজছে, মিউজিক ড্রাম। সবাই খানাপিনা ঘুরাঘুরিতেই ব্যস্ত! এ যেন এক অন্য দুনিয়া। আনন্দে ভরা। দুঃখ বেদনার ছায়ায়ও নেই সেখানে। এই লাল নীল হলুদ আর বেগুনীর দুনিয়ায় তাড়াতাড়ি ছবি তুলে নিলাম কয়েকখানা।


আমরা অবশ্য ব্রাঞ্চ খেতেই সেখানে গেছিলাম সেদিন। এই রাইস কেক দেখে আমার বাংলাদেশের ভাঁপাপিঠাকেই মনে পড়ে সর্বদা। এর আগেও নিউজিল্যান্ড প্রবাসী আমার এক আত্মীয়া এক গাদা এই জিনিস নিয়ে গিয়ে আমাদের প্রাণ ঝালাপালা করেছিলো। স্টিকি রাইসে মিষ্টি দিয়ে বানানো এই পিঠা তাদের কাছে যতই সুস্বাদু লাগুক আমার কাছে একটুও ভালো লাগেনি কিন্তুক।:(


তবে হ্যাঁ তখন খুব একটা খিধা লাগেনি কাজেই কিছু খেতে চাচ্ছিলাম না। তবুও অনেক খুঁজে পেতে মুচমুচে ছোট ছোট ফ্রাই দেখে নিলাম ফ্রায়েড জিবলেটস। চিকেন শপ দেখে আর সাত পাঁচ চিন্তা করিনি। তারপর আয়েশ করে বসে ফ্রায়েড জিবলেটে এক কামড় দিতেই!!! এইডা কি!!!!!!!! আমার তো চক্ষু ছানাবড়া! এত বেঁছে চেঁছে ভেবে চিন্তে চিকেন শপে গিয়ে কিনা মুরগীর গিলা ভাঁজা!!!!!!!!!! ইয়াক থু থু থু। বাড়িতে জীবনে কোনোদিন রান্নায় এই জিনিস দেখলে আমি মুরগীর মাংসই আর খইনা আর সেই জিনিস টাকা দিয়ে কিনে খেয়ে ফেল্লাম এই বৈদেশ বিঁভুইএ এসে!!!!!! মুরগীর গিলার ইংলিশ জীবনে শিখিনি বটে তবে ইহজীবনে আর ভুলবোও না ইহাও সত্য। :(
আর রাগে এই জিনিসের ছবিও দিলাম না সলি।:)


যাইহোক এরপর নিলাম ড্রিংকস উইন্টার মেলন জ্যুস! ভাবলাম সারাজীবন আমাদের দেশে দেখলাম সামার মেলন মানে ওয়াটার মেলন। এটা মনে হয় উইন্টারে হয় তাই উইন্টার মেলন আর এখন এইখানে সামার কাজেই হয়ত উইন্টারে হওয়া মেলন গুলাই তারা স্টোর করে রেখে বানিয়ে বানিয়ে দিচ্ছে এতই ভালা জিনিস! সেদিন খুবই গরম পড়েছিলো। একদম ঝাঁ চকচকে আকাশ আর খা খা গরম রোদ্দুর! তাই সেই বরফ শীতল উইন্টারমেলন ড্রিংকসের স্মোকি সোয়াদ বড়ই ভালা লাগিলো। এরপর আমার সাথের একজন সঙ্গীকে বললাম বাহ! আমাদের দেশের ওয়াটার মেলন হয় সামারে আর এদের দেশের উইন্টার মেলন বুঝি হয় উইন্টারে? তিনি- হে হে হে হে হেহ!! এটা মেলন মানে উইন্টারমেলন। আমাদের দেশের চালকুমড়া!!!!!!!!!!

ইয়াক থু!!!!!!!!!!!!!! শেষে কিনা হেনো তেনো বলে তুই আমারে চালকুমড়ার জ্যুস খাওয়ালি শয়তান!!!!!!!!!!!!!!! সে তো হাসতে হাসতে শেষ! ওমন করো কেনো এটা আমার ফেবারেট ড্রিংকস! আমি- রাখ তোর ফেবারেট! তোর যত খুশি ফেবারেট খা আমারে খাওয়াইলি কেন!!!!!!!!!!!! রাগে দুঃখে আমার বিশ্বাস হচ্ছিলো না। গুগলে সার্চ দিয়েও দেখি এই মেলন আমাদের দেশের চালকুমড়া! তখন মনে পড়লো আমার মা, নানী, দাদী চালকুমড়ার হালুয়া বানাতো, বানাতো চালকুমড়ার মোরোব্বা! মনকে সান্তনা দিলাম, না না এই জিনিস খারাপ না, এই সব দিয়ে মানুষ মিষ্টদ্রব্যও বানায় আমাদের দেশে! যাইহোক কি আর করা!!! মনের সান্তনা আর কি। এরপর আমার শখ হলো আমি এবরিজিনালদের নাচ দেখবো! তারপর তাইরে নাইরে না না করে চললাম সারকুলার কি মিউজিয়ামে এবরিজিনালদের মিউজিয়াম দেখতে।


স্টেশনে নেমেই মিউজিয়ামে ঢোকার আগেই পেয়ে গেলাম এবরিজিনালদের ড্যান্স গ্রুপ মানে উনাদের স্ট্রিট আর্ট। তারা নানা রকম বাদ্যযন্ত্র বাঁজিয়ে নাকে মুখে গায়ে নক্সা একে নাচাগানা করছিলো। আমি তো তাদের আনন্দময় নাচ দেখে মুগ্ধ! অনেকেই নাচছিলো তাদের সাথে! আমার মন তাই দেখে নেচে উঠলো।ছুটে যেতে চাইলাম তাদের সাথে মানে নাচতে চাইলাম।


কিন্তু শেষ মেশ একটু ভয় লাগলো অমন ভূতের মতন সেজে আছে দেখেই বুঝি। তাই আর নাচা হলো না।


চললাম মিউজিয়ামে। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেখানে শুধু বাইরেই ছবি তোলা যায়।


মিউজিয়ামের ভেতরে ছবি তোলা নিষেধ!


মিউজিয়ামের সামনে এক চোখা টাইপ এক শিল্পকর্ম। ঝাঁ চকচকে রোদে ঝলমল করছিলো। আর রোদে পুড়ে ঘেমে কুচকুচা হয়ে তার সামনে আমাকে ছবি তুলতেই হলো।:)


আরও মনোহর ছিলো পাড় ঘেসে দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল দৈত্যাকৃতি ধপধপে সাদা রং জাহাজ। তাই সেই প্রকান্ড জাহাজের সামনে দাঁড়িয়েই ছবি তুলতেই হবে।
এরপর বৈকালিক হাওয়ায় সার্কুলার কি সমুদ্রতীর পরিভ্রমন। হাওয়া ছিলো বটে তবে রোদও কম ছিলো না। বিশাল সব জাহাজ দাঁড়িয়ে দিলো তীরে।

একদিকে জাহাজের মেলা আরেকদিকে ওপেরা হাউজ আর সামনেই হার্বার ব্রীজ।

ভিউকার্ডে দেখা দৃশ্য আজ চোখের সামনে দাঁড়িয়ে। বিকেল বাড়তেই নানা রকম সাজসজ্জায় স্ট্রিট আর্টিস্টরা নেমে এলো রাস্তায়।

একটা পুতুলের মত সাদা পোশাকের মেয়ে বাজাচ্ছিলো চাইনিজ বাঁশি।


গোল্ডেন বয় নামে একজন তো শূন্যে উঠে বসেছিলেন। তার এতই ভিডিও করেছি যে ছবিই তোলা হয়নি। তাই এটাই দিলাম শুধু।
যাইহোক আমরা পিজারিয়ায় খেলাম কিন্তু আসার সময় পে করতে ভুলে গেলাম! হা হা এমন আচানক কান্ড কখনও কেউ শুনেছে কিনা জানিনা। তবে আমি করলাম আর তারা কিছুই বললো না । বেরিয়ে এলাম এবং এরপর আরও দুই ঘন্টা কাটিয়ে দিলাম ওপেরা হাউজে গেলাম সেই পথে ফিরলাম একবারও মনে পড়লোনা যে খাবারের দাম দেইনি। রাতে ফিরে মনে পড়লো। আচ্ছা আমরা কি খাবারের টাকা পে করেছিলাম? শেষে ফোন দিলাম ঐ দোকানে। ওরা বললো ওকে নো প্রবলেম। যে কোনো সময় এসে দিয়ে গেলেই হবে। আমরা পরদিন গিয়ে সেই বিল পরিশোধ করলাম! .........

সেদিন ছিলো ৩১ শে ডিসেম্বর! গত বছর এই দিনে আমরা সেই দুপুর থাকতেই প্রস্তুতি নিয়ে ছুটেছিলাম মানলী বিচ ইলোরা রিসার্ভ না কি কোন এক জায়গায় এখন নামটা মনে পড়ছে না। সেখানে গিয়েছিলাম অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত থার্টি ফার্স্ট নাইট ফায়ার ওয়ার্ক দেখতে। দুপুর থেকেই সব রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছিলো হার্বার ব্রীজের আশেপাশের। ট্রেইনও বন্ধ ছিলো তবুও ছুটেছিলাম উবারে পায়ে হেঁটে একগাদা টাকা খরচ করে। ফিরেছিলাম রাত আড়াইটায়। রাত দুপুরে লোকজন রাস্তায় গিজগিজ করছিলো। বাস পাওয়াই যাচ্ছিলোনা। অনেক কষ্টে ফিরেছিলাম সেদিন। এবারেও ইচ্ছা ছিলো যত কষ্টই হোক ফায়ার ওয়ার্ক দেখতেই হবে। তবে সন্ধা থেকে টিপিশ টাপিশ বৃষ্টিতে সেই ইচ্ছায় খ্যান্ত দিতে হলো তাই বলে কি সাজুগুজু বেড়াবেড়ি বন্ধ থাকবে?

কখনও না আর তাই থার্টিফাস্ট ইভের খানা পিনা সাজুগুজু ঠিকই চললো! :) আর বেড়িয়েও এলাম এদিক সেদিক।


বেড়াবেড়ির কিছু ছবির একটা


আরও একটা বেড়াবেড়ি ছবি।
কিন্তু বের হলে কিছু কিছু উলটা পাল্টা তো আমাকে করতেই হবে তাও আবার ফুড নিয়েই সেসব ঘটে। কাজেই ভুল করে বিফের বদলে পর্কের পুটিং অর্ডার দিয়ে নিশ্চিন্ত মনে বসে রইলাম। খেয়েও ফেল্লাম এক চামচ। কিন্তু গিলে ফেলতেই বুঝে গেলাম এই বিফ সেই বিফ নহে। এটা যেন কেমন কেমন!! সাথে সাথে সেই পুটিং ছেড়ে ভো দৌড় দিলাম। :(
এত সাধের পুটিং খাওয়া আর হলো না আমার।:(


এই সেই হাসি হাসি মুখে পর্ক পুটিং নিয়ে খাবার আগে ছবি তোলার দৃশ্য। তবে মুখে দিয়ে সেই মুখবিকৃতির চেহারার ছবি কেউ তুললে সবার আগে হাসতে হাসতে মরতো কে সেটা আমি জানি। :)

১ তারিখ সারাদিন বাসায় কাটিয়ে দিলাম। এই বাসা ছেড়ে দিতে হবে। এইসব বাসা ভেঙ্গে স্টুডেন্ট একোমোডেশন হবে। কাজেই বাসা খুঁজতে হবে এবং পেতেই হবে। যদিও ৩০ তারিখে আমরা একটা বাসা দেখেছি এবং এক বাসার পিছে ২০ জন! কাজেই সেই বাসা হবেই না ধরেই নিয়েছি। তবুও এজেন্ট ফোন করে জানতে চাইলো আমরা নেবো কিনা তখনই বুঝলাম খাজনার চাইতে বাজনা বেশি মানে আনফার্নিশড বাসায় তিনারা একটু বেশিই ভাড়া চাইছিলো। সে যাইহোক আমি বাঙ্গালী বুদ্ধি খাটালাম!। বললাম ভাই বাসা আমার খুবই পছন্দ কিন্তু ভাড়াটা পছন্দ হলো না। এটা কমালেই আমরা আসবো। কিন্তু উনি এটা শুনেও কোনোই উত্তর দিলেন না। কাজেই কি আর করা। আরও কিছু বাসা অনলাইনে খুঁজতে খুঁজতে সারাদিন চলে গেলো।

২ তারিখটাও কাটলো। সারাদিন কেটে গেলো অবলীলায়।সব রেন্ট বাড়িগুলোতেই অনলাইনে ইনসপেকশন চেয়ে আমি সেদিন বিকালে একা একা বের হলাম। আশে পাশের লেক পার্ক শপিং সেন্টার ঘুরে ঘুরে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরলাম।

৩ তারিখেও বের হলাম একা একা! একা একা ঘুরি যখন তখন নানা কাহিনী ঘটে আমার জীবনে। দোাকনীদের সাথে গল্প লাগিয়ে দেই সুখ দুঃখের। সেদিন পছন্দ হয়ে গেলো একটা বডিকন ড্রেস। আমার বোন কি সুন্দর বডিকন পরে বারবি ডল হয়ে যায় আমাকেও কেমন লাগে একটু দেখি তো! এক গাদা লাল নীল হলুদ সবুজ বডিকন নিয়ে ট্রায়াল রুমে ঢুকলাম। প্রথমেই হলুদ ঝকঝকে একটা গায়ে চড়িয়েই আয়নার চোখ যেতেই নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। টম এন্ড জেরী কার্টুনে মাঝে মাঝে ইয়া মোটা মোটা পা ওয়ালা কোনো মহিলার ছবি দেখাতো যার চেহারা কখনও দেখা যায়নি। তবে আয়নায় সেদিন নিজের চেহারা দেখে বুঝলাম সেই মোটা মোটা পাওয়ালা মহিলাটার অদেখা ছবিটা কেমন ছিলো!।

আর লাল নীল সবুজ কমলাগুলো টেরাই না করেই কাঁদো কাঁদো মুখে ফিরিয়ে দিলাম। দোকানীকে বললাম এটা আমার জন্য নহে। বারবিদের জন্য। সে সাথে সাথে একটা লাল টকটকে অপরুপা জ্যাকেট আমার গায়ে ধরে বললো, ওয়াও ইউ উইল লুক বিউটিফুল উইথ দিস ওয়ান! মানে বিক্রি করার ধান্ধা আর কি! যাইহোক আমার যে লাল টকটকা সোনালী ঝলমলা, রুপালি রুলরুলা এসব পছন্দ মহিলা বুঝলো কি করে!!! সাথে সাথে আমি লাফ দিয়ে সেই ১৯৯ ডলারের জামা স্পেশাল ডিসকাউন্ট নাকি দিয়ে দিলেন উনি উনার এমপ্লয়ী কার্ড দিয়ে ! উহা শুনে মুগ্ধ হয়ে নিয়ে নিলাম! :) যাইহোক বারবি না হতে পারি, লাল টকটকে জামা পরে হয়ে যাবো লালবি! :)


৪ তারিখ আমি সেদিন ব্লু মাউন্টেন যাবোই যাবো! এমনিতেই ছিলো ক্লাউডি ওয়েদার তার উপর শীত শীত ভাব! আমি সেই দোকানী মহিলার চুজ করে দেওয়া ওয়াও মার্কা রেড জ্যাকেট গায়ে চাপিয়ে নিলাম। বাহ আমি তখন বারবি হতে না পারা দুঃখ ভোলা লালবী।
যাইহোক আমরা গেলাম স্ট্রাথফিল্ডের স্টেশনে। পুরোনো বিষন্ন এক স্টেশন! সেখান বেশ খানিকটা সময় ওয়েট করেছিলাম আমরা। আসলো ধুকে ধুকে এক পুরানো ট্রেইন। সেই ট্রেইনের দরজা অটোমেটিক খুলে না। হাত দিয়ে টেনে খুলতে হয়। ভেতরের সিটগুলা বেগুনী রেক্সিনে মোড়ানো সোফার মত। আমরা আয়েশ করে গিয়ে বসলাম ট্রেইনে। আমরা হই মই করে কথা বলছিলাম। একজন এসে ইশারা দিয়ে বললো এক্সিউজ মি এটা কোয়াইট ক্যরেজ! আমি তো লজ্জায় শেষ! আমাদেরকে হাড়ি ডোম ভাবলো নাকি!! কিন্তু অন্য সব নতুন ট্রেইনগুলোর বাইরেই লেখা থাকে কোয়ায়েট ক্যারেজ! এটার লেখাটা ছিলো ভেতরে এক কোনায় ! তো সেটা কি আমাদের দোষ!!!

যাইহোক ব্লু মাউন্টেনে পৌছে হাঁড় কেপে গেলো ঠান্ডায় তবে প্রান ভরালো চোখ জুড়ালো!! এত অপরুপা চারিদিক। শুনশান নীরবতা নেমেছে সেখানে। স্টেশন থেকে একটু দূরে হাঁটতে হবে। আমি বেঁকে বসলাম! হাঁটবোই না। শেষে উবার ডেকে ব্লু মাউন্টেনে পৌছালাম আমরা!!


উবার আসবার অপেক্ষার সময়টুূকু ছবি তুলে কাটাতে হলো। এই ঘড়িটা আমার বিশেষ পছন্দ হয়েছিলো।:)


তার পাশে একটা সুন্দর লাল টুকটুক বেঞ্চও ছিলো আমার মনের মত!
টুরিস্টরা ভীড় করেছিলো সেই ব্লু মাউন্টেনের গাঁয়ে গাঁয়ে। পিচ্ছিল সিড়ি পথ। এবড়ো খেবড়ো পথ চলা! আমি ভয়ে শেষ! এইবার তো বুঝি হাড্ডিগুড্ডি ভেঙ্গে চৌচির হয়। কিন্তু অপরূপা সেই সৌন্দর্য্য দেখতে তো একটু কষ্ট করতেই হবে তাই না?


নামছিলাম গিরি খাত বেয়ে কিন্তু ভাবছিলাম উঠবো কিভাবে আবার এই খাড়া গিরিপথে!!!


অনেক নীচে বয়ে চলছিলো ঝরনার কলকল! স্বচ্ছ জলের ঝরণার কাছাকাছি তো আমাকে যেতেই হবে।

নীচে তরতরিয়ে নেমে গিয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে সেই কঠিন পাথুরে পাহাড় দেখে ভাবছিলাম হায়হায় এই পাহাড় ধসে পড়লে তো গেছি!! এক্কেবারে সলিল সমাধির মত পাহাড় সমাধি হবে।


যাইহোক ঝরনার ধারে পৌছে তার কলতানে প্রাণ জুড়িয়ে গেলো। গান গেয়ে উঠলাম, ঐ পাহাড়ের ঝরনা আমি ঘরে নাহি রই গো... উধাও হয়ে বই....


ছোট ঝরণা বড় ঝরনা ঝরণার শেষ নেই যেন সেখানে। একটা জিনিস দেখে বার বার বিমোহিত হই আমি এখানে সেটা হলো বিশালতা। প্রাচীন সব বিশালাকৃতি বাড়িঘর অফিস আদালত দোকান পাট দাঁড়িয়ে রয়েছে এখানে। দৈতাকৃতি পাহাড় জঙ্গল! পশু পাখি গুলোর সাইজ দেখেও মনে হয় ডাইনোসর আমল থেকেই বুঝি রয়েছে এরা।


যেখানেই যাই বাচ্চারা আমাকে বিশেষ পছন্দ করে। আমি ছবি তুলতে গেলাম তারা হাসিমুখে আমাকে ঘিরে দৌড়াতে লাগলো! হা হা কি মনোরোম তাই না?


এত বলি বাবুরা সর সর একটু ছবি তুলি। তারা বলে আমাদেরকে নিয়েই তোলো না!


ব্লু মাউন্টেন ন্যাশনাল পার্কের সামনে দাঁড়িয়ে গেলাম ছবি তুলতে।:)

যাইহোক ব্লু মাউন্টেনে ঘুরে ফিরে কাটলো সেদিন সারাদিন। বাসায় ফিরলাম রাত ৯ টার দিকে......

এরপরের দিনগুলোর গল্প নিয়ে আসবো আবার কোনো অবসরে.......:)
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩
৫৮টি মন্তব্য ৫৮টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×