আমি সব সময়ই মনে করি, জীবন মানে গতি আর এই গতি মানেই কাজ। আর কাঁজের মাঝেই বেঁচে থাকার আনন্দ। কিছুদিন আগে চোখে পড়লো হাসান মাহবুবের একটি পোস্ট, একজন বৃদ্ধ স্বেচ্ছামৃত্যু গ্রহন করছেন তার সাফল্যময় সারাজীবনের কর্মব্যস্ততা হতে অবসর বা কর্মহীনতার যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে। এমন আমরা আমাদের আশেপাশে অহরহই দেখি। বৃদ্ধ বয়সে কর্মহীনতা বা কাজের অক্ষমতায় কেটে যাওয়া যন্ত্রনাময় দিনের মানুষগুলোকে কিন্তু তাদের জন্য আমাদের সময় নেই কারণ জীবন মানেই গতি আর গতির পিছে ছুটতে গিয়েই কাজের মাঝে ডুবে যাওয়াই জীবনের আনন্দ! আর তাই ছুটছি আমরাও.....
যাইহোক, বলছিলাম মানুষের কত কাজেই না জীবন কাটে। চাকুরী, অফিস ঘর সংসার। এসব শুনলেই মনে আসে ক্লান্ত শ্রান্ত দিন রাত্রীর কথা। কিন্তু আমার ব্যাক্তিগত জীবন আর কর্ম জীবনের মেইন পার্ট বা অনেকখানি অংশ জুড়েই রয়েছে কিছু আনন্দময় ব্যস্ততা। যেখানেও রয়েছে ক্লান্তি শ্রান্তি বা হাঁপিয়ে ওঠা। কারণ পৃথিবীতে কোনো কিছুই পরিশ্রম ছাড়া হয় না। সেই পরিশ্রম, ধৈর্য্য ও অধ্যবসায় আমার ভালোই আছে আর সবকিছুর পরে তো আছেই সাফল্যের আনন্দ।
ফেব্রুয়ারীতে ভাষা দিবস, স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পিঠা উৎসব, পাপেট উৎসব, পহেলা ফাল্গুন ও বইমেলার নানামুখী উদযাপন নিয়ে লিখেছিলাম আজ লিখবো মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসের অসম্ভব ব্যস্ততা নিয়ে কেটে যাওয়া দিনগুলির কথা। মার্চ আসলেই আমার প্রথমেই মনে পড়ে স্বাধীনতা দিবসের কথা। ছেলেবেলায় সকল স্বাধীনতা দিবসে গান, কবিতা ও নৃত্যে স্মরণ করেছি শহীদের আত্মত্যাগ। আজও সুযোগ পেয়েছি নতুন প্রজন্মকে সেই আত্মত্যাগের মহিমা কিছুটা হলেও বুঝাতে পারার। তাই স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানগুলি আমাকে নতুন ভাবে জাগ্রত করে জীবনের জয়গান গাইবার জন্য।
এবারে স্বাধীনতা দিবসে আমার প্রধান ব্রত ছিলো বাচ্চাদেরকে শুদ্ধ সুরে ও কথায় জাতীয় সঙ্গীত শেখাবার। যদিও আমি মিউজিক টিচার নই তবু আমার ক্লাসের ২০ জন বাচ্চাকে নিয়েই শুরু করলাম সেই মহান ব্রত। এবং শতভাগ সাফল্যের সাথে ১৫ দিনের মাঝেই প্রতিটি বাচ্চাকে দিয়েই গাওয়ালাম শুদ্ধ সুরে ও স্বরে জাতীয় সঙ্গীত। ২৬শে মার্চে স্বাধীনতা দিবসের পালনের সময় তারা লিড দিলো পুরো স্কুলকে জাতীয় সঙ্গীত গাইবার। কৃতজ্ঞতা তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা স্রষ্ঠার কাছে । আমাদের স্কুলের বাচ্চাদের ছবি প্যারেন্টসদের বিনা অনুমতীতে দেওয়া নিষেধ তাই সেই ছবি দিতে না পারলেও টিচারের ছবিটা যথারীতি মুন্ডু কেটেই দিয়ে দিলাম।
প্রতিবছর পহেলা বৈশাখে আমার ৩টা কাজ থাকে। ২টা স্কুলে আর বাকী ১টা আমার ব্যাক্তিগত জীবনে। স্কুলের ২টা কাজের একটি বাচ্চাদেরকে নাচ বা গান শেখানো আর একটা আমার নিজস্ব পাপেট টিমের পাপেট শো বা পুতুল নাচ। এই টিম আমি নিজের স্কুল ছাড়াও আরও অন্যান্য স্কুলেও নিয়ে থাকি। এবারে আমার নতুন পুতুলনাচ বা পাপেট শোটি ছিলো জসিমুদ্দীনের বিখ্যাত হাসির গল্প হতে নেওয়া গল্প "আয়না"।
পাপেট শো স্ক্রিপ্ট - আয়না - জসীম উদ্দিন
স্ক্রিপ্ট রাইটিং বাই মি..............
শায়মাঃ সে অনেক কাল আগের কথা। এক গ্রামে বাস করতো এক চাষী। সে না জানতো লেখা পড়া না জানতো আর কোনো কাজ কর্ম। ক্ষেতে চাষ করেই তার দিন চলতো। চাষীর বউ, আর তার এক বুড়ি দাদীকে নিয়ে তার ছিলো সুখের সংসার। একদিন কি হলো জানো? খুব ভোরে সে চললো ক্ষেতে চাষ করতে....
(চাষী)- ও বউ বউ ... আমি ক্ষেতে চইললাম। ফিরতি ফিরতি সেই সন্ধ্যা হইবে। তুমি ভালো কইরে চালের গুড়া, গুড় আর নারিকেল দিয়া আমার জন্যি পিঠা বানায়া রাইখো....
(বউ)- ঠিই ই ক আছে তুমি কুনো চিন্তা কইরো না আমি ভাঁপা, চিতুই, পাটিসাপটা, তেলের পিঠা সবই বানায়া রাখবোনি।
(চাষী)- হইসে হইসে। তুই কি এখন বাংলাদেশের ১০১ পিঠার নাম বলা শুরু করবি নাকি!
(বউ )- হা হা হা না না আসলে তুমি পিঠা খাইতে বড়ই ভালোবাসো কিনা তাই আর কি...
(চাষী)- আমি চইললাম । তোর সাথে বকর বকর করতি গেলি আমার বেলা পড়ি যাবে নে....
(বউ)- আচ্ছা তাড়াতাড়ি ফিইরো।
(চাষী)- কিই ই ই সোন্দর সকাল। চাইরিদিকি রোদ্দুর ঝলমল। দোয়েল পাখির গানও শোনা যায়। আমিও একখান গান ধরি -
শায়মাঃ হায়রে আমার মন মাতানো দেশ....হায়রে আমার সোনা ফলা মাটি
রুপ দেখে তোর কেনো আমার নয়ন ভরে না তোরে এত ভালোবাসি তবু পরান ভরে না.....
হুররর। হাট হাট ! হায়রে আমার মন মাতানো দেশ ....
চাষী মনের আনন্দে হাল বাইতে শুরু করলো-
হঠাৎ ক্ষেতের মাঝে কি যেন চকচক করছে দেখতে পেয়ে সে থমকে দাঁড়ালো।
(চাষী)- আরে আরে! কি এমন চকচক করতিসে! শুনিছি আগের দিনের রাজা রাজড়ারা নাকি মাঠের মধ্যি হীরে জহরৎ পুঁতেএ রাখতো! আমি হীরে জহরৎ পায়া গেলাম নাকি! দেখি তো দেখি তো!
শায়মাঃ চাষী সেই চকচকে জিনিসখানা হাতে তুলে নিয়ে পরম বিস্ময়ে এদিক ওদিক করে উল্টে পাল্টে দেখতে লাগলো। আসলে হয়েছে কি সেটা ছিলো একটা আয়না। চাষী বা তার গ্রামের কেউই সেই আগের দিনে তখনও আয়না দেখেনি। তাই সে খুব অবাক হলো।
(চাষী)- হায় হায় এইডা কি! আয়নার ভিতর মানুষ! আহা-হা, এ যে আমার বাপজানের চেহারা গো! ও আমার বাপজান!! তুমি সেই কবে আমারে ছাইড়া চইলা গেছো! আমি তখন দুধের শিশু। আর তুমি কিনা আমারে সেই অত দিন আগে ছাইড়া আইসা লুকাইয়া আছো আমার ক্ষেতের মধ্যি! আমি বুঝি নাই গো বাপ জান! জানি নাই গো সেই কথা এতদিনে!
শায়মাঃ চাষী হাউ মাউ করে আয়নাটা বুকে জড়িয়ে কাঁদতে লাগলো। আসলে অনেক দিন আগে তার বাবা মারা গিয়েছেন। আজ চাষী বড় হয়ে নিজেই বাবার মতন দেখতে হয়েছে । সব ছেলেই বড় হলে দেখতে কিছুটা বাবার মতনই হয়।চাষীও তাই আয়নায় তার নিজের চেহারা দেখে ভাবলো তার বাবাই এটা। সে আয়নাটা কপালে তুলে সালাম করে, চুমো খায়।
(চাষী)- “আহা বাপজান! তুমি আসমান হইতে নাইমা আইসা আমার ধান-খেতের মধ্যি লুকাইয়া আছ! বাজান—বাজান!—ও বাজান!”
যাইহোক “বাপজান! তুমি ত মইরা গেলা। তোমার খেত ভইরা আমি সোনাদিঘা ধান বুনিছি, শাইল ধান বুনিছি। দেখ দেখ বাজান! কেমন তারা রোদে ঝলমল করতিছে। তোমার মরার পর বাড়িতে মাত্র একখানা ঘর আছিল। আমি তিনখানা ঘর তৈরি করিছি। বাজান!—আমার সোনার বাজান! আমার মানিক বাজান! এতদিন পরে আমি তোমারে পাইছি বাজান। আর কোত্থাও যাতি দেবো না। তোমারে আমি আমার কাছেই লুক্কে রাখবো। ”
শায়মাঃ সেদিন চাষী আর কোনো কাজই করতে পারলো না। আয়নাখানা হাতে নিয়ে তার সবগুলি খেতে ঘুরে বেড়ালো। সন্ধ্যাবেলা বাড়ি ফিরে আয়নাখানাকে সে কোথায় লুকিয়ে রাখে এটাই ভাবতে লাগলো!
(চাষী)- বাপজান এই দেখো তোমার বাড়ি কিন্তু তোমারে আমি কই যে রাখি। আমি গরীব মানুষ। বাড়িতে ত কোনো বাক্স পেটরা নাই!
ঐ যে ঐ যে ঐ কোনায় খালি পানির কলসির ভিতর তোমারে লুকাইয়া রাখি।
*************************************
শায়মাঃ পরদিন চাষী এ কাজ করে, ও কাজ করে, দৌড়িয়ে বাড়ি আসে। এখানে যায়, সেখানে যায়, আবার দৌড়িয়ে বাড়ি আসে। পানির কলসির ভিতর থেকে সেই আয়নাখানা বের করে নেড়ে চেড়ে দেখে, আর কত রকমের কথা বলে!
( চাষী)- “বাজান!—আমার বাজান!—তোমাকে একলা রাইখা আমি এ কাজে যাই—ও কাজে যাই, তুমি রাগ কইরো না বাজান। দেখ বাজান! যদি আমি ভালমতো কাজ-কাম না করি তবে আমরা খাইব কি?”
শায়মাঃ চাষার বউ ভাবে, চাষীর কি হলো? সে দাদীকে বলে
(বউ) - ও দাদী, দাদী..এতদিন চাষী আমার সাথে কত কথা বইলতো, কত হাসি-তামাশা কইরা এটা-ওটা চাহিত, কিন্তু আজ কয়দিন আমার সাথে একটাও কথা বলে না। পানির কলসি হইতে কি যেন বাইর কইরা দেখে আর দেখে, আর আবল-তাবল বকে, কারণ কি?”
(দাদী) - পানির কলসীর মইধ্যে দেখে? বলিস কিরে রাঙ্গা বউ। জ্বীনে ভূতে ধইরলো নাকি?
( বউ)- জানিনা দাদী সেদিন যে এত রকম পিঠা পুলি বানাইলাম সেসবও না খাইয়া চাষী এই কলসীর দিকেই নিয়ে আসছে।
শায়মাঃ এক কান দুই কান করে পাড়া পড়শীদের কানে গেলো। সকলে জড়ো হলো চাষীর বাড়ি। চাষী তখন খেতখামারের কাজে মাঠে গিয়েছিলো। চাষীর বউ পানির কলসি হতে সেই আয়নাখানা বের করে তার দিকে চেয়ে তো রাগে আগুন। আয়নার উপর তার নিজেরই ছায়া পড়েছিলো; কিন্তু সে ত কোনোদিন আয়নায় নিজের চেহারা দেখেনি। সে মনে করলো, চাষী আরেকটি মেয়েকে বাড়িতে এনে কলসীর মধ্যে লুকিয়ে রেখেছে। সে চিৎকার করে কাঁদতে বসলো-
(বউ)- হায় হায় রে এই নতুন বউটার জন্য আজ কয়দিন চাষী আমার সাথে কথাই বলে না। যখনই সময় পায় তার সাথেই গল্প করে। ( কান্না) “আসুক আগে আইজকা বাড়ি। দেখাবো মজা!”
একটি ঝাঁটা হাতে নিয়ে বউ রাগে ফুসতে লাগল। সবাই তাকে শান্ত করার চেষ্টা করলো।
শাহীন, নাবিলা, জাকিয়া, তাসনুবা (পাড়া পড়শী)- আরে আরে শান্ত হও বউ। মাথা ঠান্ডা করো।
(বউ )- না না না আমি আইজই বাপের বাড়ি চইলা যাবো।
শায়মাঃ দুপুরবেলা মাঠের কাজে ক্লান্ত শ্রান্ত হয়ে রোদে ঘেমে নেয়ে , চাষী যখন ঘরে ফিরল; চাষার বউ ঝাঁটা হাতে নিয়ে তেড়ে আসল,
(বউ)- ওরে পাঁজী চাষী তোর এই কাজ? একটা কাকে বিয়ে করে আনছিস?”
শায়মাঃ এই বলে আয়নাখানা সেই না চাষীর সামনে ছুড়ে মেরেছে চাষী হা হা করে উঠলো।
চাষী- “কর কি?—কর কি?—ও যে আমার বাজান!” বাজান বাজান (অতি আদরের সাথে সে আয়নাখানা কুড়িয়ে বুকে জড়িয়ে ধরলো)
(বউ)- বাজান না!!!!!!!“দেখাই আগে তোর বাজান!” এই বলে সে আয়নাখানা টান দিয়ে নিয়ে বলল, “দেখ্ ! এর ভিতর কোন বাজান বসে আছে! এ তোর নতুন বউ কি না?”
(চাষী)- “তুমি কি পাগল হইলে? এ যে আমার বাজান!”
(বউ)- “ওরে পাঁজী ! ওরে বদ ! তবু বলিস তোর বাজান! তোর বাজানের কি গলায় হাসলি, নাকে নথ আর কপালে টিপ আছে নাকি?”
(দাদী)- থাম থাম এত ঝগড়া কিসের? তোদের ত কত মিল। একদিনও কোনো কথা কাটাকাটি শুনি নাই।”
(বউ)—“দেখ বুবুজান! তোমার নাতী এই আয়নায় কাকে লুকায়া রাখছে! এই আয়নার ভিতর কে?”
(দাদী)- দেখি দেখি
শায়মাঃ দাদী আয়নার উপরে মুখ দিল! তখন দেখা গেল আয়নার ভিতরে দুইজনের মুখ। একজন চাষী বউ এর আরেকজন বুড়ি দাদীর।
দাদী- আরে আরে “এত ত তোর চেহারা। আর একজন কার চেহারাও যেন দেখতি পাতিছি।”
চাষী- “কি বলেন বুবুজান, এর ভিতর আমার বাপজানের চেহারা।”
শায়মাঃ চাষীও আয়নার উপরে মুখ দিল। তখন তিনজনের চেহারাই দেখা গেল। সকলেই আয়নায় মুখ দেয় যে আয়নার উপরে মুখ দেয়, তার চেহারা আয়নায় দেখা যায়—
বুড়া- আরে আরে এ দেখি যে আয়নার উপরে মুখ দেয়, তার চেহারা আয়নায় দেখা যায়—এ ত বড় তেলেছমাতির কথা!
শায়মাঃ এই কথা এ গাঁয়ে সে গাঁয়ে রটে গেল। এদেশ হতে ওদেশ হতে লোক ছুটে আসল সেই যাদুর তেলেছমাতি দেখতে। তারপর ধীরে ধীরে লোকে বুঝতে পারল, সেটা আয়না।
বুড়া- দেখলে তো ছোট্ট বন্ধুরা অজ্ঞতা বা না জানাটাও অনেক সময় কত বিপদই না আনতে পারে। কাজেই ভালো করে না জেনে না বুঝে কখনও কারও উপর রাগ বা বিদ্বেষ রাখা ঠিক নয়।
(চাষী)- হ হ ঠিকই কইসেন। না জানার কারণে আমাদের মধ্যি কিরাম গন্ডোগোল ভুল বুঝাবুঝিডাই না হইলো।
(চাষী বউ) - হ্যাঁ আমি তোমারে কি ভুলডাই না বুঝলাম! যাইহোক ছোট্ট বন্ধুরা তোমরা যেন না জাইনা, না বুইঝা কারু উপরে অযথা সন্দেহ কইরো না। তোমরা সবাই মিল্লামিশা নতুন বছর অনেক আনন্দে কাটাও।
সাথে ছিলো বৈশাখী মেলা। ছিলো পাতার বাঁশি, নাগরদোলা, হাওয়াই মেঠাই আরও কত কি!!!!!
মেলার মুখোশ
আমাদের সাজুগুজু
আমাদের মেহেদী
বৈশাখী মেলায় ছোটবেলায় দেখা বায়োস্কোপের স্মৃতি- ঝালিয়ে নিলাম আরেকটিবার...
নিজস্ব বা ব্যক্তিগত পহেলা বৈশাখ উদযাপনে আমি ভোর বেলাতেই সামিল হয়েছিলাম সাদা লাল শাড়িতে আর খোঁপার বেলিফুলের মালায় সেজে। গানে গানে মুখরিত হলো চারিদিক।
গানের সাথে সাথে কবিতা আবৃতিতেও বরণ করে নিলাম নতুন বছরকে।
ভেঙেছ দুয়ার, এসেছ জ্যোতির্ময়, তোমারি হউক জয়।
তিমিরবিদার উদার অভ্যুদয়, তোমারি হউক জয় ॥
হে বিজয়ী বীর, নব জীবনের প্রাতে, নবীন আশার খড়্গ তোমার হাতে--
জীর্ণ আবেশ কাটো সুকঠোর ঘাতে, বন্ধন হোক ক্ষয় ॥
এসো দুঃসহ, এসো এসো নির্দয়, তোমারি হউক জয়।
এসো নির্মল, এসো এসো নির্ভয়, তোমারি হউক জয়।
প্রভাতসূর্য, এসেছ রুদ্রসাজে, দুঃখের পথে তোমারি তূর্য বাজে--
অরুণবহ্নি জ্বালাও চিত্তমাঝে, মৃত্যুর হোক লয় ॥
তোমারই হউক জয়!
পহেলা বৈশাখের ব্যস্ততম দিনগুলির রেশ কাটতে না কাটতেই এসে গেলো প্রতি বছরে আমার নিজের উদ্ভাবিত বিষয়ে করা অনুষ্ঠানটির ডাক। আমার এবারের বিষয় ছিলো বাঙ্গালীর উৎসব। নাচে, গানে, কবিতা, অভিনয় ও ন্যারাশনে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসবগুলিকে। লিখে ফেললাম স্ক্রিপ্ট-
প্রিয় দেশ বাংলাদেশ। আমাদের প্রিয় এই দেশে আমরা উৎসবপ্রিয় বাঙ্গালীরা সারাবছর জুড়েই মেতে উঠি নানা রকম উৎসব ও আনন্দে। এই আনন্দগুলোর মাঝেই বুঝি হারিয়ে যায় আমাদের সকল অপ্রাপ্তিগুলি। সেরকম কিছু বিশেষ আনন্দ উৎসব নিয়েই ছিলো আমাদের আয়োজন-
পহেলা বৈশাখ বা বাংলা বর্ষবরণ
নেপথ্যে- এসো হে বৈশাখ এসো এসো সাথে নেপথ্য পঠন- বাংলা বছরের শুরুতেই বাঙ্গালীর প্রাণের মেলা বর্ষবরণ উৎসবে মেতে ওঠে সারাদেশ। লাল সাদা শাড়ী, রেশমী চুড়ি ও খোঁপার বেলীফুলের ঘ্রানে মৌ মৌ করে চারদিক। বোশেখের মেলাতে ছেলেবেলায় কেনা পাতার বাঁশি বা মাটির পুতুলের কথা কে আর ভুলতে পারে?
নবান্ন
নেপথ্য সঙ্গীত- অঘ্রানের ঐ সাত সকালে ভাঙ্গে সবার ঘুম- অঘ্রায়নের প্রথম প্রহরে গ্রামবাংলায় নতুন ধান ঘরে তোলার আনন্দে পালিত হয় নবান্ন উৎসব। গ্রামবাংলায় নতুন বঁধুটি সাজে নতুন শাড়িতে। ঘরে ঘরে চলে নতুন ধানের পিঠা পুলি ও ভাত তরকারী খাবারের আমন্ত্রন! সুখি কিষানী বঁধুটি কিষানের মুখে তুলে দেয় সাজানো খিলি পান।
বসন্ত উৎসব বা পহেলা ফাল্গুন
নেপথ্যে- রবীন্দ্র সঙ্গীত- আহা আজি এ বসন্তে , এত ফুল ফোটে, এত বাঁশি বাঁজে, এত পাখি গায়- সাথে রুক্ষ শীতের জীর্ণতার পরে প্রকৃতিতে আসে ফুলেল বসন্ত। পিউকাহার সুরে উৎসবপ্রিয় বাঙ্গালী জেগে ওঠে বসন্ত বরণের উৎসবে। বাসন্তী শাড়ি আর ফুলে সেজে ওঠে বাংলার রমনীকুল।
ঈদ
নেপথ্য সঙ্গীত- রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ- মুসলিমদের সবচাইতে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ- উল- ফিতর এবং ঈদ-উল আযহা পালিত হয় জাকজমকপূর্ণ পরিবেশে। জাত পাত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মেতে উঠি আমরা উৎসবের আনন্দে। ঘরে ঘরে চলে মিষ্টিমুখ ও ঈদের সালামীর আনন্দময় রেওয়াজ।
পূজা পার্বন
নেপথ্য সঙ্গীত- মঙ্গল দ্বীপ জ্বেলে- সাথে হিন্দু ধর্মালম্বীদের সবচাইতে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজার ঢাকের শব্দে দেশের আনাচে কানাচে জেগে ওঠে প্রতিটা মানুষ। শরতের সাদা মেঘের ভেলায় চড়ে আশীর্বাদ নিয়ে আসেন দেবী দূর্গা। মঙ্গলবারতা জেগে ওঠে চারিদিকে।
বিজয়ের উৎসব-বিজয় দিবস
নেপথ্য সঙ্গীত- রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি বাংলাদেশের নাম- সাথে নানা ধর্ম বর্ণ জাতির দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া বিজয়ের আনন্দে আমরা মেতে উঠি বিজয় দিবসের উৎসব বা বিজয়উৎসবে। যাদের জীবনের বিনিময়ে পেয়েছি আমরা এই সোনার বাংলা। বিনম্র শ্রদ্ধা তাদের তরে। প্রিয় দেশ। ভালোবাসি তোমাকে.....
আপাতত এতটুকুই থাকুক...
ওহ হ্যাঁ খুব খুব ব্যাস্ততায় কেটে যাওয়া দিন গুলোর মাঝে সামুতে লেখা হচ্ছে না বটে তবে লেখালিখি থেমে নেই। চলছে অন্য কোথাও, অন্য কোনো খানে। তাই বৈশাখী ব্যস্ততার পাশাপাশি লিখেছি একাল ও সেকালের বৈশাখ বা বৈশাখের সাজগোজ ঘর দূয়ার রান্নাবাড়া নিয়ে.......
আর ছবি আঁকা একদম হচ্ছে না। ইনস্পিরেশনের অভাবে।
তবুও নাই নাই করেও দুইটা ছবি এঁকেছি দুজন প্রিয় মানুষের ছবি।
হঠাৎ একদিন মনে হলো হঠাৎ যদি মরে যাই! আমার তুলে রাখা পারফিউমগুলি সব আন ইউজড থাকবে। যেই ভাবা সেই কাজ অমনি তড়িঘড়ি সবগুলি বের করে সাজিয়ে রাখলাম ড্রেসিং টেবিলে। একেক দিন একেকটা .....
যাইহোক সবশেষে বাঙ্গালীর উৎসব থেকে নেওয়াপূজা- পার্বন অংশে আমার অসম্ভব প্রিয় একটি ক্যারেকটারের (দেবী দূর্গা) ছবি।
এভাবেই কাটছে দিনগুলি। এক ইভেন্ট থেকে আরেক ইভেন্ট! সামনে আসছে ঈদ ইভেন্ট। আপাতত ইফতার আর শপিং ইভেন্ট নিয়েই আছি।
আমার বানানো কালারফুল রেইনবো স্যান্ডুইচ
রেইনবো রিবন স্যন্ডুইচ
ডেকোরেটিভ চিকেন তন্দুর
বেগুনি, স্প্রিং রোল আর ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ
রাশান সালাদ
কালারফুল সালাদ
হোম মেড চিকেন বার্গার
ফলমুল টুকরা
চিজি বেকড পাসতা
ফ্রায়েড চিজ চিকেন
তাওয়া চিকেন
ফলমূল আর খেজুর
গ্রীন পাস্তা
তন্দুর রোটি
ফ্রুট চার্ট
চিকেন কেশুনাট সালাদ
চিকেন গিনিপিনি
ইলিশ পোলাও
হিলসা এগ কাটলেট
ক্রিসপি ক্রিম ডোনাট
আইসক্রিম ফ্রুট ককটেল
ইফতার উইথ ম্যাজিক গ্লাস
আইসক্রিম ককটেল উইথ চকলেট, ভ্যানিলা, ওরিও এন্ড ফ্রুটস
মিষ্টি- সুইসরোল, খেজুর আর খাবসা বা হাবসা
আমার বানানো রাশান সালাদ
আজোয়া খেজুর ফেভারেট
এগ চিকেন রোল আর পেঁয়াজু
ছানার জিলাপি ফ্রম স্যুইট অব বেঙ্গাল
বাসায় খেয়ে খেয়ে বোর হয়ে মাঝে মাঝে পিজ্জা হাট, কে এফ সি .......
মাঝে মাঝে আর্ট ক্যাফে....
নিত্য নতুন ইফতার ইনভেনশন চলিবেক বাকী কটা দিন ...................
কিছু কিছু ব্যাস্ততা নিয়ে একটু অনিয়মিত হয়ে পড়েছি তবে বেশ কিছুদিন বা মাস হয়ত পোস্ট দেওয়া হবে না আরও কোনো বিশেষ ব্যাস্ততার কারণে................ততদিনের জন্য বিরতি কিংবা বিদায় .........সবাই ভালো থেকো ...............
সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা...
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০১৮ রাত ৮:৩৫