সেই ৪ বছর বয়সে লেখালিখির হাতে খড়ি। দাদীমার শখে রিতীমত আত্নীয় স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী নিয়ে ভোজ উৎসব করে আর তারপর মায়ের হাতটি ধরে কালো কুঁচকুঁচে হাতির পিঠের রঙের মত এক শ্লেটের( শ্লেটটাকে কেনো যেন ছোটবেলায় আমার হাতির পিঠ বলেই মনে হত) উপর সাদা ধবধবে চক দিয়ে প্রথম আঁকিবুকি।
শুনেছি বাবার পকেট থেকে কলম টেনে নিয়ে, দাদুর জরুরী কাগজ পত্রে লাল কলমের আঁচড় ফুটিয়ে আর মায়ের হিসেবের খাতায় হ্যান্ডরাইটিং প্রাকটিস করে আমি আমার বিদুষীপনার পরিচয় তার অনেক আগেই দিয়ে ফেলেছিলাম। তবুও সেদিন থেকেই শুরু হলো আমার সত্যিকারের লেখালিখির পারিবারিক ও সামাজিক অনুমোদন।
আর তারপর নিয়মিত নিয়ম করে হাতের লেখার চর্চা। যাই লিখি মায়ের পছন্দ হয়না। বলে এটা তেড়া, সেটা বেকা, এটা কাকের ঠ্যাং, সেটা বকের ঠ্যাং। আমি আবার বেশী বেশী সৌন্দর্য্য বিলাসী তাই আমারও আপ্রাণ চেস্টার কোনো ত্রুটি ছিলোনা। সাথে মানুষের লেখালিখি দেখে মুগ্ধ হওয়া রোগ! যার হাতের লেখাই মুক্তোর মত ঝরঝরে দেখি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকি। ভাবি কেমনে লিখেছে এত সুন্দর!
calligraphy দেখে মুগ্ধ হই!(Calligraphy is the art of writing script in such a way as to express the beauty of what is being written in the formation of the letters themselves.)
ইংলিশ হরফে ক্যালিগ্রাফি।
এ্যারাবিক ক্যালিগ্রাফি।
Hieroglyphic দেখে মুগ্ধ হই!!(Hieroglyphic writing is the basis of the two other writings. It owes its name to the fact that when the Greeks arrived in Egypt, this writing was mainly used for sacred (Greek hieros) inscriptions (Greek glypho)’ on temple walls or on public monument.)
এই ছবিটা থেকে খুব সহজেই Hieroglyphic শেখা সম্ভব।
একটি মনোমুগ্ধকর Hieroglyphic
সে যাইহোক, শুধুমাত্র সুন্দর হাতের লেখার চর্চা ছেড়ে মন গিয়েছে তখন লেখালিখির নানান দিকে। একদিন হঠাৎ একটা গল্পের বই, সম্ভবত হুমায়ুন আহমেদের একটা গল্প পড়েই জানতে পারি হাতের লেখা দিয়ে নাকি মানুষ চেনা যায়। আমি কেমন মানুষ, আমার মেন্টালিটি কি মানে আমার পুরো ব্যাক্তিত্বই নাকি বলে দেবে আমার বেঁকা তেড়া বা ঝরঝরে সুন্দর যেমনই হোক তেমনই হাতের লেখাটাই। মুগ্ধতার উপর বিস্ময়!! জানলাম সেই পদ্ধতিটির নাম গ্রাফোলজী।
গ্রাফোলজী এমনি এক বিস্ময়কর পদ্ধতি যা দিয়ে মানুষের হাতের লেখার রকম ধরণের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষন করে শাররিক ও মানষিক বৈশিষ্ঠাবলীর নিঁখুত বর্ণনা দেওয়া সম্ভব।
http://www.handwritingpro.com
এই শাররিক ও মানষিক বৈশিষ্ঠালীর শ্রেনীকরন করা হয় কোনো বিশেষ বৈশিষ্ঠসম্পন্ন মানুষের বৈশিষ্ঠের সাথে সামন্জস্য রেখে। পরবর্তীতে এই বিশেষ বৈশিষ্ঠগুলি এক দল সিমিলার বৈশিষ্ঠসম্পন্ন মানুষের সাথে সামন্জস্যের পরীক্ষা করা হয়।
এই শ্রেনীকরনগুলি হাতের লেখার কিছু বিশেষ দিক বা স্টাইল অনুযায়ী করা হয়ে থাকে।
Middle area loops and circles
# broadminded, narrowminded, openminded,
Lower area loops and circles
# determination, pushing determination, restraining determination, change .........
Upper area loops and circles
# intangible harmonious line values, diversified beliefs, abstract distorted ideas, abstract fantasy, idealism ......
Middle area patterns
# thinking process, investigative, analytical, cumulative, comprehensive, superficial thinking.........
গ্রাফোলজী যেহেতু মানুষের মনোবিজ্ঞানের সাথে জড়িত সেহেতু এটা চিকিৎসা বিজ্ঞানেও brain and nervous system এর চিকিৎসায় কাজে লাগতে পারে। শুনেছি ইউনাইটেড স্টেটস এ গ্রাফোলজী এর উপরে ট্রেইনিংও দেওয়া হয়। সেই ট্রেইনিং নেবার খুব খুব শখ আমার। কত মজাই না হত হাতের লেখা দেখেই জেনে যেতাম মানুষের মনের অন্দরমহলের খবর।
যাইহোক এই গ্রাফোলজী নিয়ে আমি মজার মজার নানান সাইটের সন্ধান পেয়েছি। সেসব বাংলায় অনুবাদ করার মত বেশী কষ্ট না করে লিন্ক গুলো দিয়ে দিলাম যেন যে কেউ চাইলেই পড়ে নিতে পারে। তবে এর মাঝে আমার সবচেয়ে বেশী মজা লেগেছে সেলিব্রেটী হ্যান্ড রাইটিং এ্যানালাইসিস।
http://www.myhandwriting.com/celebs/
http://www.myhandwriting.com/celebs/jonbenet.html
Click This Link
http://www.ruthmyers.com/celebrities.html
জর্জ ডাব্লিউ বুশ,ভিনসেন্ট ভ্যান গগ ও মিঃ ফ্রয়েড। তিনজন সেলিব্রেটি মানুষের হ্যান্ডরাইটিং।
এছাড়া আরও জেনেছি হাতের লেখার ধরণ ধারন নিয়ে মনোবিজ্ঞানীদের কিছু মতামত। যেমন, মনোবিজ্ঞানীদের মতে, যদি কেউ লেখার সময় বার বার কাটাকাটি করেন তাহলে সেই ব্যক্তির সাহস বলতে কিছুই নেই বলা যায়। সে হয় একটু ভীতু প্রকৃতির ও আত্মবিশ্বাসহীন।। প্রেমের ক্ষেত্রেও সে হয় মনে পড়ে রুবী রায় টাইপ একজন মানুষ কারন জীবনেও সে প্রেমিকাকে মনের কথা বলার সাহস খুঁজে পায়না।আবার যাদের হাতের লেখা ভীষণই পরিষ্কার তারা হয় ভীষন কনফিডেন্ট।
যারা খুব দ্রুত লেখেন সেসব ব্যক্তিরা সব কাজেই ভীষণ পটু হন। তারা আবার ভালোবাসার পেছনে বেশি সময় নষ্ট করেন না। এরা ভীষন ভাবুক প্রকৃতির হন। ( যেমন এক্কেবারে আমি!!! কি টাইপিং,কি হাতের লেখা, মুহুর্তেই শেষ। যারা আমাকে চেনেন তারাই শুধু বিশ্বাস করবে এই কথা টা।)
অপরদিকে, যারা ওভার রাইটিং করেন তারা ভীষনই কঠোর হন। এদের মানসিক ভাবধারাটা সহজে বোঝা যায় না। এদের প্রেমও খুব একটা টেকে না।
আবার যারা বিভিন্ন স্টাইলে লেখেন তাদের জীবনে কোন না কোন কিছুর অভাব থাকে। ভালোবাসার ক্ষেত্রে এরা পুরোপুরি সুখী হতে পারেন না।
যারা লেখার সময় শর্টকাট পদ্ধতি প্রয়োগ করেন তাদের ক্রোধ সম্বরণে বেগ পেতে হয়।
যাইহোক হাতের লেখা আর গ্রাফোলজী নিয়ে বেশী বকবক শুনে যাদের মাথা ধরে গেলো তাদের জন্য লেখালিখি নিয়ে কিছু গান।
http://www.youtube.com/watch?v=ChHhREC1Qhw
http://www.youtube.com/watch?v=mGJsNwV5g0o
http://www.youtube.com/watch?v=6BvSPbSuS04
http://www.youtube.com/watch?v=bEkbCFezB2s