!!ওগো বন্ধু পাশে থেকো!!
স্বপনের মাঝে মৃদু ভলিউমে গান বাজিতেছিলো,
Click This Link
এমন সময়ে ছোট ভগিনী কোথা হইতে ছুটিয়া আসিয়া তাহার স্বপন মাঝে ব্যাঘাত ঘটাইলো। সাথে আরো কিছু সন্মিলিত কলকন্ঠের কলরোল শুনিয়া অপূর্ব চক্ষু রগড়াইয়া উঠিয়া বসিলো। ভগিনি কৌতুক হাস্যে কহিলো" ভ্রাতা, সূর্য্য যে মধ্য গগনে ঢলিয়া পড়িলো। সকলে প্রাতঃরাশ লইয়া আপনার অপেক্ষায় অপেক্ষমান আর আপনি কিনা এখনও দিবাস্বপন নিদ্রা মাঝে বিচরণ করিতেছেন? শিঘ্রী উঠিয়া কুইকলি ফ্রেস হইয়া সকলের সহিত নাস্তার টেবিলে যোগ দিয়া আমাদিগকে কৃতার্থ করুন।"
পূর্বেই বলিয়াছি আমাদের অপূর্ব কিন্চিৎ লাজুক প্রকৃতির। সে লজ্জিত ও তটস্থ হইয়া তড়িঘড়ি উঠিয়া হাত মুখ ধুইয়া খাবার টেবিলে উপস্থিত হইলো ও ততোধিক বিস্মিত হইয়া দেখিলো, বঁধুমাতা মাথায় ঘোমটা টানিয়া কোমরে অন্চল পেঁচাইয়া এক বাড়ি মানুষের তদারকিতে লাগিয়া গিয়াছেন। অপূর্বের চক্ষু আরো গুল্লু গুল্লাকৃতি ধারন করিলো যখন সে দেখিলো বঁধুমাতা তাহার রাশভারী স্বল্পভাষিণী মাতৃদেবীর পার্শ্বে উপবেশন করিয়া ইতিমধ্যেই তাহার ১০০% মনোরন্জন করিয়া ফেলিয়াছেন।
কি আর করা বঁধুমাতা যেমনে তাহার নব্য শ্বসুর শ্বাসুড়ীর মনোরন্জন করিয়া ফেলিয়া অলরেডী তাহাদের মধ্যবর্তী আসন গ্রহন করিয়াছেন অপূর্বের অগত্যা অপর পার্শ্বে আসন গ্রহন ভিন্ন উপায় রহিলোনা। বঁধুমাতা মহোৎসাহে সকলের খানাপিনা পরিবেশন করিয়া ছোট ছোট কথা ও হাসি তামাশায় সকলের স হিত এরি মাঝে যে পরিমান সখ্যতা গড়িয়া তুলিয়াছে তাহা অপূর্ব কেনো তাহার মাতৃদেবীও মনে হয় ইহ জনমে কোনো নববধুর আচরণে ইতিপূর্বে দেখেন নাই। অপূর্ব আরেকবার মুগ্ধ হইয়া পড়িলো এই বিচিত্ররুপিনীর রুপদর্শনে।
যাহা হৌক অপু খুব সন্তর্পনে ঠিক তাহার সামনে উপবিষ্ঠা বঁধুর পদযুগলের স্পর্শ লভিতে একখানি পা সকলের অগোচরে খুব গোপনে সামনে আগাইয়া দিলেন। আর সাথে সাথে সোনাল মল পরিহিত নববঁধুর পায়ের তৎকক্ষনাৎ পদাঘাতে স্প্রিং এর ন্যায় চমকিয়া চেয়ারের উপরে এক হাত লাফাইয়া উঠিলেন।
সকলে হা হা করিয়া উঠিলো, কি হইলো কি হইলো! অপূ ভ্যাবাচ্যাকা খাইয়া আমতা আমতা করিতে করিতে হড়বড়াইয়া কি বলিলো তাহা কাহারোই বোধগম্য হইলোনা। আর নববঁধু নির্বিকার মুখে পাকা অভিনেত্রীর ন্যায় নিরপরাধ মুখ করিয়া খাদ্য চর্বনে ব্যাস্ত রহিলেন।
কিনতু নববধুর স্বর্ণ নুপুর নিক্কনের সাথে সাথে অপুর্বের এই অভুতপূর্ব লম্ফন গোচরীভুত করিয়া ও আসল মর্মার্থ অনুধাবন করিয়া বাকী সকলেরই বুঝিতে কিছু বাকী রহিলোনা ও তাহারা মুখ টিপিয়া হাসিতে লাগিলেন।
সারাদিন বিবাহবাড়ির নানা কলরোলের মাঝে অপুর্ব স্যারের আর বঁধু মুখদর্শনের সুযোগ ঘটিলোনা তবে বঁধুর সুমিষ্ট মুখখানি তাহার অন্তর মাঝে বারে বারে উঁকি দিয়া জলছবির ন্যায় লুকোচুরী খেলিতে লাগিলো।
Click This Link
সারাদিনের হই হট্টগোল স্তিমিত হইয়া যখন রাত্রী নামিলো ততক্ষণে কন্যার সময় হইল। তিনি হাতে একখানি রেকাবীতে কিছু ফলমূল ও পেস্তা কিসমিস সহযোগে সুদৃশ্য একগ্লাস দুগ্ধ শরবৎ লইয়া অপূর্বের সামনে উপস্থিত হইলেন। তাহার আগমনে যেন শতশত হাস্নাহেনা, মধুমালতীর সুঘ্রানে কক্ষের বাতাস ভরিয়া উঠিলো। মুহূর্তে যেন চারিপার্শ্বের পরিবেশ বদলাইয়া গেলো। অপূর্ব তবুও সারাদিনে বধুমুখ অদর্শনের অভিমানে চক্ষুদ্বয় তাহার পাঠ্য খটরমটর এনথ্রোপোলজী বই হইতে তুলিলেন না। যেন তিনি গভীর মনোযোগে অধয়্যনরত।
বালিকা আসিয়া সোজা সেই অধ্যয়নের প্রগাঢ় মনোযোগের তোয়াক্কা না করিয়া বইখানি লইয়া পার্শ্বে টানিয়া ফেলিয়া দিলো। অপুর্ব চক্ষু বড় করিলো যেন খুব বিরক্ত হইয়াছে। তদুপরি কিয়ৎ কৌতুকচ্ছলে
কহিলো "কি ব্যপার আজ আবার আপনার কি মনোবাসনা ? গতকাল্যের জ্যোস্না-স্নানের ন্যায় আজ আবার আকাশ বাতাস কি স্নান করিবার ইচ্ছা জাগিছে মনোমাঝে হে রাজকন্যা?"
শুনিবামাত্র রাজকন্যার মুখবর্ণ পাল্টাইয়া অগ্নিবর্ণ ধারন করিলো। কন্যা রোষান্বিত হইয়া কহিলো" তবেরে আমার এতদিনের সাধ আহ্লাদ জ্যোস্না স্নান লইয়া খোঁটা দেওয়া? আজ আমি তোমাকে জ্যোস্না-স্নান নহে এই দুগ্ধ শরবৎ দেখিতেছো আমার হাতে, ইহা দিয়াই শরবৎ-স্নান করাইবো।
বলিয়া সেই দুগ্ধ শরবৎ ফলমুল শুদ্ধ রেকাবীখানা ঝন্নাৎ করিয়া টিপয়ের উপর ফেলিয়া দিয়া হাতে শরবতের গ্লাস তুলিয়া লইলো। অপুর্ব এই পাগলীর কান্ড-কারখানা দেখিয়া বিষম ভীতসন্তস্ত্র হইয়া তড়াক করিয়া উঠিয়া দাঁড়াইয়া এক লম্ফে কক্ষের এক কোনায় গিয়া পড়িলো। কন্যাও ছাড়িবার পাত্র নহে। গ্লাস শুদ্ধ শরবৎ লইয়া তাহার মাথায় ঢালিতে কক্ষের সেই প্রান্তেই ছুটিয়া গেলেন । এক প্রান্তে সে যায় তো অপূর্ব আরেক প্রান্তে ছোটে , বহূকষ্টে অনুনয় বিনয়ে আর কখনও তাহার কোনো ইচ্ছা লইয়া বিন্দুমাত্র উচ্চবাচ্য হাসি মস্করা করিবেনা এই প্রতিশ্রুতি দিয়া সেই যাত্রা রক্ষা পাইলেন ।
কখন রাত্রী দ্বিপ্রহর পার হইয়া গিয়াছে তাহা তাহাদের জানা হয় নাই। অপূর্ব তাহার বালিকাবধুর কোলে মাথা রাখিয়া তাহার বাকবাকুম শুনিতে শুনিতে নিদ্রামগন হইতে হইতেও হইতেছেনা।
কন্যা তাহার মাথার চুলে বিলি কাটিয়া দিতেছে ও একসেকেন্ড বিরামহীন ভাবে উদগীরণ করিতেছে তাহার ইহজীবনের মনের যত না বলা কথা। এক মধুর আবেশে চারিদিক যেন স্বর্গভুমীতে পরিনত হইয়াছে।
Click This Link
হঠাৎ মুখরা বালিকা স্তব্ধ হইয়া কি যেন ভাবিতে লাগিলো। তাহার আঁখি হইতে এক ফোঁটা তপ্ত জল টুপ করিয়া অপূর্বের গন্ডদেশে ঝরিয়া পড়িলো। অপূর্ব পরম বিস্ময়ে অবাক হইয়া উঠিয়া বসিলো । বিস্মিত হইয়া বালিকার মুখপানে নির্বোধের ন্যায় চাহিয়া রহিলো।
বালিকা হাসিয়া কহিলো, এ তাহার সুখের কান্না। মোটেও দুখের কিছু নহে। জন্মেই মাকে হারাইয়াছে সে, বাবা থাকিয়াও না থাকার মতন । আজীবন মামার বাড়িতে পরগাছার মত বাড়িয়া উঠিয়াছে। আজ শুধু তাহাকে পাইয়াই সে সূখী নহে। আজ সে পাইয়াছে মা বাবা ও ছোট ভগিনী ও ভ্রাতা। এ জীবনে একটি পুরো পরিবার উপহার দেওয়ায় বিধাতার প্রতি কৃতজ্ঞতায় তাহার এ আনন্দাশ্রু।
অপূর্ব যেন কখনও শুধু স্বারর্থপরের ন্যায় বধুকে শুধু তাহার ভাবিয়া তাহার মাতৃপিতৃরূপী শ্বশুরশ্বাসুড়ি ননদ দেবরের এই পারিবারিক স্নেহ হইতে বন্চিত না করে এই তার চাওয়া। আজ সারাদিন অপূর্বের মনে বধু অদর্শনে যে ক্ষোভ ও অভিমান জন্মিয়াছিলো তাহা মুহুর্তের মাঝে বিলীন হইয়া গেলো।
অপূর্ব মুগ্ধতার সহিত শুধু নহে শ্রদ্ধায় বালিকার মুখের পানে চাহিয়া রহিলো । তাহা দেখিয়া বালিকা লজ্জিত হইয়া অপূর্বের বক্ষে মুখ লুকাইলো।
Click This Link)
( যাহারা এতক্ষণ কষ্ট করিয়া এ গল্প পড়িয়াছেন তাহারা কেহ কেহ মুখ বাঁকাইবেন জানি । বলিবেন আহা এ যুগে বা সে যুগে এমন বধু কাহারো ভাগ্যে কি জোটে? বিজ্ঞের ন্যায় কেহ কেহ মাথা নাড়াইয়া উত্তর দিবেন, কখনই নহে। কেহ কেহ প্রকাশ্যে না বলিলেও মনে মনে বলিবেন, ঢং দেখিয়া গা জ্বলিয়া যায়। আবার ইহাও বলিতে পারেন,এসব শুধু বাংলা সিনেমায় শাবানার মত অতি ভালোমানুষ বধু চরিত্রের মাঝেই দর্শন সম্ভব।
তাহাদের উদ্দেশ্যে বলি , জগতে আজো সত্যি আমাদের অপূর্বের মত বঁধুর দেখা পাওয়া সম্ভব আর তাহা আজো আছে বলিয়াই পৃথিবী আজো টিকিয়া আছে। ধুকুর ধুকুর করিয়া চলিতেছে।
গল্পের সমাপ্তি এখনও হয়নাই। আরো কাহিনী বাকী আছে। কাজেই
চলিবেক )
জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা
বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন
আত্মপোলব্ধি......
আত্মপোলব্ধি......
একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন
জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !
হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।
আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।
আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন