সিড়িঘরের দরজায়
হঠাৎ মুখোমুখি পড়ে গেলে,
চমকে দাড়ালে,
ক্ষণিক থমকালে,
কিছু না বলে
ফের তড়িঘড়ি চলে গেলে,
তোমার চিলেকোঠার, আমার চিরচেনার,
সেই ছোট্ট ঘরটিতে।
চৈত্রের কাঁঠফাঁটা রোদ্দুরে
ঝলসাচ্ছিলো চারিদিক।
আর তোমার চোখে,
দেখতে পেলাম,
ঘৃনা, ক্রোধ আর অবহেলার
তীব্র এক অগ্নি ঝিলিক।
ছাতে কাঁপড় মেলে দিতে এসে
অপ্রত্যাশিত পেয়ে গিয়েছিলাম তোমাকে।
বিয়ের পরের সাত মাসে
সাত দুগুনে চৌদ্দবার এসেছি আমি
এখানে,
ওবাড়ি থেকে।
একটা মূহুর্তের জন্যও
দেখতে দাওনি তুমি, তোমাকে
প্রতি পলে পলে, তিলে তিলে
ঘৃন্না করেছো এই আমাকে।
পায়ে পায়ে দাঁড়ালাম গিয়ে
তোমার দোরগোড়ায়।
ড্রয়ারে কি যেন খুঁজছিলে,
মুখ না ফিরিয়েই
হিস হিসিয়ে উঠলে,
চলে যাও,
চলে যাও প্লিজ ........
প্রথম বাক্যটিতে ছিলো কঠোরতা ,
দ্বিতীয়বারেরটিতে মিনতি।
চৌকাঠে হাত রেখে
দাঁড়িয়ে রইলাম স্থানুবৎ।
দুচোখে জল, টলমল
টুপ করে ঝরে পড়েই,
মিশে যেতে লাগলো তা
ইট, কাঠ বালু আর সিমেন্টের
পাষান গভীরে।
তোমার চিলেকোঠার খরখরে
মেঝের অমসৃন ত্বক
শুষে নিলো আমার সবটুকু দুঃখজল
লুকিয়ে ফেললো
আমার লজ্জা আর অপমানটুকু ।
ফিরে চললাম আমি
পেছন ফিরে না তাকিয়েও বুঝলাম
ঘুরে দাড়িয়েছো তুমি।
বললে, "দাঁড়া"
আমি-
দাঁড়ালাম।
"আর কখনও আসিসনা।"
ফিরে তাকালাম
সেই শান্ত গভীর
কালো ফ্রেমে মোড়ানো দুটি চোখ।
একদিন ঘুমন্ত দুপুরে
যা আমার ওষ্ঠ ছুঁয়েছিলো।
এক দৌড়ে নেমেছিলাম নীচে।
কার থেকে, কিসের থেকে পালাতে চেয়েছিলাম ?
জানিনা, খোকাভাই।
শুধু আর কখনও যাইনি আমি
তোমার কাছে,
আর কখনও জানতে চাইনি
কেমন আছো?
তবু আজো গভীর রাতে ঘুম ভেঙ্গে
বুকের গহীনে বাজে
একটি সঙ্গীতের দুটি চরণ
মাঝে মাঝেই।
"জানিনে কোথায় জাগো ওগো বন্ধু পরবাসী
কোন নিভৃত বাতায়নে?"
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মে, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:২৪