বন্ধুত্ব মানুষের সামাজিক জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্দ অংশ। বেচে থাকার প্রয়োজন ছাড়াও আবেগ অনুভূতি ব্যক্ত করাসহ নানা প্রয়োজনে মানুষ মানুষের কাছে যায় আর এ থেকেই এক জনের প্রতি এক ধরনের ভাললাগা এবং ভালবাসা তৈরি হয় যা পরবর্তীতে বন্ধুত্ব তৈরিতে সহায়ক হিসাবে ভূমিকা পালন করে। তাইতো সেই প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে বন্ধুত্ব মানব সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছে। তাই বন্ধুত্বের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করার অর্থই হল মানব সমাজের মৌলিক দিককে অস্বীকার করা। যতদিন পৃথিবী টিকে থাকবে ততদিন তাই বন্ধুত্বও থাকবে।
কিন্তু যে পানির অপর নাম জীবন সে পানিতে ডুবেও কিন্তু মানুষ মারা এক্সেতে পারে। সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের কাছে অনেক অভিজ্ঞ সাতারুও হার মানতে বাধ্য হয়। মুহূর্তের মধ্যেই নিভে যায় তাদের জীবন প্রদীপ।
বন্ধুত্বও এমনই একটি জিনিস। যে বন্ধুত্ব মানুষের জীবনকে আলোকিত করে তুলতে পারে, মুহূর্তের মধ্যে দূর করে দিতে পারে হাজারো হতাশা; সে বন্ধুত্ব মানুষের জীবনকে ধ্বংস করে দিতে পারে নিমিষেই।
বর্তমান একুশ শতকের পৃথিবী হল কাধে কাধ মিলি্যে এগিয়ে চলার পৃথিবী কারো দিকে কার নজর দেয়ার কোন সময় নেই।
বর্তমান যুগ হল নারী পুরুষ সমান অধিকারের যুগ।যদিও সমান অধিকার কথাটা আমার কাছে কেমন যেন বেমানান মনে হয়। কারন একটি ফুল ও একটি প্রজাপতি কখনও সমান হতে পারে না।যদিও উভয়ের অবস্থানই বাগানে কিন্তু একটি কখনই অন্যটির স্থান পূরন করতে পারে না।ফুলের কাজ হল বাগানকে সুগন্ধময় করে তোলা যা প্রজাপতি কখনই করতে পারবে না। তাছাড়া ফুল হল পবিত্রতা, স্নিগ্ধতা ও ভালবাসার প্রতীক অন্যদিকে প্রজাপতিকে চিণহিত করা হয় চঞ্চলতা ক্ষিপ্রতার প্রতীক হিসাবে।
যাহোক অপ্রাসঙ্গিক কথা আর বাড়াতে চাই না। বর্তমান যুগে তথাকথিত সমান অধিকারের স্লোগান তুলে ছেলে মেয়ে সমানভাবেই এগিয়ে চলছে।আর এর প্রভাব পরেছে বন্ধুত্বের উপরও।তাই এখন বলা হয় ছেলে বা মেয়ে কোন ভেদাভেদ নেই আমরা সবাই ফ্রেন্ড। কলেজ বিশ্ববিদক্সালয়গ
ুলোতে তাই অহরহ দেখা যায় ফ্রেন্ডদেরকে একসাথে বসে আড্ডা দিতে।হাসি-ঠাট্টা এবং নানা রকমের ভাব বিনিময় চলতে থাকে তাদের মাঝে।সমাজের সচেতন ব্যক্তি এমনকি কিছু কিছু ইসলামী জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের কাছেও এসব কোন অপরাধই না। কারন এ সবই হল Just Friendship. আর এভাবেই আমদের তরুণ সমাজ ধীরে ধীরে পর্দার বিধান থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। পর্দার বিধানকে এখন তাদের কাছে কেবলই বোঝা মনে হয়।
আসলে শয়তানের উদ্দেশ্য একটাই।তা হল ইসলামে নিষিদ্ধ কাজগুলোকে কৌশলে সমাজের দৃষ্টিতে স্বাভাবিক করে দেয়া। এর ফলে ইসলামের বিধানগুলো মানুষের কাছে বোঝা হিসাবে গন্য হয়।আর ধীরে ধীরে মানুষ সরে যেতে থাকে ইসলামের পথ থেকে।আর তথাকথিত এ Friendship theory এখানে আর্সেনিক হিসাবে কাজ করে।এক সময় ছিল যখন একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে প্রকাশ্যে একসাথে হেটে যাওয়ার সাহস পেত না।কিন্তু আজ পথে ঘাটে যেকোন দৃশ্য নিতান্তই বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কিছুই বলার নেই। কারন তারা Friend. এক সময় সব ধরনের নিষিদ্ধ কাজ সমাজে স্বীকৃতি পেয়ে যাবে So called Friendship Theory এর বদৌলতে। কারন সমাজের বৈশিষ্টই হল পরিবর্তনশীলতা। হয়ত ভালোর দিকে নয়ত খারাপের দিকে; যেকোন একদিকে সমাজ পরিবর্তিত হবেই।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৫