চিল যেভাবে ছো মেরে দিয়ে যায়, সেই ভাবেই ভালবাসা আমার হৃদপিন্ড-কে নিয়ে গেছে। আমি রক্তাত্ব। ক্ষত-বিক্ষত। কষ্টের কোন ভাষা নেই। থাকলে প্রকাশ করতে পারতাম। নেই বলেই পারি না।
প্রতিটা মুহুর্তে বুকের ভেতর বয়ে বেড়াচ্ছি সেই কষ্ট। আয়নায় নিজের মুখের দিকে তাকাতে পারি না। এমন বিষণ্ন একটি মুখ কখনো দেখিনি। মনে করতে চাই, ওটা আমার নয়। কিন্তু আমারই মুখ।
বিষন্ন।
বেদনার্ত।
চোখের গভীরে জমে আছে কান্ন।
আকাশে বিশাল একটি চাঁদ উঠেছিল। মেঘমুক্ত রাতের আকাশে সেটা কি পুর্নিমার চাঁদ ছিল? জানা ছিল না। কিন্তু দেখতে পেয়েছিলাম. চাঁদের আলোয় ভেসে যাচ্ছে পৃথিবীর এক অংশ। কোন রাতেই আর ঠিকমত ঘুমাতে পারি না। দম আটকে আসে। চোখের সামনে ভেতে উঠে তোমার মুখ। সব সময়। আলো নিভিয়ে শুয়ে পড়েছিলাম। কিছুতেই ঘুম আসছে না। অন্ধকার ঘরের চোখ মেলে আছি। হঠাৎ দেখি জোনাকির আলো। তোমার ছবি যেখানে রাখা আছে, তার একটু উপরে দিকে দেয়ালে। এক বার জ্বলে উঠল। আমি আশ্বর্য হই। আশ্চর্য হবার কারণ আছে। প্রথম রাত থেকেই দেখছি। প্রতি রাতে একটা জোনাকি কোত্থেকে যেন আমাকে.....। জানালা খোলা রাখি। হয়ত বাইরে থেকে আসে। অন্ধকার ঘরের মধ্যে উড়াউড়ি করে। একবার আলো জ্বলে আবার নেভে। বিছানায় শুয়ে শুয়ে আমি তা দেখি। ভালো লাগে। কিন্তু অবকা হই এ ভেবে, সব সময় জোনাকিটা একলা আসে, সারা রাত থাকে আবার ভোরের আলো পুটতেই চয়ে যায়। ভালো করেই লক্ষ্য করেছি একটা। দুটো বা তিনটে নয়। এ ব্যাপারটা আশ্চর্য লাগে। আরো লক্ষ্য করেঠি. নির্ঘুম রাতে নিঃসঙ্গ জোনাকিটাকে দেখে আমার একাকীত্বের যন্ত্রনা কিছুটা হলেও লাঘব হয়।
ঘুমাতে পারছিলাম না। উঠে আলো জ্বালাই বছরের প্রথম দিন। উৎসবের দিন। তোমার কাছে থাকতে চেয়েঠিলাম।আমার উৎসব আমার আনন্দ সব তুমিই। বিজয় স্মরণির মোড়- ওখানেই আমার প্রথম দেখা। সেই প্রথম দেখার দিন-এ আমার মনে হয়েছিল, আমার সামনে হাজির হয়েছে অসুন্দরের মাঝে সুন্দর এক পরী; তারপর দিন যত গেছে ততই আমার কাছে তা ষ্পষ্ট হয়েছে। কথাটা উপলদ্ধি করেছি গভীর ভাবে। অনেকবার। সেই প্রথমদিনেই আমার মন আমাকে বলেছিল, ওর কাছে কখনো মিথ্য বলা যাবে না। বিস্মিতই হয়েছিলাম। কোনো মানুষকে দেখে তো এমন অনুভূতি হয়নি কোনদিন? অথচ তোমায় ক্ষেত্রে আমার এ অনুভূতি-সবসময়।
গত রাতে তোমাকে স্বপ্ন দেখলাম। ঘুম ভাঙার পর কেমন যেন অসহায় লাগছিল ...... তুমিও কোনদিন কল্পনাও করতে পারবেনা আমার উপর তোমার প্রভাব কী প্রবল। রাতদিন শুধু তোমার ভাবনাতেই আচ্ছন্ন থাকি। প্রতিটা মুর্হুত তোমার কথা ভাবি। তোমার মুখটা সর্বক্ষণ ছবির মত দেখতে পাই মনে চোখে...সবখানেই।
আচ আমি একা। তুমি নেই। এ কষ্ট কাকে বলব? কতটা একা হয়ে গেছি? ভেতরে ভেতরে কতটা কষ্ট পাচ্ছি সে শুধু আমিই জানি। এভাবে তো তোমাকে হারাতে চাইনি। এক রকম অস্থিরতার মধ্যে দিন কেটে যাচ্ছে। জানি সময় কখনো থেমে থাকবে না। মনের যন্ত্রনাক্লিষ্ট এসব দিনের অবসান ঘটবে একদিন।
সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়। যথেষ্ট কারণ আছে এর মধ্যে রাতে ঘুম হয়না ভালো। বিষন্নতার ঘোর কাটে না।
অফিসের সময়টুকু বেশ ভালো কাটে। মিলু নামের সিনিয়র একজন সহকর্মি পেয়েছি। আশ্চর্য মানুষ। ওনার জন্য মনভার করে থাকার উপায় নেই। সব সময় মাতিয়ে রাখে। অফিস থেকে বেরিয়ে গেলে আআবর মন খারাপ হয়ে যায়। অভিনয় করতে করতে হাপিয়ে উঠেছি। একটি মায়ের সাথে অভিনয়; একটি বোনের সাথে অভিনয়। এসব কিছু তাড়িয়ে বেড়ায়।
কি চেয়েছি? আর কি হল। এখন আর কিছু করার আছে বলে মনে হয় না। নিজের সমস্ত সুখকে বিসর্জন দেবার জন্য প্রস্তুতি হিসেবে এবার নিজের সাথে অভিনয় শুরু করেছি। এ দৃশ্য আমার ভূমিকা সুখি মানুষের। ছেলে এবং ভাই-এ দুই ভূমিকায় যদিও আমি সফল তবে এ ভূমিকায় কেন পারব না? অবশ্যই পারব।
মনের বিষন্নতা কাটছে না কিছুতেই। উত্তরা থেকে ক্রিসেন্ট রোডে এলাম পায়ে হেটে। মনের বিষন্নতা যায়না। ক্রিসেন্ট রোড থেকে মতিঝিল। সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত শাহবাগ। চারুকলার সামনে। হাঁটাহাঁটি করি। চা খাই। কিন্তু ভেতরের বিষন্নতা পিছু ছাড়ে না। বুকের ভেতর কিসের যেন হাহাকার মনের ভেতর, মনের বাইরে, দিনে-রাতে, সবখানে, সর্বক্ষণ শুধু একজনের ছায়া, একজনের স্মৃতি সমস্ত অস্তিত্ব আর সত্তা জুড়ে শুধু একটাই নাম......!!!
(নামটি দেয়া গেল না। দুঃখিত





