চিরকুট: ২০
তারিখ: ৪ আষাঢ় ১৪২৬ বাংলা
প্রিয় মেঘাগমপ্রিয়
পত্রের শুরুতেই জানাই সুপ্রভাতের মিষ্টি ঝলমল রোদের আলোয় নুইয়ে থাকা আষাঢ়ে ফোটা হলুদ রঙা ঘ্রাণহীন কদম ফুলের শুভেচ্ছা। কেমন আছো এমন প্রশ্ন আজ আর করছিনা,আন্দাজ করে নিলাম তুমি ভালোই আছো।
তবে আমি তেমন ভালো নেই,অজান্তে বুকের ভেতর ধড়ফড় করে ওঠা ব্যাথা আজ কদিন যাবৎ বেড়ে গেছে। অনুভূতিটা কেমন যেন ম্লান থেকে ম্ল্যানিত হয়ে গেছে। আসলে কোন কারণ ছাড়াই যে মানবী দীর্ঘবছর আমায় ভুলে থাকতে পারে, সে আমাকে নিয়ে হয়তো কোনদিনয়ি ভাবেনি। ছুঁয়ে যাওয়া শূন্য অস্তিত্বে কষ্টের ঘুমন্ত অক্ষরে আমার মনটাও যেন আস্তাকুঁড়ের কোন বর্জ্যের স্তপ হয়ে গেছে। আধাঁর তো আধাঁরকেই ভালবাসবে। সে হয়তো মনের ভুলেও আলো হয়ে আসবেনা। আষাঢ়ের ঘনঘন বৃষ্টির মত হয়ে গেছে স্বীয় নয়নকূল। বিদঘুটে অন্ধকারে রাত্রি যাপন করাটা এখন নদী ভাঙনের খেলার মতই। আমার মনের ও স্বপ্নের পরিধি অত্যন্ত সংকীর্ণ। নিজেকে নির্বোধ ভেবেই দুঃখকে আপন চির সঙ্গী করে নিয়েছি। তার অনাবিষ্ট হেতু আর অভিমানে খামোখা আবেগময় ভালবাসা খরচ করে ফেলেছি তোমার নগ্ন শহরে।
হে মেঘদর্পিণী, তোমার কাছে আমার কিছু জানার ছিলো! এখন মনকে ডেকে বলি শোন পাগল মন,
তুই পুড়ে যা,উড়ে যা,প্রিয় যে অন্য কারো মনের দেয়ালের ছবি হয়ে গেছে। মগজ ভর্তি গল্পের পাঁজা অাজ শূন্য খালি খালি মনে হয়। আকাশের গায়ে হেলান দিয়ে সূর্য ছুটেছে পুব থেকে পশ্চিমে,কখন যে সন্ধ্যা নামে জানতে পারি না। বিরহ পালন করার উৎসবে তুমিও যোগ দিবে কোন সন বা তারিখে। আমি কোন একটা ইস্যুতে তারিখটা জানিয়ে দেবো। প্রশ্ন চিন্তা ভেঙে গেছে তোমার আর ফিরে আসার পুনরাবৃত্তি হলোনা আমার গল্পে।
মেঘ মানবী তুমি অন্য কারো গল্পের প্রধান চরিত্র হয়ে আমাকে নেতিবাচক চরিত্রে কল্পনা করে নিও। আমার জন্য লিখে রেখো একটি নীল চিরকুট। আমি না হয় সে চিরকুটের অপ্রিয় প্রাপক হবো। শেষ বিকেলের শান্ত যুবক হয়ে আর ফিরবোনা তোমার নগরে। তোমার কার্যকলাপে ছারপোকা লেগে গেছে ভালবাসার লাল ডাইরীতে। কার জন্য মাঝে মাঝে হৃদপিন্ডের পিন্ডটা কেঁপে ওঠে অবকারণ অদ্ভত আবেশে? বিধ্বস্ত মনের সবুজ ভেলা ভূমি আজ যেন কারো শূন্যতায় মঙ্গলিক আয়নাবৃত ঠিকানা হয়ে গেছে। শুকনো মচমচ পাতার শব্দের মত চলছে জীবনের ঘড়ির কাঁটা। হঠাৎ থেমে দাড়ালো সম্পর্কের কাঁটাগুলো। নীলকমলিনী অতৃপ্ত আত্মার শেষ ইচ্ছেটা প্রিয় শিল্পীর গানের সুরেই তোমায় জানাচ্ছি!
তুমি নীরবে শুনে নিও গানটা।
রাতের আকাশে তারাদের মেলায়,
বাঁকা চাঁদ বসে ছিলো তোমার প্রত্যাশায়।
মুখ লুকিয়ে আমি আর কাঁদি না,
যা হারিয়ে গেছে,যাক না।
যোগ-বিয়োগের অংকে ভুল করেছো তুমি,
আমার ভালবাসার সমীকরন বুঝতে পারোনি তুমি।
পুরনো কাগজে কলমের খোচায়,
প্রতিশোধ নিবো পূর্বশক্রতার।
জখম হবে তুমি কবিতার রক্তরাঙা প্রান্তরে,
পাল্টা আঘাতের সুযোগ রাখবোনা আমার শহরে।
নীরবে কেঁদে যাবে তুমি হু হু করে।
ইতি
মেঘ প্রিয় বালক।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুন, ২০১৯ রাত ৩:৩৭