তারিখ : ৪ আষাঢ় ১৪২৬ বাংলা
চিরকুট নং :১৯
প্রিয় কুড়ে ঘরের অপ্সরী,
পত্রের প্রাক্কালে জানাই ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে প্রথম পর্বে ইংল্যান্ডের County Sports ground in Taunton নামক ভেন্যুতে আয়োজিত বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের ৭ উইকেটের অবিস্বরনীয় বিজয়ের শুভেচ্ছা। আশা করছি বাংলাদেশে সেমিফাইনাল খেলবে ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে! তুমি কি বলো? গত চিঠি লেখার সময় জ্বরে কাবু হতে চলছিলাম,সে জ্বর নামক ভাইরাস আজ আবার নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
এখন মধ্যরাত অতিক্রান্ত হওয়ার পালা। চিঠি লিখার পূর্বে বিছানায় শুয়েছিলাম ঘুমবো বলে! কিন্তু ঘুম আমার চোখ হতে যোজন যোজন দূর দেশে পলায়ন করেছে। বিছানায় শুয়ে অনেক নড়াচড়া ও কায়দা কৌশল করেও চোখে ঘুম আনতে ব্যর্থ হয়েছি। ভাবলাম অসুস্হ শরীর নিয়েই তোমার সাথে কিছু কথার ভাব বিনিময় করি। পৃথিবীতে মানুষের রাত জাগার কারণ হতে পারা কম কিছু না। এই মনে করো,তুমি আমার পাশে বসে আছো,তোমার সাথে ভাব বিনিময়ে আসমানের বাঁকা চাঁদটিও খুব হিংসে করছে। রাতের শেষ তৃতীয়াংশে দু জোড়া চোখ জেগে আছে একে অপরের চোখে চোখ রেখে। কিছুক্ষন পর লজ্জায় তুমি তোমার চাঁদ মুখখানা লুকিয়ে নিবে,তারপর বলবে,ওহহ হ্যাঁ চিঠি আপনি বরাবরই দারুণ লিখেন। আমাকে অর্পন করা চিরকুটের প্রতিটি শব্দ ভীষণ ভাবে মন কাড়ে। বলতে পারেন চিরকুটের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছি। প্রায় চিঠিতেই আপনি ছোট্র একটা প্রশ্ন করেন। আপনার চিরকুটের সহজ প্রশ্নের উওরটা অসম্ভব রকম জটিল।
অনেক সময় নিয়ে মস্তিকের কারাগারে উওর বের করার প্রচেষ্টা চালিয়েছি। প্রশ্নের উত্তর খুজে পাইনি,তবে পেয়েছি কিছু কলিজায় দাগ কাটার কথা।
আপনার অভিযোগ আমি চিরকুটের প্রতিউত্তর কেন দেইনা?
আপনার চিঠি পড়তে হয় হাতের নরম স্পর্শে পৃষ্ঠা উল্টিয়ে উল্টিয়ে। যে চিঠিতে চাইলেই আকাশ গঙ্গা কিংবা বৃষ্টির ফোঁটার আবেগী ঘ্রাণ নেওয়া যায়। কষ্ট আর অভিযোগের পাতা এতটাই ভারি হয়েছে, আমি আপনার চিরকুটের প্রতিউত্তর লিখতে গিয়ে আমার কলম আটকে গেছে বারবার। তাই ভাবলাম কল্পনায় এসে আপনার সাথে কথা বলা যাক।
আপনাকে অবাক করে দিয়ে চলে আসব কোন একদিন আপনার শহরে। কৌতূহলে আপনিও আমায় দেখে পাগল হবেন। পৃথিবীর সকল ব্যস্ততাকে উপেক্ষা করে আপনি আমায় চিঠি লিখেন। প্রত্যুত্তর দিতে সরাসরি চলে আসলাম আপনার কল্পনায়। আপনি বড্ড প্রশ্নমানব। কাদের সংস্পর্শে থেকে এতো প্রশ্ন করা শিখেছেন?
এতগুলো প্রশ্নের ঠিকঠাক উত্তর দেওয়ার সমীকরণের অংক মিলাতে পারি না। অংকে আমি বড্ড কাঁচা। আপনি আমাকে আপন জায়গায় বসিয়েছেন। সেটা আমার অজানা নয়। ফোঁটা পরিমান ভালবাসাও দেইনি আমি,যেখানে সাগরের উপচে পড়া ঢেউয়ের মত ভালবাসা পাবার কথা আপনার। ভালবাসা প্রকাশের ভাষা ব্যক্তি বিশেষ ভিন্ন। অভিমান করবেন না। জানি কিছুক্ষন পর পাল্টা প্রশ্ন করবেন। তবে কিছু প্রশ্নের উত্তর কৌশলে এড়িয়ে যেতে হয়। অভিমানী প্রিয়দের শুধু অভিমান থাকে এমন না। অভিমান জমিয়ে রাখলে ক্ষোভ আর রাগে পরিনত হয়! জমে থাকা অভিমানদের বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে লিখতে থাকুন।
কল্পনাতেও তুমি কত সুন্দর অকপটে কবিতার মত। যেদিন কল্পনারা বাস্তবে রূপ নিবে,সেদিন সব প্রশ্নের উত্তর নিয়ে ছাড়বো। চিরকুটের শেষ অংশে একটি প্রশ্ন রেখে গেলাম প্রিয়,তুমি কি আমার চিরকুটের প্রেমে পড়েছো? নাকি আমার প্রেমে?
উত্তরের অপেক্ষায় তোমার চিরকুট প্রেরক ও লেখক। আজ আর সামনে লিখছিনা কল্পণার মানবী। ভালো থেকে ভাবনার ওপারে প্রিয়।
ইতি:
এক যাযাবর লেখক।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুন, ২০১৯ ভোর ৪:১৪