চিরকুট:১৬
তারিখ:২৬ জেষ্ঠ্য ১৪২৬ বাংলা
প্রিয় অপরিচিতা দোলা
পত্রের পাককালে জানাই জৈষ্ঠ্যের সমাপ্তিতে, আষাঢ় মাসের আর্বিভাবে,মেঘলা আকাশে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টির বহমান ঠাণ্ডা বাতাসের রহস্যঘেরা নিশির শুভেচ্ছা।
কেমন আছো বেদনাদায়ক ভালবাসা?
আজকাল রোজ তোমায় মনে পড়ছে। যখন তোমায় মনে পড়ে তখন আমি আমার নিকেতনের অয়ন গমনাগমন মেলে দেই। প্রেমময় দক্ষিণা বাতাস কপাট ভেদ করে আমার বাহু স্পর্শ করো তুমি হয়ে। তখন আমার হার্টবিট খুব দ্রুত হয়ে যায়। আবার যখন তোমায় নিয়ে গভীর মগ্ন হয়ে ভাবি,তখন মনে হয় হার্টবিট থাকেনা আমার সাথে। বিকেলের চায়ের কাপে তোমার অপেক্ষায় হার্টবিট আবার ধীরগতির হয়ে যায়।
তোমার কারণে হার্টবিট নিয়ে মারাত্মক ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত আমি। তোমাকে নিয়ে ভাবনার জালে
হয়তো কোন কালে আমার হার্টবিট নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে থেমে যাবে। তখন কোন ডাক্তার বা কবিরাজে কাজ হবেনা তুমি ছাড়া। এ রোগের ঔষুধ আছে শুধুই তোমার কাছে।
হয়তো প্রথম মিলনেই তুমি আমার মন হরন করবে।
আমি হারাবো তোমার রূপের সুরের মোর্ছনায়।
তুমি ঠিক কখন আসবে বুঝতে বেশ সময় লেগে যাচ্ছে আমার। তর সইছেনা কখন এসে আমার লাইফটা হেল করবে তুমি?
সেই সময়ের সাথে গতি বাড়িয়ে চলেছি প্রায় আমিও।
ক্লান্তির নীলাভ মেঘ আমার আকাশে উঁকি দিতে চায়,আমি ওদেরকে দূরে থাকার ৯ নং বিপদ সংকেত জানাই। সংকেত জানানোর পরেও মাঝে মাঝে অনুভবে ওদেরকে কাছে পেয়ে যাই। সময়বর্তনী টেনে দেখি কাটারাও পালাবদলে মত্ত। বেলাভূমির সর্বত্রে পালাবদলের জয়জয়কার। শুধু আমিই আছি তোমার মন পালাবদলের অপেক্ষায়।
কল্পনার আলপনায় তোমার লাল টকটকে আঁখির আদ্রতা আমাকে কি যেন বলে যাচ্ছে কানে কানে। অনেক জ্বালাতন করবো এমন বাক্য বলে যাচ্ছো হরহামেশাই। প্রতিটি মিছিলে মিছিলে স্লোগানে স্লোগানে ধ্বনি-প্রতিধ্বনি হয়ে কখন আসবে আমায় ভালবাসার কথা শোনাতে?
আমার দেহ গঠনের প্রতিটি ইট খসে পড়বে তোমার ভালাবাসায়।
চূর্ণ-বিচূর্ণ ভুষিভূত ইটের প্রতিটি কোণা সাক্ষী হয়ে থাকবে সে ভালবাসার, অনাদি অনন্তকাল।
ভালবাসার পারাবদলে
এত ভালবাসা ছড়িয়ে দিবো
আমার মৃতুকালে তোমার বুকে রক্তক্ষরণ হবে।
তোমার আমার সে প্রেমের উপন্যাসের পান্ডুলিপি ছেপে যাবে ,কালজয়ী ঔপন্যাসিক আর কবি সাহিত্যকরা।
কোন সন তারিখে আমরা থাকবোনা,থেকে যাবে আমাদের ভালবাসার কথা সবার মুখে মুখে।
ভালবাসার খাঁটি উদাহরণ হবো আমরা।
তোমাকে নিয়ে আমার হাজারো ভাবনারা অনুভবে এসে জমা হয়েছে মগজের রক্তনালীতে।
ভিতরকার আকুতিগুলো বলে দিলুম আজ নির্দিধায়।
শব্দহীন নিশ্চলতার মাঝেও অনুভূত হও তুমি।
দিগন্তের শেষ বিন্দুর মাঝেও অনুভূব করি তোমার অস্তিত্বের আভাস।
আমি শুনতে পাই তোমার মেরোডি হৃদস্পন্দন।
নিশার অন্ধকারেও এক দীপ্তিময় বেশে অভিভূত হও তুমি।
দূর আকাশে নীলাভ মেঘে তোমায় হাতড়ে বেড়াই দিশাহীন হয়ে। মায়া নিশির আকাশে তাকিয়ে থাকি নিষ্পলক তোমায় দেখার অপেক্ষায়। রাতের নিস্তব্ধতা মনে করিয়ে দেয় তোমার কথা। ইচ্ছেরা খুন হতে চায় কোন শান্ত বিকেলে তোমাকে নিয়ে। পাশাপাশি হেঁটে পাড়ি দিতে চায় গাঁয়ের আ'ল পথ,নির্বাক হৃদয় স্বপ্ন বুনতে চায় কথাহীন। কোন এক অভিশপ্ত দুপুরে অপলক নেত্রে তোমার প্রাণে দাঁড় করাবো আমায়।
মুগ্ধতার প্রতিচ্ছবি খুজে নিতে চাই তোমাতেই।
জানতো!
দু'জন মানুষের এক হওয়ার আনন্দের চেয়ে দুটি আত্মা এক হওয়ার আনন্দই বেশি।
ভালবাসা কি?
বর্তমান নব যুগোলদের কাছে এ প্রশ্নের উত্তর হয়তো ধোঁয়াশায় পূর্ণ,আমি তো ভালবাসার মানে খুজি অন্য চিন্তায়।ভালোবাসার কোন সমাপ্তি নেই,এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া, যে প্রক্রিয়ায় একটি হৃদপিন্ড আরেকটি হৃদপিন্ডকে বোঝার চেষ্টা করবে।
এ আশায় হয়তো আমার কলম থেমে নেই,পবিত্র জিনিসের তুলনা শুধুই পবিত্র জিনিস।
আমার ভালবাসা পবিত্র বলেই হয়তো এখনো তোমার অপেক্ষা প্রিয় অপরিচিত দোলা।
সময় হয়ে গেছে আজ এখানেই ইতি টানার। ইচ্ছে না থাকা সত্বেও অনেক কথাই লিখেছি,হয়তো মেঘেরা ঘটা করেই তোমাকে আমার কাছে নিয়ে আসবে শত বৃষ্টির শুভেচ্ছা দিয়ে। চোখের কোণায় ঘুম নামক ক্লান্তি ভীড় করেছে। শেষ লাইনে তোমার জন্য একটি প্রশ্ন রেখে গেলাম,
ভালবাসা হৃদয়য়জাত নাকি মস্তিস্কজাত?
উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম।
ইতি:- তোমার নগরের একমাত্র চিরকুট লেখক
ছবি: নেট থেকে সংগ্রহ
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০১৯ সকাল ১১:১০