আমরা কি শুধু কথা বলার জন্য কথা বলি, নাকি বলার জন্য কথা বলি ? আমরা দিনদিন বাছবিচার ছাড়াই মন্তব্য করে বসি। আত্নহত্যা, ধর্ম, রাজনিতি সেক্স বা যেকোনো বিষয় যখন আমাদের আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে চলে আসে। সেই খবর গুলো যখন সামাজিক মাধ্যম অথবা গনমাধ্যম চলে আসে। সেই পোষ্টে আমাদের মতো মানুষদের মন্তব্য দেখলে, মনে হয় তিনি অনেক কিছু জানেন তার সম্পর্কে। মুখে হাতে যা আসে তাই লিখছে বলছে । উদাহরণস্বরূপ কেউ আত্নহত্যা করলো সেই খবর যখন আলোচনায় আসলো। সেখানে আমাদের মন্তব্য কাপুরুষ, ভিতূ, বাবা মার কথা ভাবে না। যিনি মারা গেছেন হয়তো তিনি বাবা মার বোঝা হয়ে ছিলেন, বাবা মাকে মুক্তি দিয়ে দিলেন জীবন দিয়ে । কেউ প্রেমে ব্যর্থ হয়ে সেই একই পথ বেছে নিলেন। তখন আমাদের মন্তব্য কেউ কারো জন্য জীবন দিয়ে দেয় নাকি। আপনি হয়তো প্রেমে ব্যর্থ হয়েছেন, সেখান থেকে ফিরে এসেছেন আপনার ফিরে আসার ক্ষমতা ছিল বা অন্য কোন কিছুর মায়া ছিলো, এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ যে আপনি একই পথ বেছে নেননি। যিনি মারা গেছে তিনি হয়তো আপনার মতো পরিস্থিতিতে ছিলেন না তার পরিস্থিতি হয়তো ভিন্ন ছিলো। যে ছেলেটা পরিক্ষার অকৃতকার্য হয়ে আত্নহত্যা করলো হয়তো তার অত্নমর্যাদায় এতোটাই হয়তো আঘাত হেনেছে অভিমানে এই মায়ার দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলেন। আমরা হয়তো জানিনা তাদের মানসিক অবস্থা কেমন ছিলো, কি চলছিলো মনের মধ্যে। নিজের জুতা থেকে পা বের করে, তাদের জুতাই পায়ে দিয়ে পথ অতিক্রম করলে তখন হয়তো বুঝতে পারবো। আমরা অকারণে মন্তব্য করি যা অতি নিষ্প্রয়োজন। চোখের দেখায় একই মনে হলো, অথবা আপনি আপনার জীবনের সাথে মিল খুজে পেলেন। আমরা হয়তো সব সময় আমাদের নিজেদের জীবন দিয়ে অন্যকে মাপতে চাই। সব বিষয় যে নিজের জিবন দিয়ে মাপতে হবে এমতো না। অন্ধকার গুহায় প্রথম পা দিয়ে তো বুঝতে পারবেন না শেষ প্রান্তে কি রয়েছে, যিনি অতিক্রম করেছেন তিনি যানেন তার ভ্রমণ কেমন ছিলো। সম্প্রতি আত্নহত্যা, ধর্ষণ নিয়ে এমন অনেক অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য দেখছি যা দেখে নিজের গা গুলিয়ে আসে। এমন নিষ্প্রয়োজন মন্তব্য অনলাইন হোক আর অফলাইন, যেখানে উচ্চারণ হবে সেখানে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে যেন সে একই কাজ তিনি পরবর্তীতে না করেন।
চোখে যা দেখা যায় তার চেয়ে আরোও বেশী অদেখা থেকে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:০০