#সবাইকে_অনুরোধ_করবো_পুরো_লেখাটা_পড়ার
কোন ধর্মের সৌন্দর্য দেখতে চান?
এমন কোন দেশে যান যেখানে ঐ ধর্মের
অনুসারিরা সংখ্যালঘু। তাদের ধর্মাচারের মাঝে যে
রূপটা, যে সৌন্দর্যটা দেখতে পাবেন, অপর
কোন দেশ যেখানে তারা সংখ্যাগুরু সেখানে
সেটা পাবেন না।
অজস্র প্রমাণ আছে।
মুম্বইয়ের এক ব্যস্ত রাস্তায় হঠাত গণেশ
মন্দিরের সামনে এসে থামলো এক ট্যাক্সি,
ভেতর থেকে স্ত্রীকে পাঁজকোলা করে
বের হলেন এক মুসলিম ভদ্রলোক। স্ত্রীকে
নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন, পথেই তার প্রসব
বেদনা ওঠে। জাতপাত ভুলে গিয়ে মন্দিরে
আশ্রয় চান তারা। মন্দিরে প্রার্থনারত ভক্তরা মানবতার
উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। মহিলারা চাদর, মাদুর,
শাড়ির আঁচল দিয়ে অস্থায়ী আঁতুড়ঘর বানান, তার
মাঝেই তাদের সাহায্যে পৃথিবীতে আসে তার
নবজাতক। এখানেই শেষ নয়। মুসলিম ভদ্রমহিলা
কৃতজ্ঞতার নিদর্শনস্বরূপ গণেশ মন্দিরে জন্ম
নিয়েছে বলে ছেলের নাম রাখেন গণেশ।
তখন তার মনে হয়নি এটা হিন্দুয়ানি নাম। তাকে
মন্দিরে জায়গা দেয়া ভক্তদেরও মনে হয়নি
মুসলমান ঢুকলে মন্দির অপবিত্র হবে। ঘটনাটা
গতবছরের।
মধ্য প্রদেশের হরদা শহরের বাসিন্দা সন্তোষ
সিং। গতবছর অল্পবয়সেই দুরারোগ্য ব্যধিতে
ভুগে মারা যান। চিকিৎসার খরচ জোগাতে গিয়ে তার
পরিবারের এতই দুরবস্থা হয়েছিল যে তার মরদেহ
সৎকার করার সামর্থ্যও আর তাদের ছিল না। এমন
সময় এগিয়ে আসেন তার বাল্যবন্ধু রাজ্জাক। নিজে
শুধু বন্ধুর সৎকারের খরচটাই দেননি, বন্ধুর
পরিবারে আর কোন পুরুষ সদস্য না থাকায়
হিন্দুরীতিতে বন্ধুর সৎকারের পুরো কাজটা
নিজহাতেই সম্পন্ন করেন তিনি। তার বা তার বন্ধুর কি
জাত গেছে?
.
২০১২ সাল। স্বৈরশাসক হোসনি মোবারকের
পদত্যাগের দাবীতে উত্তাল কায়রোর তাহরির
স্কোয়্যার। গণদাবী ঠেকাতে হীরক রাজ
মোবারক লেলিয়ে দিয়েছে জান্তা পুলিশ। এমন
সময় এলো রমজান মাস। পথে আন্দোলনকারী
মুসলিমরা ইফতার করবেন, মাগরিবের নামাজ পড়বেন।
পুলিশের লাঠির মুখে সেটাও ঠিকমত করতে
পারছেন না। এগিয়ে এলেন তাদের খৃষ্টান
সহযোদ্ধারা। চারপাশে মানবপ্রাচীর তৈরি করলেন
তারা। মাঝখানে তাদের মুসলিম বন্ধুরা ইফতার
খেলেন, নামাজ পড়লেন। টানা ৩০ দিন।
ওদেরও কারও জাত যায়নি। বরং ওদের একতায়
মোবারকের শাসনের ভিত নড়ে গেছিল।
রোজা চলাকালীন যেকোনদিন সন্ধ্যায় চলে
যান কমলাপুরের বৌদ্ধ মন্দিরে। দেখবেন
দরিদ্রদের মাঝে ইফতার বিতরণ করছেন মন্দিরের
ভিক্ষুরা। পুরো রমজান মাসজুড়েই তারা এটা করে
থাকেন।
.
আমাদের দেশে এমন একজনও পাওয়া যাবে না,
যে দুর্গাপূজার সময় হিন্দু কোন বন্ধু বা
সহকর্মীর বাড়িতে তৈরি কয়েক পদের মন্ডামিঠাই,
নাড়ু, লুচি, নিরামিষ খায়নি। কখনো তারা বাড়িতে
নেমন্তন্ন করে খাইয়েছে, কখনো ক্লাসে বা
অফিসে নিয়ে এসে সবাইকে খাইয়েছে।
প্রতিবছরই এটা হয়। এখানেও কারও জাত যায় না।
.
তাহরির স্কোয়্যারের খৃষ্টানদের মাঝে খৃষ্টানিটির
যে সৌন্দর্য, তা আপনি ডোনাল্ড ট্রাস্পের
খৃষ্টানিটিতে পাবেন না।
মন্দিরে জন্মেছে বলেই ছেলের নাম গণেশ
রাখার উদারতা হেফাজতের ইসলামে পাবেন না।
দরিদ্রদের মাঝে ইফতার বিতরণের মানবিকতা অং সান
সুকি'র বৌদ্ধধর্মে পাবেন না। যত্ন করে বাড়িতে
তৈরি করে আনা নাড়ু, লুচি, নিরামিষের স্বাদ নরেন্দ্র
মোদী'র হিন্দুধর্মে পাবেন না।
সমাজে ধর্ম জিনিসটা হল তরকারিতে লবণের মত।
অপরিহার্য, নিঃসন্দেহে।
তবে অতিরিক্ত হলেই মুশকিল।
copied by : আন্তজার্তিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ - ইসকন
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৫৩