ছবি: গুগল
প্রতিবেশী দেশ ভারতকে বিচিত্র সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের দেশ বলা হয়। এখানে এমনও সব ঐতিহ্য রয়েছে যার কথা বেশিরভাগ মানুষই জানেন না।বলছি তামিলনাড়ুর দক্ষিণাংশের এক বর্বরোচিত এক প্রথার কথা যা থালাইকুথাল বা তালাইকুতাল নামে পরিচিত। এমন এক প্রথা, যার সম্পর্কে এখনো অনেকেই জ্ঞাত নন।
তালাইকুতাল একটি প্রাচীন প্রথা যার মাধ্যমে পরিবারের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তিটিকে খুন করা হয়। জ্বী, ঠিক দেখেছেন। পরিবারের সদস্যরাই তাদের পরিবারের সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তিটির প্রাণনাশ করে। এই প্রথাকে তারা Mercy killing হিসেবে অভিহিত করে থাকে। অর্থাৎ,পরিবারের বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তি যখন আর কোন কাজ করার ক্ষমতা রাখেনা এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে, তখন পরিবারের সদস্যদের সিদ্ধান্তসাপেক্ষে তাকে খুন করা হয়। এই প্রথাটি পালনের সময় আত্মীয়স্বজন এবং অন্যান্য লোকজন উপস্থিত থাকে এবং পূর্বে এটিকে একটি উৎসবের মত পালন করা হত। এক জড়িপে দেখা গেছে, পরিবারের ছেলে, জামাতা, মেয়ে, ছেলের বৌ এরাই মূলত এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।
তালাইকুতাল করার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ দেখানো হয়ে থাকে। এগুলো হলো:
♦আর্থিক অসচ্ছলতা,
♦চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনে অপারগ হওয়া,
♦কষ্ট থেকে মুক্তি দেয়া,
♦বৃদ্ধদের সেবা করতে অপারগ হওয়া,
♦স্বেচ্ছামৃত্যু ইত্যাদি।
তালাইকুতাল করার জন্য কয়েকটি পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়ে থাকে। এরমধ্যে কয়েকটি পদ্ধতি নিচে তুলে ধরা হলো:
১. মাটি এবং পানি মিশিয়ে খাওয়ানো হয়। যার ফলে পেটের পীড়া হয় এবং রোগী মৃত্যুবরণ করে।
২. ভোরে ভিক্টিমকে তেল দিয়ে গোসল করানো হয় এবং সারাদিন ডাব/ নারিকেলের পানি খাওয়ানো হয়। এতে কিডনির কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় এবং ভিক্টিম ২-১ দিনের মধ্যে মৃত্যুবরণ করে।
৩. নাক চেপে ধরে দুধ খাওয়ানো হয়। এতে করে ভিক্টিম শ্বাসরোধে মৃত্যুবরণ করে।
৪. এছাড়া বর্তমানে শরীরে সিরিঞ্জের মাধ্যমে বিষপ্রয়োগ করেও মারা হয়।
তালাইকুতাল বর্তমানে নিষিদ্ধ করা হয়েছে কিন্তু এখনো গোপনে এ প্রথার প্রচলন রয়েছে এবং কেউ কেউ তালাইকুতালকে পেশা হিসেবেও বেছে নিয়েছে। তামিলনাড়ুর প্রশাসন এ প্রথা বিলুপ্ত করার জন্য সবধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৫৫