বাইরে যাবেন। নামছি বলে আপনার বন্ধু ১০ মিনিট পরে ফোন দিয়ে বলে দোস্ত আর পাঁচ মিনিট। প্লিজ প্লিজ প্লিজ। তাঁর ও ঠিক ১৫ মিনিট পরে যখন নিচে নামে আপনার মেজাজ নিশ্চয় ৪৪০ ভোল্টের মত। রাগ না দেখিয়ে রিক্সায় তুলে নেন। এবার মনের মত করে টুট টুট টাইপের গালি গুলো দিয়ে দেন। কোনটা বাদ পড়লে দেখবেন নির্লজ্জের মত বলবে দোস্ত ওমুক গালি টা বাদ পড়ছে। তোর মুখে শুনতে খুব ভাল লাগে। গালি টা দে না একবার। কতবড় বেহায়া চিন্তা করেন , গালি শুনতেও ভাল লাগে।
দোস্ত নতুন শার্ট কিনেছে। বন্ধুদেরকে না জানিয়েই। শার্টের ক্রয় মূল্যর উপর ১৫০% যোগ করে যে মূল্য হয় সেই সমপরিমান টাকা দিয়ে ট্রিট দিতে হবে নয়তো সেই শার্টের আয়ু সেই দিনই শেষ।
আপনার পায়ে ব্যাথা। বন্ধুদের ডাক দিন। লাইনে দাড় করিয়ে তাদের পশ্চাতদেশে লাথি দিয়ে পায়ের শক্তি পরীক্ষা করেন। দেখবেন পা আপনা আপনিই ভাল হয়ে গেছে।
আপনি অসুস্থ। কয়দিন ক্যাম্পাসে যান নি। হঠাত দেখবেন দল ধরে আপনার রুমে হাজির। কিছু লাথি , চড়, থাপ্পড় দেবার পর হসপিটালে নিয়ে যাবে। আপনাকে ভর্তি করিয়ে তারা আপনার এমন কিছু শুভাকাঙ্ক্ষীদের ফোন দিবে , যারা আপেল , কমলা নিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে চলে আসবে। কিছু ক্ষন পর দেখবেন আপনার সেবা বাদ দিয়ে তারা আপেল , কমলা খাওয়াই ব্যস্ত অথবা নার্সদের সাথে গল্প করছে।
চা খেতে দোকানে গেছেন। পাঁচ জনের দুধ চা খাবার মত টাকা নেই। চার কাপ লাল চা এর সাথে এক কাপ মিশিয়ে অনায়সে খেয়ে যাচ্ছেন। দোকানদার হা করে তাকিয়ে থাকে , এই বাঁদরদের প্রতিভা দেখে।
রাত দুইটার সময় ফোন দিয়ে যদি বলেন দোস্ত আমার অমুক হসপিটালে ভর্তি। রক্ত লাগবে। আপনার বন্ধু হয়ত বলবে , ২ মিনিটের মধ্য আসছি। দেখবেন ঠিক ২ মিনিটের আগেই এসে হাজির। ( এ আপনার সেই বন্ধু , যে পাঁচ মিনিটে নিচে নামার কথা বলে আধা ঘণ্টা পরে আসে।)
মেসে বোয়া আসে নি। বন্ধুরা মিলে আলু ভর্তা আর বেগুন ভাজি করেন। বিশ্রী রকমের ভর্তা আর ভাজি দিয়ে খেয়ে এমন ঢেকুর উঠান যেন , পাশের আন্টির বাসা থেকে প্রথম বারের মত গলা পর্যন্ত বিরিয়ানী খেয়ে এসেছেন।
রাত ১২টার সময় গরম পরটা আর ভাজা মাংস দিয়ে খেতে দিবে বলে নিয়ে গিয়ে হোস্টেলের সামনের চায়ের দোকান থেকে লাল চা ধরায় দেয়।
আপনার হৃদয় পুরীর খুব কাছে কোন মানুষের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। খবরটা শুধু বন্ধুদের কান পর্যন্ত পৌছাতে দিবেন। সেই মানুষটা সহ এসি বাসের টিকিট এবং বান্ডিল ধরা টাকা দিয়ে বলবে মিনিমাম ১৫ দিন যেন তোর কোন খোজ পাওয়া না যায়। ( এ আপনার সেই বন্ধু যার কাছে আপনি বিষ খাবার জন্য টাকা চেয়েও পান নি )।
বান্ধবীর বিয়ে। আনন্দে আটখান হয়ে , বললেন দোস্ত আমার কিন্তু ৫ টা রোষ্ট মিনিমাম লাগবেই। কুত্তা, একটা লাথি দিব। আমার চল্লিশা খেতে যাস। বলেই নরম সুরে বান্ধবী হয়ত বলে উঠবে , দেখ না দোস্ত বিয়েটা ভাঙ্গা যায় কি না। ৫ টা না তোকে ১০টা রোস্ট খাওয়াবো। দেখবেন সকালেই আপনার আম্মু ফোন দিয়ে বললে , ছেলে পক্ষ না করে দিয়েছে।
ডিপার্টমেন্ট থেকে পিকনিকে যাচ্ছে। আপনার কাছে হয়তো টাকা নেই। দেখবেন পিকনিকে যাবার দিন আয়োজকরা আপনাকে বারবার ফোন দিচ্ছে। আপনার টাকা আগেই জমা হয়ে গেছে।
কিছু কিছু গল্প আছে যেগুলো শুধু এই প্রজাতির সাথেই করা যায়। ( দোস্ত অমুককে দেখলা , যা ............... না। )
এই বিরল প্রজাতি ছিল বলেই হয়ত ট্রেন লাইনে চোখ বুজে হাটা যায়।
এরা না থাকলে হয়ত সময়ের গায়ে সোনালী রং টা ধরানো বেশ কষ্ট সাধ্য হয়ে যেত।
নাজমুল ইসলাম সাদ্দাম
আগস্ট ৬, ২০১৭।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৪৫