somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাপ্তাইয়ের লেকভিউ আইল্যান্ড

০১ লা মে, ২০১৭ দুপুর ১:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কাপ্তাই হৃদে নামলে প্রথমেই আমার যে কথাটা মনে হয় তা হল পবিত্রতা। ট্রলার নিয়ে কাপ্তাই হৃদে যারা ঘুরে বেড়িয়েছেন তারা আশা করছি আমার সাথে একমত হবে। হৃদের পানি যেমন স্বচ্ছ তেমনি আশে পাশের টিলাগুলো, কোন ময়লা আবর্জনা নাই, সুনসান নিরবতা। মাঝে মাঝে কিছু আদিবাসী বাড়িঘর ও তার ঘাটে বাধা দু'একটি নৌকো থাকে, তাও যেন প্রকৃতিরই একটা অংশ। ভীষণ উপভোগ্য একটা যায়গা। সেই পবিত্র প্রকৃতির একটা অংশ হয়ে দুয়েক দিন কাটিয়ে দেওয়ার কথা আগে চিন্তাও করা যেত না। নেটের কোথাও থেকে নাম্বার নিয়ে এক বন্ধু ফোন দিয়েছিল, ওরা যেতে আহ্বান করায় একদিন সময় করে চলে গেলাম। দেখলাম ফোন ধরা ঐ লোক আসলে একজন সেনা অফিসার, এবং ওনার বাড়ি আমাদের নরসিংদীর বেলাব থানায়। ঘটনা চক্রে ওনার শ্বশুর বাড়ি আর আমার শ্বশুর বাড়ি একই গ্রামে। আর ওনাদের আথিথেয়তায় সত্যিই আমাদেরকে খুব মুগ্ধ করেছে।

সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের পাহাড়ঘেরা কাপ্তাই ক্যাম্পটি কিছুদিন আগেও ছিল নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তায়। সেখানে ছিল না সাধারণ লোকজনের অবাধ বিচরণ। পার্বত্য শান্তিচুক্তির শর্ত অনুযায়ী ক্যাম্পটি তুলে ফেলা হয়েছে কিছুদিন আগে। কিন্তু লেকের পাড়ের ছোট ছোট টিলায় ক্যাম্প অফিসগুলো পরিত্যক্ত রাখা হয়নি। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সেখানে তৈরি করা হয়ছে দৃষ্টিনন্দন বাহারী কটেজ। নাগরিক কোলাহল ছেড়ে আপনি ইচ্ছে করলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যে কোন মুহূর্তে ঘুরে আসতে পারেন কাপ্তাই লেকের পাড়ের সদ্যবিলুপ্ত এ ক্যাম্প এলাকায়। কোন এক সময় এই এলাকার ছবি তোলাও নিষিদ্ধ ছিল, তখন ট্রলারের নিচে থেকে চুপি চুপি ছবি তুলেছিলাম। যেখানেই ছবি তোলা নিষেধ সেখানে ছবি তোলার জন্য আমার হাত নিষপিষ করে সব সময়। তো চলুন ঘুরে আসা যাক সেই লেকভিউ আইল্যান্ড থেকে।


(২) লেকভিউ আইল্যান্ডের অপর পাড়ে হিলটপ রিসোর্টের ঘাট থেকে বোটে চড়ে আসতে হয় এখানে, ইচ্ছে করলে কাপ্তাই জেটি ঘাট থেকেও এখানে আসা যাবে।


(৩) সেনা বাহিনী পরিচালিত জলকৌড়ি, জলকিন্নরী এমন বাহারি নামক নৌযান গুলো পর্যটকদের পৌছে দেবে লেকভিউ আইল্যান্ডে।


(৪) কাপ্তাই লেকের শান্ত নীল জলরাশি পার হয়ে যখন লেকভিউ আইল্যান্ডের দিকে বোট ছুটবে তখন নিজের অজান্তে মুখ দিয়ে বেড়িয়ে আসবে এমন দেশটি কোথাও খুঁজে.......


(৫) ট্রলার থেকে নেমে কয়েকটি ধাপ বেয়ে উঠে যেতে হয় আইল্যান্ডে।


(৬) রিসোর্টের কাঠের রেলিং দিয়ে ঘেরা বারান্দায় বসে কাপ্তাই লেকের সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায় চমৎকার ভাবে।


(৭) ইয়েলো জোন, এখানে রয়েছে এসি/নন এসি কটেজ, থাকা খাওয়ার সব রকম সুব্যবস্থা।


(৮/৯) "দাও ফিরিয়ে সেই অরণ্য" অরেঞ্জ জোনে যাওয়ার পথ। তৈরি করা হয়েছে কিডস কর্ণার, যাতে শিশুদের জন্য নানা ধরনের খেলনা রাখা আছে। আর বড়দের জন্য গাছের উপর তৈরি করা হয়েছে দুটি মাচা। একটি থেকে অন্য মাচায় যেতে তৈরি করা হয়েছে মিনি ঝুলন্ত সেতু। যার কিছু অংশ কাঁচ দিয়ে তৈরি। রয়েছে বড়শি দিয়ে লেকের জলে মাছ ধরারও সুব্যবস্থা।




(১০/১১) মিনি ঝুলন্ত সেতু। যার কিছু অংশ কাঁচ দিয়ে তৈরি, কাঁচের অংশটুকু পাড়ি দেওয়াটা খুবই ভয়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।




(১২) এই অংশে রয়েছে মোটামুটি বেশ কিছুটা প্রসস্ত খোলা জায়গা।


(১৩) বাচ্চাদের জন্য এমন কিছু বাদরামির জায়গা।


(১৪/১৫) যারা তাবুতে থাকার এ্যডভ্যাঞ্চার ভালোবাসেন তাদের জন্য রয়েছে এমন ব্যবস্থা, এবং অবশ্যই নিরাপদ।




(১৬) যাদের প্রেসার হাই কিংবা টক খেতে ভালোবাসেন টাদের জন্য রয়েছে এমন প্রাকৃতিক ব্যবস্থা।


(১৭) অরেঞ্জ জোনের শেষাংশে রয়েছে এমন একটা জিরো, হয়তো বুঝানো হয়েছে এটাই লেকভিউ আইল্যান্ডের জিরো পয়েন্ট।


(১৮) সুমধুর কিছু গান শুনে তাকিয়ে হয়তো খুজে পাবেন এমন সাম্পানওয়ালাদের। পাহাড়ি ভাষা হয়তো ঠিক বুঝা যাবেনা, তবে সুরে মুগ্ধ হতে হবে নিশ্চিৎ।


(১৯) ইচ্ছে হলে এখানে বসে দুয়েকটি কবিতা লিখেই ফেলা যায়।


(২০/২১) এমন চমৎকার বজরায় আয়েশি ব্যবস্থা বাংলাদেশে একমাত্র লেকভিউ আইল্যান্ডেই সম্ভব।




(২২/২৩) কাপ্তাই বাধের সুন্দর রূপের ছবি তোলা এতোদিন সম্ভব ছিল না, এখন ইচ্ছে হলে অনায়াসেই তা করা যায়।




(২৪) লেকভিউ আইল্যান্ডে থেকেই দেখা যায় ওপারের কাপ্তাই জেটিঘাট বাজার, ইচ্ছে হলে আদিবাসী সংখ্যাগরিষ্ঠ এ বাজারটি থেকে ওদের তৈরি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বা ফল-মুল কিনে নিতে পারেন সুলভ দামেই।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৫
২৬টি মন্তব্য ২৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দেশনায়ক তারেক রহমানকে সম্পৃক্ত করার নেপথ্যে  

লিখেছেন এম টি উল্লাহ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:০৮


আগেই বলেছি ওয়ান ইলেভেনের সরকার এবং আওয়ামীলীগের যবনায় জনাব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে পৌনে একশ মামলা হলেও মূলত অভিযোগ দুইটি। প্রথমত, ওই সময়ে এই প্রজন্মের নিকট উপস্থাপন করা হয়েছিল দেশনায়ক তারেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্পকে নিয়ে ব্লগারদের রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



**** এডমিন টিমের ব্লগারেরা আমাকে বরাবরের মতোই টার্গেট করে চলেছে, এভাবেই সামু চলবে। ****

ট্রাম্পের বিজয়ে ইউরোপের লোকজন আমেরিকানদের চেয়ে অনেক অনেক বেশী শংকিত; ট্রাম্প কিভাবে আচরণ করবে ইউরোপিয়ানরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্পের বিজয়, বিশ্ব রাজনীতি এবং বাংলাদেশ প্রসংগ

লিখেছেন সরলপাঠ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২১

ট্রাম্পের বিজয়ে বাংলাদেশে বা দেশের বাহিরে যে সব বাংলাদশীরা উল্লাস করছেন বা কমলার হেরে যাওয়াতে যারা মিম বানাচ্ছেন, তারাই বিগত দিনের বাংলাদেশের ফ্যাসিস্টের সহযোগী। তারা আশায় আছেন ট্রাম্প তাদের ফ্যাসিস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠেলার নাম বাবাজী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩১

এক গ্রামীণ কৃষক জমিদার বাড়িতে খাজনা দিতে যাবে। লোকটি ছিলো ঠোটকাটা যখন তখন বেফাস কথা বা অপ্রিয় বাক্য উচ্চারণ করে ক্যাচাল বাধিয়ে ফেলতে সে ছিলো মহাউস্তাদ। এ জন্য তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×