বর্ডারে ইন্ডিয়ান নপুংশক হায়েনাদের নির্মম বর্বরতার শিকার অসহায় ফেলানিকে নিয়ে কারোরই মাথা ব্যথা ছিল না;না দেশের কোনো রাজনৈতিক দল,না কোনো প্রিন্ট-ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া,না কোনো মানবাধিকার সংস্থা ৷ প্রতিবাদ,বিপ্লব,সচেতনতা বলতে যা হয়ছে বলতে গেলে পুরোটাই ব্লগসর্বস্ব,ব্লগের এই ভার্চুয়াল বিপ্লবকে মাঠে নামানোর ক্ষেত্রও অনেকটা তৈরী হয়ে গিয়েছিল ৷ ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে একটা মানবন্ধন সফল হওয়ায় সবারই প্রত্যাশা ছিল ঢাকার মানবন্ধন আরো বেশি সফল হবে, আরো বেশি বেশি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণে সমর্থ হবে ৷ এরই প্রেক্ষাপটে সম্ভবত প্রথম বারের মত দেশের বেশ কয়েকটি ব্লগ একই প্লাটফর্মে এসে দাড়ায় ৷ যারা এই বিপ্লবে প্রথম থেকেই জড়িত ছিলেন সবারই ইচ্ছা ছিল অন্তত এই ইস্যুতে যেন কোনো রাজনীতি না হয়,কেউ যেন ব্লগারদের সেন্টিমেন্টকে পুজি করে অবৈধ,অনাকাংখিত,অযাচিত সুবিধা ভোগ না করে ৷ বিশেষ করে জামাত এটাকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারে এই আশংকা কেউ কেউ করেছেন এবং সেটা নিয়ে কিছু পোস্টও এসছে ৷ যার সর্বশেষ সংযোজন ফিফার কাল রাতের পোস্ট,যা এই প্রতিবাদের ঝড়কে বহুলাংশেই দূর্বল করে দেয় ! মানবন্ধনে অংশ যারা নিয়েছেন তারা হয়ত বলবেন এটা সফল হয়ছে কিন্তু আমি এতে দ্বিমত পোষণ করব এই কারণে ভেবে দেখেন যদি ওই ধরনের কোনো পোস্ট না আসত তখনকার অবস্থাটা ৷ গত দুদিন একদমই ব্লগে সময় দিতে পারিনি তারপরেও কিছু কিছু ব্লগ পড়া হয় আর সেখান থেকেই আমি কিছু রহস্যের উত্তর খুঁজে পাই না
এক.ফিফা কেন ঠিক আগের রাতেই থলের বিড়ালটা বের করলেন ? তিনি এমন একটা সময়ে এই পোস্ট দিলেন যখন ব্লগারদের আর নতুন করে ঘুরে দাড়াবার বা চিন্তা করার সুযোগ ছিল না ৷ দুটা অপসন ছিল ব্লগারদের হাতে হয় জামাত সংস্লিষ্টতা মেনে নিয়েও মানবন্ধনে অংশগ্রহন অথবা জামাত সংস্লিষ্টতার কারণে এই মানবন্ধন বর্জন ৷ স্বভাবতই বেশির ভাগ ব্লগারই মনে হয় পরেরটাকেই বেছে নেন ৷ আমার প্রশ্ন কেন একদম শেষ বেলায় এসে এই পোস্ট ? যেই জিনিসগুলো দিয়ে আজকে তায়েফ আহমেদকে শিবির বলা হচ্ছে এমনতো নয় সেগুলো আগে ছিল না,কেন তাহলে আগে এই বিষয়গুলো সাধারণ ব্লগারদের সামনে তুলে ধরা হয়নি ? যেই হেলাল আহমেদকে নিয়ে ফিফার পোস্ট সেই তিনিই চট্টগ্রামের মানববন্ধনের আয়োজক ছিলেন যা নিয়ে অনেক পোস্ট এসেছে এমনি যতদুর মনে পরে কোনো একটা স্টিকি পোস্টের লেখক এর পুরো কৃতিত্বটা হেলাল আহমেদকেই দিয়েছিলেন,তাহলে তখন কেন ফিফা সবাইকে এই বিষয়ে সাবধান বা সচেতন করেননি ? ফিফার পোস্টের স্ক্রিনশটটাও ২০০৯ এর ডিসেম্বরের,তাহলে কেন ফিফা এদের সংস্লিষ্টতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে আগেই ব্লগারদের সচেতন করেননি ? তাহলে কি ধরে নিব ফিফাদের ভয় ছিল আগে থেকে সাবধান করা হলে ব্লগাররা আবার ঘুরে দাড়াতে পারে নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধমে,কিন্তু যদি একদম শেষ রাতে এসে কোমর ভেঙ্গে দেয়া হয় তাহলে আর ঘুরে দাড়ানোর ভয় থাকে না ! খুব সুচতুর ভাবে এমন একটি কাজ করা হলো যে কারণে এখন পরবর্তী কোনো আন্দোলনও সফলতার মুখ দেখবে না কারণ এক. নতুন করে কেউ কিছু করতে গেলেও সাধারণ ব্লগাররা দোটানার মধ্যে থাকবেন যদি আবার শেষ মুহুর্তে এমন কিছু হয় দুই.ব্লগারদের মধ্যে একটা অবিশ্বাসের ভিত্তি তৈরী করা হলো ফলশ্রুতিতে নতুন কিছুতে যেমন ব্লগারদের সাড়া মিলবে না তেমনি কেউ কোনো দায়িত্ব নিতেও এগিয়ে আসবে না আর(যেখানে ফিফা নিজেই সেই দায়িত্ব নিতে ইচ্ছুক নন!) ৷
দুই.অন্যরা লক্ষ্য করেছেন কিনা জানি না কাল রাতে শুধু ফিফার পোস্টই নয়,এই ধরনের পোস্টের মাধ্যমেও অনেক ব্লগারদের প্রত্তক্ষ্যভাবে ভয় দেখানো হয়েছিল ৷ বলা হয়েছিল ডিএমপি নাকি কোনো ভাবেই মানববন্ধনের জন্য কাউকে কাল প্রেসক্লাবে জমায়েত হতে দিবে না,এমনকি সেখানে কেউ কেউ নিজেদের ডিএমপি সোর্সের কথাও উল্লেখ করে বলেছিলেন ডিএমপি নাকি কাউকে জমায়েত হতে দিবে না ৷ আবার কেউ কেউ ভয় দেখালেন যে সেখানে নাকি ছাত্রলীগও হামলা করতে পারে ৷ কিন্তু আজ আমরা কি দেখলাম,সেখানে কোনো প্রকারের বাধাই দেয়া হয়নি ৷ তাহলে প্রশ্ন জাগে কার বা কাদের স্বার্থে,কি স্বার্থে এমন নিপাট মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে সাধারণ ব্লগারদের ভয় দেখানো হয়েছিল ?
অসহায় ফেলানিরা মারা যায়,কদাচিৎ তাদের নিয়ে প্রতিবাদ, বিপ্লব, আন্দোলন হয় কিন্তু সেই সেটাও কখনই স্বার্থান্বেষীদের নোংরা রাজনীতির ছোবল থেকে রক্ষা পায় না;কেউবা যেমন ফেলানিদের রক্তকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে চায় তেমনি কেউ কেউ সেই আন্দোলনকে নানা ছল-চাতুরির আশ্রয় নিয়ে নস্যাত করে শয়তানি দেতো হাসি হাসে !