মানুষের সাথে আকাশের সখ্যতা যুগ যুগান্তের। মন ভাল বা মন খারাপের দুপুর, বিকেল, সন্ধ্য কিংবা রাতে নিজের অজান্তেই সান্তনা খুঁজেছে সে আকাশের কাছে, আদি আকাশও বাড়িয়ে দিয়েছে মমতার হাত মানব সন্তানের দিকে......তার অবুঝ সন্তানেরা!
আদিম যুগে গুহাবাসি মানুষ পথ চলত আকাশের পথ নির্দেশনায়, সেই আদি অভিজ্ঞতাই কি সে জিন গত ভাবে বয়ে চলেছে বছরের পর বছর ধরে! নইলে এখনও কেন তার সেই বিস্ময় অথবা শূণ্য নির্লিপ্ত চোখ চলে যায় আকাশে?
এখানে আকাশ নীল-নীলাভ আকাশ জুড়ে সজিনার ফুল
ফুটে থাকে হিম শাদা-রং তার আশ্বিনের আলোর মতন!
আকন্দ ফুলের কালো ভীমরূল এইখানে
করে গুঞ্জরন!
রৌদ্রের দুপুর ভ'রে- বার বার রোদ তার সুচিক্কন চুল
কাঁঠাল জামের বুকে নিঙড়ায়; - ধে বিলে চঞ্চল আঙুল
এখানে আকাশ নীল
আকাশ ছড়ায়ে আছে নীল হ'য়ে আকাশে আকাশে
জীবনের রং তবু ফলানো কি হয়
এই সব ছুঁয়ে ছেনে?
সে এক বিস্ময়! নিজর্ন স্বাক্ষর
কেন মিছে নক্ষত্রেরা আসে আর?
কেন মিছে জেগে ওঠে নীলাভ আকাশ?
কেন চাঁদ ভেসে ওঠে:সোনার ময়ূরপঙ্খী অশ্বথ্থের শাখার পিছনে?
কেন ধুলো সোঁদা গন্ধে ভরে ওঠে শিশিরের চুমু খেয়ে-
গুচ্ছে গুচ্ছে ফুটে ওঠে কাশ। কেন মিছে নক্ষত্রেরা
বেলা বয়ে যায়,
গোধুলির মেঘ সীমানায়;
ধুম্র মৌন সাঁঝে
নিত্য নব দিবসের মৃত্যঘন্টা বাজে!!
পাখিদের ডানা-পালকের থেকে বিকেলের আলো
নিভে গেলে রাত্রির নক্ষত্রেরা হৃদয়ের আচ্ছন্নতা নেড়ে
বাতাসের মুক্ত প্রবাহের মতো, যেন কোন ঘুমন্তের মনে
কথা কাজ চিন্তা স্বপ্ন অকুতোভয়তা
নিজের স্বদেশে এলো! এইখানে সূর্যের
আমরা বুঝেছি যারা পথ ঘাট মাঠের ভিতর
আরো এক আলো আছে, দেহে তার বিকালবেলার ধুসরতা
চোখের - দেখার হাত ছেড়ে দিয়ে সেই আলো হয়ে আছে স্থির;
পৃথিবীর কঙ্কাবতী ভেসে গিয়ে সেইখানে পায় ম্লান ধুপের শরীর মৃত্যুর আগে
সন্ধ্যা হয়-চারিদিকে শান্ত নীরবতা
খড় মুখে নিয়ে এক শালিখ যেতেছে উড়ে চুপ!
...
পৃথিবীর সব ঘুঘু ডাকিতেছে হিজলের বনে,
পৃথিবীর সব রূপ লেগে আছে ঘাসে;
পৃথিবীর সব প্রেম আমাদের দু'জনার মনে,
আকাশ ছড়ায়ে আছে শান্তি হ'য়ে আকাশে - আকাশে!
সন্ধ্যা হয়-চারিদিকে শান্ত নীরবতা
বরফের মতো চাঁদ ঢালিছে ফোয়ারা
ধানক্ষেতে মাঠে,
জমিছে ধোয়াটে
ধারালো কুয়াশা।
ঘরে গেছে চাষা
ঝিমাছে এ পৃথিবী
তবু আমি পেয়েছি যে টের
কার যেন দু'টো চোখে নাই এ
ঘুমের কোন সাধ! পেচাঁ
জানো না কি চাঁদ
নীল কস্তুরী আভার চাঁদ,
জানো না কি নিশীথ,
আমি অনেক দিন-অনেক অনেক দিন
অন্ধকারে সারাৎসারে অনন্ত মৃত্যুর মতও মিশে থেকে
হঠাৎ ভোরের আলোর মূর্খ উচ্ছ্বাসে নিজেকে পৃথিবীর জীব ব'লে
বুঝতে পেরেছি আবার! অন্ধকার
মেঠো চাঁদ-কাস্তের মতো বাঁকা চোখা-
চেয়ে আছে এমনি সে তাকয়েছে কত রাত-নাই লেখা-জোখা
মেঠো চাঁদ বলে
আকাশের তলে
ক্ষেতে ক্ষেতে লাঙ্গলের ধার
মুছে গেছে -ফসল কাটার
সময় আসিছে গেছে-চ'লে গেছে কবে
শস্য ফলিয়া গেছে-তুমি কেন তবে
রয়েছো দাঁড়ায়ে একা একা? মাঠের গল্প
এমনই করেই আকাশ দেখতে দেখতে আমার ১০ নম্বরী চাইনিজ ক্যামেরায়, ১৩ নম্বরী হাতে, একদম ১ নম্বরী মুগ্ধতা নিয়ে আমিও তুলে ফেলসি ছবি গুলো!
সুন্দর কিছু আসলে একা একা দেখতে ভাল লাগে না, ইচ্ছে হয় কাউকে ডেকে বলতে; 'দেখো দেখো কি সুন্দর'!
যদিও সৈন্দর্য্যের কিছু আমি এখানে ধরতে পারিনি- - আসলে আমি মোটামুটি অশিক্ষিত ছবিতোলক, শুদু শাটার টিপতেই জানি আর কিছু না।
নিজ গুণে ক্ষমাঘেন্না করে দিয়েন

কবিতা: জীবনানন্দ দাশ
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১২ রাত ১২:১৩