প্রতিদিনকার মতো অফিস শেষে বাসায় ফিরলাম। আজকে সবকিছু কেমন যেন অগোছালো লাগছে।বাসার গেটে দাড়োয়ানও কেমন চোখে যেন সালাম দিলো। বাসায় ঢুকেও অস্বস্তি লাগছে।কিন্তু কেন বুঝতে পারছি না।দুই রুমের ফ্ল্যাটে একাই থাকি আমি।রুমে কারো থাকার সম্ভাবনাও নেই। কিন্তু কেমন যেন একটা ভয় ভয় কাজ করছে।চা খেতে ইচ্ছে করছে খুব।আমি আবার চা বানাতে খুব দক্ষ। আসলে একা থাকতে থাকতে চা বানাতে শিখে গেছি। চায়ের কাপ হাতে নিয়ে আর সিগারেটের প্যাকেট টা নিয়ে বারান্দায় গিয়ে বসলাম। কেমন যেন অস্বস্তি লাগছিল বাসায় ঢুকার পর থেকেই। চায়ের কাপে চুমুক দিতেই ছোট বেলায় মায়ের কাছে শোনা পরীর গল্প মনে পড়ে গেল।পরীর চিন্তাই কেমন যেন মাথায় ঘুরতে লাগলো।পরী যাকে পছন্দ করে তাকে নাকি উঠিয়ে নিয়ে যায়। নিজের অজান্তেই হাসলাম কথাটা মনে পড়ায়। কিন্তু আজ হঠাৎ এসব মনে পড়ছে কেন আমার? কোনো উত্তর পেলাম না। অনেকক্ষণ যাবৎ একটা সুগন্ধ পাচ্ছি,কিন্তু এটার থেকেও ঝিঝি পোকাড় ডাক আমার কাছে বেশি খটকা লাগলো।এই শহরে ঝিঝি পোকা আসবে কোথা থেকে? এসব পাত্তা না দিয়ে বারান্দা থেকে রুমে আসলাম।
'কে বসে আছে বারান্দায়?' জিজ্ঞেস করলাম।উত্তর দিলো না মেয়েটা। নীল শাড়ি পড়ে আছে মেয়েটা।আবার জিজ্ঞেস করলাম 'কে ওখানে?' এবারও কোনো উত্তর নেই।বিছানা থেকে নেমে এগোলাম।পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম মেয়েটার। 'আজকের আকাশটা একদম পরিষ্কার,তাই না?' মেয়েটা প্রশ্ন করলো।মেয়েটার প্রশ্ন শুনে শুধু বললাম 'হুম'। মেয়েটা কে?এখানে কীভাবে আসলো? কিছুই আর জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হলো না।মেয়েটা নিজে থেকেই নাম বললো 'ইচ্ছে'।মেয়েটার হাসিতে অদ্ভুত একটা মায়া আছে। 'বসি?' জিজ্ঞেস করলাম মেয়েটাকে। 'তোমার বাসা তুমি বসবে,আবার জিজ্ঞেস করছো কেন?' 'আচ্ছা'।
আযানের শব্দে ঘুম ভাঙলো। সুগন্ধা টা এখনো রয়ে গেছে।বুঝলাম এতক্ষণ স্বপ্নে দেখছিলাম।সিগারেট জ্বালিয়ে বারান্দায় গেলাম।মেয়েটা যে জায়গায় বসে ছিল ঠিক সেখানে এক টুকরা নীল কাপড় পড়ে আছে। ঘুমের ঘোরে চোখে ভুল দেখছি ভাবলাম।এগিয়ে গিয়ে হাত দিলাম কাগজটার উপর।না! কাগজটা সত্যি ওখানে পড়ে আছে।তারমানে মেয়েটা সত্যি ছিল? সত্যি মেয়েটার সাথে আমি কথা বলেছি? হয়তো! হয়তো না!
কিন্তু ও কি আসলেই কোনো মেয়ে ছিল? নাকি পরী?
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৪৯