somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্য দৃষ্টি

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বার্মার রাখাইন (আরকান) রাজ্যের মগদের নিষ্ঠুরতা ইতিহাস স্বীকৃত । এক সময়ের সেই মগ ভূমি দস্যুরাই আজকের নব্য রাখাইন বা মগ। ইতিহাস পর্যালোচনা করে জানাযায় যে, ১৬২০ সালে ঢাকায় ব্যাপক হামলা করেছিল এই মগ দস্যুরা। ১৬২৫ সালে মগদের রাজা আরাকান রাজ শ্রী সুধর্ম মোঘল রাজধানী ঢাকা আক্রমন করে। তাদের কাছে পরাজিত হয়ে তখনকার শাসক সুবেদার আমজাদ খান পালিয়ে যান এবং মগেরা ঢাকায় অবস্থান করে ব্যাপক ধ্বংষজ্ঞ চালিয়ে আরাকানে ফিরে যান। বর্তমানে ঢাকার মগবাজার নামটি মগদের আগ্রষনের একটি জ্বলন্ত সাক্ষী। এ নিষ্ঠুর দস্যু মগরা যেসব এলাকায় হামলা চালাতো সেসব এলাকার সাধারণ ঘটনাগুলো ছিল ব্যাপক মাত্রায় ধর্ষণ,যুবকদের বন্দী করে নিয়ে যাওয়া এবং নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা। তাদের নিষ্ঠরুতা এতই নির্মম ছিল যে, তাদের হাতে যেসব হতভাগা বাংগালী যুবক বন্ধী হত তাদের হাতের তালু ছিদ্র করে বেত ঢুকিয়ে বাঁধা হত এর ফলে তারা পালাতে পারত না। সে সময় এ মগ দস্যুরা বাংলার উপকুলীয় একটি বিশাল এলাকাকে জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছিল। যাহা এখন তারা রোহিংগাদের সাথে করছে । কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য মগদের এ ভংয়কর নৃশংস নিষ্ঠুরতার বিষয়টি ইতিহাস তথা আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় সে ভাবে আলোচিত বা প্রচারিত হয়নি। বর্তমান বার্মা বাংলাদেশের চাইতেও ৫ গুন বড় হলেও তারা কিন্তু সে ভাবে কোন ক্ষেত্রেই বিশ্ব দরবারে অগ্রসর হতে পারেনি। দীর্ঘদিন সামরিক শ্বৈর শাসনের অধীনে থাকায় তারা মূলত বহিঃবিশ্ব হতে ছিটকে পরেছে। বর্তমানে যতসামান্য হলেও গনতন্ত্রের পথে ধীরে ধীরে এগুচ্ছে । বিশ্ব ভূরাজনৈতিক কারণে এ অঞ্চলটি এশিয়ান পরাশক্তি চীনের খুব পছন্দ । চীনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় বার্মার সেনাবাহিনী যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। তারা বর্তমানে নিষিদ্ধ দেশ উত্তর কোরিয়ার সহযোগিতায় পারমানবিক ক্ষমতা অর্জনের চেষ্টা করছে। রাখাইন রাজ্যটি মূল মায়ানমার ভূখন্ড হতে পৃথক । তারা রাখাইন রাজ্যে পারমানবিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যে ভূমি অধিগ্রহন করা শুরু করেছে । রাখাইনে যে সব মুসলিম বাস করে তারা রোহিংগা হিসেবে পরিচিত। এক সময় এ রাখাইন রাজ্য ছিল সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং রোহিংগারা দীর্ঘ কয়েকশত শতাব্দি পর্যন্ত স্বাধীন ভাবে এখানে বসবাস করে আসছে। বেনিয়া ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য রোহিংগারা তখন মূল বার্মার নেতাদের সাথে কাধে কাধে মিলিয়ে স্বাধীনতা অর্জনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। বতর্মান মায়ারমায় ১৩৫টি বিভিন্ন জাতী ও উপ-জাতি রয়েছে । ১৯৪৮ সালে বেনিয়া বিট্রিশরা চলে যাওয়ার সময় রোহিংগাদের নাম তালিকায় উল্লেখ করেন নাই। যার কারণে মায়ানমার সরকার রোহিংগাদের তাদের নাগরিক হিসেবেই স্বীকৃতি দেয়নি। বেনিয়া ব্রিটিশরা ঠিকই এ অঞ্চল হতে চলে গিয়াছে কিন্তু রেখে গিয়াছে তাদের শয়তানি ফর্মূলা। যা শত শত বছর পরেও এ অঞ্চলে আঞ্চলিক সমস্যার সৃষ্টি করে চলছে। যেহেতু মায়ানমার সরকার রোহিংগাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃত দেয়নি সেহেতু রোহিংগারা মৌলিক কোন অধিকারই ভোগ করতে পারেনা। তাদের চলাফেলা নিয়ন্ত্রিত। তার সেখানে খুবই মানবেতর জীবন যাপন করে। যখনই প্রয়োজন মনে করে তথাকার সেনাবাহিনী তাদেরকের কায়িক পরিশ্রম করতে বাধ্য করে এবং গিনিপিকের মত তাদের উপর বিভিন্ন নিপীড়ন ও অত্যাচার চালায় যা বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়ে থাকে। দীর্ঘদিন নির্যাতন,নিপীড়ন ও সুযোগ সুবিধার অভাবে রোহিংগার শিক্ষা লাভের কোন সুযোগ পায় নাই। তাদের প্রায় ৮০% লোকই নিরক্ষর,যার কারণে তাদের মধ্যে নেতৃত্ব গড়ে উঠেনি। বর্তমানে মূল রাখাইনে কি ঘটছে তার প্রকৃত তথ্য বিশ্ব মিডিয়ার কাছে নেই। কারণ তারা বিশ্ব মিডিয়ার কাউকে এ পর্যন্ত রাখাইনে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। দলে দলে যেসব রোহিংগা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছে খেয়াল করলে দেখাযাবে যে তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর আধিক্য বেশী। পুরুষের সংখ্যা নেই। বিভিন্ন সোসাল মিডিয়া ঘাটলে দেখাযায় যে, রোহিংগারা প্রতিরোধ যুদ্ধ করার জন্য দীর্ঘমেয়াদী প্রস্তুতি নিচ্ছে,যার স্বপক্ষে কোন দালিলিক প্রমানাদি নেই। রাখাইনরা বা মগরা ইতিহাস স্বীকৃত ভাবে নিষ্ঠুর প্রকৃতির তাদের দ¦ারা সবই সম্ভব । তারা বিভিন্ন সময় চোরা গোপ্তা হালমা করে তাদের নিজেদের নিরাপত্তা চৌকি নিজেরাই উড়িয়ে দিয়ে দোষ দিচ্ছে নিরপরাধ নিরস্ত্র রোহিংগাদের উপর। যার পর পরই শুরু হয় তাদের উপর নিষ্ঠুর অত্যচার । এর অন্যতম কারন হল রোহিংগা শূণ্য দেশ গড়া এবং এ ফাঁকে রোহিংগাদের বাংলাদেশের দিকে পুশইন করে তাদের শীমান্তে কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে দেয়া। বর্তামানে মায়ানমারের উদ্দেশ্য খুবই ভংয়কর এবং হিং¯্র । তারা কক্সবাজার, চট্রগ্রাম এবং ফেনীকে তাদের আদী ভূমি হিসেবে দাবী করে। বর্তমান রাখাইন রাজ্যটি বার্মার একটি প্রদেশ পশ্চিম উপকুলে অবস্থিত। এর উত্তরে চীন,পূর্বে ম্যাগওয়ে-ব্যাগো এবং আয়েইয়ারওয়াদি অঞ্চল, পশ্চিমে বঙ্গপসাগর,উত্তর-পশ্চিমে বাংলাদেশের চট্রগ্রাম বিভাগ অবস্থিত। আরাকান পর্বত যার চূড়া ভিক্টোরিয়া শৃঙ্গের উচ্চতা ১০,০৪৯ ফুট। এ পর্বতটি রাখাইনকে মূল বার্মা হতে পৃথক করে রেখেছে। এত বড় বেষ্টনীর মধ্যে থেকে রাখাইনের রোহিংগারা যুদ্ধ করার জন্য অস্ত্র কোথায় পাবে। যেহেতে তাদের পাশে কোন নির্ভরযোগ্য দেশ নেই,নেতৃত্ব নেই,শিক্ষা নেই,ট্রেনিং নেই সেহেতু তারা রাখাইনের নিরাপত্তা চৌকিতে সন্ত্রাসী হামলা পরিচালনা করতে পারে এটা অভিশ্বাস্য। এটা হল নিষ্ঠুর রাইখান মগদের কাজ। বার্মা সেনাবাহিনী রোহিংগাদেরকে সন্ত্রাসী আঙ্খাং দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার কাজটি খুবই সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে পারছে । আর এ ফাকে রোহিংগাদেরকে আমাদের দেশে পুশইন করে দীর্ঘমেয়াদী উদ্ধাস্ত সৃষ্টি করে আমাদের সাথে একটি সংঘাত সৃষ্টি করার পায়তারা করছে। ইতোমধ্যেই রোহিংগা পুরুষদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহারের কার্যক্রম তারা চালিয়ে যাচ্ছে এবং মহিলা ও শিশুদেরকে বসতবিটা হতে উচ্ছেদ করছে । আর তাদের মিডিয়ায় প্রচার করছে রোহিংগা পুরুষেরা সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালনার জন্য তাদের সংঘঠনে যোগদান করছে। কাজেই আমাদেরকে অত্যান্ত সর্তকভাবে বিষয়টি হ্যান্ডেল করতে হবে। আমাদের নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের সাথে দীর্ঘমেয়াদি আলোচনা করে রোহিংগা ইস্যু ও মায়ানমারের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। কারণ এ নিষ্ঠুর মগ জাতীকে বিশ্বাস করা কোন ভাবেই উচিত হবে না।


সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৭
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×