বর্তমান গ্লোবাল বিশ্বে উন্নয়নের প্রধান ও এক মাত্র মাধ্যম হলো দ্রুত যোগাযোগ । আর এ যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নতি করার জন্য সেই আদীকাল হতে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছে মানুষ । ইতোমধ্যে বিশ্বে দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থায় যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। এ দ্রুত যোগাযোগের কারনে সারা বিশ্ব একটি বিশ্ব গ্রাম হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করছে। কিন্তু পিছিয়ে পড়েছি আমরা । আমাদের অগ্রযাত্রার প্রধান অন্তরায় হয়ে দাড়িয়েছে ট্রাফিক বিশৃঙ্খলা । এ বিশৃঙ্খলা হতে উত্তোরণের জন্য নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছে এর সাথে সংশ্লিষ্টরা কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে যতদ্রুত উন্নতি হয় এক্ষেতে আশানুরুপ কিছুই হচ্ছেনা। এর কারণ দেশের আপমর জনসাধারণের ট্রাফিক জ্ঞান না থাকা বা ট্রাফিক আইন না মানা । এ খাতটি যতদ্রুত উন্নতি হবে ততো দ্রুত আমাদের জাতীয় অগ্রযাত্রা বৃদ্ধি পাবে। তাই ট্রাফিক শৃঙ্খলা সংক্রান্ত একটি সাবজেক্ট প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমে অন্তভূক্তির জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করছি ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক পূর্ব বিভাগ হতে প্রচারিতব্য বুকলেট হতে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কতিপয় নির্দেশনা সকলের অবগতির জন্য তুলে ধরছি।
ট্রাফিক আইন মানি এবং যানযটমুক্ত বাংলাদেশ গড়ি
---------------------------------------------------
জনসাধারণের প্রতি অনুরোধ ;
১। রাস্তা পারাপারে ফুট-ওভারব্রিজ/আন্ডারপাস/জেব্রাক্রসিং ব্যবহার করুন, যত্রতত্র রাস্তা পারাপার দন্ডনীয় অপরাধ।
২। রাস্তা পারাপারের সময় হেডফোন ব্যবহার এবং মোবাইলে কথা বলবেন না।
৩। পায়ে হেঁটে চলাচলের সময় ফুটপাত ব্যবহার করুন।
৪। চলন্ত গাড়ীতে উঠা/নামা থেকে বিরত থাকুন।
৫। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ীতে ভ্রমন করবেন না। বাসের ছাদে বাম্পারে,পা-ধানিতে ভ্রমন করা থেকে বিরত থাকুন।
৬। বাস-বে/নির্দিষ্ট স্থান ব্যতীত গাড়ীতে উঠা-নামা থেকে বিরত থাকুন।
৭। যাত্রীরা কখনই চালককে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাতে উদ্ধুদ্ধ করবেন না।
৮। বাস-বে/নির্ধারিত স্থা ব্যতীত রাস্তায় দাঁড়িয়ে যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করা থেকে বিরত থাকুন।
৯। রেলওয়ে ক্রসিং/লেভেল ক্রসিং’এ লালবাতি জ্বলন্ত অবস্থায় রাস্তা পারাপার হওয়া থেখে বিরত থাকুন। ট্রোন চলে যাবার পর রাস্তা পার কোন।
১০। শারীরিক প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধ, শিশু ও নারীদেরকে যানবাহনে আসন ব্যবহারে অগ্রাধিকার দিন।
১১। ভ্রমনকালীন সময়ে অপরিচিত লোকের দেওয়া কোন কিছু খাবেন না।
১২। পাবলিক পরিবহরে ধুমপান করা থেখে বিরত থাকুন।
১৩। রাস্তায়/ফুটপাতে নির্মান সামগ্রী/দোকানের মালামাল/দোকানের সাইনবোর্ড
রাখবেন না।
অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রতি
------------------------------
১। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদেরকে ট্রাফিক নিয়ম-কানুন সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান দিন।
২। ফুটপাত দিয়ে চলাচল করার জন্য উদ্ধুদ্ধ করুন।
৩। শিশুদের জানতে হবে নিরাপত্তাই প্রথম।
৪। শিশুদের ট্রাফিক আইন ও সংকেত সমূহের সাথে পরিচিত করুন।
গাড়ী চালকদের প্রতি
---------------------
১। গাড়ি চালানোর পূর্বে গাড়ীর সমস্ত কাগজপত্র ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করে নিন এবং হালনাগাত কাগজপত্র সাথে রাখুন।
২। অযথা হর্ণ বাজানো থেকে বিরত থাকনু।
৩। সিট বেল্ট বেঁধে গাড়ী চালান।
৪। গাড়ী চালানোর সময় গতিসীমা মেনে চলুন।
৫। ঘন ঘন লেন পরিবর্তন করা থেকে বিরত থাকুন।
৬। অযথা ওভারটেকিং করা থেকে বিরত থাকুন এবং সতর্কতার সাথে ওভারটেকিং করুন।
৭। স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের লগোসহ স্থায়ী স্টিকার ব্যতীত অলগা/অস্থায়ী যে কোন ধরনের স্টীকার ব্যবহার হতে বিরত থাকুন।
৮। দূর্ঘনা প্রতিরোধে গাড়ির যন্ত্রাংশ চেক করে নিন।
৯। উল্টো পথে যে কোন যান জালানো হতে বিরত থাকুন।
১০। গাড়ি চলাচলের নির্ধারিত পথে গাড়ি পার্ক করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেন না।
১১। ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করবেন না।
১২। ক্লান্ত/অসুস্থ/মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানো থেকে বিরত থাকুন।
১৩। সর্বদা বাম লেন চালু রাখুন।
১৪। ইন্টারসেকশন এবং রাস্তায় যাত্রী উঠানো/নামানো হতে বিরত থাকুন।
১৫। ট্রাফিক আইন ও সিগন্যাল জানুন এবং মেনে চলুন।
১৬। বাস-বে/নির্দিস্ট স্থান ব্যতীত অত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করবেন না।
১৭। গাড়ি থামানোর ক্ষেত্রে সর্বদা রাস্তার বাম ঘেঁষে থামাবেন।
১৮। ডানে বামে যাওয়ার ক্ষেত্রে ইন্ডিকেটর ব্যবহার করুন।
মটর সাইকেল চালকদের প্রতি
------------------------------
১। মটর সাইকেল চালানোর পূর্বে গাড়ির সমস্ত কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করে নিন এবং হালনাগাদ কাগজপত্র সাথে রাখুন।
২। মটর সাইকেলে দুইজনের বেশী আরোহন করবেন না।
৩। চালক এবং আরোহী উভয়ই হেলমেট ব্যবহার করুন।
৪। ফুটপাতে মটর সাইকেল চালাবেন না।
৫। উল্টো পথে মটর সাইকেল চালানো থেকে বিরত থাকুন।
৬। গাড়ি চলাচলের নির্ধারিত স্থানে মটর সাইকেল পার্ক করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেন না।
৭। ট্রাফিক সিগনাল অমান্য করে মটর সাইকেল চালাবেন না।
মালিকদের প্রতি
------------------
১। চালক নিয়োগের পূর্বে চালকের দ্ক্ষতা , বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ঠিকানা যাচাই করে নিন।
২। চালকের মেকানিক্যাল ও ট্রাফিক আইন সম্পর্কে জ্ঞান যাচাই করে নিন।
৩। চালক যাতে অসুস্থ/মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানো থেকে বিরত থাকে সে বিষয়টি নিশ্চিত করুন।
৪। চালকের পর্যাপ্ত বিশ্রাম এর বিষয়টি গুরুত্ব দিন।
৫। লং রুটের বাস/ট্রাক/কার্ভাড ভ্যান এ দুজন চালকের ব্যবস্থা রাখুন।
৬। আপনার গাড়ির হালনাগাদ কাগজপত্র গাড়িতে সংরক্ষন করুন।
৭। গাড়িতে হাইড্রোলিক, হর্ণ, হুটার, বিকন লাইট সংযোজন/ব্যবহার (প্রযোজ্য ক্ষেত্র ব্যতীত) করা থেকে বিরত থাকুন।
৮। মাইক্রোবাসের কাঁচে কৃত্রিম আবরণ (টিনসেড পেপার) লাগাবেন না।
প্রতিদিন দুর্ঘনার কারনে ঝরে পড়ছে অজস্র মূল্যবান প্রান ও সম্পদ-আসুন আমরা ট্রাফিক শৃঙ্খলা মেনে চলি এবং নিরাপদ দেশ গড়ি ও জাতীয় অগ্রযাত্রায় অগ্রনী ভূমিকা পালন করি।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:১৫