পুলিশ রাষ্ট্রের অভ্যান্তরিন আইনশৃঙ্খলা দায়িত্ব পালনে অংগিকারবন্ধ । কিন্তু আমাদের দেশের সম্মানীত জনসাধারণের আইন সম্পর্কে ভাল ধারনা না থাকার কারণে পুলিশ সম্পর্কে খুবই নির্মন মন্তব্য করে থাকেন। অথচ রাষ্ট্র এবং সংবিধান আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে পুলিশকে ব্যাপক ক্ষমতা প্রদান করেছেন । আসুন জেনে নেয়া যাক পুলিশ কোন কোন আইনের কি কি ধারা মোতাবেক তাদের কার্যক্রম সম্পন্ন করেন ।
১। পুলিশ যুগপৎ রাষ্ট্রীয় এবং সরকারী কর্মচারী : দঃ বিঃ ১৪ ও ২১ ধারা ।
২। আইনি সুরক্ষার অধিকার : ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৩২, ১৯৭, দঃ বিঃ ৭৮,৭৯, ১০৬ এবং পুলিশ আইনের ৪২, ৪৩ ধারা।
৩। জান মাল রক্ষার জন্য মৃত্যুও ঘটাইতে পারে : দঃ বিঃ ১০০, ১০৩ ধারা।
৪। অপরাধ দমনে জনসাধারণ পুলিশকে সাহায্য করতে বাধ্য : কাঃ বিঃ ৪২, ৪৫ ধারা ।
৫। পুলিশের কাজে বাঁধা বা আঘাত দিলে দঃ বিঃ ১৮৬, ৩৩২, ৩৩৩, ৩৩৫, বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার কাঃ বিঃ ৫৪ (৫) ধারা।
৬। গণউপদ্রব, নোংরামি ইত্যাদি বন্দের ব্যবস্থা নিতে ক্ষমতাবান : কাঃ বিঃ ১৩৩, ১৪৪, ১৪৫ ধারা।
৭। গ্রেফতারকালে যে কোন স্থানে প্রবেশ ইত্যাদি এমনকি মৃতু্য পর্যন্ত ঘটাইতে পারে : কাঃ বিঃ ৪৫-৫৩ ধারা।
৮। গ্রেফতারের ক্ষমতাঃ কাঃ বিঃ ৫৪, ৫৫, ৫৭, ১২৮, ১৫১,৪০১ এবং পিআরবি ৩১৬ নিয়ম।
৯। আটক রাখার ক্ষমত : কাঃ বিঃ ৬১, ১৬৭ ধারা।
১০। জামিন দিতে পারে : কাঃ বিঃ ৬৩, ১৬৯, ৪৯৬,৪৯৭ ধারা।
১১। সমন দিতে পারে : কাঃ বিঃ ৯৪, ১৬০, ১৭৫ ধারা।
১১(ক) জিজ্ঞাসাবাদ, বক্তব্য এবং মৃতু্কালীন জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার অধিকারী : কাঃ বিঃ ১৬১, পিআরবি ২৬৫, ২৬৬ নিয়ম।
১২। বিনা পরোয়ানায় স্থান তল্লাশীর ক্ষমত : কাঃ বিঃ ১০২, ১০৩, ১৫৩, ১৬৫, পিআরবি নিয়ম ২৮০, পুলিশ আইনের ২৩ ধারা।
১৩। সভা-সমাবেশ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা : পুলিশ আইনের ৩০, ৩০-এ, ৩১, ৩২, কাঃ বিঃ ১২৭-১৩২, পিআরবি নিয়ম ১৩১, ১৩৭-১৪২,
১৫৩-১৫৬, ১৫৮ ।
১৪। পুলিশ বিরোধপূর্ণ ভূমির রিসিভার নিযুক্ত হইতে পারে : কাঃ বিঃ ১৪৬ ধারা।
১৫। পুলিশী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া মামলা করা যাবে না : কাঃ বিঃ ১৩২, ১৯৭, পিআরবি-৯৮ নিয়ম।
১৬। পুলিশ অর্থের বন্ড বা অর্থ বন্ড নিতে পারেন : কাঃ বিঃ ৪১৯, ৫১৩ ধারা।
১৭। কোর্টে মামলা পরিচালনা করতে পারেন : কাঃ বিঃ ৪৯২, ৪৯৫, পিআরবি নিয়ম ৪১৩ ।
১৮। চোরাই, সন্ধিগ্ধ, পরিত্যক্ত, বেওয়ারিশ ইত্যাদি মালামাল বিলি বন্দোবস্ত করতে পারেন : কাঃ বিঃ ৫২৩,-৫২৩, পুলিশ আইন ২৫,
পিআরবি নিয়ম ২৫১, ৩৭৯।
১৯। পুলিশের পিআরবি দেশে প্রচলিত অন্যান্য আইনের মতো সমান মর্যাদাসম্পন্ন ও পালনীয় (বাংলাদেশ সংবিধান অনুচেছদ ১৫২,
২১)।
২০। আংশিক ভাবে বা পূর্ণ মামলা প্রত্যাহার করার অধিকারী : কাঃ বিঃ ৪৯৪, ৪৯৫(২), পিআরবি ৬৬ নিয়ম।
২১। দেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতির দরবারে পরিচিত হওয়ার অধিকারী : পিআরবি ৮২, ৮৪ নিয়ম।
২২। সম্মানজনক কিছু বিশেষ সুবিধার প্রাধিকারপ্রাপ্ত : পিআরবি ৮৪, ৮৫, ৮৬ নিয়ম।
২৩। অস্ত্র আইনের আওতা থেকে অব্যাহতি : পিআরবি ৮৮ নিয়ম।
২৪। বেত ও লাঠি বহনের অধিকারপ্রাপ্ত : পিআরবি ৮৯ নিয়ম।
২৫। সেতু, খেয়া, সড়ক, নৌযান ইত্যাদির শুল্ক থেকে রেহইপ্রাপ্ত : পিআরবি ৯১, ৯২ নিয়ম।
২৬। রাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষার্থে মামলায় জড়ালে রাষ্ট্র দায়িত্ব নেবে : পিআরবি ৯৯, ১০২ নিয়ম।
২৭। কোন ব্যক্তি সম্পর্কে অবহিত ও গতিবিধি নজরদারী করতে পারবে : পিআরবি ১১৮ নিয়ম।
২৮। সরকারী চাকুরে/পাসপোর্ট প্রার্থীর জীবনবৃত্বান্ত যাচাইর করবেন : পিআরবি ২২১ নিয়ম।
২৯। পাসপোর্ট আটকের ক্ষমতা: বাংলাদেশ পাসপোর্ট আইনের ১২ ধারা।
৩০। মামলা রেকর্ড করেও তদন্ত থেকে বিরত থাকতে পারেন : কাঃ বিঃ ১৫৭ ধারা।
৩১। ফাইনাল রিপোর্ট দেয়া মামলারও পুনরুজ্জীবন ঘটাতে পারেন : পিআরবি ২৭৭ নিয়ম।
৩২। অবধ্য সাক্ষী/বাদীকে গ্রেফতার করতে পারেন : কাঃ বিঃ ১৭১, পিআরবি ২৬৯ নিয়ম।
৩৩। কারাগারে শাস্তিপ্রাপ্ত কয়েদীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন : পিআরবি ২৮৫ নিয়ম।
৩৪। আসামীকে রিমান্ডে নিতে পারেন : কাঃ বিঃ ১৬৭, পিআরবি ৩২৪ নিয়ম।
৩৫। হাতকড়া ব্যবহার করতে পারেন : পিআরবি ৩৩০ নিয়ম।
৩৬। বিশেষ ব্যক্তিকে নিরীক্ষণের আওতায় আনতে ও চরিত্র সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে পারেন : পিআরবি ৩৩৬-৩৫৪, ৩৮৯ নিয়ম।
৩৭। অমনোযোগী চৌকিদারকে শাস্তির আওতায় আনতে পারেন : পিআরবি ৩৭২ নিয়ম।
৩৮। রাষ্ট্র বা জনসাধারণের প্রতি ক্ষতিকর ব্যক্তির বিরুদ্ধে আটকাদেশের প্রস্তাব দিতে পারেন : বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩ ধারা।
৩৯। মোটরযান আইনের কাগজপত্র আটক ও স্পট ফাইন করতে পারেন : মোটরযান অধ্যাদেশ ১৬১, ১৬৩ ধারা।
৪০। সোর্স নিয়োগ করতে পারেন : সাক্ষ্য আইনের ১২৫, পিআরবি ২৮৩ নিয়ম।
৪১। আসামির জেল প্যারেড নিতে পারেন : পিআরবি ৫১৫ নিয়ম।
৪২। সন্ধিগ্ধ অভিযুক্তকে সনাক্ত করার জন্য টিআই প্যারেড করাতে পারেন : পিআরবি ২৮২ নিয়ম।
৪৩। আদালতে সাক্ষ্যদান কালে কেইস ডাইরী দেখে সাক্ষ্য দিতে পারেন : সাক্ষ্য আইনের ১৫৯ ধারা।
৪৪। লাইসেন্সী আগ্নেয়াস্ত্র কেড়ে নেয়ার ক্ষমতা : অস্ত্র আইনের ১২ ধারা।
৪৫। বন আইন, বিস্ফোরক আইন,খেয়া আইন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, জুয়া আইন, জীবজন্তু্ুর প্রতি নিষ্ঠুরতা নিবারণ আইন, নারী ও
শিশু নির্যাতন আইন ইত্যাদি সকল অপরাধ আইনে পুলিশকে ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা দেয়া আছে ।
উপরোক্ত আইন সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার পর পুলিশ ও জনগণের সম্পর্ক আরো উন্নত হবে বলে আশা রাখি । মন্তব্য পাওয়ার পর আইন সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানাতে উৎসাহিত হবো।
সংগৃহিত: ফৌজধারী তদন্ত ও বিবিধ পুস্তক হতে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:২০