আমাদের দেশে ১৯৫২ সালের মহান ভষা আন্দোলন এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভষা করার দাবীতে ঐ বছর ২১শে ফেব্রুয়ারী ঢাকার রাজপথে অমর শহীদদের আত্মদানের কথা আমরা সবাই জানি। প্রথিতযশা সাংবাদিক আব্দুল গাফফার চৌধুরী রচিত এবং প্রথ্যাত সুরকার ও ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামের শহীদ আলতাফ মাহমুদ সুরারোপিত , " আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী, আমি কি ভুলিতে পারি..... " গানটি বাঙালী মাত্রেরই হৃদয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
আমাদের দেশের বাইরেও কিন্তু বাংলা ভষার উপযুক্ত মর্য্যাদার দাবীতে আন্দোলন হয়েছে এবং সেই আন্দোলনে অকুতোভয় মানুষ প্রান দিয়েছে। তৎকালীন পূর্ব বাংলায় ১৯৫২ সালের রাষ্ট্র ভষা আন্দোলনের নয় বছর পরে ১৯৬১ সালে সিলেট সীমান্ত লাগোয়া ভারতের অসম (আসাম) রাজ্যের বাঙালী অধ্যূষিত বরাক উপত্যকার তিনটি জেলায় বাংলা ভষার মর্য্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য ঐতিহাসিক এই আন্দোলন হয়।
অসম রাজ্যের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় বসবাসকারী রাজ্যের সংখ্যাগুরু অহম (অসমিয়া) দের ভষাকে রাজ্যের শিক্ষার মাধ্যম হিসাবে ঘোষনা করা হলে বরাক উপত্যকার সংখ্যাগুরু বাঙালীরা এর বিরোধীতা করে এবং বাংলা ভাষাকে
শিক্ষার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে মর্য্যাদা প্রদানের দাবীতে তিনটি জেলায় আন্দোলনের ডাক দেয়।
মাতৃভাষার অধিকারের জন্য এই গনআন্দোলনের এক পর্য্যায়ে পুলিশ শিলচর স্টেশনে সমবেত আন্দোলনকারী জনতার উপর বিনা উস্কানীতে নির্বিচারে গুলীবর্ষন করে। ১৯৬১ সালের ১৯শে মে এই ঘটনায় বাংলাভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ১১ জন মানুষ প্রান দেন, যাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন মহিলা।
ঐ সময় অসম রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী ছিলেন বি পি চালিহা। আর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু। এক পর্য্যায়ে বাংলাকে শিক্ষার অন্যতম মাধ্যম হিসাবে ঘোষনা করে অসম সরকার।
গতকাল ১৯শে মে ছিল বাংলা ভাষার জন্য অসমে এই রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের বার্ষিকী। বাংলা ভাষার অধিকার ও মর্য্যাদা প্রতিষ্ঠার এই আন্দোলনে যাঁরা প্রানোৎসর্গ করেছেন তাঁদের স্মৃতির প্রতি
শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাই।
জনাব আলী কবীরের ফেস বুক হতে সংগৃহীত ।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৭