ঘনিষ্ঠ দুই বন্ধু শৈবাল ও তূর্য বাসযোগে ময়মনসিংহ হইতে আসিতেছিল। তাহারা বসিয়াছে ডান পাশের সারির ৫ এবং ৬ নাম্বার সিটে। বাম পাশের সারিতে তাহাদিগের ঠিক সোজাসুজি বসিয়াছে দুই জন মেয়ে; বান্ধবী হয়তো। দুই জনই দেখিতে মাশাল্লাহ্ অপরূপা সুন্দরী, একজনকে ঠিক যেন বেহেশতের হুর মনে হইলো! যাহা হউক, তাহারা খোশগল্প শুরু করিল! তাহাদের হাসাহাসি, হৈচৈ এ সারা বাস কম্পমান। তাহাদের আচরণে যদ্যাপি সবাই বিরক্ত হইতেছে, তথাপি কেহ কিছু বলিতেছে না।
বাস কিছুদূর আসিবার পর অকস্মাৎ বাম পাশে থাকা সুন্দরীদের একজন (বেহেশতের হুর) কারণে কিংবা অকারণেই হউক (কারণটি বোধগম্য হইলো না ঠিক) শৈবালকে বলিল, “ভাইয়া, আপনারা একটু এই সিটে আসবেন?”
শৈবাল তূর্যকে টানিতেছে; বলিতেছে, “চলো!”
তূর্য তাহাকে থামাইল; অতঃপর মেয়েটিকে বলিল, “স্যরি আপু, আমরা ওখানে বসব না।”
মেয়েটির মুখমণ্ডল ততক্ষণে লাল হইয়া গিয়াছে! জনাকীর্ণ বাসে কোনো যুবক সরাসরি “না” বলায় চরম অপমানিত বোধ করিয়াছে বোধহয়। রাগে কিড়মিড় করিতেছে সে। এই প্রথম বোধহয় কেহ সরাসরি “না” করিল।
তূর্য শৈবালকে বলিল, “মেয়েরা যা বলবে তাই কি শুনতে হবে? নিজের কি কোনো প্রেস্টিজ নেই? কোনো সমস্যা হলে না হয় মানা যেত। ওরা তো এমনিতেই...”
শৈবাল চুপ হইয়া গেল!
ছেলেদের সব চাইতে বড়ো দুর্বলতা হইল তাহারা সম্মুখে দণ্ডায়মান কোনো মেয়ের অনুরোধ হঠাৎ করিয়াই ফেলিয়া দিতে পারে না। মেয়েটি সুশ্রী কিংবা কদাকার যেমনই হউক না কেন! তাহার উপর মেয়েটি যদি অতিমাত্রায় সুশ্রী হয়, তাহা হইলে তো কোনো কথাই নাই। এ ধরনের হীন প্রবণতা হইতে বাহির হওয়া উচিত। তূর্য মনে করে অবশ্যই সুন্দরীদিগকে “না” বলিবার মতো সক্ষমতা অর্জন করিতে হইবে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১০:২৩