‘যে গল্পের শেষ নেই’ ভারতীয় লেখক দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় রচিত একটি অন্ত্যন্ত মূল্যবান বই। বিবর্তন তত্ত্ব নিয়ে অতি সহজবোধ্য ভাষায় বিশদ আলোচনা করা হয়েছে বইটিতে। লেখক একটি ছোট্ট শিশুকে গল্প বলার মধ্য দিয়ে বইটি শুরু করেন। শিশুটি সত্য গল্প শুনতে চায়, যে গল্পের কোন শেষ নেই কিন্তু সেই গল্পে কোন ফাঁকি থাকবে না। তিনি ভাবলেন এরকম গল্প হতে পারে শুধুমাত্র মানুষের গল্প।
গল্পটার ভিত্তি বিজ্ঞানসম্মত বস্তুবাদী ইতিহাস। লৌকিক-দৈবিক, উচিত-অনুচিত, বিজ্ঞান-অপবিজ্ঞান, সৃষ্টি-ধ্বংস সমস্ত কিছুর পেছনেই আমরা কেবল মানুষকে, মানুষ আর প্রকৃতির দ্বন্দ্বকেই দেখতে পাই। প্রকৃতির বুকে মানুষের সেই উদ্ভব, বিবর্তন আর বিকাশের কথা সঠিকভাবে না বুঝলে, মানুষকে নিয়ে কোন কথা বলার জোর থাকে না সবসময়। কাজেই, সহজভাবে, যথাসম্ভব পরিপূর্ণভাবে এসব বুঝার তাগিদ আমাদের বরাবরই ছিল।
প্রাক মানুষ, মানুষ, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, বিশ্ব রাজনীতি ইত্যাকার বিষয় নিয়ে বিস্তর মোটা মোটা কেতাব লেখা হয়েছে। রয়েছে অনেক মূল্যবান রেফারেন্স বই কিংবা এনসাইক্লোপেডিয়া। কিন্তু এগুলো থেকে মানুষের কথা ঠিক যেন মন প্রাণ দিয়ে বুঝা যায় না। হয়তো মুখস্থ করা যায় কিন্তু মন ভরে না যেন সাধারণ সহজ-বুদ্ধি পাঠকদের। পাঠকদের অতৃপ্তিকে মেটানোর জন্যই দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় এর ‘যে গল্পের শেষ নেই’ বইটি। ঠিক যেন পাঠকরা যা চাইছিল তাই বলেছেন দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় বইটিতে। একেবারে গল্প বলার মতো অনাবিল স্বাচ্ছন্দ্যময় প্রাঞ্জল কথা কাহিনীতে ভরা। একটুও প্রাচীনত্ব, একটুও জড়ার লক্ষণ নেই। শুধুই মানুষের কথা বইটির প্রতিটি পাতায়। হোক না তা বহু বছর আগের লেখা, কথাগুলো তো আজও সত্যি।
এই বই সম্পর্কে জনপ্রিয় লেখক মানিক বন্দোপাধ্যায় বলেছিলেন-
“‘যে গল্পের শেষ নেই’ ... ... আমি নিজেই শুধু বিশেষ মনোযোগ দিয়ে পড়িনি – ছেলেদের এবং সাধারণ মানুষদের পড়াচ্ছি। তারা কি বুঝে কতখানি বুঝে কিভাবে বুঝে যাচাই করার জন্য। কঠিন কথা, একেবারে অজানা কথা সহজ করে বুঝিয়ে বলা বা লেখার চেয়ে কঠিন কাজ জগতে কমই আছে। বৈজ্ঞানিকদের জন্য বিজ্ঞানের বই লেখার সময় জানা থাকে তারা কতটা বুঝেন না বুঝেন, তাদের বুদ্ধি আর চেতনা কি ধরণের, -কিন্তু অজ্ঞদের বেলায় পড়তে হয় মুস্কিলে। তাদের মগজে কি আছে আর কি নেই-যা আছে তার স্বরূপ কি-এসব আন্দাজ করা কঠিন। অথচ শুধু এটুকু আন্দাজ করলেই চলে না। প্রতিনিয়ত তাদের মগজটা কি দিয়ে কিভাবে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে তা জানলেও চলে না। ... ...”
বইটির ডাউনলোড লিঙ্কঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:০৯