somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বই পড়াঃ দ্য সার্জন (লেখকঃ টেস গেরিটসেন)

২২ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
বইয়ের নামঃ দ্য সার্জন
লেখকঃ টেস গেরিটসেন
অনুবাদঃ সান্তা রিকি
প্রকাশনীঃ বাতিঘর
প্রকাশকালঃ ২০১৬ (বইমেলা)
মূল্যঃ ৩২০টাকা




এক বাক্যেঃ
সার্জনের বীভৎস হত্যাযজ্ঞে গা শিউরে উঠবে। তার শেষ পরিণতি না জানা পর্যন্ত সার্জন ভীতি তাড়া করে বেড়াবে আপনাকে।

কাহিনি সংক্ষেপঃ
বোস্টন শহরে কোন কারণ ছাড়াই একবছরের ব্যবধানে বীভৎসভাবে খুন করা হয় দু'জন মহিলাকে। খুনের ধরণ দেখে এটুকু জ্ঞাত হওয়া যায় যে, সে কোন সাধারণ খুনী নয়। সত্যিই সে তাই; মেডিকেল জ্ঞানসম্পন্ন এবং তার এই পৈশাচিক কাজে সুদক্ষ সে। বোস্টনের খবরের কাগজগুলো নাম না জানা অপরিচিত এই পিশাচটার নাম দেয় সার্জন। বোস্টনের মেয়েদের মধ্যে দ্রুতই ছড়িয়ে পরে সার্জন নামের আতঙ্ক।

অনেকটা সার্জনের কর্মের ঘ্রাণ শুকে শুরু হয় সার্জনকে খোজার অভিযান। এই অভিযানের দায়িত্বে থাকা বোস্টন হোমিসাইডের ডিটেকটিভ টমাস মুর এবং তার পার্টনার জেন রিজোলি আবিষ্কার করেন, দুই বছর আগে সাভানাতে অ্যান্ড্রু ক্যাপরা নামের এক মেডিকেল স্টুডেন্ট দক্ষ সিরিয়াল কিলার হিসেবে অবতীর্ন হয়েছিলেন। মেয়েদের আক্রমণ করে সেও হয়ে উঠেছিল সাভানার মেয়েদের কাছে এক আতঙ্কের নাম। বোস্টনের আতঙ্ক সার্জনের মতই একই প্রক্রিয়ায় সে খুন করতো তার শিকারদের। তবে সেই খুনি তার শেষ শিকারের হাতে দুবছর আগে খুন হয়। খোজ নিয়ে জানা যায় ক্যাপরার শেষ শীকার বর্তমানে বোস্টনের একজন সফল ট্রমা সার্জন। নাম ক্যাথরিন কর্ডেল। তদন্তের স্বার্থে জড়িয়ে পড়েন বোস্টনের এই সফল ডাক্তারটিও।

ডিটেকটিভদের কাছে একটা প্রশ্নের উদয় হয়, "সার্জন কি করে মৃত ক্যাপরার ন্যায় একই পন্থায় তার শিকারদের হত্যা করে যাচ্ছে? কি তার উদ্দেশ্য? কি করে সে হয়ে উঠেছে ক্যাপরার কপি কাট?"

প্রশ্নগুলোর উত্তর খুজতে গিয়ে ভয়ঙ্কর, লোমহর্ষক, বীভৎস এবং শ্বাসরুদ্ধকর সব অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয় বোস্টন পুলিশের হোমিসাইডের ডিটেকটিভ টমাস মুর ও তার পার্টনার জেন রিজোলিকে। শুরু একজন নাম পরিচয়হীন খুনী যে তার নৃশংস কাজগুলো বেশ দক্ষ তাকে ধরার অভিযান।

পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ
ডায়ানা স্টার্লিং- ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকুরিরত, তার খুনের মধ্য দিয়ে এই শ্বাসরুদ্ধ কর উপন্যাসটির শুরু। এরপরই সংগঠিত হয় আরও দুটো খুন। এই খুনগুলোকে লেখিকা টেস গেরিটসেন বেশ দক্ষ হাতে সাজিয়ে পাঠকের সামনে উপস্থাপন করেছেন ঔপন্যাসিক। যার ফলে, উপন্যাসে সংগঠিত বীভৎস সব হত্যা গা শিউরে ওঠার মত।

সার্বিক দিক থেকে বিবেচনা করে বলব, ঔপন্যাসিক বেশ দক্ষ হাতে প্লট, কাহিনি, চরিত্র রূপায়ন করেছেন। টমাস মুর আর জেন রিজেলির মত ডিটেকটিভকে তিনি যেমন সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছে, তেমনি সাজিয়েছেন উপন্যাসের অন্যতম মুখ্য চরিত্র ড. ক্যাথরিন কর্ডেল। ডায়ানা স্টার্লিং, এলিনা অর্টিজ, স্বয়ং ড. কর্ডেল এবং অন্যান্য ভিক্টিমদের মাধ্যমে মেয়েদের বর্তমান সামাজিক অবস্থানের চিত্রের আংশিক রূপায়নটি বেশ চমৎকারভাবেই করেছেন লেখিকা টেস গেরিটসেন। সেই সাথে হাসপাতালের চিত্রগুলোও বেশ ভালো করেই ফুটিয়ে তুলেছেন। সার্জনের বিভৎস কর্মকান্ডে গা শিউরে উঠে। লেখিকা সার্জনের পৈশাচিকতার বর্ণনা বেশ সুদক্ষ হাতেই উপস্থাপন করেছেন, যার ফলে বইটি পড়ার সময় সেই বিভৎস দৃশ্য পাঠকের চোখের সামনে তার অজ্ঞাতেই ফুটে উঠবে। আবার দক্ষ চিকিৎসক ড. ক্যাথরিন কর্ডেলের সাথে পাঠক হয়ে উঠবে একজন দক্ষ ট্রমা সার্জন, যে কিনা ব্যস্ত মানুষের সেবা করতে। নিজেই আচমকা কল্পনায় উপস্থিত হবেন ড. ক্যাথরিন কর্ডেলের কর্মযজ্ঞ স্থান হাসপাতালের সেই ব্যস্ত ওটিতে। আর রহস্যের সমাধানে ব্রতী টমাস মুর ও জেন রিজোলির সাথে পাঠিক নিজেও হয়ে যাবেন একজন দক্ষ গোয়েন্দা।

একটা কথা না বললেই নয়। এই উপন্যাসটিকে অন্যান্য থ্রিলার উপন্যাস থেকে অনেকটাই ভিন্ন বলব এই কারণে যে, শেষ না করা অবধি পাঠক কখনই সার্জনের নাগাল পাবে না। যদি কেউ সার্জনকে নিয়ে আন্দাজে ঢিল ছুড়তে চান, তবে সেই ঢিল আপনার মাথায়ই পরার সম্ভবনাই বেশি।

অনেকে মহিলা থ্রিলার লেখকদের নাম শুনলে নাক সিটকান, তাদের উদ্দেশ্যে বলবো, পড়ে দেখতে পারেন টেস গেরিটসেনের 'দ্য সার্জন'। টুইস্টে ভরপুর বইটা থেকে আশা করি কারো মনযোগ বিচ্যুতি ঘটবে না।

অনুবাদঃ আমার নিকট বইটির অনুবাদ বেশ ভালো লেগেছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৪
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

তোমার বিহনে কাটে না দিন

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:০৩



অবস্থানের সাথে মন আমার ব্যাস্তানুপাতিক,
বলে যাই যত দূরে ততো কাছের অপ্রতিষ্ঠিত সমীকরণ।
তোমাকে ছেড়ে থাকা এতটাই কঠিন,
যতটা সহজ তোমার প্রতিটি চুল গুনে গুনে
মোট সংখ্যা নির্ণয় করা।
তোমাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

×