somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মায়ের ক্ষমায় বাঁচল ছেলের খুনির প্রাণ

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চোখ বেঁধে তাঁকে দাঁড় করানো হয়েছে ফাঁসির বেদিতে, গলায় গলানো হয়েছে ফাঁসির দড়ি। ‘মা’ আর সইতে পারলেন না, দ্রুত গিয়ে ‘ছেলেকে’ চড় মেরে ভেঙে পড়লেন কান্নায়, ‘বাবা’ খুলে দিলেন ফাঁসির দড়ি। প্রাণে বেঁচে গেলেন ২৭ বছরের বেলাল। সামনে অপেক্ষমাণ জনতার মধ্যে যেনো ছড়িয়ে গেল মায়ের বুকে জমে থাকা বোবাকান্নার ঢেউ। এক মা এভাবেই বাঁচালেন তাঁর নিজের ছেলের খুনিকে। দেশের আইন অনুযায়ী প্রকাশ্যে ফাঁসি কার্যকরের সময় সম্প্রতি বিরল এই ক্ষমাশীলতার ঘটনা ঘটেছে ইরানে। দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।

সাত বছর আগে ২০ বছর বয়সী বেলাল তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাগিবতণ্ডায় জড়িয়ে ছুরির আঘাতে কেড়ে নিয়েছিলেন ১৮ বছর বয়সী আবদুল্লাহ হোসেনজাদেহর প্রাণ। ইরানের মাজানদারান প্রদেশের ছোট্ট শহর রোয়ানে এ ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়। পুলিশের হাতে ধরা পড়েন বেলাল। বিচার শুরু হয় তাঁর। অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় ফাঁসির রায় হয় তাঁর। দেশের আইন অনুযায়ী ফাঁসি হবে প্রকাশ্য এবং ফাঁসি কার্যকরের ঘটনায় অংশ নিতে হবে নিহতের পরিবারকেও।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বেলালকে চোখ বাঁধা অবস্থায় গলায় ফাঁসির দড়ি পরানোর পর কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আবদুল্লাহ পরিবারের কাউকে গিয়ে তাঁর পায়ের নিচ থেকে চেয়ারটা সরিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকের তোলা ছবি ও বর্ণনায় দেখা যায়, ঠিক এ সময় ফাঁসি-কাষ্ঠের দিকে এগিয়ে যান নিহত আবদুল্লাহর মা। তিনি গিয়ে ছেলের খুনি বেলালকে একটা চড় মেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। আর পেছনে দাঁড়ানো আবদুল্লাহর বাবা ছেলের খুনির গলা থেকে খুলে নেন ফাঁসির দড়ি।

ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে নিহত আবদুল্লাহর মা যখন নেমে আসছেন ফাঁসির বেদি থেকে, তখন বেলালের মা এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরলেন তাঁকে। এক মা কাঁদলেন ছেলে হারানোর বেদনায়, আরেক মা কাঁদলেন ছেলের প্রাণ বেঁচে যাওয়ায়। কিন্তু পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে এই দুই মায়ের কান্না কি বুঝতে পেরেছে সবাই! একজন মা কোন বোধে প্রাণের কোন তাড়নায় নিজের ছেলের খুনিকেও ক্ষমা করে দিতে পারেন, সেই প্রশ্নের উত্তর না মিললেও দুই মায়ের কান্না একটা ঢেউয়ের মতোই ছড়িয়ে পড়েছিল ফাঁসি দেখতে আসা শত মানুষের মধ্যে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:২৪



চাইলে জিয়াউর রহমান ঢাকায় ঝাঁ চকচকে দালান কোঠা রাস্তা বানিয়ে সবার চোখ ধাঁধিয়ে উন্নয়ন করার বাহাদুরি করতে পারতেন। সেটা না করে তিনি ঘুরতে লাগলেন সারা দেশে, গ্রামে গঞ্জে গিয়ে খাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জবাবদিহিতার অনন্য দৃষ্টান্ত

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:৪৫

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করার পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো হয় সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে। সেসব পোস্টে তার বিরুদ্ধে বিপুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি যাত্রা করবেন নাকি রাজনীতি করবেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:১১


ইদানীং দেশে রাজনৈতিক দল গজানোর হার দেখলে মনে হয়, দেশের মাটিতে এখন ধান নয়, গজায় দল। ভোট এলেই বুঝি এই দলগুলো দুলে ওঠে, আর না এলেই পড়ে থাকে ফাইলের পাতায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের নেতারা যদি সত্যিই নির্দোষ হতেন, তাহলে তারা পালিয়ে গেলেন কেন?

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:০৯

আওয়ামী লীগের নেতারা যদি সত্যিই নির্দোষ হতেন, তাহলে তারা পালিয়ে গেলেন কেন?

পলায়নপর ছবি কৃতিত্ব এআই

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা দেশ ছেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সুরের জাদু: গিটার বাজালে কি ঘটবে?

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:৪১



গাজীপুরের পুবাইলের পুরনো গির্জাটি রাতের আঁধারে যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে। এই গির্জার নির্মাণকালে কিছু না জানা কুসংস্কারের অনুসরণ করা হয়েছিল। গাজীপুরের লোককথায় বলা হয়, এই গির্জার নিচে আটটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×