কট্রর মুসলিম রাস্ট্র সৌদি আরব একটু একটু করে ধর্মের বেড়াজাল ভেদ করে বের হয়ে আসছে। আর্থ- সামাজিক, সাংস্কৃতিক অংগনে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের নতুনধারার সুচনা হচ্ছে। সম্প্রতি সৌদি আরব সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের রেস্টুরেন্টগুলোতে গান বাজবে। সাধু সাধু!
আগে সৌদি নারীরা বিদেশী কোন পুরুষকে বিয়ে করতে পারত না। কিছুদিন আগেই আইন হয়েছে বাংলাদেশ সহ অন্য যে কোন দেশের পুরুষকে সৌদি নারীরা বিয়ে করতে পারবেন।নারীদের রাস্তায় গাড়ি চালানো নিষিদ্ধ ছিল। সেটাও উঠে গেছে। এখন সৌদির পথেঘাটে হরহামেশা নারীদের গাড়ি ড্রাইভ করতে দেখা যায়। এছাড়া স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখারও অনুমতি পেয়েছেন সৌদি নারীরা।
এদিকে বোরকা ঠেকাতে ‘ইনসাইড-আউট আবায়া’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে বেশ কয়েকজন সৌদি নারী সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে ছবি পোস্ট করেছেন। এটি দেশটির নারীদের পোশাকের ওপর কঠোর বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে একটি ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ।
হয়তো অচিরেই সৌদি নারীরা হিজাব,বোরকা ছেড়ে পাশ্চাত্য পোষাকে ঘরে বাহিরে যেতে পারবেন। সৌদি যুবরাজও নারীদের প্রতি মৌন সমর্থন দিয়ে বলেছেন,' ইসলামে কোথাও বোরকা পরিধানের বাধ্যবাধকতা নেই।'
যাদু প্রদর্শন সৌদিতে হারাম ও নিষিদ্ধ ছিল।সৌদি সরকার ঘোষনা দিয়েছে, যাদু প্রদর্শনী চলতে পারে। সিনেমা চলত ঘরের ভিতর লুকিয়ে। এখন থেকে সৌদি তে প্রকাশ্যে সিনেমা প্রদর্শণ চলবে। এতে অবশ্য লাভবান হবে বলিউডের প্রযোজকরাই। কারন সৌদি আরবে প্রচুর ভারতীয়র পাশাপাশি বাংলাদেশ,পাকিস্তান,শ্রীলংকার লক্ষ লক্ষ শ্রমিক কাজ করে। যাদের একমাত্র বিনোদন ছিল ঘরে বসে হিন্দি সিনেমা দেখা। এখন হতে সিনেমা হলে প্রদর্শিত হবে সিনেমা।
এখন থেকে নারীরা বাড়ির বাইরের নানান সামাজিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে অংশ নিতে পারবেন।ইতোমধ্যে নারীদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বুলডগ ফাইট ছিল নিষিদ্ধ। তাও উঠে যাওয়ায় ককফাইটের মতন বুলডগ ফাইট আয়োজনে কোন বিধি নিষেধ আর রইলো না।
বর্তমান সৌদি সরকার ব্যাপক আর্থ সামাজিক পরিবর্তনে উদ্যোগ নিয়েছে। এসব উন্নয়নের প্রজেক্টে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশ্চাত্যের আধুনিক চিন্তা ভাবনায় সৌদি সমাজ ঢেলে সাজানো হচ্ছে।
ধর্মীয় গোড়ামির বেড়াজালে আবদ্ধ রেখে একটা দেশের মানুষকে আটকে রাখা যায় না, যে কোন সময় বিস্ফোরন ঘটার সম্ভাবনা থাকে। ভেতরের মানুষের ক্ষোভের বিস্ফোরনের আগেই সৌদি রাজ পরিবারের শুভবুদ্ধির উদয় ঘটলো।সাধুবাদ।
প্রত্যাশা থাকল, সেখানে মুক্তচিন্তার স্বাধীনতার বিকাশ ঘটুবে।সাংবাদিক কামাল খাশোগির মতন আর কাউকে যেন প্রান দিতে না হয়। সৌদি থেকে কোন নারীকে পিতামাতার কাছে জীবনের অভাবে পালিয়ে বিদেশে আশ্রয় নিতে না হয়।আধুনিক চিন্তাধারায় সৌদি আরব এগিয়ে যাওয়ার সুচনালগ্নে শুভ কামনা।
এখন এ নিয়ে আমাদের দেশের কথিত ইসলামী চিন্তাবিদ, কাঠমোল্লাদের ফতোয়া কি হবে সেটাই ভাবছি।মোল্লাতন্ত্র, গোড়ামী,অন্ধত্ব, কুসংস্কার নিপাত যাক।জয় হোক মানুষের।