somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পরস্পর | প্রথম পর্ব - চেনাজানা

২৩ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১২:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




বেশ চিন্তামগ্ন হয়ে হেটে যাচ্ছে কামাল। পকেটে আজ ফোনটাও নেই। ফোন থেকে দূরে আছে বলেই অন্যান্য চাপ কম আজ। হাটতে হাটতে ছোট্ট একটা চায়ের দোকানে বসল সে। একটা সিগারেট জ্বালিয়ে স্বস্তির টান দিতে থাকলো৷ চাওয়ালা এমন সুখটান দেখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো তার দিকে! এমন সময় দোকানে আরেকজন এসে সিগারেট ধরালো৷ কামাল তাকে বললেন, "আ... ভাই, যদি কিছু মনে না করেন তাহলে একটা কল করতে পারি? আমি ফোন বাসায় ভুলে ফেলে এসেছি!"
লোকটা কি যেন চিন্তা করে দিয়ে দিল। কামাল ধন্যবাদ জানালো। নম্বর ডায়াল করে বলল, "কলটা ব্যাক দে, আর্জেন্ট!" অপরপাশ থেকে ফিরতি কল এল। কামাল বলল, "কাল আমার সাথে দেখা কর, রাত ৮টায়। লোকেশন হল স্কুল গ্রাউন্ডের পশ্চিমে। আমার কাছে ফোন নাই, চুরি হয়েছে! সো, কাল দেখা হচ্ছে, রাখলাম।"
কল কেটে ফোন ফিরিয়ে দিয়ে বলল, "অনেক ধন্যবাদ ভাই, নিন আপনার ফোন৷" লোকটা বিল দিতে যাবে তখন কামাল তাকে বলল, "ভাই কিছু মনে করবেন না, আপনার বিলটা আমিই দিই, এটা আমাকে দিতে দেন৷ প্লিজ!"

সকাল ৮.২০মিনিট,
খুব বিরক্তবোধ করছে তানজিল। সে খুব শক্ত করে হাত ধরে আছে মাইশার! ধীরে ধীরে হাটার গতি বাড়াচ্ছে তারা। কারণ একটু পিছনেই কাজল এবং তার বন্ধুরা তাদের দুজনকে উত্যক্ত করেই চলছে। উপায় না পেয়ে রিক্সা ডেকে তড়িঘড়ি করে উঠে গেল তানজিল এবং মাইশা। একটু একটু করে কাঁদছে তানজিল। মাইশার সান্ত্বনা দেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই৷ কিছু একটা বলতে যাবে সেটাও মুখ দিয়ে বের হচ্ছে না তার! ইভটিজিং করার পর্যায় এতটাই বেড়ে যায় যার কারণে পরদিনের প্রাইভেটে আর যায় নি সে!

পরেরদিন,
চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছে কাজল এবং তার বন্ধুরা। কাজল বারবার উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে তানজিলকে দেখার জন্য। ঘড়িতে তাকিয়ে দেখে নির্দিষ্ট সময় থেকে আজ ১৫ মিনিট বেশি! কাজলের হিসেবে এতটা দেরি হওয়ার কথা না। যেখানে প্রতিনিয়ত দশ পনেরো মিনিট পূর্বেই রাস্তা দিয়ে হেটে যায় সেখানে আজ এতটা লেট বিশ্বাসযোগ্য নয়। তবুও অপেক্ষা করছে কাজল এবং সেটা দেখতে দেখতে এক ঘন্টা পার হয়ে গেল! ঠিক তখনই দেখলো মাইশা ফিরছে সেদিক দিয়ে। কাজল তেরে গিয়ে দারিয়ে গেল মাইশার সামনে! এমনিতে মাইশা কাজলকে ভয় পায় না কিন্তু আজ কাজলকে দেখে মাইশা ঘাবড়ে গেল৷ কাজলের প্রশ্ন, "কোথায়?"
মাইশা বুঝে গেল কার কথা জিজ্ঞেস করছে সে, তবুও জিজ্ঞেস করল, "কে?"
কাজল একেবারে রেগে গেল! ধমকের সুরে বলল, "তোমার বান্ধবী কোথায়?" মাইশা দুই কদম পিছিয়ে গেল! ধীর গলায় বলল, "আসে নি আজ!"
কাজল নিজের হাতে নিজেই মুষ্টিবদ্ধ করে বলল, "আগেই ভেবেছিলাম এমন কিছুই হবে, এই নাম যেন কি তোমার? ওহ হ্যাঁ, মাইশা! ওর ফোন নম্বর দেও।"
মাইশা বলল, "ওর নম্বর ফোনে আছে, আমার মুখস্ত নেই!"
কাজল দ্বিতীয়বার ধমক দিল, বলল, "বাহানা বানানোর আর জায়গা পাও নি? দাও ওর নম্বর।" এবার মাইশা কেঁদে ফেললো!
"এই কান্নাকাটি বন্ধ কর, চুপচাপ ওর নম্বর দাও আর বিদায় হও! দাও বলছি।" এই বলে কাজল ফোন বের করে তানজিলের নম্বর নিয়ে নিল। মাইশা চোখ মুছতে মুছতে চলে গেল সেখান থেকে!
মাইশা চলে যাওয়ার পরপরই কাজল ফোন করল তানজিলকে। প্রথমবার রিসিভ করে নি, দ্বিতীয়বারে রিসিভ করতেই কাজল জিজ্ঞেস করলো, "আজ প্রাইভেটে পড়তে যাও নি কেন?" তানজিলের বুঝতে কষ্ট হল না কে ফোন করেছে, তারপরও জিজ্ঞেস করলো, "সরি! আপনি কে? চিনলাম না!"
কাজল পূর্বে এমন এরিয়ে যাওয়ার মুখোমুখি হয় নি! তানজিলের এমন প্রশ্নে কি উত্তর দিবে এটাই সে ভেবে পাচ্ছে না। শেষমেশ উপায় না পেয়ে বলল, "কাল থেকে রেগুলার প্রাইভেট পড়তে যাবে৷ তোমার উপর নজর থাকবে আমার।" এই বলেই কল কেটে দিল কাজল! তানজিলের মাথায় প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে কে হতে পারে যে কাজলকে তার নম্বর দিয়েছে? তানজিল নিশ্চিত যে কাজল প্রতিনিয়ত তাকে কল করবে।

রীতিমত এক ঘন্টায় নিম্নে দশ থেকে পনেরো বার কল আসে তানজিলের ফোনে! ফোন বন্ধ করে রাখার উপায় নেই কারণ সিম একটাই। তানজিল চিন্তা করল এমন অবস্থা চলতে থাকলে আজ প্রাইভেট পড়তেও বেশ ঝামেলা হবে। তাই মাইশাকে মেসেজ করে সে বাসা থেকে বের হয়ে নির্দিষ্ট স্থানে অপেক্ষা করতে লাগলো৷
মাইশা আসার পর প্রথম প্রশ্ন করলো তানজিল, "কাজলকে আমার নম্বর তুই দিছিস?" মাইশা কথা না পেঁচিয়ে সোজা হ্যাঁ বলল৷ তানজিল কারণ জিজ্ঞেস করলে উত্তরে মাইশা বলে, "অনেক রাফ বিহেভ করেছে সে, ভয়ে তো কেঁদেই ফেলছি সেদিন!"
"তাহলে চল আজ অন্য রাস্তা দিয়ে যাই আর ফেরার পথে একটা শায়েস্তা করবো।" তানজিলের কথা শুনে মাইশা জিজ্ঞেস করল, "তুই কিভাবে জানিস যে কাজল ওই রাস্তায় থাকবে?"
"ছ্যাঁচোড় ছেলেপেলে দেখলে দুই একটা ভবিষ্যৎবাণী এমনিই মিলে যায়!"

কোচিং শেষে রেগুলার রাস্তা দিয়ে ফিরছে তারা। স্পটের কাছাকাছি আসতেই কাজল সামনে দারিয়ে গেল। এবার মাইশা এক পা পিছিয়ে গিয়ে তানজিলের হাত শক্ত করে ধরে আছে। মাইশাকে জিজ্ঞেস করলো, "মাইশা? ভাল আছো নাকি ভয়ে আছো?" মাইশা কোনো কথা বলছে না! তানজিল বলল, "মাইশা, কেউ খোজখবর নিচ্ছে উত্তর দে!"
কাজল জিজ্ঞেস করল, "তুমি গতকাল আসো নি যে?"
"এটা আপনি জিজ্ঞেস করার কে?" কাজল বলল, "তুমি জানো না আমি তোমাকে পছন্দ করি? ভালবাসি?" "আপনি জানেন না আমি আপনাকে পছন্দ করি না, সহ্য করতে পারি না?"
কাজল বলল, "আজ না কাল, একদিনতো ভালবাসবেই!" তানজিলের রাগ মাথা পর্যন্ত উঠে গেল! রাগে এই শীতকালেও গরম লেগে যাচ্ছে তার! তানজিল বলল, "দেখেন, স্বাভাবিকভাবেই বলি, আপনি যতই ছল চাতুরী করেন না কেন আপনার যা ভাবনা তা কখনও বাস্তব হবে না! মাথা ব্যাথা হলে যেমন মাথা না কেটে ওষুধ খাচ্ছেন ঠিক তেমনি রাস্তাঘাটে আমি আট-দশটা ছেলে দেখলেও আপনি তার মধ্যে থাকেন না! ক্যাজুয়ালি যখন আমার নজরে আপনি নেই সেখানে স্পেশাল কোনো চিন্তাভাবনা তো বিলাসিতা! আসি, চল মাইশা!"
ফরহাদ পাশে দারিয়ে থেকে কাজলের কাধে হাত রেখে বলল, "ভাই, এটাকে কি পার্সোনালিটি বলবো নাকি তার তিরস্কার করার দক্ষতা বলবো? ঠাণ্ডা মাথায় স্বল্প শব্দে কত কিছু বুঝিয়ে দিল!"

সকাল ৮:০৮ মিনিট,
গোলাপগঞ্জ থানা

"কনস্টেবল রাজীন মুবাশ্বির রিপোর্টিং স্যার!"
"Come in" ঘড়ির দিকে তাকিয়ে অফিসার জিজ্ঞেস করলেন, "কয়টা বাজে?" রাজীন জানালো, "৮টা ০৮মিনিট, স্যার!"
"তো এই আট মিনিট কোথায় ছিলে? কমনসেন্স নেই নাকি টাইম শিডিউল মেইনটেইন করা শিখো নাই?"
রাজীন চুপচাপ দারিয়ে আছে। মাথা নিচু করে বলল, "সরি স্যার, এমনটা ভবিষ্যতে আর হবে না, স্যার।"
"Okay, apology granted. আজ ১ম দিন তোমার, তাই না?" "জ্বি স্যার!"
"এখানে উপস্থিত সবার সামনে নিজেকে ইন্ট্রডিউস কর। ইংলিশে, পারো তো ইংলিশ বলতে? নাকি বাংলায় সুযোগ চাও?"
রাজীন বলল, "স্যার একটা চেষ্টা করতে চাই।" অফিসার হেসে বলল, "চেষ্টা শুধু সিনিয়রদের, নীচে যারা থাকে তাদের সেটা মানতে হয়!"
রাজীন নিজেকে উপস্থাপন করে নিল কিন্তু সেটা একবার নয়, দশবার! কেউ না কেউ ইচ্ছামত ভুল ধরে পুনরায় উপস্থাপন করতে বলে! রাজীন বুঝতে পারলো তার র‍্যাগিং করা হচ্ছে। এদেরই প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে প্রথম দিনের সমাপ্তি ঘটে।

তিন সপ্তাহ পর,
রাজীনের ডিউটি বেশ ভালই কাটছিল। পেট্রোলিং সময় ছোট ছোট সফরগুলো বেশ আনন্দ দিচ্ছে তাকে। কনস্টেবল ফারুক অফিসারকে জিজ্ঞেস করল, "স্যার এবারের ঈদের ডিউটি শিডিউল কি এখনও আসে নি?"
"হ্যা এসেছে তো, থানায় নোটিশ বোর্ডে তো এতক্ষণে পিন করে দিয়েছে। গিয়েই দেখা যাবে!"
"জ্বি স্যার"

থানায় ফিরে দেখে সবাই নোটিশের দিকে তাকালো৷ ফারুক, রশিদ, হামিদ, তাপস, কামাল এরাই ছুটি পেয়েছে চারদিনের! সবাই বেশ খুশি হল। অনেকদিন পর বাসার সবার সাথে ঈদ করতে পারবেন তারা! রাজীন এই তালিকায় নিজের নাম দেখতে পেল না। যার জন্য বেশ মন খারাপ হল তার। কামাল এসে বলল, "স্বাগতম, ২৪x৭ পুলিশ ক্যারিয়ারে। এটা অভ্যস্ত হতে হবে। গতবছর আমিও ছুটি পাই নি। এবার পেলাম৷"

ঈদের দুদিন পর,
থানায় ঈদ উপলক্ষে দুপুরের খাবারের জমপেশ আয়োজন করা হয়েছে। যার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে রাজীন এবং এলাহি বাজারে গিয়েছে। ফেরার পথে কয়েকজন বাইকার বেশ উশৃংখলভাবে বাইক চালিয়ে রাজীনের গাড়িকে ওভারটেক করে যায়। গাড়িতে পুলিশের কোনো সাইন ছিল না যার ফলে বাইককারদের কেউ খেয়াল করে নি যে সেটা পুলিশের গাড়ি ছিল। রাজীন গাড়ির গতি বারিয়ে বাইকারদের সামনে দারিয়ে যায়! গাড়ি থেকে বের হতেই তাদের একজন কে রাজীন জিজ্ঞেস করল, "নাম কি আপনার?"
"আকিব। আকিব হাসান।"
এলাহি জিজ্ঞেস করলো, "রাস্তা কি আপনাদের কারও নামে লেখা আছে? এমন উশৃংখল ভাবে বাইক চালাচ্ছেন কেন? বাবা মা কোনো শিক্ষা-দীক্ষা দেয় নি আপনাদের?"
আরেকজন এসে রাজীনকে জিজ্ঞেস করল, "আপনারা কারা? আর আমাদের প্রশ্ন করছেন কেন?"
রাজীন বলল, "আপনার নাম?"
"আজমানুল বারী কাজল। বাবার নাম শরীফুল বারী, এই এলাকার সবচেয়ে বড় রাজনীতিবিদ। আর কিছু জানতে চান?" এই বলে কাজল বাকি সবাইকে বলল, "চল সবাই, আমার এলাকায় আমার গাড়ি থামায়?"
এলাহি রাজীনের দিকে তাকালো! রাজীন বলল, "দাড়ান!"
একটু এগিয়ে গিয়ে কাজলের সামনে দারালো। কাজলের দিকে তাকিয়ে সমস্ত শক্তি দিয়ে ডান হাতের চড় বসিয়ে দিল রাজীন এবং বললো, "সরি, আমি আপনার বাবাকে চিনি না। এবং আপনারও কপাল ভাল কারণ কাউকে এরেস্ট করার পারমিশন আমাকে দেয় নি, তাহলে আপনাকে দিয়েই আমি শুরু করতাম। ওহ, বলতে ভুলে গিয়েছি, আমি একজন পুলিশ।"
কাজলের বন্ধুরা সবাই হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছে কাজলের দিকে!

রাত ৮.২৭ মিনিট,
কামাল ছুটি শেষ করে থানায় ফিরেছেন। ফাইলগুলো চেক করতেই মনে পরে গেল একটা ঘটনা! দ্রুত ডাকলেন রাজীন এবং এলাহি কে। সেদিন দুপুরে কোনো ঘটনা ঘটছে তোমাদের সাথে?
এলাহি এবং রাজীন একে অপরের দিকে তাকালো। "স্যার..." রাজীনকে থামিয়ে দিয়ে কামাল বললেন, "কখন কি হয় সেটার ঘ্রাণ আমার নাকে এবং খবর আমার কানে আসে! আট বছর ধরে এ থানায় আছি।"
এলাহি বলল, "স্যার আমার পদ ছোট কিন্তু আমি ছোট নই, আমি কি কারণে এমন একজন ব্যক্তির সামনে ছোট হবো যে কিনা তার বাবা এবং এলাকা ভিত্তিক ক্ষমতা দেখায়?"
রাজীন বলল, "যদি অনুমতি দেন তবে পুরো ঘটনাটা বলবো স্যার?"
"বলার দরকার নেই, আমি যাকে যা করতে বলবো সে সেটাই করবে। Now get out."

সকাল ৭:১৫ মিনিট,
রুটিন মাফিক দৌড় ঝাপ শেষ করে থানায় ফিরছিল রাজীন। সেই রাস্তা দিয়ে থানায় যেতে একটা পুকুর পরে। রাজীন খেয়াল করে দেখল সেখানে বেশ কয়জন ছেলে দাড়ানো। ভেবে নিল হয়তো তারাও মর্নিং এক্সারসাইজে এসেছে। রাজীন আরেকটু এগিয়ে গেল, পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে চারজন ছেলে আর একজন মেয়ে দারিয়ে আছে৷ ব্যাপারটা মোটেও স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছে না রাজীন তাই এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। কিন্তু হঠাৎ মনে হল কামাল স্যারের বক্তৃতা! রাজীন মনে মনে বলল, "যা হয় হোক, কাজে ফিরে যাই...।"

পূর্ব রাত,
রাত ১টা,
মোবাইল বেজে উঠলো আরাফের। বৃহস্পতিবার রাত শেষে মাত্র শুক্রবার শুরু হয়েছে যার জন্য এখনও জেগে আরাফ! স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখে কোনো নাম উঠে নি, অর্থাৎ অজানা নম্বর! "এতরাতে কারও কল..." এসব চিন্তা করে রিসিভ করলো আরাফ। ওপাশ থেকে বলল, "আসসালামু আলাইকুম শ্বশুর আব্বাজান!"
আরাফ আবারও নম্বরটায় নজর দিল! "কে আপনি? কাকে চাচ্ছেন?"
"আরে আপনাকে চাচ্ছি, আমি আপনার হবু মেয়ের জামাই।" আরাফ বলল, "আজব অসভ্য লোক দেখছি আপনি? পরিচয় নেই অথচ আজেবাজে কথা বলেই যাচ্ছেন?"
"আসলে এতক্ষণ কথা বলছিলাম আমরা। ওহ আমার নাম কাজল, আমি তানজিলকে অনেক ভালবাসি এবং তানজিলও আমাকে ভালবাসে! বিষয়টা সে আপনাকে জানাতে ভয় পায় তাই আমিই বলে দিলাম৷ আমরা বিয়ের পি...” আরাফের আর সহ্য হল না! কাজলকে থামিয়ে দিয়ে বলল, "চুপ, ওখানেই ফুলস্টপ... অসভ্য, অভদ্র। রাখো ফোন।"
"আরে শ্বশুর আব্বা আমার কথা তো...." আরাফ কল কেটে দিল৷ রাগে সোজা বারান্দায় চলে এলেন আরাফ। দ্রুত হাটার আওয়াজ শুনে তানজিলও রুম থেকে বের হল। আরাফকে দেখে বলল, "আব্বু তুমি এত রাতে এখানে?" আরাফ বলল, "একটা প্রশ্ন করবো, সঠিক উত্তর দিও।"
তানজিল কিছু বুঝে উঠতে পারছে না! আরাফ বলল, "আমার শাসনে কোন ঘাটতি আছে? আমি কি বেশি জাদরেল ধরনের বাপ?" তানজিল হেসে দিয়ে বলল, "এত রাতে এসব বলার জন্য এখানে এসেছো? আম্মুর সাথে কি রাগারাগি হয়েছে?"
আরাফ বলল, "আমি উত্তর পেলাম না! আচ্ছা, দ্বিতীয় প্রশ্ন, কাজল কে?" তানজিলের হাসি হাসি মুখ চুপসে গেল! আরাফ বলল, "আমার বিশ্বাস তুমি ভাঙবে না এটা আমার বিশ্বাস। কিন্তু আমার সাথে শেয়ার করবে না এটা ভাবি নি।"

ঘড়িতে ১.২১ মিনিট,
তানজিল সমস্ত ঘটনা তার বাবাকে জানালো। তানজিল বলল, "আব্বু আমি সেদিন তাকে অনেক কথা বলে অপমান করে এসেছি, ভাবি নি এমনটা হবে।"
আরাফ বলল, "কাল প্রাইভেটে পড়তে যাচ্ছো না? আমি সাথে করে নিয়ে যাবো কাল।"
তানজিল বলল, "না আব্বু, আমি আমার বান্ধবীর সাথে যাই, আর যেহেতু আজ একটা কাণ্ড ঘটিয়েছে, কাল আর সামনে আসবে না। তুমি পরশু থেকে সাথে নিয়ে যেও।"

সকাল ৭.২০ মিনিট,
প্রাইভেটে যাওয়ার রাস্তায় কাজল আর তার বন্ধুরা তানজিলের রাস্তা আটকে দারিয়ে গেল! ফরহাদ বলল, "আজ দেখি তোর ছোট শালী মাইশা নেই রে সাথে!" তানজিল বলল, "রাস্তা ছেড়ে দিন, আমার দেরি হচ্ছে!" কাজল বলল, "শ্বশুরআব্বা তাহলে আমাকে মেনে নিয়েছে রে!" কাজল একটু এগিয়ে এসে তানজিলের হাত ধরার চেষ্টা করল। আর সহ্য করতে না পেরে শেষমেশ কেঁদে ফেলল তানজিল! মনে মনে ভাবছে ভুল হয়ে গেছে তার বাবাকে সাথে না এনে! তানজিলের কান্না দেখে কাজল বলল, "আরে আমি আছি তো, কান্নাকাটির কি আছে?"
তানজিল কি করবে ভেবে পাচ্ছে না! এমন সময় পেছন থেকে এক অচেনা তেজি আওয়াজে কেউ বলল, "ওই.... কি হচ্ছে এখানে?" তানজিল পিছনে তাকিয়ে দেখলো। ঘটনাস্থলে রাজীনের আগমণ! রাজীনকে দেখে ফরহাদ সেখান থেকে প্রথমে দৌড়ে অন্যদিক চলে গেল! রাজীনের বুঝতে বাকি রইলো কি হচ্ছে এখানে! কাজল বলল, "আরে ফরহাদ আমি আছি তো....!" তানজিল আর কাজলের মাঝামাঝি এসে কাজলের মুখোমুখি দারিয়ে রাজীন বলল, "সেদিন চড়টা বেশ তাড়াতাড়িই ভুলে গেছেন মনে হয়?" আরেকজনের দিকে তাকিয়ে বলল, "আপনার? আর হ্যাঁ, বাপের নাম বলার দরকার নেই, চিনি না আমি!" "রাসেল হাসান।"
রাজীন বলল, "নাম আর কাজ একদম মিল খায়!"
কাজল বলল, "বেশিদিন থাকার ইচ্ছা নেই দেখছি আপনার!" রাজীন আর নিজেকে থামিয়ে রাখতে পারলো না। মাটিতে পরে থাকা ভাঙা কাঠের টুকরো হাতে নিয়ে তিনজনকে একাধারে পিটাতে আরম্ভ করল সে! রাসেল, নাজিমকে রেখে কাজল দৌড়ে কোথায় চলে গেল সেটা আর দেখে নি রাজীন! বাকি দুজনকে বলল, "ওই দাড়া এখানে, কান ধর, পাঁচবার ওঠাবসা কর। কর....."
রাজীন বলল, "বন্ধুত্ব দেখলি না? যা এবার, চিন্তাভাবনা করে বন্ধুত্ব করবি৷"
রাজীন ফেরত এল তানজিলের কাছে৷ বলল, "আপু আপনি এবার আপনার গন্তব্য যান, দেখে মনে হচ্ছে প্রাইভেট পড়তে যাচ্ছিলেন?" তানজিল চোখ মুছে বলল, "এখন আর যাবো না, বাসায় যাবো।" তানজিলের ভীতিকর অবস্থা দেখে বলল, "আপনাকে খুব নার্ভাস দেখাচ্ছে? বাসা কি আশেপাশেই নাকি দূরে?"
তানজিল আবারও ভীতিকরভাবে তাকালো রাজীনের দিকে! রাজীন বলল, "না না, ভয় পাবেন না, প্লিজ। আমি পুলিশে কর্মরত আছি, আমার নাম রাজীন। আমি কনস্টেবল, চারমাস হল এখানে জয়েন করেছি।"
তানজিল চুপ করে আছে। রাজীন প্রশ্ন করলো, "প্রাইভেটে যাওয়ার জন্যেই তো বের হয়েছেন, কয়টায় শুরু হয়?" "জ্বি সাড়ে সাতটায়..."
রাজীন ঘড়িতে তাকিয়ে দেখে ৭.২৮ বাজে, রাজীন বলল, "আসেন আপনাকে অটো বা রিক্সা ধরিয়ে দিই, চিন্তা করবেন না, আপাতত সব ঠিকঠাক। চলেন।"
রাজীন অটো রিক্সা দার করিয়ে বললো, "শোনেন, উনাকে উনার গন্তব্যে পৌছে দিবেন৷ আর এই নেন ভাড়া, দ্বিতীয় কোনো যাত্রী তুলবেন না। সোজা উনি যেখানে যাবেন সেখানে পৌছে দিন। যান আপু।"

পড়াশোনায় তো মন বসছেই না, বারবার মনে পরছে সকালের ঘটনাটা। একটু একটু করে চোখ মুছছে তানজিল। খুবই অস্বস্তি নিয়ে কোচিং শেষ করল সে। বের হওয়ার সাথেই মাইশা এসে জিজ্ঞেস করল, "কি রে তোকে দেখতে এমন লাগছে কেন? চোখ লাল হয়ে আছে!"
তানজিল একটা বসার জায়গা দেখে বসল। বেশি দেরি লাগলো না কান্না শুরু হতে হতে! মাইশা এঅবস্থা দেখে বিস্মিত হয়ে গেল! বলল, "কি রে? কিছু একটা হয়েছে? কি হয়েছে? আমার মনে হচ্ছে কাজল?"
তানজিল মাইশাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো! মাইশা বুঝে গেল কাজল কিছু একটা করেছে! মাইশা বলল, "তানজিল, শান্ত হয়ে নে, সামনে পরীক্ষা আর এখানে দেরি করলে বাসায় ও দেরি হবে। চল হাটি আর কি হয়েছে বল।"
অনেকক্ষণ হাটার পর মাইশাকে ধীরে ধীরে সব বলতে লাগলো তানজিল৷ মাইশা বলল, "ওই ব্যক্তি তো বেশ ভাল সময়েই উপস্থিত হয়েছেন! উনার মাধ্যমেই থানায় কমপ্লেইন কর, উনিই তো আই উইটনেস।"

সকাল ৮.১৩ মিনিট,
ওসি কামাল বেশ রেগে থানায় ঢুকলেন। রুমে ঢোকার আগে কনস্টেবল কামালকে জিজ্ঞেস করলেন, "রাজীন কোথায়? আমার রুমে আসতে বল৷"
"স্যার, কথা হয়েছে, বলল দুই মিনিট লাগবে সর্বোচ্চ!" "এখানে ঢোকার সাথে সাথেই যেন সবার আগে আমার রুমে আসে সে।" "জ্বি স্যার!"
রাজীন থানায় ঢুকতেই দেখে বাকি সবাই তারদিকেই তাকিয়ে আছে! এলাহি এসে জিজ্ঞেস করল, "রাজীন ভাই, কি ব্যাপার বলেন তো, স্যার আজ এত চেতে আছেন কেন? আপনাকে আগে দেখা করতে বলেছে!"
রাজীনের বুঝতে বাকি রইলো না কি ব্যাপারে ডাক এসেছে তার! রাজীন বলল, "আমার সাথে সাথে আপনাকেও ডাকবে, নিশ্চিত থাকেন!"

রাজীন দরজায় নক করে ঢুকলো, "স্যার, আপনি ডেকেছেন?"
"সকালে কি কাণ্ড করে এসেছো?"
"স্যার, দৌড়াতে গিয়েছিলাম আর বাকিটা আপনি জেনেছেন স্যার!" ওসি কামালের মেজাজ অত্যন্ত খারাপের দিকে চলে গেল! রেগে জিজ্ঞেস করলেন, "কোন সাহসে তুমি বারী সাহেবের ছেলেকে পিটিয়েছো? তোমাকে কে অনুমতি দিয়েছে? আমাকে জানাতে পারতে না? যুদ্ধের ময়দানে ছিলে যার জন্য আমাকে জানাতে পারো নি?"
রাজীন চুপ করে থাকলো৷ ওসি আবারও রেগে বললেন, "তুমি আজ থেকে আমার কমাণ্ডের বাইরে অতিরিক্ত কোনো কাজ করবে না। এটাই অর্ডার।"
রাজীন বলল, "কিন্তু স্যার আমার অপরাধ...." এটুকু বলেই ওসি বললেন, "No more talks! Get out! এলাহি, এলাহি... এদিকে এসো।"
রাজীন বের হয়ে গেল। এলাহি ঢুকার সাথে সাথে ওসি বললেন, "তোমাদের জন্য রুলস, কি কি করতে বলেছি সেটাও রাজীনের কাছ থেকে শুনে নাও, যাও।"

মাইশার অপেক্ষায় দারিয়ে আছে তানজিল। আজ বিদায় অনুষ্ঠান তাদের। হেটে হেটে যাচ্ছে রিক্সার জন্য মোড়ে যাচ্ছে দুইজন। ঠিক তখনই, "তানজিল, একটু দাঁড়াবে?" দুজনই বুঝে গেল কার আওয়াজ এটা! তানজিল এবার মাইশার হাত শক্ত করে ধরে আছে! কাজল সামনে এসে বলল, "ভয় পেয় না, আমি কোনো মাস্তানি করতে আসি নি, ক্ষমা চাইতে এসেছি!"
তানজিল এবং মাইশা একে অপরের দিকে তাকালো! কাজল আবারও বলল, "আসলে আমার উচিৎ হয় নি তোমার সাথে কিংবা অন্তত আঙ্কেলের সাথে বাজে ভাবে কথা বলা! ছেলেরা যাকে যে মেয়েদের ভালবাসে বা পছন্দ করে তাদের কখনও বিরক্ত বা অসম্মানি করে না। যাই হোক তোমাকে আর আটকে রাখা ঠিক হবে না আমার, আমি আসলে... I am sorry. আর পরবর্তীতে আমাকে তোমার সামনে পাবে না। আসি আমি!" যেমন ঠাণ্ডা মাথায় কথা বলল ঠিক তেমনিই সাথে সাথেই চলে গেল! তানজিল বলল, "মাথা কি গেছে ওর? এত সভ্যতা তো হজম হচ্ছে না!"
মাইশা বলল, "উপন্যাস অনুযায়ী এবার কাজল তোর প্রেমে পরেছে!"
"অনেক ধন্যবাদ, চলেন এবার হাটা দিই!", বলেই কলেজের দিকে হাটা দিল!

সকাল ৯টা,
"হ্যাঁ, এসেছো তোমরা? বেলা ১১টায় এলাহি, তুমি আর রাজীন এবং বাকি কনস্টেবলরা যাও সিটি কলেজে! তোমরা যাওয়ারপর বাকিরা থানায় আসবে। আমি সহ কয়েকজন যাচ্ছি আর্টস ইন্সটিটিউট এর সেমিনারে। থানা ফাকা রাখা যাবে না, সিকিউরিটি দরকার।" কামালের আদেশ।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তারা গন্তব্য রওনা দিল। সেখানে পৌছা মাত্রই এলাহি সিগারেট ধরিয়ে নিল। রাজীন বলল, "কি? ডিউটি অবস্থায় চলবে?"
"আরে এখানে কি সিনিয়র কেউ আছে নাকি? আমরা আমরাই তো? এলাহি আগুনটা দিও!" হামিদ বলল।
"কেন যে এসব অভ্যাস করছেন আপনারা!" রাজীনের কথা শুনে তাপস হাসতে হাসতে বলল, "আর আপনি না খেয়ে কি গাড়ি বাড়ি করে ফেলেছেন?" একথা শুনে রাজীন সহ বাকি সবাই হেসে দিল! রাজীন বলল, "আপনারা শেষ করেন আমি ওই চায়ের দোকানে যাচ্ছি, আপনাদের জন্য চা পাঠাবো?"
"অবশ্যই, এটা আবার বলতে হয়?" এলাহি বলল।
গাড়ির সামনে দারালো রাজীন। থানা থেকে বের হয়ে বেশ ভালই লাগছে তার৷ সবার জন্য চা বানাতে বলল রাজীন। ঠিক তখনই, " আসসালামু আলাইকুম স্যার!"
রাজীন পিছে ফিরে দেখে দুজন মেয়ে তাকেই সালাম দিচ্ছে! সালামের উত্তর নিয়ে রাজীন জিজ্ঞেস করল, "জ্বি আমাকে বলছেন?"
"জ্বি স্যার!" রাজীন বলল, "সরি আমি আপনাদের চিনলাম না, তবুও বলেন, কি হেল্প করতে পারি?"
"জ্বি, স্যার আমি নুসাইবা তাবাসসুম তানজিল আর ও হচ্ছে মাইশা হায়াত৷ স্যার ওইযে সেদিন সকালে আপনি এসে কয়েকজন কে পেটালেন? পরে আমার জন্য অটোরিক্সা ডাক দিয়ে দিলেন? মনে পরেছে?" রাজীন মনে পরল, ফিসফিস করে বলল, "ওহ হো আপনিই সেই!" রাজীন বলল, "জ্বি মনে পরেছে। কেমন আছেন? কোনো সমস্যা হচ্ছে না তো?" মাইশা বলল, "না স্যার! আমি তানজিলের কাছ থেকেই শুনলাম আপনার সুনাম।"
রাজীন বলল, "সুনামের কিছুই নেই, আমার ডিউটি! আর আমাকে স্যার ডাকবেন না। ভাই, ভাইয়া বা ক্যাজুয়াল কোন কিছুতে সম্বোধন করবেন৷ আমার নাম রাজীন এবং আমি একজন কনস্টেবল!"
একথা শুনে মাইশা এবং তানজিল একে অপরের দিকে তাকালো! কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না! তানজিল বলল, "আসলে আজ কাজল আবারও আমাদের সামনে এসেছিল! তবে এবার ক্ষমা চেয়েছে এবং ভবিষ্যতে এমন হবে সেটাও বলেছে! আর এজন্য ধন্যবাদ আপনাকে।"
রাজীন বলল, "ভাল তো, শুধরানোটা নিজের থেকে না আসলে কেউ নিজেকে শুধরাতে পারবে না! যাই হোক, কিছু খাবেন আপনারা? চা? এছাড়া আমি কিছুই অফার করতে পারছি না!" তানজিল উত্তরে জানালো, "না না স্যার, ধন্যবাদ। আজ বিদায় অনুষ্ঠান হয়ে গেল। কিছুদিন পরই এইচ এস সি পরীক্ষা, দোয়া করবেন, আসি!"
"জ্বি অবশ্যই!" ওরা চলে যাওয়ার পর এলাহি জিজ্ঞেস করল, "কারা ছিল?" রাজীন বলল, "সেট অফ রুলস!"
"মানে?" রাজীন বলল, "মানে হল ডানপাশে যে আছে তারে বাঁচাতে গিয়ে আমরা সবাই রুলস এর আন্ডারে পরে গেছি! হ্যাঁ, অবশ্যই দোষ আমার, কেন করলাম, নাকি?"

এরপরও কয়েকবার রাজীন এবং এলাহি দেখেছে কাজল ও তার সার্কেলদের! তার বন্ধুরা সাবধান হলেও কাজল সেই পুরানো শত্রু দৃষ্টিতেই তাকিয়ে থাকে৷

এইচএসসি পরীক্ষা আজ শেষ হল৷ মাইশা বলল, "তানজিল, চল আজ হেটে হেটে যাই? এখন তো আর পরীক্ষার টেনশন নেই! শুধু চিল চিল আর চিল!"
তানজিল রাজি হয়ে গেল এবং জিজ্ঞেস করল, "কয় টাকা আছে তোর কাছে?" মাইশা উত্তরে বলল, "হিসাব করি নি তবে আশি নব্বই হওয়ার কথা!"
তানজিল বলল, "চল, ঝালমুড়ি, ফুসকা, চটপটি, ভাজাপোড়া যা হয় খাবো আজ!"
একে একে অনেক ভাজাপোড়া খেয়ে তানজিল বলল, "দোস্ত, আর মাত্র বিশ টাকা আছে! এখানেই সমাপ্তি, আর হাটতে ইচ্ছা হচ্ছে না। রিকশা নিই?"
মাইশা ছোট একটা ঢেকুর তুলে বলল, "সহমত ভাই, রিকশা নে।"
এমন সময় রাস্তা দিয়ে কাজল চলে আসলো! ফোনে ফোনে কথা বলতে বলতে খেয়াল করে নি সামনে তানজিল। ফোনের ওপাশের কথা শোনা যাচ্ছে, কে যেন বলছে "কাজল, কিরে কথা বলিস না কেন? হ্যালো কাজল মাঠে আছি আমরা..." কাজল দুই তিন সেকেন্ডের জন্য তানজিলের দিকে তাকালো। তারপর বেশ ঠাণ্ডাভাব্ব বলল, "সরি আসলে কথা বলছিলাম, খেয়াল করি নি আপনি... তুমি সামনে দাঁড়ানো! সরি, আসি!" এই বলে পাশ কাটিয়ে আবারও ফোনে কথা বলতে বলতে হাটা দিল সে! কাজলের এমন পরিবর্তনে মাইশা এবং তানজিল অবাক! মাইশা অবাক হয়ে বলল, "এটা কি ইগনোর করার নতুন কোনো নিয়ম নাকি আসলে ভদ্র হয়ে গেছে সে?"

নির্বাচনের দিন,
দুপুর ১টা,
ওসি কামাল কিছু কাজে বারী সাহেবের বাসায় যান। কামাল এবং বারী বসে বসে নির্বাচনী আলাপ করছেন৷ এমন সময় কামালের ফোন বেঁঁজে উঠলো! স্ক্রিনে নাম দেখে রাজীন! প্রথমবার কেটে দিল। কিন্তু আবারও কল আসলো! কামাল আবারও কেটে দিল! বারী বললেন, "ফোন রিসিভ করেন, কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজও হতে পারে!"
"তাও ঠিক!" হেসে হেসে কামাল কল করলো, ওপাশ থেকে রিসিভ হতেই রাজীন বলল, "স্যার, ফোর্স পাঠান তাড়াতাড়ি, ভোটকেন্দ্রে আমাদের উপর হামলা চলছে! এলাহিসহ আমরা তিনজন আহত! স্যার দেরি করবেন না, আমি আর সহ্য করতে পারছি না, এস আই, এএসআই কেউই নেই এখানে! তাই আপনাকে জানিয়ে আমরা লাঠিচার্জ শুরু করলাম। আমাদের আর কোনো উপায় নেই! চার্জ....!"
পরিবেশের হট্টগোল শুনতে পেল কামাল! রাজীনকে বলল, "রাজীন থামো আমি ফোর্স পাঠাচ্ছি, থামো..." ততক্ষণে কল কেটে দিয়েছে সে! এবার বারী সাহেবের টেলিফোন এবং মোবাইল একসাথে বেজে উঠলো! কামাল বুঝে নিল কোথা থেকে ফোন এসেছে! বারী মোবাইলের কল প্রথমে রিসিভ করলো। কামাল শুনতে পাচ্ছে বারীর মোবাইল ফোনের কথা। "দাদা ভাই, পুলিশ আমাদের উপর লাঠিচার্জ করে আমাদের বেশিরভাগ লোককেই তারিয়ে দিছে, প্রায় পনেরো-বিশজন আহত। লাঠিচার্জ এখনও চলতেছে, কিছুএকটা করেন। কেন্দ্র অলরেডি বন্ধ করে দিছে। আমরা হারতেছি নিশ্চিত!"
কল কেটে বারী কামালের কলার চেপে ধরে বলল, "আমি কি তোমারে এজন্য রাখছি যেন তোমার লোক আমারই বাশ মারবে? চেয়ার যদি আমার না থাকে তবে তুমিও চেয়ার পাইবা না। কীভাবে কি করবে আমি জানি না, এক ঘন্টা সময় দিলাম।"

তড়িঘড়ি করে কামাল ভোটকেন্দ্রে চলে গেলেন৷ সাংবাদিক, ম্যাজিস্ট্রেট এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা উপস্থিত! রাজীন এলাহিকে কাধে ভর করে গাড়িতে তুললো। ভোটকেন্দ্রের কিছু কক্ষে আগুন জ্বলছে। রাজীন এসে বলল, "সরি স্যার, ভোট কেন্দ্রে এদের ক্যাডাররা ডিউটিরত অফিসারদের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ে এবং সেখান থেকে ভোটার, অফিসার আর ক্যাডারের ত্রিমুখী সংঘর্ষ শুরু হয়। কামাল তার কপাল বারবার রুমাল দিয়ে মুছে নিচ্ছে। এত চাপ কিভাবে সামলামে বুঝতে পারছে না। একদিকে মিডিয়া, আরেকদিকে প্রশাসন এর কর্মকর্তা এবং অন্যদিকে বারী! রাজীন বলল, " স্যার, আমরা হসপিটালের দিকে আগাচ্ছি। উনারা আপনার সাথে কথা বলবেন।"

এলাহি এবং বাকিদের হসপিটালে রেখে রাজীন বের হল। করিডোর দিয়ে বের হতেই জেলা প্রশাসক এবং কামালের সামনে পরে গেল রাজীন। রাজীনকে দেখে ডিসি বললেন, "তুমিই রাজীন?"
"স্যার, জ্বি স্যার।" "আজ খুবই গুরত্বপূর্ণ কাজ করেছে সে কামাল, জানেন তো? আমি নিজে তোমার বিষয়টি দেখবো। অত্যন্ত সাহসী তুমি। কিপ ইট আপ৷" রাজীনের কাধে হাত বুলিয়ে তিনি চলে গেলেন। কামাল বললেন, "গাড়িতে অপেক্ষা কর, আমি আসবো৷"

বিকেলে বেশ গম্ভীর মেজাজে থানায় ফিরলেন কামাল। অনেকেই সালাম জানালো কিন্তু কারও সালামের উত্তর নিলেন না। রুমে ঢুকেই রাজীনকে ডাকালেন এবং ডেকে বললেন, "তোমার একশনে আমার কি অবস্থা হল কখনও চিন্তা করেছো? কি দরকার ছিল লাঠিচার্জের?"
"স্যার সেই মূহুর্তে আমি আর কি করবো? তারা লাঠিসোঁটা দিয়ে আমাদের আক্রমণ করছে। এলাহি, হামিদ, তাপস তারা আহতও! কেস করা উচিৎ তাদের নামে আমাদের আক্রমণ করার জন্য!" রাজীনের বিস্মিত উত্তর!
"চুপ কর তো, তোমার কোনো কথাই আমার বিশ্বাস হয় না। কি দরকার তোমার? প্রমোশন, ফেইম? মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষের সিমপ্যাথি?"
কামালের কথা শুনে অবাক হয়ে গেল রাজীন এবং বলল, "স্যার আপনার উচিৎ নিজের অবস্থান জানা। আপনি একজন থানার ওসি। আপনার সাথে কাজ করার আগ্রহ থাকবে আমাদের কিন্তু আপনি উল্টো বারীর সাইডে থাকছেন! সেই বরং আপনার কাছে কাছে থাকার চেষ্টা করবে কিন্তু এই চেষ্টা আপনি করছেন!"
কামালের মেজাজ মুহূর্তেই মাথায় চড়ে বসলো! ধমক দিয়ে বলল, "Just shut up! I run this police station and you work under my command. সাহস কি করে হল আমাকে বুঝানোর কি করতে হবে আর কি না?" বেশি তর্ক করতে পারবে না তাই চুপচাপ কামালের বকাঝকা হজম করে নিল রাজীন এবং শেষে বলল, "স্যার, আমি শুধুমাত্র আমার ডিউটি পালন করেছি, আমার ডিউটিতে আপনার কোনো অভিযোগ থাকলে আপনি জানেন কি করতে হয়৷ আসি। স্যার।"
রাজীন বের হয়ে যাওয়ার পর কামাল টিভি চালু করে নিউজ দেখা শুরু করলো। কিছু কিছু চ্যানেলে ঘটনা অসম্পূর্ন ভাবেই প্রকাশ করছে। কামালের বড় চিন্তা হল লিখিত জবাবদিহিতা করতে হবে কেন সে ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত ছিল না।

বিকেল ৫টা,
লেখা শেষ করে লেখাটার দুই কপি প্রিন্ট বের করে নিল রাজীন। একটা খামে ঢুকিয়ে কামালের রুমে গেল সে। খামটা টেবিলে রেখে বলল, "স্যার, আমার এই এক বছর তিন মাসের ক্ষুদ্র চাকরি জীবনের সমাপ্তি শব্দ লেখা আছে।"
লেখা পড়ে কামাল হেসে বলল, "এটার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তুমি একজন কনস্টেবল?" "জ্বি স্যার।"
"আর এটা পরবর্তী স্টেজে যাওয়ার জন্য আমার সাইনের প্রয়োজন?" রাজীন হ্যাঁবোধক উত্তর জানালো। কামাল চিঠিটা ছিড়ে ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিল! কামাল বললেন, "কম বয়সে রক্তগরম করে সবকিছু করা যেতে পারে কিন্তু পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যায় না! এরজন্য চাই ব্রেন আর সেন্সের সঠিক ব্যবহার।" রাজীন বলল, "আমি বুঝেছি আপনি কিসের অপেক্ষায় আছেন। দেখা যাক, কি হয় শেষে?"
কামাল বললেন, "তুমি কিছুই বোঝ নি! যেটা ছিড়ে ফেললাম সেটায় সাইন করে দিলে তোমার অকল্পনীয় ক্ষতি হয়ে যেত! সময় লাগবে এসব বুঝতে। যাও এখন।"

ভর্তি পরীক্ষার বই কিনে বাসার দিকে তানজিল এবং তার সাথে আছে মাইশা৷ মাইশা বলল, "তানজিল, ওইযে বসে আছে উনি, কি যেন নাম তার? আরে কাজলকে যে পেটালো?"
"ওহ হ্যা রাজন না রাজীন এমন কিছু একটা!"
মাইশা বলল, "চল দেখা করে আসি, পরিচয় থাকলে বদমাশ ছেলেপেলে এমনিই দূরে থাকবে।" তানজিল অবাক হয়ে বলল, "বাহ! কি চিন্তা শক্তি তোর? ঘুমাস কেমনে?" কিছুক্ষণ পরই তানজিল বলল, "আচ্ছা যাবো তো কিন্তু কি জিজ্ঞেস করবো?" মাইশা বলল, "আমি আছি না?"

আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া, কেমন আছেন?" অচেনা আওয়াজে রাজীন ঘুরে তাকালো, জিজ্ঞেস করলো, "জ্বি আমাকে বলেছেন?" মাইশা বলল, "জ্বি।"
"ওয়ালাইকুম আসসালাম" মাইশা জিজ্ঞেস করলো, "ভাইয়া আমাদের চিনতে পেরেছেন?"
রাজীন মনে করার চেষ্টা করে কিছুক্ষণ পর বলল, "জ্বি মনে হচ্ছে চিনতে পেরেছি, আপনারা আনজুম আর রাইসা?" তানজিল মাইশা একে অপরের দিকে তাকালো! তানজিল বলল, "না না, আমি তানজিল আর ও হচ্ছে মাইশা!"
"ওহ হ্যাঁ এবার মনে পরেছে! তো বলেন কি উপকার করতে পারি?" মাইশা বললো, "ভাইয়া সবসময় কি উপকারের জন্য আসি?" মাইশাকে থামিয়ে দিয়ে তানজিল বলল, "চুপ কর, আসলে আপনার কারণে এলাকার বদমাশ ছ্যাঁচড়া ছেলেপেলে এখন আমাদের ডিস্টার্ব করে না! এমনকি কাজলও আমাদের দেখলে অন্য রাস্তা দিয়ে হাটে!"
রাজীন হালকা হেসে ফেলল এবং তাদের বসতে বলল, "বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এমন হয়, যে আপনাকে ইগনোর করে চলবে আসলে সে আপনার এটেনশন চাচ্ছে! আর এটাকেই অস্ত্র হিসেবে কাজে লাগায়। লাইফে প্র‍্যাক্টিকাল হতে হয়। আপনার চালচলনেই সব উত্তর মানুষ পেয়ে যাবে। এই যেমন আমি! আমার হাতে একটা চিঠি এবং এতে লেখা আছে আমার পরবর্তী কর্মস্থল!"

তানজিল বলল, "তাহলে আপনি আর বেশিদিন এই থানায় থাকছেন না!"
"মাস যেতে যে কয়েকটা দিন বাকি, সে কয়েকটা দিন আছি৷" রাজীনের উত্তরে তানজিল বলল, "আপনি জানেন অতিরিক্ত প্র‍্যাক্টিকাল চর্চার মানুষরাই সবচেয়ে বড় বোকা, তারা জীবনের মানে বুঝে না। ছিটকে যায় জীবনের স্বাভাবিক গতি থেকে! সবসময় চিন্তায় বা ভয়ে থাকতে হয়! যেখানে যাচ্ছেন সেখানে হাসিখুশি থাকবেন৷" মাইশা বলল, "শুনে খারাপ লাগছে আপনার ট্রান্সফার হয়ে গেছে। আসি আজ, ভাল থাকবেন।"

বিকাল ৬টা,
এলাহি এবং বাকিদের সাথে দেখা করে বিদায় নেয়ার জন্য প্রস্তুত রাজীন৷ কামালের কাছে গিয়ে বলল, "সময় হয়েছে স্যার, আমি চললাম আর দোয়া রইলো আপনার জন্য৷"
"যেখানে যাচ্ছো সেখানে অন্তত রুলসের ভিতরে নিজেকে বন্দি রেখ। এবং তোমার চাকরি খেয়ে দেয়ার কিংবা রিসাইন লেটারে সাইন করার, কোনোটার ইচ্ছাই আমার নেই। চাকরিতে এসেছো, নিজেকে জেনে নিও এবং যেখানে থাকবে সেই স্থানটাও জেনে নিও। জীবন সহজ না হলেও রাস্তা সহজ হয়ে যাবে। আমি তোমাকে পারমানেন্ট করেই এখান থেকে চিঠি পাঠিয়েছি। ট্রান্সফারের চিঠি পাঠাই নি। ইকোসিস্টেম কিভাবে কাজ করে সেটাও জেনে নিও, ভাল থেকো।"



--- ধন্যবাদ | ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন---
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৩:৪৪
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি জাতির কান্না......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৫২

একটি জাতির কান্না......

স্বাধীন সিকিম রাষ্ট্রের ভারত ভুক্তির নেপথ্য!
১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান ব্রিটিশদের কাছে থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। ওই সময় উপমহাদেশে ৫৬৫ টি "Princely States" বা "সতন্ত্র দেশিয় রাজ্য" ছিল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

এসব কিসের ইঙ্গিত?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:২৯


ক্ষমতাচ্যুত হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার দাবিতে হঠাৎ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ছাত্রলীগ নেতাদের বিক্ষোভ মিছিল! সোমবার (২১ অক্টোবর) সকালে গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

‘নির্দেশ আছে তোকে ক্রস ফায়ারে মেরে ফেলার’ - হুমায়ুন কবির

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ২:১৪

(মানব জমিনে হুমায়ুন কবির ভাইয়ের গুম নির্যাতনের কথা পড়ে মনোকষ্ট নিয়ে বসে আছি। আপনার জন্য দোয়া করি, আপনাদের আত্মত্যাগেই এই জাতি স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে, এখন কাজ হচ্ছে তাদের বিচার করা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী থেকে বরখাস্ত করার জন্য কোটার দরকার আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৬



**** চাকুরী সৃষ্টি করতে জানে না বাংগালী জাতি, কিন্তু চাকুরী থেকে তাড়াতে জানে; কিছু কিছু ব্লগার মানুষকে তাদের কাজের যায়গা থেকে বিতাড়িত করার জন্য ব্লগে চীৎকার করছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ফিরে যেতে ইচ্ছে করে কৈশোরে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৫


এখানে কী আছে বলো তো, এখানে কী আছে আর
কেন যে সময়ের পিঠে হলাম সওয়ার;
সময় আমায় নিয়ে এ কোথায় এলো
স্বপ্ন সব হয়ে গেল এলোমেলো।

সেই প্রাথমিকের গন্ডি, পা রাখি ইচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×