আজ ঘন ঘোর সন্ধ্যার আঁধার মাধুরী মেখেছে
বাঁধনহারা আমার এই ধুলো মাখা নিভৃত ঘরে ।
মেঠো পথের দু'ধারে জোনাক মিছিল ;
স্তব্ধ যন্ত্রণার সৌরভ দেহে মেখে আমি আর এই মেঠো পথ !
সময়ের শরীর জুড়ে অজস্র ক্ষত ;
যেখানে স্বপ্নেরা মরু বালির তৃষ্ণার কাছে ভীষণ অসহায় ।
বহুকালের পরিচিত ধুলির গভীরে হারানো সুর;
ফেলে আসা সেই মাতাল দখিনা বাতাস- জ্যোৎস্না ।
চুন-সুরকি খসে পড়া জীর্ণ ইটের দেয়াল দেহে
প্রাচীন হৃদয় নিয়ে আজও দণ্ডায়মান
শতবর্ষী সেই জমিদার বাড়ি ।
একদিন এখানে কেটেছে কত সকাল-সন্ধ্যা;
কত মায়াবী বিকেল - বৃষ্টি উৎসব ।
এই এখানেই ছিল অগনন প্রানের উচ্ছ্বাস-
ছিল ধ্বনি , প্রতি-ধ্বনিতে ভরা সময়ের কল্লোল ।
কেউ এসেছিল কবিতা ভালবেসে,
কেউবা দুনিয়া বদলের স্বপ্ন দেখে -
বিপ্লব জীবন ভালবেসে ।
শ্রেণিহীন সমাজের অবিচল বিশ্বাসে ।
একদিন আমিও সেই একই প্রবাহে ........
মাঝে মাঝে নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, সুবাস, অথবা স্বয়ং ঈশ্বর-
পুরনো প্রাচীন দ্বিতল ঐ প্রাসাদের জীর্ণ কক্ষে !
আমারি কণ্ঠে !
মহা মহিম ভীষ্মের গর্জনে যেন কেঁপে উঠত
দেয়াল- ইটের গাঁথুনি!
যারা আলো ভালবেসে
যারা ভালবাসা ভালবেসে
যারা কবিতা ভালবেসে একদিন মন্ত্রমুগ্ধ হয়েছিল -
সময়ের গহ্বরে আজ তারা শুধুই ছবি-
শুধুই গল্প ।
একদিন কবিতায় স্বপ্ন দেখা সমাজ বোনার স্বপ্ন ছিল-
ছিল কণ্ঠে কণ্ঠে আকণ্ঠ সুধায় পিপাসা নিবারন সময়।
ছিল তোমার আমার মিহিন স্বপ্নে বোনা রঙ্গিন চাদর
রাস্তার মোড়ের দোকানে চায়ের কাপে টুংটাং বিকেল ।
আজ অবহেলায় বেঁধে রাখা পুরানো কাগজের বাণ্ডেল খুলে দেখি-
আমারই আঁকা কবিতা-ক্যানভাস ; জীবন-
দুনিয়া বদলের যত স্বপ্ন পাণ্ডুলিপি।
পরিকল্পনা ছবি, খসড়া খাতা, কতশত চরিত্র -
খুব নিভৃতে ঘুমায় -
একান্তে- উঁইপোকার দখলদারি রাজত্বে !