রক্তে শিরশির কাঁপন এই মাঝ রাত্রিরে-
মোহিনী একটা তান বেজে চলেছে
বৈরাগী ধমনীতে।
একটা শরীর - গন্ধ আমার আধোয়া জামায় ।
একটা হাঁসি - গন্ধ আমার স্নায়ুতন্ত্রে ।
শব্দ - গন্ধ শ্রবনেন্দ্রিয়ে ।
মনে আছে আমি প্রতিক্ষায় ছিলাম-
কালো এক দীর্ঘ সন্ধ্যা মুঠোয় পুরে ।
কে জানে কৃষ্ণকায় সন্ধ্যার রূপ-
হয়তঃ শুধু রাধাই জানে ।
আমি জানতাম একটুখানি বৃষ্টি হবে ।
যে বৃষ্টিতে ভিজবেনা নাগরিক জীবন ।
ভিজবেনা ইট কাঠ পাথর ব্যস্ত রাস্তার ধুলিবালি ।
শুধু আমি ভিজে যাব!
ভিজে জবজবে হবে আমার শরীর ;
যে উত্তাপে আবারও বৃষ্টি হবে-
কেউ জানবেনা কোনোদিন ।
সিগারেট ছিল-
ছিল- আগুন; ধোঁয়াও ছিল -
ক্ষীণ দৃষ্টি চোখে ভারী কাঁচ-
কালচে ধূসর গোলকের ভেতর চিত্রকল্প।
মোনালিসা কিংবা ক্লিওপেট্রা নয়-
বাঁশরিয়া কৃষ্ণের বাঁশি যার জন্যে-
সে রাধাও নয় ।
না ভেনাসও নয় ।
সে অখণ্ড প্রতিক্ষা শেষে
রূপবতী হয়েছিল সেদিনের সন্ধ্যা ।
সন্ধ্যা আমায় কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছিল ।
অথচ রাত্রির সাথে অভিমান
জ্যমিতিক হারেই বেড়ে চলেছে প্রতিদিন।
ত্রিচক্রযানে যেন স্থির হয়েছিল
পৃথিবী নামক অতিকায় গোলক ।
ক্লান্ত ঈশ্বর ঘুমিয়ে পড়েছিলেন
যেন পৃথিবীকে নিয়ে ভাবার ঢের সময় রয়েছে ।
ছিল শরীর - শিহরন ;
রক্ত তঞ্চনে একই তান ।
চোখ ছিল- ছিল সমুদ্র- ছিল ঢেউ ;
ডুবও ছিল ।
জীবনের জন্য- ভালবাসার জন্য-
হাহাকার ছিল-
ছিল চিৎকার ।
শুধু শব্দ ছিলনা ।
আমি অনুভব করছি ;
নিতান্ত অসাবধানতায় পাওয়া একটা স্পর্শ- গন্ধ -
সংকোচে নিজেকে লুকিয়ে রাখা স্পর্শ- গন্ধ ;
একটা নিবিড় স্পর্শ- গন্ধ ।
আমার বারান্দায় হিমশীতল গাঢ় অন্ধকার
এখানে এখন আগুন-
এখানে এখন ধোঁয়া -
এখানে এখন বৃষ্টি ।