আমার এই বিষয়ে ধারণা তেমন নেই।কিন্তু লেখাপড়ার জন্য হলে থাকার সুবাদে আমার বেশকিছু অতিমাত্রায় ভালোমানুষ (পাজির পা ঝাড়া) বন্ধু পেয়েছি।কিন্তু অনেককেই দেখলাম যে রিলেশনের ব্যাপারে খুবই সিরিয়াস।বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে মজা করতে লাগলেই বলে যে দোস্ত জামাই নিয়া মজা করা বন্ধ।অনেক অনেক প্ল্যানিং থাকে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখলাম।বাচ্চাকাচ্চার নামও দেখি অনেকের ঠিক করা হয়ে গেছে

মাঝে মাঝে অবাক লাগে।আবার ভালোও লাগে এসব দেখে।

তবে বর্তমানে ছেলেদের মধ্যে অনেকেরই দেখলাম রিলেশনের ব্যাপারে অনেক আপত্তি।আর আমার ফ্রেন্ড সার্কেলের ছেলেবন্ধুদের কাছ থেকে জানলাম যে এসব আপত্তির মূল কারণই থাকে যে মেয়েরা অনেক ভাব নেয়, ভালো জব ছাড়া নাকি মেয়েরা পাত্তা দেয়না,বাইক ওয়ালা ছেলেদের নাকি মেয়েরা অনেক পছন্দ করে, টাকা ছাড়া নাকি প্রেমের কোন মূল্য নেই..ব্লা ব্লা ব্লাসসসসসসসসস.......।
কিন্তু ভাইয়ারা বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, আমি আমার এই ৩ বছরের হল লাইফে যা দেখলাম তা যদি আপনাদের সাথে শেয়ার করি তাহলে আমার মনে হয় এসব ধারণা অনেকটাই দূর হয়ে যাবে।

আমি প্রেম করা যে আপুদের অথবা আমার বন্ধুদের চিনি তাদের থেকে জানলাম যে মেয়েরা আসলে চায় যে তাদের প্রিয় মানুষটা তাদের প্রতি ভালোবাসাটা প্রকাশ করুক।সেটা অনেক ছোট ছোট কাজ করে হলেও।একবার যদি কোন মেয়ের মনে এই বিশ্বাসটা জাগিয়ে তোলা যায় যে তার ভালোবাসার মানুষটা শুধুই তার তাহলেই নাকি যে মনের সন্তুষ্টিটা আসে সেটার কাছে আর সব কিছুই তুচ্ছ হয়ে যায়।
আমার কয়েকটা বান্ধবী আর পরিচিত বড় আপুদের সাথে গতকাল আড্ডায় বসেছিলাম।ওখানে থেকেই জানলাম যে উনাদের বয়ফ্রেন্ডরা কিভাবে উনাদেরকে সবসময় হাসিখুশি রাখেন।ওখানে থেকে যে কয়েকটা মনে আছে শেয়ার করলাম

১।প্রথমেই প্রপোজ করার ব্যাপারটা।এখানে মেয়েদেরকে কনভিন্স করার একটা ব্যাপার থাকে।মেয়েরা রিলেশন করার সময় একটা নির্ভরযোগ্য মানুষকেই খোঁজে।যাকে সে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতে পারবে।যে তার হাতটা সারাজীবনের জন্য ধরবে।তাই পছন্দের মানুষকে হুটহাট করে প্রপোজ করার চাইতে তাকে নিজের সম্পর্কে জানতে দিন।আপনার পরের স্টেপটা এমনিতেই ইজি হয়ে যায়।সেটা আপনি তার সাথে কথা বলে অথবা তার ফ্রেন্ডসার্কেলের মাধ্যমেও হতে পারে।
২।আপনার প্রিয় মানুষটিকে যে সবসময় আপনার একগুচ্ছ গোলাপ, অর্কিড অথবা দামি ফুলের তোড়া সাথে নিয়েই দেখা করতে হবে এমন কোন কথা নেই।পড়াশুনা বা কাজের প্রেশারে আপনি ভুলে যেতেই পারেন।কিন্তু এসময় যদি আপনি একটা ছোট ঘাসফুল বা গাছ থেকে অন্য কোন ছোট্ট ফুল ছিঁড়ে এনে তাকে দিয়ে স্যরি বলেন আপনার তাতে কোন ক্ষতি তো নেই কিন্তু আপনার প্রিয় মানুষটি অনেক খুশি হবে।
৩।আপনার প্রিয় মানুষটি যখন ভালো রান্না না জানা সত্ত্বেও অনেক চেষ্টা করে আপনার জন্য কিছু রান্না করে নিয়ে আসবে তখন আপনার উচিত রান্না ভালো না হলেও তাকে একটুখানি উৎসাহ দেয়া কারণ আপনার উৎসাহই তাকে আরো অনুপ্রেরণা যোগাবে এবং ভবিষ্যতে সেটা আরো ভালো হয়ে যাবে।
৪।একটা গুরুত্বপূর্ণ পার্ট হলো যখন ঝগড়া হয়।এই সময়টা খুবই বিপজ্জনক সময় মনে হয়েছে আমার কাছে।কারণ,ঝগড়াটা মিটমাট নাহলেই তো ফলফল ব্রেক আপ।ঝগড়ার সময় ২ জনই যদি রেগে যান তাহলেই বিপদ।তাই যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করবেন মাথা ঠান্ডা রাখতে।কারণ, আপনি রাগের মাথায় উল্টাপাল্টা কিছু বলে ফেলেছেন কি মরেছেন।কারন,ঝগড়া তো একসময় শেষ হবেই, কিন্তু ঝগড়ার সময় যদি তাকে কষ্ট দিয়ে কিছু বলে থাকেন সেটা সে অনেকদিন পর্যন্ত মনে রাখে এবং এটার প্রভাব কিছুটা হলেও আপনাদের রিলেশনে পড়বে।
৫।এরপর আসে মান-অভিমানের পালা।যারই দোষ থাকুক না কেন, মেয়েদের একটা এক্সপেক্টেশন থাকে যে ফোনটা আগে ছেলেই দিবে। তার রাগটা যত্ন করে ভাঙাবে।তাকে বুঝতে চেষ্টা করবে।এরপর মেয়ের দোষ থাকলে সে নিজেই তখন ১০০ বার স্যরি বলে।
৬।স্পেশাল ডে যেমন বার্থডে, রিলেশনের অ্যানিভার্সারী, ভ্যালেনটাইন ডে অন্যদিকে দিলেও এসব ক্ষেত্রে মেয়েরা ছাড় দিতে চায়না কখনোই।এসব দিন গুলোতে তাদেরকে সময় দিতেই হবে।যদি অনেক কাজ থাকে তাহলে কাজের মধ্যে কিছুটা সময় বাঁচিয়ে হলেও একটু সময় বের করে নিতে হয়।আর যদি তাও সম্ভব নাহয় তাহলে অন্ততঃ তাকে আগে থেকেই ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলতে হবে যাতে যখন অন্যদেরকে ঘুরতে দেখে তখন তার খারাপ না লাগে।
৭।মেয়েদের একটা কমন প্রবলেম হলো বাসা থেকে বিয়ের জন্য প্রেশার দেয়া।ঐসময় তারা অনেক মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকে।চুটিয়ে প্রেম করলেও অনেক ছেলেই ঐ সময়ে মেয়েটার দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করে।আপনি এসময় তাকে আশ্বস্ত করুন যে আপনি সবসময় তার সাথে আছেন।প্রয়োজনে তার ফ্যামিলির সাথে কথা বলে রাখতে পারেন।
৮।আর একটা জিনিস নিতান্তই ছেলেমানুষি লাগলেও এটা একটু মাথায় রাখলে ভালো যে আপনার গার্লফ্রেন্ডের সামনে অন্যমেয়ের প্রশংসা কম করুন।

৯।অনেক ছেলেকে বা মেয়েকেই দেখি যে তাদের রিলেশনের অনেক ব্যাপার ফ্রেন্ডদের সাথে শেয়ার করে।যত ক্লোজফেন্ডই হোক সে আপনার।তারপরও, নিজের রিলেশনের গোপনীয়তা বজায় রাখতে চেষ্টা করুন।
১০।কখনও মেয়ের পরিবার কিংবা মেয়েটাকে নিয়ে বাজে কোন কথা মানে গালিগালাজ করা যাবে না। এমনকি গায়ে হাত তোলাও যাবে না। এটা অনেক প্রভাব ফেলে মেয়েটার মনে।
১১।অনেককেই বলতে শুনি যে মেয়েদের সাথে রিলেশন করলে নাকি পকেট গড়ের মাঠ হয়ে যায়।যারা এটার সাথে একমত তারা কি একবারও
এটা ভেবেছেন যে আজকাল বেশীরভাগ রিলেশনই তো সেম এজ।ক্লাসমেটদের মধ্যে রিলেশন।তাদের কি গার্লফ্রেন্ডকে শপিং করে দেয়ার মতো টাকা ফ্যামিলি থেকে দেয়া হয়??ম্যানেজ করে রাখতে পারলে এক ঠোঙা বাদাম বা এক প্লেট ফুসকা দিয়েও যে গার্লফেন্ডকে খুশি রাখা যায় সেটার প্রমাণ আপনাদের চোখের সামনেই পাবেন শত শত

আর কিছু মাথায় আসছেনা।মানে ভুলে গেসি আর কি


(পোষ্ট খানা সকল সিঙ্গেল এবং মিঙ্গেল ভাইয়াদেরকে উৎসর্গ করিলাম)