রমজানুল মোবারক! আসন্ন রমজান মাসে আমাদের নানা রকম প্রস্তুতী নিতে হয়। তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্ব পায় খাদ্য দ্রব্যের পর্যাপ্ততা, প্রাপ্তির নিশ্চয়তা। রমজান শুরুর আগের ছুটির দিনে তাই হাতে বড় সড় একটা লিস্টি নিয়ে অনেককেই ঘুরতে দেখা যায়। বিক্রেতারাও পণ্য সরবরাহ করতে হিমসিম হয়ে যায়। কিন্তু পাশপাশি সমাজের আরো একটি চীত্র থাকে, যা হয়তো সামনে আসে না। সেটা হলো স্বল্প আয়ের মানুষের বাজারের লিষ্টি। সমাজের এক শ্রেণীর মানুষ যখন রমজানের সেহরী ইফতারকে শত প্রকার আইটেম দ্বারা জাক জমকপূর্ণ খাদ্য সম্ভারে পরিপূর্ণ করতে ব্যস্ত, ঠিক তখনই সমাজের আর এক শ্রেনী সংগ্রাম করে কিভাবে কোন রুপ সাদামাটা সেহরী ইফতার দিয়ে রোজার খেদমত করা যায় তা নিয়ে।
আমি এ কথা বলতে চাই না যে শত শত আইটেম দিয়ে সেহরী ইফতার করাটা দোষের কিছু। বরং আমি বলতে চাই এই রমজান মাসটাতে সবাই যেনো ন্যায্য মূল্যে তার চাহিদা মাফিক পণ্য ক্রয় করতে পারে, সেই ব্যবস্থা রাখা হোক। আল্লাহ সবাইকে সমান করে পৃথিবীতে পাঠাননি। কেউ ২০-২৫টা আইটেম দিয়ে সেহরী ইফতার করতেই পারে। তার মানে তো এই নয় যে ২০ টাকার জিনিষ ১০০ টাকায় বিকোতে হবে। দাম যদি সহনীয় পর্যায়ে থাকে, ন্যায্য থাকে, তবে তো সবাই তার সুফল ভোগ করতে পারে। কিন্তু আমাদের সমাজে এই শৃঙ্খলাটা থাকে না। যে যেভাবে পারে একে অপরের গলা কাটার চেষ্টা করে। এটা সম্পূর্ণই ইসলামের রীতি নীতি বিরুদ্ধ।
ন্যায্যমূল্যের বাজার নামে একটি কার্যক্রম কোন এক সময় চালু হতে দেখেছিলাম। যেখানে সুলভ মূল্যে চাল ডাল লবন চিনি ভোজ্য তৈল বিক্রি করা হতো। এখন আর তা দেখি না। বাজারে পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও বাজারে পণ্যের মূল্যের লাগামহীনতা রোধে সরকারের কাছে বিণীত অনুরোধ করে কোন লাভ নেই। মনিটরিং এর ব্যবস্থা প্রত্যেক বছরই থাকে ঐ কাজীর গরুর খাতায় থাকার মতোন, যা গোয়ালে পাওয়া যায় না।
এই আকাশ ছোঁয়া দ্রব্যমূল্যের প্রতিকার নিজেদেরকেই করতে হবে। সেটা হলো পণ্য ক্রয়ের সিমা বেধে নিতে হবে। অনেকেই দাম বাড়বে চিন্তা করে নিজের যা দরকার, তার থেকেও বেশী পণ্য মজুদ করতে শুরু করে, এই অস্থিরতাকেই পূঁজি করে ব্যবসায়িরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয় তিন গুন চারগুন। এই প্রবণতাকে আমরাই রুখতে পারি। বেশী দামে পণ্য না কিনলেই দেখবেন দাম নামতে শুরু করেছে। কিন্তু আমাদের কি সেই ধৈর্য্য হবে?