পাগলামীর তো একটা সীমা আছে। কিন্তু বিশ্বাস করেন আর নাই করেন, যা বলছি এক বিন্দু বাড়িয়ে বলছি না...
যাই হোক, সরাসরি মূল প্রসঙ্গে চলে আসি। হারজিতের ব্যাপারটা ধীরে ধীরে পরিষ্কার হবে। প্রথমেই আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেই প্রাণিজগতের ১০ পর্বের মাঝে তৃতীয় পর্ব Platyhelminthes এর সাথে। এরা মূলত চ্যাপ্টা জাতীয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উভলিঙ্গ প্রাণী। এদের বংশবৃদ্ধি যৌন, অযৌন দুভাবেই হয়।
এখন কাহিনী হলো, এই পর্বের একটা প্রজাতি আছে, যারা যুদ্ধ-বিগ্রহে বিশেষ আগ্রহী!!
সেই ‘লড়াই-প্রিয়’ প্রজাতির গল্পই বলবো এখন-
এদের বৈজ্ঞানিক নামঃ Pseudobiceros hancockanus.
সাধারণভাবে বলা হয় Flatworm.
এরা উভলিঙ্গ বিধায় প্রত্যেকে পুরুষ জননাঙ্গ ও স্ত্রী জননাঙ্গ উভয় নিয়েই জন্মায়।
এবং মূলত যৌন-প্রক্রিয়ায় বংশ বৃদ্ধি করে। আর সেখানেই বাধে গোলমাল।।
গোলমাল কি নিয়ে?? মা হওয়া নিয়ে।
বাবা তো শুধু শুক্রাণু দিয়েই খালাস, কিন্তু বাকিটা তো মায়ের উপর দিয়েই যায়। তাইনা?
তাই মা হওয়ার ঝামেলা থেকে যে করেই বাঁচতে হবে। আর এভাবেই শুরু হয় যুদ্ধ...
এই যুদ্ধের নাম-Penis Fencing.
(এর সুন্দর বাংলা করতে পারলাম না!! কেউ পারলে সাহায্য করেন)
এদের শরীরের মাঝামাঝি জায়গায় থাকে একজোড়া Penis বা পুরুষাঙ্গ…
(জী পাঠক, ঠিকই শুনেছেন, একজোড়া!!)
এবং সেই পুরুষাঙ্গের গঠনও কিছুটা ভিন্ন। সম্পূর্ণ সাদা ও এর অগ্রভাগ থাকে সূঁচালো। অর্থাৎ, অনেকটা কাঁটার মত।
বুঝতেই পারছেন, আধুনিক মেশিনগান কিংবা প্রাচীন যুগের ঢাল তলোয়ার নয়, পুরুষাঙ্গই এদের একমাত্র ও কার্যকর যুদ্ধাস্ত্র!!
(নিচের ছবিতে দেখুন)
যাই হোক, বংশবৃদ্ধির জন্য দুটা পূর্ণবয়স্ক Flatworm এর মাঝেই শুরু হয় সেই বিখ্যাত লড়াই।
দুজনেই একে অপরের শরীরে তাদের পুরুষাঙ্গ বিদ্ধ করতে চায়। যে আগে অপরজনের শরীরে তার ‘যুদ্ধাস্ত্র’ বিদ্ধ করতে পারবে, সে হবে বাবা।
আর যে হেরে যাবে, সে গর্ভধারণ করবে এবং যথারীতি মা হবে!! এখানে মজার ব্যাপার হলো, পুরুষাঙ্গ বিদ্ধ করার কোন নির্দিষ্ট জায়গা নেই, শরীরের যেখানেই সেটা প্রবেশ করুক না কেন, সেখান থেকেই শুক্রাণু তার প্রক্রিয়া কার্যকরভাবে শুরু করবে।
যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ না জেতে, এই লড়াই চলতে থাকে। এমনকি এই ‘দ্বৈত-লড়াই’ এক ঘণ্টাব্যাপীও চলতে পারে। আর এভাবেই প্রাণিজগতে অনন্যসাধারণ Penis Fencing প্রক্রিয়ায় হারজিত নির্ধারণ করে মাতৃত্ব কিংবা পিতৃত্ব।।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০১২ রাত ৯:২৬