সৌভাগ্য শব্দটি সে সব শব্দের অর্ন্তভুক্ত যে সব শব্দের সঠিক অর্থের ব্যাপারে মানুষ মতানৈক্য করে থাকে। কেউ কেউ মনে করেন, আনন্দ-মজা, আরাম-আয়েশ, ধন- সম্মদ, পদমর্যাদা বা যশ-খ্যাতি ইত্যাদি অর্জন হলো; সৌভাগ্য। এভাবেই অনেক মানুষ সৌভাগ্য অন্বেষণে জীবন নিঃশেষ করে দেয়। তবে হ্যাঁ, সৌভাগ্য হলো এমন এক অনুভূতি যা মানুষের অন্তরের গহীন থেকে উৎসারিত হয়, যখন সে সন্তুষ্টি, ঈর্ষা, প্রশান্তি, মহত্ব ও আনন্দ অনুভব করে। কিন্তু মানুষের স্বভাব-প্রকৃতি, গুরুত্ব, দৃষ্টি-ভঙ্গি এমনকি সমাজ ভেদে সৌভাগ্যের ধরণও নানারূপ হয়ে থাকে। কেউ সৌভাগ্য খুঁজে পায় সম্পদের মাঝে, কেউ পায় ঘর-বাড়ি, যশ-খ্যাতি বা সুস্বাস্থের মাঝে, আবার অন্য কেউ তা খুঁজে পায় স্ত্রী, সন্তান, সম্পদ বা লেখাপড়ার মাঝে। আবার কেউ বা খুঁজে পায় প্রিয় ব্যক্তির নৈকট্য লাভে, বা বিরক্তকর জিনিস থেকে মুক্তি পেলে, অথবা আধ্যাত্বিক সাধনা করতে অবিবাহিত থাকা, বা গরিব মিসকিনকে সাহায্য করার মাঝে। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, যখন তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হয়, আপনি কি আসলেই সুখী? তখন তাদের উত্তর না বোধক হয়!!!
সুইস চিন্তাবিদ ও সাংবাদিক “রোজীহ ডুবাকীহ” সুখ ও সৌভাগ্য নিয়ে গবেষণা করেছেন, তিনি বলেন - "আমি নিজেকে প্রশ্ন করেছিঃ মুসলমানেরা দরিদ্রতা ও অনুন্নতি সত্বেও কেন এতো সুখ অনুভব করে?! সুইডিশরা প্রশস্ত, আয়েশী ও উন্নত জীবন যাপনের পরেও কেন এতো দুঃখ দুর্দশা ভোগ করে? এমনকি আমার দেশ সুইজারল্যান্ডেও একই ধরণের অনুভূতি অনুভব করি যেমনটি করেছি সুইডেনে, অথচ এ দেশগুলো হলো সমৃদ্ধিশালী ও জীবন যাপনের মান খুবই উন্নত। এ সব কিছুর ফলে আমি প্রাচ্যের ধর্মসমুহ নিয়ে পড়াশুনার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি। প্রথমে হিন্দু ধর্ম নিয়ে অধ্যয়ন শুরু করি। কিন্তু আমি এতে সন্তুষ্ট হতে পারিনি। পরে ইসলাম ধর্ম নিয়ে অধ্যয়ন শুরু করি। আমি লক্ষ্য করলাম এ ধর্ম অন্যান্য ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক নয়, বরং ইহা সব ধর্মকে ব্যাপ্তি করে। ইহা সর্বশেষ ধর্ম। আমি ব্যাপকভাবে অধ্যয়ন করার ফলে এ বাস্তবতা আমার কাছে আরো বিস্তার লাভ করে এবং ইহা আমার অন্তরে দৃঢ়ভাবে সংস্থাপিত হয়েছে"।