গত ১৩ জুলাই দৈনিক ইত্তেফাকের সাময়িকী পাতায় সিদ্দিকুর রহমান খানের ‘কবে শুরু হবে আহমদ ছফা চর্চা’ শিরোনামে খুব তাৎপর্যপূর্ণ একটি লেখা ছাপা হইছে। এই রচনাতে তিনি আহমদ ছফা-চর্চার ইতিহাস নিয়ে গুরুতর মিমাংসা করেছেন। লেখাটি ছফা-চর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ ‘সিগনিফায়ার’ হিসাবে আমার কাছে ধরা দিছে। পাঠকদেরও সেই সূত্রটি ধরিয়ে দেবার তাগিদে এই লেখার অবতারনা।
সিদ্দিকুরের ভাষ্যে ছফা-চর্চার যে ইতিহাস আমরা পাচ্ছি সে ইতিহাস একটি আদর্শ (typical) ও প্রাঞ্জল ধরনের দ্বিমূল বর্গীয় (binary) ন্যারেশন। ছফা-চর্চার ইতিহাস ঢুঁড়ে লেখক আমাদের রাম ও রাবণ এই দুই যুযুধান-পক্ষের সংবাদ জানিয়েছেন। আমি তাঁর ইতিহাস তাই দুই কাণ্ডে ভেঙে ভেঙে পড়ছি: রামকাণ্ড আর রাবণকাণ্ড।
রামকাণ্ড
রামকাণ্ডে লেখক ছফা-চর্চায় রামের গুষ্টি কারা সেদিকটাতে আলোকপাত করেছেন। এই অংশে আমরা পাচ্ছি আহমদ শরীফ, সরদার ফজলুল করিম, আর মুহম্মদ জাফর ইকবাল। এই ন্যারেশনে শরীফ বা সরদার কিন্তু রামচন্দ্র নন, এঁরা বড়জোর লক্ষণ, বিভীষণ প্রভৃতি। সিদ্দিকুর রাম-নাম হিসাবে এখানে মুহম্মদ জাফর ইকবালের নাম করছেন। ইকবাল এই জামানার শ্রেষ্ঠ ছফাকর্মী। ছফা-চর্চায় তাঁর প্রজ্ঞা ও নিষ্ঠা দুই-ই অতলান্ত। এর নমুনা হিসাবে সিদ্দিকুরের লেখা থেকেই পড়া যাক:
আহমদ ছফার খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও জনপ্রিয় লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল গত কয়েক বছরে তাঁর একাধিক লেখায় আফসোস ও বিলাপের সুরে ছফা সম্পর্কে বলেছেন, ‘বড় অসময়ে চলে গেছেন তিনি। আরও অনেক বছর আহমদ ছফার বেঁচে থাকার দরকার ছিল আমাদের জন্যই।’
এহেন নিষ্ঠাবান ছফাকর্মীকে সিদ্দিকুর মোটে একা ছাইড়া দেন না। মওকা পাইলেই যুগলারাধনার মতো দুইজন মিলে ছফারে চর্চা করেন। যেমন, ‘সর্বশেষ গত ৫ মে ঢাকার গুলশানে শিক্ষাবিষয়ক এক সেমিনারে’ মওকা মিলে গেল। বাগে পেয়েই সিদ্দিকুর ওঁনার স্যারকে (মু. জা. ই) পরম দুঃসংবাদ আকারে জানাচ্ছেন, টাকার অভাবে ছফা ভাইয়ের নিজহাতে গড়া ইশকুল বন্ধ হয়ে গেছে। এই দুঃসংবাদে যারপরনাই ব্যথিত হয়ে স্যার ছফা-চর্চার কিছুটা নমুনা দেখালেন। লেখকের জবানিতে,
কথাটা শুনে স্যারের সুন্দর মুখখানা মুহূর্তের জন্য যেন মলিন হয়ে গেল। থমকে দাঁড়িয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন, ‘এ দেশে এত এত টাকাওয়ালা মানুষ থাকতেও ছফা ভাইয়ের স্কুলটি বন্ধ হয়ে গেল শুধু টাকার অভাবে।’
ছফাচর্চার সহি তরিকা কোনটি সে-ব্যাপারে মোক্ষম ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে এখানে। ছফা-চর্চার মর্মবাণী হলো ‘আফসোস ও বিলাপে’র মধ্যে এই সত্য বুঝতে শেখা যে, ছফার মৃত্যু মানে ছফার অন্তর্ধান। এরকম আফসোস-মূলক চর্চা দেখলে হঠাৎ আশি নব্বইয়ের দশকের টলিগঞ্জে প্রচারিত কাঁদুনে ছবির শোকপর্ব বইলা ভুল হইতে পারে। কিন্তু এইটা আসলে গানের আগে গলা খাখারির মতো। আগে কেন্দে কেন্দে চোখের ময়লা ঝরাতে হবে। এটা শুরুর বাজনা। এইখানেই থেমে গেলে ছফা-চর্চার যে নূতন আদর্শ প্রচার করা হচ্ছে তার মোদ্দা কথাটা বোঝা হবে না। সিদ্দিকুর ছফা-চর্চায় বিপ্লব আনয়নে উৎসাহী। তাঁর চর্চার অভিনবত্ব কবুল করতে হয় যখন তাঁর যোগ করা নতুন ডাইমেনশনের ব্যাপারে আমরা অবগত হই। ট্রাজেডি পর্ব শেষ হইতেই লেখক কায়দা কইরা ওঁনার স্যাররে কইয়া ফেলতেছেন,
স্যার আপনি যদি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে ছফা ভাইয়ের বিষয়ে অনুরোধ করেন তবে দুটো কাজ হতে পারে। এক. ছফা ভাইয়ের রচনাবলী কিনে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় পাঠানো। যেন তাঁর লেখা কিশোর-তরুণ-তরুণীরা পড়তে পারে। দুই. স্কুলটিকে আর্থিক অনুদান দিয়ে বাঁচিয়ে তোলা।
সিদ্দিকুর ছফা-চর্চার ইতিহাস লিখতে গিয়ে ঠিক কোনখানে র্যাডিকাল হয়ে উঠলেন, সবার থেকে আলাদা হয়ে উঠলেন সেটা বুঝতে হলে এখানে মনোযোগ দেওয়া লাগে। তিনিই সবার আগে বুঝতে পেরেছেন—মুহম্মদ জাফর ইকবালরে বাদ দিয়া ছফাচর্চার ইতিহাস লেখা যাইতে পারে না। এর কারণ নানাবিধ। ইকবাল বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও মোড়ল-গোছের বুদ্ধিজীবী। উপরন্তু, সরকারী বিভিন্ন কমিটির মাননীয় সদস্য। ফলকথা: ইকবাল হাল-জামানার সরকারি হোমড়া-চোমড়া, শিক্ষামন্ত্রী নাহিদকে তিনি বইলা দিলেই নানা বিস্ময়কর ফল অর্শাইতে পারে। কীরকম ফলের আশা করেন আমাদের সিদ্দিকুর? মুগ্ধ হইতে হয় যে তাঁর রূপরেখার মধ্যে কোথাও কোনো অ্যামবিগুয়িটি নাই। সরকার যে এত লোকের বই কেনে, তারে ছফার বই কিনতেও বাধ্য করা লাগবে। ছফার বই সরকারের কাছে পুশ-সেল করার জন্য তদবির করার নামান্তর হইল ছফা-চর্চা। আর তিনি যে স্কুল করছিলেন সেইটারে আর্থিক অনুদান দিতে হবে। মোটামুটিভাবে এই হইল সিদ্দিকুর প্রস্তাবিত ছফা-চর্চা। এই তরিকাতে যারা ছফার সেবা করেন তাঁরা, অতএব, রামের গুষ্টি।
রাবণকাণ্ড
সিদ্দিকুর কেবল রামচন্দ্রের তত্ত্বতালাশিতে ব্যস্ত থাকেন নাই। ছফা-চর্চার একটি সামগ্রিক রূপরেখা প্রণয়নে রাবণের গুষ্টিকেও সনাক্ত করে দিয়েছেন। সিদ্দিকুরের বিবেচনাতে ছফা-চর্চার মণ্ডপে দুষ্টু রাবণ আপাতত দুই ব্যক্তি। তিনি এঁদের নাম করেন নাই, সান্ধ্যভাষায় পরিচয় দিয়েছেন: একজন লুঙ্গিপরা কবি, অন্যজন ঝুটিবাঁধা পুরুষ। এঁরা ছফা-চর্চার নির্মল ফরাসে তের-চৌদ্দ বছরের ছোঁড়ার মতো বালাই-বিশেষ। এই পাষণ্ডগণ ছফার স্কুল নিয়ে মোটে ভাবেন না, ছফার বই পাবলিকে যে পড়বে না সেইটা মালুম করে তাঁর ছাপা হওয়া বইগুলো পুশসেলের মাধ্যমে সরকারকে গছিয়ে দেওয়ার কোনো উদ্যোগ এঁদের নাই, এঁরা শুধু ছফা নিয়া ‘গসিপ’ করতে মশগুল। এঁরা সভা-সেমিনার কইরা ছফা কখন কী বলছিলেন, কী লিখছিলেন সেইটা নিয়া চোটপাট করেন, আসল কাজে ষোলআনা ফাঁকি পইড়া থাকে। ফলকথা, এই রাবণের গুষ্টি ছফার স্মরণে যে সভা করেন সেইখানে (‘ইস্কুল-হারা’, ‘সরকারী অনুদান-বঞ্চিত’, ‘প্রকাশকের চক্ষুশূল’ ছফারে বাদ দিয়া) এক বিকৃত ও খণ্ডিত আহমদ ছফারে উপস্থাপন করতে দেখে লেখক মর্মাহত হইছেন।
ছফা-চর্চার একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক তাইলে, দেখা যাইতেছে, লুঙ্গিপরা কবি ও ঝুটিবাঁধা পুরুষের ব্যাপারে মুমিনদের ডেকে ডেকে সাবধান কইরা দেওয়া। ছফা-চারণের ময়দানে এই দুজন আগুয়ান-প্রায় দজ্জালের ব্যাপারে হুঁশিয়ার বাণী শোনানো ছফাদরদি মোল্লার অতিশয় কর্তব্য। এইটা ছফা-চর্চার নামান্তর। অধিক কি, এইটাই ছফা-চর্চা।
তো, এই দজ্জাল-দ্বয় ছফা-চর্চার নামে কী করেন? সিদ্দিকুরের মতে, এঁদের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো, এঁরা ‘মধ্যযুগীয় ও দূর্বোধ্য বাংলা’ লিখে আহমদ ছফাকে ‘মহাত্মা-টহাত্মা’ ইত্যাদি বলে একজন ‘মৌলবি’ হিসেবে দাঁড় করানোর নিরন্তর কোশেশ করেন। লুঙ্গিপরা কবির বিরুদ্ধে তাঁর মূল আক্রোশ সম্ভবত এখানে যে, তিনি প্রকাশ্য সভায় লুঙ্গি পরেন। আউল-বাউল-লালনের দেশে এই ব্যাটা এক মাইকেল জ্যাকসন! যেদেশে আনিসুজ্জামান সফেদ পাজামা ও পাঞ্জাবি পরনে বিহার করেন সেই দেশে প্রকাশ্য সভায় লুঙ্গি পরনে যাতায়াত! এ যে ‘অন্নপাপে’র অধিক। এই লুঙ্গিপরা কবির সহচরী ত্রুটিও সামান্য নয়। লেখক ছফার সঙ্গে তাঁর এক সকালবেলার স্মৃতি চারণ করছেন:
একজন কবি ও কলামিস্ট ছফার খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এ কবির সঙ্গে প্রতিদিন খুব সকালে ছফার অন্তত আধাঘণ্টা টেলিকথন হতো। এই কবি ও কলামিস্টের লেখা কেন পাঠককে টানে না সে বিষয়ে ১৯৯৯ সালের এক সকালবেলা ছফাকে আমি প্রশ্ন করি। জবাবে ছফা বলেন ‘তিনি [লুঙ্গিপরা কবি] সব সময় অসত্ চিন্তা করেন, তাই লেখাগুলো সুপঠিত হয় না। উত্কৃষ্ট রচনা লেখা একজন লেখকের প্রধান কাজ। কিন্তু এ লেখকের লেখা পাঠককে কামড়াতে আসে বলে মনে হয়। এক লাইন পড়লে আরেক লাইন পড়তে আর ইচ্ছে হয় না। তাদের লেখায় তেমন সার পদার্থ থাকে না। গুটিকয় শিষ্য আছে যারা তার লেখা কষ্ট করে পাঠোদ্ধার করে মাত্র।
এই ধরনের স্মৃতিচারণ বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অন্যতম প্রধান অবলম্বন। এব্যাপারে কিছু কথা বলার দরকার আছে। সিদ্দিকুর স্মৃতিকথার চেনা-ছক অনুসরণ করেই ওপরের কথাগুলো লিখেছেন। ‘চোগলখুরি’ সম্পর্কে তাঁর রুচিগত বিশেষ হুশিয়ারি থেকে তিনি কারো কারো নাম উহ্য রেখে পরিচয় দিচ্ছেন, যেমন ‘লুঙ্গিপরা কবি’ বা ‘ঝুটিবাঁধা পুরুষ’। স্মৃতিকথার ঐতিহ্য মেনে তিনি সন বলতে পারছেন—১৯৯৯ সাল। কিন্তু দিন-তারিখের উল্লেখ নেই। ফলে, এক অনির্দিষ্ট সকালবেলা ছফাকে লেখক অত্যন্ত নির্দোষ ভঙ্গিতে প্রশ্ন করছেন, ‘এই লুঙ্গিপরা কবির লেখা পাঠককে টানে না কেন?’ এর ব্যাখ্যা হিসাবে ছফা জানাচ্ছেন, এই কবি ‘সব সময় অসৎ চিন্তা করেন,’ তাঁর লেখাতে ‘তেমন সার পদার্থ থাকে না,’ ‘গুটিকয় শিষ্য’ কষ্ট করে একটু পড়ে-টড়ে ইত্যাদি। ছফা’র জবান হিসাবে এই সাক্ষ্যটুকু গ্রহণ করা গেলে মাইকেল জ্যাকসন তরিকার এই হতচ্ছাড়া কবিকে খুব একচোট শিক্ষা দেওয়া যায় এতে সন্দেহ নাই। চোগলখুরির পরিতৃপ্তি হিসাবেও সাহাবা-নিঃসৃত এই বাণীখণ্ডটুকু গলায় বেঁধে ঘুরে বেড়ানো যায়। কিন্তু লুঙ্গিপরা এই হতভাগ্য কবি সম্পর্কে ছফার এহেন বুদ্ধিদীপ্ত মূল্যায়ন মনে রাখলে সিদ্দিকুরের আগেই বলে ফেলা একটি বাক্যের মর্ম বুঝতে পারা কঠিন হয়ে পড়ে। সিদ্দিকুর নিজে থেকেই জানাচ্ছেন ‘এ কবির সঙ্গে প্রতিদিন খুব সকালে ছফার অন্তত আধাঘণ্টা টেলিকথন হত’। এই অকালকুষ্মাণ্ড কবির সঙ্গে মহাত্মা ছফা রোজ সকালে ‘অন্তত আধাঘণ্টা’ ধরে তাহলে কি ফুসুর-ফাসুর করতেন?
আমার একটি প্রস্তাব হলো, স্মৃতিকথা মাত্রই নির্বিচারে গ্রহণ করা সঙ্গত নয়। বুদ্ধিজীবী সমাজের কাছে যে সাধারণ সততা প্রত্যাশিত থাকে সেইটা আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবীরা খুব তেমন দেখান বইলা মনে পড়তেছে না। ৭ মার্চের ভাষণে শেখ মুজিবুর রহমান ‘জিঁয় পাকিস্তান’ বলছেন কিনা এই ব্যাপারে দুরকম সাক্ষ্য বাজারে চালু আছে। একদল অশীতিপর বৃদ্ধ নিজের কানে বঙ্গবন্ধুকে এই কথা বলতে শোনেন, অন্যদল শপথপূর্বক নিজের ইন্দ্রিয়কে সাক্ষী রেখে বলেন, বঙ্গবন্ধু অমন কথা মুখে আনেন নাই। বিশেষত, কোনো বিশেষ ব্যক্তির প্রতি বিদ্বেষ, পররতিচর্চা, চোগলখুরি ইত্যাদি প্রেরণায় স্মৃতিকথার যেসব অংশ লিখিত হয় সেগুলোর ব্যাপারে বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার। এখন পরিস্থিতি এমন দাঁড়াচ্ছে যে, কোনো বুদ্ধিজীবীর স্মৃতিকথাই আর নির্বিচারে গ্রহণ করা সঠিক মনে হচ্ছে না।
কবির কীর্তিমালার দিকে আরো একবার ফেরা যাক। ‘ছফার মৃত্যুর পর যতগুলো আলোচনাসভা হয়েছে তার প্রায় সবগুলোতে এ কবি প্রতিবেশী একটি রাষ্ট্রবিরোধী হিসেবে ছফাকে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছেন।’ এটা অপচেষ্টা, এইটা ইতিহাসের খেলাপ। সত্যি বলতে কি, ছফা আসলে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রেমে পড়ছিলেন। এর অকাট্য প্রমাণ হিসাবে সিদ্দিকুর জানাচ্ছেন, ছফা ‘ভারতে বসেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ওপর প্রথম বই, উপন্যাস ”জাগ্রত বাংলাদেশ” লিখেছিলেন’। [জাগ্রত বাংলাদেশ উপন্যাস নয়]
এবার দ্বিতীয় রাবণ। এঁর দোষ তিনি যুগপৎ শিক্ষক ও ঝুটিবাঁধা। তিনি শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির নিন্দা করেন ও দূর্বোধ্য রচনা লিখে আলোচনায় থাকেন (যা বোঝা যায় না সেইটা তাহলে আলোচনা-বান্ধব)। তিনি লুঙ্গিপরা কবির সঙ্গে মিলেমিশে ‘আহমদ ছফা সম্পর্কে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য যেসব কবি শুদ্ধ বাংলা লিখতে ও পড়তে জানেন না, তাঁদের খুঁজে খুঁজে বের করেন এবং তাঁদের দিয়ে প্রায়ই আহমদ ছফা স্মারক বক্তৃতা করান।’
কিন্তু এই রাবণের গুষ্টিকে তো নির্বংশ করা লাগবে। নইলে ছফা-চর্চার কী হবে? ছফার এতিম কিতাবগুলার কি হবে? ছফার সবেধন নীলমণি কীর্তি ইশকুলের কী হবে? তথাকার তালেবে এলেমদের কী হবে? সিদ্দিকুর তাই জেহাদি কণ্ঠে সারা দেশের মর্দে মুজাহিদ পানে আওয়াজ তুলছেন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলা একাডেমীতে ছফার কয়েকজন তরুণ ভক্ত-শিষ্য আছেন। গত কয়েকবছরে তাদের মনে তাগিদ এসেছে যে, লুঙ্গিপরা কবি ও ঝুটিবাঁধা শিক্ষক দু জন মিলে ছফাকে যেভাবে উপস্থাপন করছেন, তা বন্ধ করতে কলম ধরা দরকার।
বিলুপ্ত-প্রায় ছফা-সংরক্ষণে বিপ্লবী ডাক আসিয়াছে। রাত পোহাবার আর দেরি নাই। মা ভৈঃ!
সিদ্দিকুর রহমান খান-এর লেখার লিংক: Click This Link