পৃথিবীর সব আন্দোলনের সময়ই জনগণ সাধারণত তিন ভাগে ভাগ হয়ে যায়। একদল পক্ষে, এক দল বিপক্ষে, আরেক দল নিউট্রাল। শেষ দলকে নিউট্রাল বলা হলেও, এতে আসলে নানা ধরণের মানুষ থাকে। যেমন, এদের কেউ কেউ আন্দোলনের পক্ষ বা বিপক্ষ যে কোন একটিকে সমর্থন করে, কিন্তু ঝামেলার আশংকায় তা প্রকাশ করে না। কিছু আছে শান্তশিষ্ঠ। দিন দুনিয়ার ঝাঝালো অবস্থা এরা শিশুদের চোখে দেখে। এরা ঝামেলা অপছন্দ করে বলে আন্দোলনও অপছন্দ করে। কিছু আছে ভালো। এরা কোন একটা পক্ষে যেতে চায়, কিন্তু পারিবারিক বা অন্য কোন সমস্যার কারণে নিজকে গুটিয়ে রাখতে বাধ্য হয়। আরেক দল আছে, বোধ বুদ্ধিতে খাটো। ঝামেলা করতে এদের আপত্তি নেই, কিন্তু কোন দিকে যাওয়া উচিত তারা ঠিক ঠাওর করে উঠতে পারে না। আরেক দল আছে সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ। তারা সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। নিজেদের গা বাচিয়ে যতটুকু সম্ভব আন্দোলন থেকে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে। এই নানান কিসিমের মানুষে ভরা লোকদের এই দলটিকে আমরা এই আলোচনায় নিউট্রাল না বলে ‘আম-পাব্লিক’ বলতে পারি।
আম-পাব্লিকরা আন্দোলনের পক্ষে বা বিপক্ষে থাকে না। কিন্তু আন্দোলনের সুফল ভোগ করে। আন্দোলনের ফল মিষ্টি হলে এরা বলে, আন্দোলনটা মজা ছিলো। আহ কী মিষ্টি! আন্দোলনের ফল টক হলে এরা বলে, আন্দোলনটা টক ছিলো। ওয়াক কী টক! আন্দোলনের আগে বা আন্দোলন চলাকালীন সময় এরা মুখে কুলুপ এঁটে রাখে। আন্দোলনের ফসল ঘরে আসার পর, ফসল টিপেটুপে নজর করে দেখে তারপর তারা আন্দোলনের পক্ষে বা বিপক্ষে তাদের মূল্যবান মন্তব্যটি প্রকাশ করে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, আন্দোলনটি সফল বা ব্যর্থ যে কোন একটি ফলাফলে চলে আসার পর এই আম-পাব্লিকরাই সবচে বেশী সক্রিয় হয়। এমনকি কখনও কখনও এরা আন্দোলনের ক্রিয়াশীল অংশ(আন্দোলনের পক্ষে বা বিপক্ষের লোক)-দের চেয়েও বেশী সক্রিয় থাকে। এরা আন্দোলনের আগের অবস্থার সাথে পরের অবস্থার তুলনা ও চুলচেরা বিশ্লেষণ করে নানা মূল্যবান মন্তব্য প্রদান করতে থাকে!