somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আইভরি কোষ্টে বিয়ে করতে চাইলে পাত্রীর বাবাকে তুলে দিতে হয় নগদ অর্থ ও মদ

২৪ শে জুলাই, ২০০৭ সন্ধ্যা ৭:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আইভরিকোস্টের আইন ও সমাজ ব্যবস্থায় বিয়ে করতে চাইলেই পাত্রকে পাত্রীর বাবার হাতে আগে নগদ অর্থ ও মদের বোতল তুলে দিতে হবে। আর স্বামীর মৃত্যু হলে দেবরকে বিয়ে করতে হবে। নতুবা স্বামীর বাড়িতে সন্তানদের রেখে চলে যেতে হয় পিতার কাছে। অধিকাংশ তরুণীর প্রেমিকের সাথে বিয়ে হয় সন্তান জন্মের পর। বয় ফ্রেন্ড কিংবা প্রেমিকের সাথে বসবাস ও অবাধ মেলামেশার অধিকার রয়েছে। পুরুষদের তুলনায় নারীরা বেশি পরিশ্রমী। স্বামী উপার্জন করে ও স্ত্রী ঘরে বসে থাকে না। তারা সকাল-সন্ধ্যা বাইরে কাজ করবেই। শহর কিংবা গ্রামের বাজার হোক না কেন দোকানে বিক্রেতা হিসাবে সব বয়সের নারীদের দেখা যাবে। বেশীরভাগ পুরুষই অলস।

জেন্যুলা রেডিওর নিউজ সেকশনের প্রধান অলিভার। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের খবর পেয়ে তিনি নিজেই দেখা করতে ছুটে আসেন। অলিভার জানালেনঃ তার বাবা স্কুল শিক্ষক এবং মা ফল বিক্রেতা। আবিদজান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় প্রেম করলেও বিয়ে করতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। এর প্রধান কারণ তারা জন্মসূত্রে আইভরিয়ান নন। আইভরিকোস্ট স্বাধীন হওয়ার পর তার বাবা ও মা বারকিনাফাসো থেকে এদেশে এসেছিলেন।

অলিভারের জন্ম বোয়াকে শহরে। আইভরিয়ান না হওয়ার কারণে বিয়ের জন্য প্রেমিকার পিতাকে রাজী করাতে পাঁচ বছর সময় লেগেছিল। প্রেমিকার পিতা গত মার্চ মাসে বিয়েতে মত দেন। এরপর অলিভার নগদ এক লাখ ১০ হাজার সিফা ও ১০ বোতল মদ নিয়ে প্রেমিকার পিতার হাতে দেন। গত এপ্রিলে বিয়ে করে বউ ঘরে উঠিয়ে নেন।

নগদ অর্থ প্রদান ও মদ দেয়া আইভরিয়ান নিয়ম। মেয়েকে লালন-পালন করতে বাবার যে খরচ হয় তাকে সম্মান দেখানো এবং বিয়ের আয়োজন করতে নগদ অর্থ দেয়া নিয়ম। মদ হচ্ছে আমোদ-ফুর্তি করার জন্য। সমাজে ছেলের অবস্থান বিবেচনা করে নগদ অর্থ ও মদ দাবি করা হয়। অলিভার জানানঃ স্বামীর মৃত্যু হলে স্ত্রীর জীবন কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়। দুই পরিবারের প্রথম সিদ্ধান্ত হচ্ছে স্বামীর ছোট ভাই থাকলে তাকে বিয়ে করতে হবে। মেয়ে যদি তার দেবরকে বিয়ে করতে রাজী হয় তাহলে সন্তানদের কাছে রাখতে পারবে এবং স্বামীর সম্পত্তিতে অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু দেবরকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে মৃত স্বামীর সম্পত্তির কিছুই পাবে না। একই সাথে স্বামীর বাড়িতে সন্তানদের রেখে একাকী বাবার বাড়িতে ফিরে যেতে হয়।

আইভরিকোস্টের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট হেনরি কোনান বেদীর এলাকা ডাউক্রোর যুবক মুসা জানান, বিয়ে হবে ধর্মীয় নিয়ম মেনে। তবে ধর্ম যাই হোক না কেন আইভরিয়ান আইনে মেয়ের বাবাকে নগদ অর্থ ও মদের বোতল দিতেই হবে। মুসার পিতা আহসান ১৯৫৮ সালে মালি থেকে আইভরিতে এসেছিলেন। পেশায় ছিলেন লরি চালক। মা সিতা বেগম ২০০৫ সালে মারা যান। তার স্ত্রী হাওয়া ডাউক্রো বাজারে ফলের ব্যবসা করেন।

অলিভার ও মুসা আরো জানান, শিক্ষিত পুরুষরা চাকরি কিংবা ব্যবসার সাথে জড়িত। তদুপরি পুরুষদের সিংহভাগ অলসভাবে সময় কাটিয়ে দেয়। মা-বোন কিংবা স্ত্রীর উপার্জনে সংসার চলে এবং এই অলস পুরুষরা বসে বসে খায়। তারা এতোটাই অলস যে বাসার সামনে অথবা বাজারে একটি চেয়ারে হেলান দিয়ে অন্য চেয়ারে দু’পা উঠিয়ে পুরো দিনটাই পার করে দেয়। এই দু’জনের কথার সত্যতা পাওয়া গেছে পুরো আইভরিকোস্টে। মেয়েরা দোকান, হাট-বাজার ও ক্ষেতে কাজ করার পর বাড়িতে ফিরে সংসারের কাজ করে। প্রতিটি শহরের ফুটপাতে ছোট ছোট টং দোকানে পসরা সাজিয়ে নারীরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে থাকে।
বিঃদ্রঃপোষ্টের সঙগে ছবির কোনো সম্পর্ক নাই
৫৫৫ বার পঠিত
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

১. ২৪ শে জুলাই, ২০০৭ সন্ধ্যা ৭:৪৫

পল্লব বলেছেন: জেনে আনন্দিত হলাম। ৫

২. ২৪ শে জুলাই, ২০০৭ সন্ধ্যা ৭:৫০

ভাস্কর চৌধুরী বলেছেন: দারুন তো!

আগে জানা ছিল না।

৩. ২৪ শে জুলাই, ২০০৭ রাত ৮:৪৯

আন্ধার রাত বলেছেন: আহারে বাংলাদেশ যদি আইভরি কোষ্ট হতো, তাহলে আজ আমি কত সুখে থাকতাম।

৪. ২৭ শে জুলাই, ২০০৭ সন্ধ্যা ৬:২১

নাজিরুল হক বলেছেন:

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতার ঘোষক কে?

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:২৭

মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ১৯৫৭ সালের কাগমারী সম্মেলনে "আসসালামুয়ালাইকুম" বলে পাকিস্তানকে বিদায় জানানোর ঘটনা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। তিনি তখন পূর্ব বাংলার জনগণের অধিকার, ভাষা, ও স্বাধীনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেলিম অনোয়ারের ব্যান নিয়ে আপনি কিছু বলছেন না কেন?

লিখেছেন জেনারেশন৭১, ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:৩৫



এই ব্লগে কাকে ব্যান, সেমিব্যান, কমেন্ট ব্যান করলে আপনি খুশী হয়ে থাকেন? চাঁদগাজী/সোনাগাজীকে নিশ্চয়ই; এটা ভালো! চাঁদগাজী/সোনাগাজী "ব্যক্তি আক্রমণ" করে থাকে। সেলিম আনোয়ার কি আক্রমণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ষড়যন্ত্র করে অন্য দেশের সাহায্য নেয়া আওয়ামীলীগের পুরানো অভ্যাস

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:২৭

বহুদিন পর্যন্ত এই দেশের লোক জানতো যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা মিথ্যা ছিল। জনগণের ধারণা ছিল শেখ সাহেবকে শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যে পাকিস্তানের শাসকরা এই মামলা সাজিয়ে ছিল। কিন্তু বেশ কয়েক... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুনির মুখে ইতিহাস শিক্ষা ও অধঃপতিত মানস

লিখেছেন sabbir2cool, ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৯:৩৪


বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি মেজর শরিফুল হক ডালিমকে প্রকাশ্যে এনেছেন আলোচিত ফেসবুক-সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন। গত রোববার (৫ জানুয়ারি) রাতে ইলিয়াস ‘বিশেষ লাইভে যুক্ত আছেন বীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবার আসিবো ফিরে.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১০:৩৪

আবার আসিবো ফিরে.....

যেখানে গেলে অনেকদূর অব্দি মাঠ দেখা যায়, কচি রোদের তাপে পুড়িয়ে নেওয়া যায় পিঠ। রাতের আলো আঁধারিতে সমস্ত কোলাহল সরিয়ে রেখে খোলা যায়গায় দাঁড়িয়ে নিঃশ্বাস বন্ধ করলেই পোকাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×