একদিন কবিতায় পৃথিবীর সব দেনা করে দেবো শোধ,
টাকাকড়ি, সম্পদ, কিংবা সম্পর্কের দেনা পাওনা, কিংবা ভালোবাসা,
একদিন সব ঋণ মুক্ত হয়ে হবো পাখি, মনকে দিই প্রবোধ,
এমন দিনও আসবে যেদিন থাকবেনা কোন দেনা দায়!
এই জীবনমঞ্চে তবু হায়,
কবিতা বড় বেশিই দুর্মূল্য, বাজারে বিকেনা,
বিকেনা অবস্তুর বাজারে - সম্পর্কের কিংবা হৃদয়ের
তবু এ আপাত মূল্যহীন কবিতার দেবতারেই করে যাই স্তুতি,
তবু এই ক্ষুধা-তৃষায় মরে যাবার এই প্রস্তুতি।
বিপন্ন বিস্ময় বুঝি বলে এরে, বুঝি এর নাম
জীবন-সংসারভীতি কিংবা অনর্থনীতি!
জীবনের গ্লানি আর ক্লেদ ক্লান্ত করে দিয়ে গেলে
তমিস্রার মত হয়ে গেলে জীবনের রঙ
কিংবা জীবনের জৈবনিক রূপে আকৃষ্ট না হলে পর
মৃত্যুর দিকে যার নিয়তি স্থির - স্বেচ্ছামৃত্যুর দিকে,
ট্রাম কিংবা স্বাভাবিক মৃত্যুদুতের দিকে তার যাত্রা
থামবার নয়, এ জীবন তবুও তো জীবন নয়
আরো ঢের জীবনের স্বাদ, প্রেম, বেচে থাকা আর
সম্পর্কের জটিল ঘুর্ণাবর্ত জমে আছে কবিতায় কবিতায়, চিত্রকল্পে,
জলজ ঘ্রাণ, ঘাসের রঙ আর শ্রাবস্তীর কারুকার্যের মাঝে!
আরো অঢেল জীবনের গান জেগে আছে তোমার
আর আমার - মানবের কলম ফুড়ে বেরিয়ে আসা কবিতায়,
নিতান্তই অনর্থক, না বিকানো কবিতার পঙক্তিতে,
এ যাপনের ক্লান্তি-ক্লেদ-অক্ষমতাদেরও কবিতার মোড়কে তাই মনে হয় আদতে বিপ্লবাত্মক,
নির্জলা জীবনের মদ এই কবিতাই, বাকিটা জল
সম্রাট আমরা এই কবিতায়ই, বাকিটাতে ভিখিড়ি,
বিজয়ীর বেশে সকলের ঈর্ষা কবিতাই, বাকিটা অথর্ব সময়ের গান!
তবু এ যাপন, তবু এ জীবন, জীবনের স্বাদ আমারে
টানে, তোমারেও টানতো জানি, ভবিষ্যতের কাউকেও
মায়াবীর এই যাপন এভাবেই টানবে।
থুত্থুরে অন্ধ পেচার মত এই জীবনের স্বাদ,
এই শূন্য ভাড়ার রেখেই তোমার মতই মিলাবো হাওয়ায়,
আরো কত ঢের স্বপ্নই তো দেখেছে এ দুচোখ,
এই উজ্জ্বল স্বপ্নের মত স্বর্গীয় নয় আর কিছুই।
২২ - ১০ - ২০২১
ঢাকা
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:১৩