প্রয়াণ দিবসে উদ্ধত শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি কবি নাজিম হিকমত!
কবিতা যেকোন অস্ত্রের চেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র, কবিতা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে অবিরাম প্রতিবাদ! ক্ষমতার কাছে নতজানু কবিতা নয়, বারুদগন্ধী কবিতা, বিস্ফোরণপ্রবণ কবিতা, নাজিম হিকমত, নেরুদা, মায়াকোভস্কি, নজরুলের কবিতা! যতদিন এই পৃথিবীতে বন্ধুকের নল, ক্ষমতার আস্ফালন টিকে থাকবে, আগুন আগুন কবিতারাও ঠিক ততদিনই প্রচন্ড প্রতিবাদে শব্দের গোলা ছুড়তে থাকবে! এই ভয়েই তো জেলবন্দী করা হয় শব্দ-সৈনিক নাজিম হিকমতকেও। জীবনের বড় একটা অংশ যার জেলেই কেটেছে। শিকল পরেই শিকলকে বিকল করে চলেছেন আজীবন! তাঁর মত কবিদের কবিতার বিপ্লব এই বিশ্বকে আরো মানবিক করে তুলুক!
...
সংক্ষিপ্ত জীবনী -
নাজিম হিকমত একজন তুর্কি কবি। জন্ম তুরষ্কে হলেও ক্ষমতাসীনদের রোষানলে পরে জীবনের বিরাট একটা অংশ কেটেছে অন্য দেশে। মস্কোতে কেটেছে তার অধিকাংশ জীবন। সেখানে রাশিয়ান কবি মায়াকোভস্কির সাথে পরিচয় হয়েছে। দুইজনেই ছিলেন বামপন্থী আদর্শে উজ্জীবিত। মাত্র ১৭ বছর বয়সে প্রকাশিত হয় তার প্রথম কবিতা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর পরাধীন তুরস্ক থেকে রাশিয়ায় চলে যান। ১৯২৪ সালে তুরষ্কের স্বাধীনতার পর দেশে ফিরে আসেন। কিন্তু বামপন্থী একটি পত্রিকায় কাজ করার অপরাধে অচিরেই গ্রেফতার হন। পরে মস্কোতে পালিয়ে যান।
১৯২৮ সালে পুনরায় তুরষ্কে আসার অনুমতি পান। পরবর্তী ১০ বছরে তিনি সাংবাদিক, অনুবাদক হিসেবে কাজ করাকালীন প্রকাশ করেন ৯ টি কবিতার বই। এরপর পুনরায় দীর্ঘ কারাবাসের পর ১৯৫১ সালে শেষবারের মত তুরষ্ক ত্যাগ করে সোভিয়েত ইউনিয়নে চলে যান। এবং কমিউনিজমের পক্ষে কাজ করতে থাকেন। এসময় রাশিয়ান ফিউচারিস্টদের প্রভাবে এসে কবিতার গতানুগতিক ফর্ম পরিত্যাগ করেন। অবশ্য ইতোমধ্যেই প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
১৯৬৩ সালে হার্ট এটাকে মৃত্যুবরণ করেন। নাজিম হিকমত বিংশ শতাব্দীর অন্যতম একজন আন্তর্জাতিক কবি হিসেবে স্বীকৃত।
জেলখানার চিঠি কবিতাতে লিখেছেন, "মানুষের মুন্ডুটাতো আর বোটার ফুল নয় যে ইচ্ছে হলেই টান দিয়ে ছিড়ে নেবে!" কী অসাধারণ!
তার প্রতিবাদী কবিতাগুলো মুক্তিকামী, মাটির কাছাকাছি মানুষের কাছে চিরদিন প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
.
*পুনশ্চ - শহরতলী ব্যান্ডের 'জেলখানার চিঠি' শুনতে পারেন। নাজিম হিকমতের কবিতার বারুদের গন্ধ পাবেন বেশ ভালোমতই !
শুনতে পারেন এখানে - জেলখানার চিঠি
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০২১ বিকাল ৫:০৫