জীবনের ছাব্বিশ শরৎ কাটায় আইসা পরে,
এক আজব মানুষ বইলাই মনে হয় নিজেরে।
বুঝি যে আমি এক অনাবিষ্ক্রিত মানুষ,
অবিক্রিত মানুষ,
নেক্রোফিলিক মানুষ,
হতাশ মানুষ।
মানুষের সংজ্ঞায় কোনমতে এটে যাই,
মানুষ্যত্বের পরীক্ষায় আমি তেত্রিশ - টেনেটুনে পাশ,
মানুষের সমাজে আমি আপাত সাফল্যের স্বপ্নে আদতে হতাশ!
.
হৃদয়ের আধা শতাংশ তোলপাড় করে জানি-
আমি এক হতাশ মানুষ,
ব্যর্থ মানুষ,
ঊনমানুষ,
পিশাচ মানুষ,
তবু তো মানুষ!
আত্মশ্লাঘায় কাটিয়ে দেই হৃদয়ের তিনশ ষাট ডিগ্রি ঘূর্ণনকাল!
.
সন্যাসির জটা আছে,
জটাতে সন্যাসি যায় চেনা,
বক্তৃতায় রাজনীতির ঘোড়েল নেতা,
মেকী আন্দোলনে পরিচিতি পায় জনবিচ্ছিন্ন, ছদ্ম-জননেতা!
আমার ছদ্ম-ব্যাথিত, ছদ্ম-স্বাপ্নিক চোখ নিয়ে নিজের কাছেই আমি - অদ্ভুত, অচেনা!
.
বিস্মৃত পুঁথির মত আমিওতো চাই আবিষ্কৃত হতে ভিন্ন কোন
মানুষেরই কাছে,
মানুষীর কাছে, হৃদয়ের কাছে।
চাওয়াটা আদিম ঐতিহ্য তবু প্রাপ্তিটা সুদূরের নক্ষত্র জেনে
ভবিষ্যতের দিন জমাই।
তবু তো ঠেলেঠুলে চলে যায় জীবনের ঠেলাগাড়ি,
তবুও তো কাটাই শ্বাপদ ঘূর্ণি সময় পাশে নিয়ে জীবনের তৃতীয় নারী!
.
আমি এক বিকৃত, লোভী মানুষ,
শতাব্দীর নবীন অন্ধকারের দ্বারে একা,
একা কড়া নাড়ি ঠক ঠক ঠক,
সব অব্যাক্ত, অসংজ্ঞায়িত বোধের দরোজায়!
ঘাই হরিণীর উদ্দাম চিৎকার উপেক্ষা করে জটায়ুর মত রক্তাক্ত পরে থাকি,
কাঠঠোকরার মত ঠোকড়াই জীবনের বায়ব-খোড়ল বানাই!
আমি একা তবু নির্জন দ্বীপে নই
জনবিচ্ছিন্ন উপদ্বীপে নই,
পদ্মার পলিদ্বীপে নই,
সমুদ্রের মধ্যে ভাসমান নৌকার ভগ্নস্তুপ ধরে ভেসে থেকে নই!
এই জনবহুল নগরীর প্রাণকেন্দ্রে বসে নিউরোটিক নিস্বঙ্গতায় মরে যাই বারবার!
অনাবিষ্কৃত, ব্যাথিত, সময়ের গিলোটিনে কাটা পরা হৃদয়ের অধিকারী হয়ে
জীবনের নিজস্ব যাত্রাদল চালাই!
.
ভীষণ ক্লান্ত, বিদ্ধস্ত, হতাশ আমি -
তবু তোমাদের প্রেরণার বুদ্বুদ হাওয়ায় উড়িয়ে চলি!
আমি অবাঞ্ছিত স্বপ্নের শ্রাদ্ধশান্তি করে সময়ের জীবন গোঙাই!
নিতান্ত স্থবির আমার চোখ ধাঁধিয়ে চলে তোমাদের স্বপ্নের আশনাই!
নিজের হৃদয়ের দিকে চেয়ে দেখি যে আমি আমিই ছিলাম,
সে আর আমি-নাই!
২৪-০২-২০২০
টিএসসি, ঢাবি
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:২৫