২১ শে ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ছুটির দিন। ফজরের নামাজ পড়ে প্ল্যান মাফিক খুব ভোরেই রওনা দিলাম সোনারগাঁও এবং পানাম সিটির উদ্দেশ্যে। সফরসঙ্গী কাজিন গালিব। ৬:৩০ টায় মোহাম্মাদপুর থেকে "সিটিবাস"-এ গুলিস্তান (ভাড়া ২০ টাকা)। ভোরবেলা হওয়াতে বাস এবং রাস্তা প্রায় ফাঁকাই ছিল। গুলিস্তান থেকে সিটিং বাস "দোয়েল"- সোজা সোনারগাঁও (ভাড়া ৪৩ টাকা)। ৯টার আগেই পৌঁছে গেছি দেশের ঐতিহাসিক স্থান পানাম সিটি (এন্ট্রি ফী জনপ্রতি ১৫ টাকা)। একসাথে সারি বেঁধে প্রায় ৬০টির মতো দালান। মনে হয় পৃথিবীর কোন প্রাচীন নগরীর ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে আছি। কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করলাম এ মাথা থেকে ও মাথা। মেঘলা আকাশ, সাথে মৃদু শীতল হাওয়া। প্রাচীন নগরী, ভবনগুলোর আভিজাত্য সাথে মনমাতানো পরিবেশ খুব উপভোগ করলাম।
কিছুক্ষণ পর রওয়ানা দিলাম সোনারগাঁও এর লোকশিল্প জাদুঘর ও পার্ক দেখার উদ্দেশ্যে। এখানে জনপ্রতি ২০ টাকা-র টিকেট কাটতে হবে। লোক সমাগম খুব একটা ছিলনা। প্রবেশ মুখেই পড়বে রাজবাড়ী। পুকুরপাড়ের এ রাজপ্রাসাদ আপনার নজর কাড়বেই। চার দিক ঘুরে দেখলাম। পুকুর পাড়ে বসলাম কিছুক্ষণ। আবহাওয়া আর প্রকৃতির এমন মিশ্রনে হৃদয় উদ্বেলিত হল। এরপর গেলাম জাদুঘরে। মোঘল আর প্রাচীন বাংলার বিভিন্ন ব্যবহৃত আসবাব ও সামগ্রী দিয়ে সাজানো এ জাদুঘর। জাদুঘর পরিদর্শন শেষে হেঁটে পুরো পার্কটা ঘুরে দেখলাম। বিশাল বিস্তৃত এরিয়া নিয়ে পার্ক টা করা। রাজধানীর পাশেই এতো বড় পার্ক থাকবে এটা আমার কল্পনাতেই ছিলনা। ভেতরে যথেষ্ট পরিমাণে পাবলিক টয়লেট, একটু পর পর বসার ছাউনী, পাকা বেঞ্চি, গাছের ছায়া। কেনাকাটার জন্য বেশ দোকানপাটও আছে দেখলাম। ভালো লেগেছে দোকানগুলো মাটির অথবা টিনের, গ্রামীণ থিমটা বজায় রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে খাবারের মূল্য তুলনামূলক বেশী।
বেলা ১২ টার দিকে রওনা দিলাম ঢাকার দিকে। মোগরাপাড়া থেকে বোরাক এসি বাস (ভাড়া মাত্র ৫০ টাকা)। গন্তব্য গুলিস্তান।
ভ্রমণপিপাসুদের জন্য একটাই উপদেশ - সকাল সকাল রওনা দিলে আরাম করে ঘুরে ফেলতে পারবেন, কারণ একটু বেলা হলে প্রচুর ভীড় হয়ে যায়। সোনারগাঁও জাদুঘর সাপ্তাহিক বন্ধ বুধ ও বৃহস্পতিবার এবং পানাম সিটি রবিবার বন্ধ থাকে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৪