somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার শৈশব, কৈশোর আর তারপরের লাগামহীন দিনগুলি - ৫

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১২:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই পর্বে শৈশব অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটবেঃ

মাঝে মাঝে দেখতাম দাদু কাঁদছে। তার হাতে দেখতাম আব্বু কিংবা চাচ্চুদের চিঠি। আমি দাদুর কোলে যেয়ে চুপ করে বসে থাকতাম, দাদু চুলে হাত বুলিয়ে দিতেন। একসময় আমাকে জড়িয়ে ধরে আরেকটু বেশী কান্না করতেন, তারপরে শান্ত হতেন। আম্মুকেও দেখতাম চুপিচুপি কাঁদছে। আম্মুর সাথে তেমন সখ্যতা না থাকলেও কান্না করার সময় আম্মুকে বাচ্চা মেয়েদের মত লাগতো। আম্মু কান্না করতো বাচ্চা মেয়েদের মতই। আম্মুর কান্না শুনলে কেন জানি আমার হাসি লাগতো, তারপরেও যেয়ে চোখের পানি মুছে দিয়ে কোলে বসে থাকতাম। আমাকে দেখলে আম্মুর কান্নার শব্দ বেড়ে যেত, কান্না চেপে রাখার চেষ্টা করাতে হেসকি উঠত। আমি অনেক কষ্টে হাসি চেপে রাখতাম। মাঝে মাঝে চিঠি লিখতে বসতাম আব্বু এবং চাচ্চুদের কাছে। দাদা শিখিয়ে দিতেন,”লেখো, পরসমাচার এই যে, আমি এই বছর পরীক্ষায় প্রথম স্থান পাইয়াছি, আপনাদের দোয়া একান্তভাবে কাম্য।“ চিঠির শেষে সুন্দর করে নিজের নাম লিখে দিতাম। চিঠি লেখা শেষ হলে মনে পড়তো যে আমার খেলনা চাওয়ার কথা মনে নেই, তখন চিঠির আশেপাশের যে জায়গা ভদ্রতাবসত রাখা ছিল সেখানে লেখা শুরু করতাম।



ছোট বেলা থেকে আকাশের তারার প্রতি একটা ঝোঁক ছিল আমার। সন্ধ্যার পরে ঘরের সিঁড়িতে বসে তারা দেখতাম। জোনাকি ধরতে ইচ্ছে করতো। প্রজাপতিরা উড়ে যেত। গ্রীষ্মের বিকেলে ফড়িং আর প্রজাপতির মেলায় আনন্দ মিশে থাকতো। সন্ধ্যার পরে ঝিঁঝিঁ পোকা আর ব্যাঙের ডাকে অসাধারন একটা কম্পোজিশন থাকতো। সাথে থাকতো হাস্নাহেনার মিষ্টি ঘ্রান। শুকনো পাতার উপরে হাটতে যেয়ে মচমচ শব্দ শুনে আহ্লাদিত হতাম। ঝারুর কাঠি আর পলিথিনের ব্যাগ দিয়ে বানিয়ে দেয়া ঘুড়ি নিয়ে দৌড়ে বেরাতাম উঠোনের এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে। দূরের পিচঢালা বড় রাস্তা দিয়ে বেবিটেক্সি চলাচল দেখতাম। মাঝে মাঝে যখন সেখান দিয়ে বড় কোন বাস কিংবা ট্রাক চলতো মিলিয়ে যাওয়া অবধি দেখতে চেষ্টা করতাম। আকাশের তারাগুনে ক্লান্ত হয়ে ঘুমাতে যেতাম। মেঘলা দিনে আকাশের তারা গুনতে সুবিধা হতো, কারো মেঘলা দিনে গুটি কয়েক তারা উকি দিয়ে থাকতো। দেখতাম কিছু একটা জ্বলছে আর নিভছে, হ্যাঁ বিমান যাচ্ছে, একদিন আমিও উড়ে যাব এক দেশ থেকে অন্যদেশে। গাছ পাখিদের সাথে আত্মার সম্পর্ক ছিল আমার। জগদীশ চন্দ্র সম্পর্কে সাধারন জ্ঞানের বইতে পড়েছিলাম যে তিনি গাছের প্রান আবিষ্কার করেন। আমি গাছের সাথে কথা বলতাম। কিন্তু তাদের কোন কথা শুনতে পেতাম না। আমি গাছের বুকে কান পেতে শুনতে চাইতাম তারা কিছু বলছে কি না।



সারাদিনের পরে সূর্যডোবার মুহূর্তটি ছোট বেলা থেকেই আমার মন খারাপ করিয়ে দিত। গোধূলিবেলায় সবাই সব আয়োজন ফেলে যে যার মত চলে যায়। আমি চলে যাওয়া সহ্য করতে পারতাম না, ভাবতাম কেন চলে যাবে? কেন আমরা একসাথে বাকিটুক থাকতে পারবো না? এসব অহেতুক প্রশ্নের উত্তর খুঁজে ক্লান্ত হয়ে পড়তাম। দাদু দাদা যখন বলতেন তাদের চলে যেতে হবে একসময় তখন খুব খারাপ লাগতো। ভাবতাম সবাই একসাথে মারা গেলে কেমন হয়? কারো জন্য কারো খারাপ লাগবে না।



একসময় ছোট চাচা অনার্স কমপ্লিট না করে ঢাকায় চলে গেলেন, সেখানে তিনি নিজের ব্যাবসা শুরু করলেন। বাড়িতে তখন পুরুষ বলতে আমি আর দাদা। আমি নেহায়েত ছোট। চারছেলের কেউ বাড়িতে নাই বলে দাদু সময়ে অসময়ে কাঁদতেন। দাদুকে মনে করিয়ে দিতাম লাউ, শিম গাছে পানি দেয়ার সময় হয়েছে। হিন্দু বাড়ির বড় ছেলের বউ নাকি গননা জানতো। দাদু সেখানে তার ছেলেদের সম্পর্কে জানতে যেতেন। সেই মাসিমা পঞ্চিকা বের করে উপরের দিকে তাকিয়ে শনি রাহু কিসব বলতেন। তারপরে হাসিমুখে বলতেন,”আপনার ছেলেরা সবাই ভালোআছে মাসিমা, আপনি শুধু প্রার্থনা করবেন।“



দিনে দিনে সকালগুলো পরিবর্তিত হতে থাকে। পুরনোকে ঝেরে নতুন সকালের উদয় হয়। নজরুলের কবিতা রোজ সকাল বেলায় পড়তাম,
“ভোর হলো দোর খোল, খুকুমনি উঠোরে
ঐ ডাকে জুঁই শাঁখে, ফুলখুকি ছোটরে।“
মাঝে মাঝে বাড়ির ঝার জঙ্গলে হাটার ফলশ্রুতিতে বিচ্ছুর আক্রমণের স্বীকার হতাম। কিছুটা জায়গা নিয়ে মশায় কামড়ালে যেমন হয় তেমন হয়ে যেত। বিশ্রিরকমের চুলকানি হত। দাদু একটা বাটিতে সরিষার তেল গরম করে লবন মাখিয়ে কলা পাতার কচি পাতা দিয়ে লবন তেল ছুঁইয়ে দিতেন। ঘন্টাখানেক পরে কমে যেত চুলকানি। গোসলের সময়ে দাদু লাল লাইফবয় সাবান ঘষে দিতেন শরীরে মুখে চুলে। গোসলের পরে উঠোনে উলঙ্গ হয়ে দশমিনিট রোদে দাঁড়িয়ে থাকা। তারপরে গায়ে লোশন মাখিয়ে চুলে নারিকেল তেল দিতেন। থুতনিতে ধরে বামপাশে একটা সিথি করে দিতেন। তারপরে গেঞ্জি আর হাফপ্যান্ট পরে আমি আমি ফুলবাবু হয়ে ঘুরে বেড়াতাম প্রতিদিন। খাওয়ার সময় দাদু না খাইয়ে দিলে খাওয়া হতো না। মাছের পোটকা বলে যে নরম অংশ থাকে সেটা আমার চাই ই চাই। দাদা মাছের মাথা ভেঙ্গে বলতেন, মাথা চুষে খেতে হবে। সবশেষে গরুর দুধ আর ভাত, সাথে মিষ্টি আচার নয়ত মিঠাই।




অনেক ছোটবেলায় আমাদের বাড়িতে গরু দেখেছি। একবার মেয়ে গরুটা বাচ্চা ডেলিভারি দিতে যেয়ে বিপাকে পড়ে গেলো। আমরা সারারাত জেগে। পশুর ডাক্তার আনা হলো। ডাক্তার এসে ইঞ্জেকশন দিল। গরুর দুইটা বাচ্চা হল। সেই রাতের কথা একটু একটু মনে আছে। তখন আমার বয়স হবে চার সাড়ে চার এর মত। পরে গরু বিক্রি করে দিয়েছিলেন দাদা। বাড়িতে অহেতুক ঝামেলা তার পছন্দের না। আমরা অনেক কান্নাকাটি করেছিলাম। বেপারি গরু নিয়ে উঠোন পেরিয়ে চলে গেলেন। আমাদের কাজের ছেলে মতি ভাইয়ের কথা কিছুটা মনে আছে। দাদার সাথে সব কাজের সঙ্গী ছিলেন তিনি। ছোটবেলা থেকে আমি যেকোন ঘটনা মস্তিষ্কে এঁকে রাখতে পারি। তাই অনেক ছোট বেলার অনেক কিছু মনে আছে, আবার অনেক কিছুই ভুলে গেছি। আমাদের কাজের মেয়ে শিল্পি আপু ছিল দস্যি মেয়ে। বড় বড় গাছ বেঁয়ে অনায়সে উঠে আম পারতো। আমরা নীচে দাঁড়িয়ে হাতে তালই দিতাম। একবার শিল্পি আপুকে পছন্দ করলো গ্রামের বউমরা জলফু হালদার। বয়স হসে সত্তরের উপরে। আমাদের বাড়িতে ঘন ঘন এসে দাদাকে এইকথা বলতেন। দাদা শুনে বিরক্ত হতেন সেইটা আমরা বুঝতাম।



একদিন জলফু হালদার বাড়িতে বসে দাদার সাথে কথা বলছিলেন। দস্যি মেয়ে শিল্পি আপু একটা প্ল্যান করলো। আমরা হলাম দর্শক। শিল্পি আপু একটা পান বানিয়ে তার ভেতরে কয়েকটা নাগা মরিচ ঢুকিয়ে সেটা দিয়ে আসলো জলফুর মুখে। বুড়া জলফু সেই কি হা হুতাস। আমরা দূর থেকে দাঁড়িয়ে মজা দেখছিলাম। সেই দিনের পরে জলফু হালদার আর আমাদের বাড়িতে আসেনি। সেই শিল্পি আপুর বিয়ে ঠিক হল। তার মা তাকে নিয়ে গেলেন, কথামত দাদা তার বিয়ের ব্যাবস্থা করে দিয়েছিলেন।



আমাদের বাড়ির পূর্ব দিকের খালে কচুরি কাটতে আসতেন পাঁচকুড়ি খন্দকার। অদ্ভুত এক নাম। পাঁচকুড়িতে হয় একশ। মানুষের এমন নাম হতে পারে তা ছিল ধারনার বাইরে। পাঁচকুড়ি খন্দকারকে সবাই ডাকতো পাঁচকুইড়া বলে। সে কুচুরি কাটতে বসে ডাহুক পাখির মত শব্দ করতো। ইচ্ছে করে নয়, এটা ছিল তার রোগ। বাড়ির আশেপাশে ডাহুক পাখি সত্যি সত্যি ডাকলেও আমরা ভাবতাম পাঁচকুইড়া বসে বসে কচুরি কাটতেছে। আমাদের বাড়ির উত্তরের বাড়িতে একজন লোক থাকতেন যার নাম হাতকাটা। ডাকাতরা তার হাত কেটে দিয়েছিল বলে তার নাম ছিল হাতকাটা। বাড়ির অদূরে একজন দোকানদার ছিলেন কপালকাটা সুলতান। সবাই বলতো কপালকাটার দোকান। একদিন তার প্রথম বউ নাকি তাকে দা দিয়ে কপ মেরেছিল, তারপরথেকে তার কপাল থেকে নাকের উপর দিয়ে একটা দাগ গেছে। আর তার নাম হয়েছে কপালকাটা। এমন অনেক নাম ছিল যেমন মিষ্টির দোকানের নাম ঘোষাইয়ের মিষ্টি, যিনি আমাদের চুল কাটাতেন আমাদের বাড়িতে এসে তার নাম ছিল ননি নরসুন্দর ইত্যাদি।


ছোট বেলা থেকে বাবাকে তেমন দেখিনি। দেশের বাইরেই ছিলেন সেই সময়টায়। আমাদের বসার ঘরে আব্বু এবং চাচ্চুদের ছবি ফ্রেমে টানানো ছিল। সেখানেই দেখতাম আব্বুকে। তখন গ্রামে টেলিফোন ছিল না। বাবার আদর কেমন হয়, বাবার গলার স্বর কেমন হয়, বাবার গায়ের গন্ধ কেমন হয় জানতাম না। একসময় আব্বু চলে এলেন বিদেশ থেকে একেবারে। দেশে ব্যাবসা করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিলেন। প্রথম প্রথম আব্বুর কাছে যেতে লজ্জা লাগতো। আব্বু সিগারেট টানতেন। সিগারেট খেলে পাপ হয় আমি জানতাম। ছোটবেলা থেকে সিগারেটের প্রতি একটা ঘৃণা ছিল। আর আমি নিজেই এখন সিগারেটে আসক্ত। যাইহোক, আব্বুকে ভীষণ ভয় লাগতো। এরপরে ধীরে ধীরে আব্বু সম্পর্কটা সহজ করার চেষ্টা করেন কিন্তু আমি সহজ হতে পআরতাম না। আব্বুর গায়ের ঘামের আর সিগারেটের মিশেল গন্ধ ভালো লাগতো। আব্বু বেশী আদর করতেন আমার ছোট বোনকে। মেয়েদের প্রতি বাবারা একটু দুর্বল থাকেন, তাদের আবদার ফেলতে পারেন না। দুপুরের আব্বুর দুইপাশে দুই ভাইবোন শুয়ে ঘুমানর চেষ্টা করতাম। আব্বু বেসুরে গলায় ঘুমপারানির গান ধরতেন। গান না, ছরা বলা যায় সেটাকে। কারন আব্বু দুইলাইন পারতেন। এই দুইলাইনের বেশী কখনো শুনতে পাইনি,
“ আয় আয় ঘুম, ঘুমের ছালা লইয়া
দুই চোরারা বুদ্ধি করে তেঁতুল তলায় বইসা।“



আব্বুর সাথে আমি ঘুমাতে পারতাম না। তার কাছ থেকে দূরে দূরে থাকতাম বলে তিনি বিরক্ত হতেন। আমি আসলে ভয় পেতাম আব্বুকে, আর এখন আমার আব্বুই আমার সবথেকে ভালো বন্ধু। প্রতিদিন আব্বুকে ফোন না করলে অস্থির লাগে।


আব্বু সপ্তাহে একদিনের জন্য বাড়িতে আসতেন। ঢাকার সদরঘাটে লেডিস পার্ক মার্কেটে এশিয়া গার্মেন্টস নামে তিনি শোরুম করলেন। প্রতি সপ্তাহে বাড়ি আসার সময় হরেক রকম ফল নিয়ে আসতেন। আব্বুর এই অভ্যেসটা এখনো আছে। প্রতিদিন বাসায় আসার সময় হাতভর্তি ফল নিয়ে আসেন। এতবড় হয়েছি, কখনো অভাব শব্দটি তিনি বুঝতে দেননি। আমাদের কোন প্রয়োজন কখনো তিনি তুচ্ছ করেননি।


একবার আব্বু বগুড়ায় গিয়েছিলেন আমার এক ফুপ্পিকে দেখতে। আসার সময় বগুড়ার বিখ্যাত দই নিয়ে আসলেন। আমি সেই দইয়ের লোভ সামলাতে না পেরে পলিথিনের গিট খুলতে গেলাম। দীর্ঘপথ আসায় গিট শক্ত হয়ে গেছে। আমি কামড়ে গিট খুলতে যেয়ে দেখি আমার একটা দাঁত মিসিং। মানে প্রথম দাঁত পরল। কোন ব্যাথাই পেলাম না। দাঁত নাকি ইঁদুরের গর্তে ফেললে ইঁদুরের মত দাঁত হয়। আমরা ইঁদুরের গর্ত খুঁজতে লাগলাম। শেষে ছোট খাটো একটা গর্ত পেয়ে ঢেলে দিলাম দাঁত। পরে কনফিউশন দাঁত কি ইঁদুরের গর্তে ফেললাম নাকি সাপের গর্তে? এইবার যদি সাপের মত ছোট ছোট দাঁত হয়?



দেশে আসার পর পর আব্বু ব্যাবসা শুরু করলেন। ছয় মাসে মাথায় আমাদের ঢাকার জমিতে করলেন ঊলেন সোয়েটারের ফ্যাক্টরি। এবার সবাইকে ঢাকা আসতে হবে। আমার আম্মু মহাখুশি কারন তার ভাই বোন সবাই থাকে ঢাকাতে। একমাত্র অখুশি আমি আর দাদা দাদু। তারা দুজনে গ্রামের বাড়ি ফেলে কিছুতেই যাবেন না। আর আমি দাদা দাদুকে ছেরে কিছুতেই যাব না। তাছারা বছরের মাঝে আমাকে নিয়ে গেলে আমাকে আবার নতুন করে চতুর্থ শ্রেনিতে ভর্তি হতে হবে। আমাকে দাদা দাদুর কাছে রেখে তারা ঢাকার বাসায় চলে গেলেন সবাই।


সমস্ত বাড়িতে তখন আমরা তিনজন। দাদু আমাকে ধরে শুধু কান্না কাটি করেন কারন আমার বার্ষিক পরীক্ষার পরে আমাকেও নিয়ে যাওয়া হবে। আমি দাদা দাদুকে ছারা , আমাদের এই বাড়ি ছেরে কিভাবে থাকবো সেইটা নিয়ে বিশাল চিন্তায় পরে গেলাম। ঢাকায় বছরে তিন থেকে চার বার যাওয়া হতো, সেখানে শিশুপার্ক, চিড়িয়াখানা ঘুরে ভালো লাগতো। কিন্তু আমার গ্রামের এই বাড়ি ছেরে আমি থাকতে পারবো না বলে আমার বদ্ধমূল ধারনার জন্ম হলো। তখন আমার বয়স নয় থেকে দশ বছর, আমাদের আরেকটি ভাই এসেছে পৃথিবীতে। আমি নিজের সাথে দন্ধে ভুগতে লাগলাম যে বাবা মায়ের কাছে শহরে যাব নাকি দাদা দাদুর সাথে গ্রামে থাকবো।


দাদা দাদু আমাকে বুঝাতে লাগলেন, শহরে থাকলে আমার বাকি জীবন সুন্দর হবে। কিন্তু আমার সেই সুন্দরের দরকার নেই। আমি চাই মাটির সাথে থাকতে আমাদের এই গ্রামে। বার্ষিক পরীক্ষার পরে একসময় আমাকে ঢাকায় চলে যেতে হলো। এই দশটি বছর সময়কেই আমার জীবনের শৈশব সৃতি বলা যায়। সুতরাং আমার শৈশব কেটেছে গ্রামে। আর কৈশোর পর্বের শুরু হয় শহরে। আরও অনেক অনেক সৃতিঘেরা আমার শৈশব। আমার জীবনের দ্বিতীয় স্বত্বার ভিত গড়ে উঠেছে আমার শৈশবে। আমার জীবনের সবথেকে সুন্দর সৃতির সময়।

আমার শৈশব, কৈশোর আর তারপরের লাগামহীন দিনগুলি - ১
আমার শৈশব, কৈশোর আর তারপরের লাগামহীন দিনগুলি - ২
আমার শৈশব, কৈশোর আর তারপরের লাগামহীন দিনগুলি - ৩
আমার শৈশব, কৈশোর আর তারপরের লাগামহীন দিনগুলি - ৪


(পর্বভিত্তিক ভাবে চলবে)
৪৪টি মন্তব্য ৪৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিটিংয়ের জন্য কেন এত তোড়জোড়?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ ভোর ৫:১২



অর্থাৎ চীনের সহায়তায় লালমনিরহাটের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এয়ার বেইস চালুর চেষ্টা, তিস্তা মহাপরিকল্পনা চীনকে নিয়ে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা ও চীনে গিয়ে ডক্টর ইউনূসের সেভেন সিস্টার্স সম্পর্কিত বক্তব্য ভারতের ভালো লাগেনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

কানাডার প্রধানমন্ত্রী ঈদের শুভেচ্ছা এবং বাংলাদেশে এর প্রতিফলন

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ ভোর ৬:১৮



গত বছরের মতো এবছর আর কানাডার প্রধানমন্ত্রী ঈদের শুভেচ্ছা জানাননি। রোজার শুরুতেও “রামাদান করিম” শুভেচ্ছাবচনটি কেউ পাঠায়নি। আগে যখন ট্রুডো ঈদের ঠিক আগে আগে সরকারি দপ্তর থেকে কানাডার মুসলিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

অকুতোভয় বাসচালক মো. সোহেলকে পুরষ্কৃত করা হোক

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:১৭

অকুতোভয় বাসচালক মো. সোহেলকে পুরষ্কৃত করা হোক

ছবিসহ মিনি পোস্টারটি এআই দিয়ে তৈরিকৃত।

থেঁতলানো চোয়াল, ভেঙ্গে গেছে দাঁত, রক্তাক্ত অবয়ব—তবু ৪০ কিমি বাস চালিয়ে যাত্রীদের বাঁচালেন! এই সাহসী চালকই বাংলাদেশের নায়ক... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর পর যা হবে!

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:৪২



বেহেশত বেশ বোরিং হওয়ার কথা।
হাজার হাজার বছর পার করা সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। দিনের পর দিন একই রুটিন। এরচেয়ে দোজক অন্য রকম। চ্যালেঞ্জ আছে। টেনশন আছে। ভয় আছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফ্যাসিবাদ!

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:০৮



অবকাশের দিনগুলোর ছুটির ফাঁদে নিজেকে নতুন করে চেনাই-
আমার বহুদিনের চেনা শহর।
কতকিছু বদলে গেছে নাকি তারোধিক বদলে গেছে,
সুশীলের আবরণে অসুশীল মানুষ?
শৈশবে শহরটা যাদের কাছে জমা রেখে গিয়েছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×