মাননীয় সরকার বাহাদুর আমাগো ঢাকা শহর দুই ভাগে ভাগ করতে চায়! সিটি কর্পোরেশন হবে দুইটা! যুক্তি -> ১.৫ কোটি মানুষের ঢাকা শহরে একটা সিটি কর্পোরেশন দিয়া চলবে না। ৯০ টা ওয়ার্ড দুই ভাগে ভাগ কইরা দেয়া হইব। একটা ঢাকা সিটি কর্পোরেশন উত্তর, আরেকটা দক্ষিন। খুব ভাল পরিকল্পনা, উত্তম প্রস্তাব। তয় আসল কারনটা আমাগো একটু খোলাসা করলে ভালা হইত। আসেন দেখি সিটি কর্পোরেশনের এখনকার অবস্থাটা...
সিটি কর্পোরেশনেন মেয়র মানেই দলীয় ব্যক্তি। মজার ব্যপার গত ১০-১৫ বছর দেখলাম সাধারনত মেয়র হয় বিরোধীদলের! মানে ইলেকশন হয় নিজের দল সরকারে থাকার সময় এবং অবধারিত ভাবেই জয়লাভ করে! ইলেকশন হইতে হইতে সরকারের শেষ সময় হয়ে যায়। রীতি অনুযায়ী মেয়র নতুন ইলেকশন না আসা পর্যন্ত তার পদেই থাকে। ফলে বিরোধী শিবির সরকারে থাকা অবস্থায় বেশিরভাগ সময় পার করতে হয়।
সমস্যা হইছে এখনকার সরকারে তেনা থুক্কু নেতা বেশি! কারে থুইয়া কারে দিব?! সিদ্ধান্ত নিতে পারতেছে না দেইখা ডিসিসি ইলেকশন খালি পিছায়! এই জন্য দুইভাগ করাই ভাল! এই আসল কথাটা একটু পরিস্কার করলে ভাল হইত না?!
ঢাকার সবাই স্থায়ী নাগরিক না, সুতরাং নাগরিক সুযোগ নিশ্চিত করাটা এত সহজ না। তার উপর শহর এখনও গড়া হচ্ছে। ডিসিসির কাজ আমাদের নাগরিক সুযোগ সুবিধা দেওয়া। কিন্তু আসলে কি হয় আমরা জানি কি?
(নিচের অংশ পড়লে মন খারাপ হইতে পারে। নিজ দায়িত্বে পড়বেন। শিশু এবং দূর্বল চিত্তের জন্য পড়া নিষেধ! আর ইন্জিনিয়াররা কাইন্ডলি মাইন্ড করবেন না এবং পারসোনালী নিবেন না পিলিজ! শুধু উদাহরন দিলাম!)
===========================================
আমার এক কাছের বন্ধু আছে ডিসিসির সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল)। সে আমারে চাকরিতে ঢুকার পর একদিন বলল, সে যদি চুপচাপ যা করতেছে তা কইরা যায়, বছর শেষে তার একাউন্টে ৩৬ লাখ টাকা যোগ হবে! আমি শুধাইলাম কেমতে?


ধরেন আপনে বাড়ীর সামনের রাস্তাটা একটু কাটাকাটি করবেন, পানির লাইনে নাইলে গ্যসের লাইনে একটু ফ্রবলেম! ডিসিসির প্রকৌশলী বরাবর আবেদন করতে হইবে এবং লাখখানেক টাকা জামানত রাখিয়া রাস্তার কোন ক্ষতি করবেন না এই মর্মে গ্যরান্টি দিতে হইব। এগুলা অফিসিয়াল। এর বাইরে ফাইল প্রসেসিং এর জন্য কিছু খুশি কইরা দিতে হবে।



এবার আসি টেন্ডারে। টেন্ডার আসলে কখনই হয় না! যা হয় তা হইল কাগজে কলমে। এমপি আর ওয়ার্ড কমিশনাররা মাসে একবার আসেন, কে কোন কাজ পাবে ভাগ করে নিয়ে যান! একেকটা জোনে পুরা এলাকায় ওদের লোক থাকে। আপনে খালি টেন্ডার দেয়ার চিন্তা কইরেন, ঠ্যঙ ভাইঙ্গা হাতে ধরাইয়া দিব!



সিভিল ইন্জি মাত্রই জানেন একবার কাজ কমপ্লিট হইয়া গেলে সেটা কারও পক্ষে প্রমান করা সম্ভব না কি দেয়া হইছে ভিতরে! ফাকিবাজির সব বুদ্ধিতে আমাদের পারদর্শীতা জগৎবিখ্যাত! (কামটা করে কিন্তু আমজনতারই একটা অংশ) রাস্তার কামে যে চিপস (ইটের খোয়া) দেয়া হয় সেটারও ১৪ রকমের গ্রেডিং আছে! সুতরাং কাজ শেষ হওয়ার পর কারও বাপের সাধ্য নাই এটা প্রমান করে! কাজ শেষে প্রকৌ: সাইট পরিদর্শন করে (রাস্তার কাজ গুলান নাকি রাইতে হয়!) এবং রিফুর্ট করে! উল্টা পাল্টা কিছু লিখলে এক্কারে কল্লা নামাইয়া দিব! কোন উপায় নাই। এমনকি অফিস থেইকা ঝামেলায় পরবেন।




বন্ধুটা আক্ষেপ কইরা কইছিল, তার বিয়ের প্রস্তাব যেসব আসতেছে সবাই আসলে এই কারনেই আগ্রহ দেখায়!









এরমানে কিন্তু প্রকৌ: রাই সব খায় তা না। মাসে একবার ডিসি (ডিস্ট্রিকট কমিশনার) সাব বা অডিটর সাবরা ধরনা দেন ডিসিসির হেড অফিসে! তাদের ভাগ ফুল বাজেটের ১%। আমি চিন্তা করলাম এই হিসাবগুলা কেউ কয়না কেন? ঘটনা আর কিছু না সে আমার বন্ধু মানুষ, তার উপর এখনও ঘুষ খাইতে পারে না, এই কারনে খোলাসা কইরা বলছে! কেউ কি আর নিজের দুর্নাম করে?






এখন প্রশ্ন করতে পারেন, এত ট্যহা অরা রাখে কই? কেউ ধরা খায় না ক্যন?
হেহেহে, এই টা আপ্নে বুঝবেননা!









এর বাইরেও কাহিনী আছে। জানেন কি, রিয়েল এস্টেট বা শেয়ারে ইনভেস্ট করতে গেলে আয়ের উৎস দেখানো লাগে না?! মানে কিছু দেখাবেন অপ্রদর্শিত, কিন্তু বৈধ হিসেবে! সরকারী নিয়ম আছে অপ্রদর্শিত আয় সাদা করা যাবে শেয়ারে বা রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করলে! (আগে ছিল, এখনও আছে কি না জানি না) এখন বোঝা গেল তত্বাবধায়ক সরকার আমলে বেশিরভাগ মানুষ এত অস্বস্থিতে পরল কেন?


আর ব্যংকে টাকা রাখতে আয়ের উৎস দেখানোর কথা থাকলেও আপ্নে যদি সেইরকম একজন ব্যংকার ধরতে পারেন তাইলে আর চিন্তা নাই! আর ট্যক্স অফিসের কথা নতুন করে বলার দরকার আছে? তারপরেও যদি হাতে কিছু থাকে সামাজিক বিভিন্ন কাজ আছে




আর গুনাহর কথা চিন্তা করতেছেন? শেষ বয়সে হজ্জ করবেন, আর পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়বেন, সব ধুইয়া যাইব! পরকালে কি হইব সেটা আর এখন কে নিশ্চিত ভাবে বলতে পারে?!

এসব চিন্তা করলে নিজেকে খুব অসহায় লাগে!


কই যামু ?!?




(বেশিরভাগই বিদেশ যায় !


সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১১:২৩