প্রেমিকার ঘুম আসেনা রাতে। এইদিকে আমি হলাম এগারোটায় ঘুমানো পাবলিক। বাংলা সিনেমার যেমন ধনি গরীবের প্রেম হয়, আমাদের তেমন ঘুম আর নির্ঘুমের প্রেম! এখন তার যেহুতো ঘুম আসেনা তার সাথে আমারও জেগে থাকতে হয়। কাজেই আমি 'আজকে অসুস্থ, কালকে ভোরে উঠতে হবে, ফোনে চার্জ নাই' ইত্যাদি নানান অজুহাতে তাকে পাশ কাটানোর চেষ্টায় থাকি। সে 'আজকে রাত একটা চুয়ান্ন মিনিটে একটা বিশেষ ছবি দিবো, তুমি এখন ঘুমাইলে আমি মরে যাবো, ঘুমাও আচ্ছা, আমার চ্যাট করার মানুষ আছে' ইত্যাদি প্রলবন, হুমকি এবং ইমোশন প্রয়োগ করে আমারে জাগিয়ে রাখে!
এর মাঝে আবার চ্যাট চলাকালিন সময়ে টাইপিং স্পিড রাখা লাগে তুফান গতীর। এইভাবে চলতেসিলো। মোটামুটি দুইটার দিকে আমি “চোখে কিছু দেখতেসিনা/মরে যাচ্ছি” জাতীয় অজুহাতে ঘুমিয়ে পড়তাম। আমি আমার জীবনে প্রথম বড় ভুল করেছি ৩৫ টাকা টিকেট কেটে
সিনেমা হলে কাজী মারুফের ছবি দেখে, দ্বিতীয় বড় ভুলটা করেছি প্রেমিকাকে আমার আম্মুর নাম্বার দিয়া! এখন ঘুমানোর কথা বললে থ্রেড দেয়া হয় আম্মুকে ফোন দিয়া বলবে, আপনার ছেলে বাবা হতে চলেছে…!!
এরশাদ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন দেশের মানুষের অবস্থা যেমন হইছিলো আমার এমন! এই প্রেমই কি চেয়েছিলাম? এই স্বাধীনতা! হায়! একজন মানুষের ঘুমানোর অধিকার নাই। আমি ঘুমাতে চাইলে প্রেমিকা আমাকে “ফার্মের মুরগি” উপাদি দেয়। আমি ভুল ধরিয়ে দিই, ওটা মুরগি না, মোরগ হবে! প্রেমিকা রাগ করে বলে,
– তোমার মতো বাজে লোক কখনো দেখি নাই।
– আচ্ছা, বাজে লোকটাকে তবে ভালোবাসো কেন? সবগুলো কারন থেকে অন্যতম কারনটা বলো!
– ভালো না বেসে থাকতে পারি না, তাই ভালোবাসি!
…আমি হার মেনে যাই। এই পর্যায়ে এসে মনে হয়, নাহ এই মেয়েটার জন্যে রাত জাগাই যায়!
জাহিদ রাজ রনি
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:৪২