আজ ৮ জানুয়ারি ২০১৫। ঠিক ২ মাস আগে ৮ নভেম্বর তারিখে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশান অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর ঘোষণা সংগঠনটির সভাপতি হিসেবে আমি দেয়। ২ মাসে আমরা আশাতীত এগিয়েছি। সদস্য সংখ্যা বেড়েছে, ফেইসবুক গ্রুপে আশাতীত সাফল্য এসেছে, আমাদের ব্লগ এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ই-কমার্স ব্লগ। সর্বোপরি বাংলাদেশে ই-কমার্স সেক্টর নিয়ে ই-ক্যাব সপ্তাহের ৭ দিনই এবং মাসে ৩০ দিনই কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের ভুল ত্রুটি থাকা স্বাভাবিক এবং আমরা চেষ্টা করবো যে সব সমস্যা এখনো রয়েছে সেগুলো কাটিয়ে উঠতে। আশা করি সবার সাহায্য পেলে অনেক দূর এগুতে পারবো ২০১৫ সালে।
২০১৫ সালকে আমরা ই-কমার্স বছর হিসেবে ঘোষণা করেছি। আমি কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করি ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) এবং তাদের সভাপতি আখতারুজ্জামান মঞ্জু ভাইকে। ই-কমার্স বছর পালন সহ অনেক কিছুতেই তারা ই-ক্যাবের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। একই সঙ্গে স্মরণ করতেই হয় সিটিও ফোরাম বাংলাদেশ এবং তপন কান্তি সরকার দাদাকে। সবার আগে ই-ক্যাবকে স্বাগত এবং আমি সহ আমাদের ইসি কমিটিকে তারা যে সন্মান দেখিয়েছে তা কোনভাবেই ভুলতে পারবো না। ই-কমার্স ফেয়ার ২০১৫ পালনে সিটিও ফোরাম আমাদের পাশে থাকাতে মনে সাহস অনেক বেড়ে গেছে। আমাকে অবশ্যই স্মরণ করতে হয় বিসিএস-এর সাবেক সভাপতি এবং বিশিষ্ট তথ্য প্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার এর নাম। মোস্তাফা জব্বার শুধু আমাদের সব কিছুতেই সক্রিয় ভাবে পরামর্শ দিয়ে গেছেন তা নয় বরং যে কোন বিপদে মাথার উপরে অভিভাবকের ছায়ার মত ছিলেন এবং এখনো আছেন।
এর পর অবশ্যই ধন্যবাদ জানাতে হয় মিডিয়াকে এবং সাংবাদিক ভাই ও বন্ধুদের। বিবিসি, প্রথম আলো, বাংলা নিউজ২৪, কালেরকন্ঠ, সমকাল, ইত্তেফাক, ডেইলি স্টার, বনিক বার্তা, টেক শহর, প্রিয় ডট কম, কমপিউটার জগত, টেক ওয়ার্ল্ড, বাংলা ট্রিবিউন- আসলে কাকে ছেড়ে কার কথা বলবো তা নিয়েই সমস্যা। যাদের নাম বাদ পরে গেল তাদের কাছে ক্ষমা চাইছি আন্তরিকভাবে। কেননা মিডিয়ার কল্যানে ই-ক্যাব অনেক এগিয়েছে গত ১ মাসে। কমপিউটার জগতের নাম আলাদা করে উল্লেখ করতেই হয় ৭ পৃষ্ঠার এক প্রচ্ছদ প্রতিবেদন ছাপানোর জন্য।
গত ১ মাসে ই-ক্যাবের সবচেয়ে বড় উদ্যোগ ছিল ই-কমার্স সেবা কেন্দ্র চালু করা এবং এদিকে সর্বাত্বক সহযোগিতা প্রদানের জন্য ইউনিকো সলিউশন এর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।
ই-ক্যাব সেবাকেন্দ্রের যোগাযোগ নম্বর: ০৯৬১৩ ২২২ ৩৩
সবাইকে এ সেবা কেন্দ্রে ফোন দেবার জন্য এখানে অনুরোধ জানাচ্ছি। সেবা কেন্দ্র ছাড়াও ব্লগে বেশ ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। ব্লগে এখন পর্যন্ত ই-কমার্স বিষয়ে ৩৩ টি আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছে। যারা লিখেছেন তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ব্লগে আমরা এ বছর ৫০০ থেকে ১০০০ আর্টিকেল দেখতে চাই এবং ই-কমার্স এর বিভিন্ন দিক নিয়ে এসব লেখা খুবই কাজে দেবে সন্দেহ নেই। ই-ক্যাব ব্লগ হবে ই-কমার্সের উপর বাংলাদেশে ও বাংলা ভাষায় সবচেয়ে সমৃদ্ধ তথ্য ভাণ্ডার। যদি সম্ভব হয় তাহলে ব্লগের প্রতিটি লেখা ইংরেজি থেকে বাংলায় এবং বাংলা থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করার চেষ্টা করবো আমরা।
ই-ক্যাবের ফেইসবুক পেইজ এখন ১,৬০০ এর মত সদস্য এবং ই-কমার্স নিয়ে বাংলাদেশে সবচেয়ে একটিভ পেইজ এটি। পোস্ট গুলোতে প্রাণবন্ত আলোচনা এবং সদস্যদের একে অন্যকে তথ্য দিয়ে সাহায্য করার মানসিকতা সত্যিই অতুলনীয়। ই-কমার্স নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর কয়েকজন দিয়েছেন গত কয়েক মাসে। গ্রুপে আমরা পেয়েছি বাংলাদেশের ই-কমার্সে (বোধহয়) প্রথম বিখ্যাত উদ্যোগ মুন্সিজি ডট কমের উদ্যোক্তা মুন্সি গিয়াস উদ্দিন এবং বাংলা লায়নের উর্ধতন একজন কর্মকর্তা আজহার এইচ চৌধুরী, ফাইবার অ্যাট হোমের সুমন আহমেদ সাবির ভাইকে।
গত ২ মাসে আমরা চেষ্টা করেছি গ্রুপে এবং ব্লগে তথ্য দিতে এবং তা অব্যাহত থাকবে। আগামী ২ মাসে আমাদের একটা বড় লক্ষ্য থাকবে ওয়ার্কশপ, সেমিনার, ট্রেনিং এবং কোর্স চালু করার দিকে। ই-ক্যাব থেকে সরাসরি কিছু ওয়ার্কশপ এর আয়োজনের চেষ্টা করছি। এ ছাড়া কয়েকটি ট্রেনিং সেন্টার এ দিকে ওয়ার্কশপ এর ব্যবস্থা করছে। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মিলে ই-কমার্স নিয়ে সেমিনার ও ওয়ার্কশপ এর কার্যক্রম ডিসেম্বর মাসে সফলভাবে শুরু করতে পেরেছি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ)-এর সঙ্গে ডিসেম্বর মাসের ১৫ তারিখে। বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ই-কমার্স এর উপর কোর্স চালুর জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি হয়তো আগামী ১ বা ২ মাসের মধ্যেই কোন ভাল সংবাদ পাওয়া যাবে। আগামী ২ মাসে ই-কমার্স শিক্ষার উপর জোর দিতে চাই।
শিক্ষা অনলাইনেও যাতে হতে পারে সেজন্য চিন্তা করছি। ওয়েবিনার (অনলাইনে সেমিনার) নিয়ে কাজ করছি। যারা ই-লার্নিং নিয়ে কাজ করছেন তাদের সাহায্য চাইছি এ ব্যপারে।
আর ভিডিও এবং অডিও কন্টেন্ট তৈরির জন্য আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি একটু একটু করে। ই-কমার্স ইয়ার ২০১৫ এর উপর দারুন একটি ভিডিও তৈরি করেছে আমাদের মেম্বার কোম্পানি Branoo. এ ছাড়া অন্য অনেক কোম্পানি আমাদের সঙ্গে একাত্বতা ঘোষণা করেছে। ই-কমার্স বছর পালনে আমরা অনেক কিছুই করতে চাই তবে এজন্য সবার সাহায্য লাগবেই।
ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশান অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর সভাপতি হিসেবেই হোক বা সব লেখালেখি করি বলেই হোক আমার উপস্থিতি অনেক বেশি বলে সবার কাছ মনে হয়। কিন্তু বাস্তবতা হল আমাদের ইসি কমিটিতে (আমি সহ) মোট ৯ জন রয়েছি। আমরা সবাই ই-ক্যাবকে দাড় করানোর জন্য এবং ই-কমার্স খাতকে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য জীবনের অনেক কিছুই (ব্যবসা, পরিবার, বিশ্রাম, ছুটি) বিসর্জন দিচ্ছি। আমাদের এই আত্বত্যাগ সেদিনই সার্থক হবে যেদিন বাংলাদেশে অন্তত এক কোটি লোক অনলাইনে কেনাকাটা করবে।
সবাইকে পড়ার জন্য ধন্যবাদ
রাজিব আহমেদ
সভাপতি
ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশান অব বাংলাদেশ
Website: http://www.e-cab.net/
Blog:http://blog.e-cab.net' target='_blank' > http://blog.e-cab.net /
Facebook page: http://www.facebook.com/eCommerceAB
Facebook group: http://www.facebook.com/groups/eeCAB/