ভুল পথে পা বাড়ানো মানুষগুলোকে সঠিক পথে নিয়ে আসার একটাই রাস্তা দেখি আমি। গ্রামে পাঠিয়ে দিন, জমিতে কৃষি কাজ করবে, পুকুরে মাছ ধরবে, হুঁকা টানবে আর দিন শেষে ক্লান্ত শরীর মাটিতে এলিয়ে দিবে। ব্যস, কর্মব্যস্ততায় থাকতে থাকতে নেশা-ফেসা সব কেটে যাবে একদম। আমার কাছে শহুরে জেলখানার মতোন মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলো কেমন অদ্ভুত লাগে। ব্যক্তিগতভাবে কোন নেশাখোরকে আমি চিনি না, তবে সিলেটে আমি যেই মেসে থাকি তার আশেপাশে অনেক মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র আছে। বাইরে থেকে দরজা জানালা সবই বন্ধ থাকে, ছাদে মাঝে মাঝে দু একটা লুঙ্গি গামছা দেখা যায়। জানি মাদকাসক্ত ব্যক্তি একটা পরবিারের জন্য অভিশাপস্বরূপ। কিন্তু এভাবে পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব, সমাজ-সংসার থেকে দূরে সরিয়ে একজন মানুষকে কতটুকু সুস্থতা এনে দেয়া সম্ভব? দেখা যাবে এই মানুষগুলো অতীতে পরিবারের অবহেলা, বাবা মায়ের অসচেতনতা, বাজে বন্ধুবান্ধবের পাল্লায় পড়েই আসক্ত হয়েছিল। চিকিৎসাবিজ্ঞানে একটা ট্রিটমেন্ট ফর্মুলা আছে, মানুষের অর্ধেক রোগ থাকে তার মনে আর বাকী অর্ধেক শরীরে, মনের রোগ সেরে গেলেই শরীর তার রোগ সারানোর কাজে হাত লাগায়। এভাবে গৃহবন্দি করে কাওকে কখনো সুস্থ বানানো যাবে না। তাদের প্রয়োজন সময়, সহযোগিতা, ভালবাসা ও সবশেষে কর্মব্যস্ততা। হতে পারে চার দেয়ালে বন্দি করে রাখাই এই রোগের আদর্শ ট্রিটমেন্ট। শৈশবে সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে পড়েছি পরিবার পরিজনের ভালবাসা ই পারে একজন আসক্ত ব্যক্তিকে সুস্থ করে তুলতে। আজকে আমাদের সমাজ ব্যবস্থা কতটা সংকীর্ণ হয়েছে যে এই আসক্তির চিকিৎসাটাও একটা ব্যবসাবাণিজ্য হয়ে গেছে, অথচ ফ্যামিলির একটু সাপোর্ট ই পারে অনেক পথভ্রষ্ট মানুষকে সোজা পথে নিয়ে আসতে। সবাইকে ব্যপারগুলো নিয়ে আরো অনেক ভাবতে হবে, দিন দিন মাদকসেবীর সংখ্যা যেভাবে বেড়েই চলেছে অবশ্যই এটা এক সময় জাতীয় ইস্যুতে পরিণত হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:০১